× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Golapganj principal without area for 3 weeks on niqab issue
google_news print-icon

নেকাব ইস্যুতে ৩ সপ্তাহ এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের অধ্যক্ষ

নেকাব-ইস্যুতে-৩-সপ্তাহ-এলাকাছাড়া-গোলাপগঞ্জের-অধ্যক্ষ
নেকাব ইস্যুতে ক্ষোভের মুখে এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের এক শিক্ষক। প্রতীকী ছবি।
সুনীলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে স্কুলের গভর্নিং বডি ও উপজেলা প্রশাসন দুটি তদন্ত কমিটি করে। এর মধ্যে গভর্নিং বডির কমিটি রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেদিনই কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসনের কমিটি।

সিলেটে গোলাপগঞ্জে গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে এক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ক্লাসে এক ছাত্রীকে নেকাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি পরে ‘ভুল-বোঝাবুঝি’ বলে ওই ছাত্রীর বাবা জানালেও স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পরিবার নিয়ে এলাকাছাড়া হন ওই শিক্ষক। এখনও তিনি ফিরতে পারেননি এলাকায়।

গোলাপগঞ্জের ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে গত ১৫ মার্চ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে কথিত নেকাব অবমাননার অভিযোগ ওঠে।

বিষয়টি গোলাপগঞ্জের ভেতরে এতদিন সীমাবদ্ধ থাকলেও মুন্সীগঞ্জের বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের ঘটনার পর সিলেটজুড়ে আলোচিত হচ্ছে সুনীলের এলাকা ছাড়ার ঘটনা।

সুনীলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে স্কুলের গভর্নিং বডি ও উপজেলা প্রশাসন দুটি তদন্ত কমিটি করে। এর মধ্যে গভর্নিং বডির কমিটি রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেদিনই কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসনের কমিটি।

ঘটনার শুরু যেভাবে

ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ১৯৯৫ সাল থেকে শিক্ষকতা করছেন সুনীল চন্দ্র দাস। ২০০৯ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান। ২০১৫ সালে বিদ্যালয়ে কলেজ শাখা চালুর পর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে আছেন তিনি।

করোনার ছুটি শেষে গত ১৫ মার্চ নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস শুরু হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ক্ষতি পোষাতে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। ১৫ মার্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক আমিন উদ্দিন অনুপস্থিত থাকায় ক্লাস নিতে যান অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস।

ওই ক্লাসেরই এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে নেকাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ তোলে।

ওই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রোববার কথা বলেছে নিউজবাংলা।

নেকাব ইস্যুতে ৩ সপ্তাহ এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের অধ্যক্ষ

তারা জানায়, সেদিন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অক্সিজেনের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য বুকভরে শ্বাস নিতে বলেন সুনীল চন্দ্র দাস। তবে নেকাব খুলতে ওই ছাত্রী আপত্তি জানায়। সুনীল তাকে কয়েকবার অনুরোধ করলে ওই ছাত্রী নেকাব খোলে।

পরে বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে মা-বাবাকে জানায় মেয়েটি। মা মোবাইল ফোনে বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতিকে অভিযোগ করেন। অন্যদিকে তার বাবা আব্দুল হালিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে মেয়ের সঙ্গে শিক্ষকের এই আচরণের বিচার চান।

ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ

ওই ছাত্রীর বাবার ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর এলাকার অনেকে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লিখতে থাকেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বোরকা ও হিজাব নিয়ে কটূক্তি এবং ইসলাম ধর্মের অবমাননার অভিযোগ তোলা হয় বিভিন্ন স্ট্যাটাসে। ফেসবুকের মাধ্যমে এলাকায় ছড়ায় ক্ষোভ।

সে রাতেই ওই ছাত্রীর বাসায় যান অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস। আরও কয়েকজন শিক্ষক এবং গভর্নিং বডির কয়েকজন সদস্যও তার সঙ্গে যান। মেয়ের বাবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বিষয়টি মিটমাট করে নেন।

এরপর স্কুলছাত্রীর বাবা ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ফেসবুকে আমার মেয়ে ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিয়ে সম্পূর্ণ মনগড়া ও ভ্রান্ত কিছু লেখালেখি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। শ্রেণিকক্ষে সব ছাত্রছাত্রীর করোনার মাস্ক ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়। এখানে আমার মেয়ের হিজাব খোলার বিষয়টি আদৌ সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাই।’

নেকাব ইস্যুতে ৩ সপ্তাহ এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের অধ্যক্ষ
অভিযোগকারী ছাত্রীর বাবার দেয়া দ্বিতীয় ফেসবুক স্ট্যাটাস

এর মধ্যে বোরকা ও হিজাবে মুখ ঢাকা আরেকটি মেয়ের ভিডিওবার্তা স্থানীয় কিছু ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। মেয়েটি নিজেকে ওই ছাত্রীর সহপাঠী দাবি করে। সে জানায়, ওই ক্লাসে সেদিন সুনীল তার বান্ধবীকে নেকাব খুলতে বাধ্য করে।

ওই ভিডিওর পর এলাকায় ক্ষোভের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে ২০ মার্চ এলাকাবাসীকে নিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে সভা ডাকেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম আহমদ। সেখানে বিষয়টি সমাধানের আলোচনা হলেও এলাকাবাসী সুনীল চন্দ্রের শাস্তি দাবি করেন। ওই দিনই আতঙ্কে পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়েন অধ্যক্ষ সুনীল। বিদ্যালয় থেকে ১৫ দিনের ছুটি নেন তিনি। তবে তিন সপ্তাহ পরেও তিনি এলাকায় ফেরেননি।

‘স্যার শ্বাস নেয়ার জন্য নেকাব খুলতে বলেন’

ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। এই শিক্ষার্থীদের (ওল্ড টেন) তিনটি শাখায় ভাগ করে ক্লাস নেয়া হয়। নেকাব নিয়ে সুনীল চন্দ্র দাসের আলাপের ঘটনাটি ঘটে এ শাখায়। ওই ক্লাসে উপস্থিত ছিল অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।

রোববার ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ১০ জনের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।

ওই ক্লাসের ছাত্রী নুজহাত আহমদ কনিকা নিউজবাংলাকে বলে, ‘ক্লাসে করোনা ও অক্সিজেন নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে স্যার সবাইকে জোরে শ্বাস নিতে বলেন। এ জন্য সবাইকে মাস্ক ও নেকাব খুলতে বলেন। ওই ছাত্রী খুলতে রাজি না হওয়ায় স্যার বলেন, আমরা শিক্ষকরা তোমাদের মা-বাবার মতো। তোমরা আমাকে বাবার মতো মনে করে নেকাব খুলতে পারো।

‘স্যার কয়েকবার বলার পর সে নেকাব খোলে। তবে এ সময় সে স্যারকে বলে, আমাদের ইসলামিক বিধানে বাইরের পুরুষের সামনে হিজাব ও নেকাব খোলা নিষেধ।’

আরেক শিক্ষার্থী আদিত্য দাস দীপও প্রায় একই ধরনের বর্ণনা দিয়েছে। সে বলে, ‘স্যার তিনবার বলার পর ওই ছাত্রী নিজ থেকেই নেকাব খোলে। এরপর স্যার বোরকা পরে ভালো কাজ ও খারাপ কাজের উদাহরণ দেন এবং কীভাবে সুন্দর করে সালাম দেয়া যায় সেটা নিয়ে বলেন।’

নেকাব ইস্যুতে ৩ সপ্তাহ এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের অধ্যক্ষ
গোলাপগঞ্জের ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস

মিনহাজ হোসেন নামে আরেক ছাত্র বলে, ‘ওই ছাত্রী শুরুতে নেকাব খুলতে রাজি না হওয়ায় স্যার বলেন, বিজ্ঞান তো প্রমাণ করতে হয়। তুমি যদি নিজে প্রমাণ না করো (গভীর শ্বাস নেয়ার উপকারিতা) তাহলে এটা যে সত্য তা বুঝবে কী করে।’

এ বিষয়ে অভিযোগকারী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তবে সে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ভিডিওর মেয়েটি কে?

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির মেয়ের মুখ ও মাথা ঢাকা ছিল হিজাব ও নেকাবে। ফলে তার পরিচয় জানা যায়নি। ভিডিওবার্তায় মেয়েটি দাবি করেছে, সে ওই স্কুলের ছাত্রী ও এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

ওই প্রতিষ্ঠানের একাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীর কাছে এই মেয়ের পরিচয় জানতে চাইলে তারা জানায় সে আমেনা বেগম হতে পারে। আমেনা বেগমও এসএসসি পরীক্ষার্থী ও পুরোনো দশম শ্রেণির (ওল্ড টেন) সি গ্রুপের ছাত্রী। আর সুনীল চন্দ্রের ঘটনাটি ঘটেছিল এ গ্রুপে।

তবে আমেনা বেগম নিউজবাংলাকে জানায়, এই ভিডিওটি তার নয়। ভিডিওর মেয়েকে সে চেনেও না।

‘তিলকে তাল বানানো হয়েছে’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাহের উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিলকে তাল বানানো হয়েছে। স্যার কোনো কটূক্তি করেননি।

তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার দিন স্কুলে ছিলাম। পরে অধ্যক্ষের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বাসায়ও গিয়েছি। যেভাবে ছড়ানো হয়েছে সে রকম ঘটনা না।’‌

তাহের উদ্দিন আরও বলেন, ‘প্রিন্সিপাল স্যার ওই মেয়ের বাসায় যাওয়ার পর ওই মেয়ে ও তার পরিবার সব মন থেকে বাদ দিয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে আপসও হয়, কিন্তু এরপরেও একটি গোষ্ঠী ইন্ধন দিয়ে ঘটনাটিকে বড় করেছে। এর সঙ্গে আমাদের প্রতিষ্ঠানের কিছু লোকও জড়িত আছে।’

সহকারী শিক্ষিকা নুরুন্নাহার ঝুমুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ঘটনা শোনার পর ওই ক্লাসের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, স্যার খোলা বাতাসে শ্বাস নেয়ার জন্য মাস্ক খুলতে বলেছেন। একজন না খোলায় স্যার তাকে কয়েকবার অনুরোধ করেছেন। স্যার বারবার বলার পর রাগ করে সে খুলছে।

‘এরপর স্যারকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু হইছে। তার সঙ্গে অভদ্রতা করা হচ্ছে।’

নেকাব ইস্যুতে ৩ সপ্তাহ এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের অধ্যক্ষ

ঝুমুর বলেন, ‘স্যার প্রায় ২৭ বছর ধরে এখানে আছেন। কখনও কোনো কথা ওঠেনি। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। বরং সবাই যাতে নামাজ পড়ে সে জন্য স্যার এই প্রতিষ্ঠানে নোটিশ জারি করেছেন। এখন বুড়ো বয়সে এসে কেন স্যার এসব করতে যাবেন?’

বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক আমিন উদ্দিনের সেদিন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়ার কথা ছিল। তিনি না আসায় ওই ক্লাসে যান সুনীল। আমিন অভিযোগকারী ছাত্রীর গৃহশিক্ষকও।

আমিন উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি স্কুলে সেদিন যাইনি বলে ঘটনা সম্পর্কে জানি না। আমি বাসায় পড়াতে গেলে ওই ছাত্রী আমাকে অভিযোগ করে। আমি বিষয়টি গভর্নিং বডির সভাপতিকে জানাতে বলি।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ সেলিমুজ্জামান। সুনীল চন্দ্রের অনুপস্থিতিতে তিনিই প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে আছেন।

তদন্তাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না জানিয়ে সেলিমুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুনীল স্যার ভালো লোক। আমাদের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক। বাকিটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।

‘আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে।’

অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস ছুটিতে আছেন বলেও জানান তিনি।

সুনীল চন্দ্রের অভিযোগ, ষড়যন্ত্র

পুরো ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস।

মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ক্লাসে করোনা বিষয়ে আলোচনা শুরু করি। স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আলোচনা করি। অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নিয়ে কথা বলি। করোনায় অক্সিজেন কতটুকু উপকারী এ নিয়ে বলি। সবাইকে মাস্ক খুলে শ্বাস নিতে বলি।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনেকের মাস্ক পরা ছিল। আর কয়েকজন ছাত্রীর মুখে নেকাব ছিল। আমি তাদের মাস্ক ও নেকাব খুলে শ্বাস নিতে বলি। হিজাব নিয়ে কোনো কথাই বলিনি।’

সুনীলের দাবি, বিষয়টি পরে বড় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘১৭/১৮ তারিখে আমি প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি জানতে পারি। আলোচনা শুরু হওয়ার পর ১৮ মার্চ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে মীমাংসাও করে দেন। অভিযোগকারী ছাত্রীর বাবা তার অভিযোগ তুলে নেন। এরপর একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে উসকে দেয়। তারা এলাকায় বিক্ষোভ করে। ফেসবুকে নানান বাজে কথা লিখতে থাকে। বেশির ভাগ জামায়াতের লোক এতে জড়িত। আমার প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষকেরও ইন্ধন রয়েছে। পদপদবির জন্য তারা এমনটি করছেন।’

নিজের অবস্থান জানাতে অস্বীকার করে সুনীল বলেন, ‘ভয়ে ২০ মার্চ থেকে আমি এলাকা ছাড়া। পরিবারের নিরাপত্তা ও মানসম্মানের কথা ভেবে আমি ছুটি নিয়ে চলে এসেছি।’

নেকাব ইস্যুতে ৩ সপ্তাহ এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের অধ্যক্ষ

যা মিলল তদন্তে

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ৫ সদস্যের একটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৩ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

গভর্নিং বডির তদন্ত কমিটি রোববার তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই কমিটির প্রধান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহমদ। তিনি রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফেসবুকে হাছা-মিছা (সত্য-মিথ্যা) মিলিয়ে পোস্ট করে ঘটনাকে বড় করা হয়েছে। যেগুলো ছড়াইছে তার বেশির ভাগই ভুয়া।’

তবে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে কিছু বলতে চাননি চেয়ারম্যান। তিনি জানান, তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে, গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে বলবেন।

তবে এই তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘স্যার ক্লাসে যা বলেছেন তা একজন শিক্ষক হিসেবেই বলেছেন। ইসলামবিদ্বেষী কিছু বলেননি। পরবর্তীতে তা বিকৃত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবেই তিনি ছাত্রদের বোঝাতে চেষ্টা করেছেন। তাতে ধর্ম অবমাননার কিছু আমরা পাইনি।’

তদন্ত কমিটির ওই সদস্য আরও বলেন, ‘আমরা ওইদিন শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত থাকা দশম শ্রেণির ১০ জন শিক্ষার্থীর বক্তব্য নিয়েছি। সবাই একই ধরনের কথা বলেছে। তারা জানিয়েছে, স্যার ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর কিছু বলেননি। কথা প্রসঙ্গে বিভিন্ন উদাহরণ দিয়েছেন। বোরকা পরেও যে কেউ অপরাধে জড়াতে পারে আর না পরেও ভালো মানুষ হতে পারে এমনটি বলেছেন।’

গভর্নিং বডির সভাপতি মাসুম চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুনীল চন্দ্রকে ভালো মানুষ হিসেবেই জানি। একজন সৎ শিক্ষক। ওনার নামে কখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। ফলে এখনকার অভিযোগ কতটুকু সত্য তা বলা কঠিন।

‘আমি ঢাকায় আছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনও পাইনি। দু-এক দিনের মধ্যে পাব। এরপর আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব। তবে সরকারি যেহেতু একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে, আমাদের এই রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে।’

নেকাব ইস্যুতে ৩ সপ্তাহ এলাকাছাড়া গোলাপগঞ্জের অধ্যক্ষ

এই ঘটনা তদন্তে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবিরের গঠন করা কমিটির প্রধান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম।

তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। তদন্ত চলমান আছে। এখন কিছু বলার সুযোগ নাই। তদন্ত শেষ হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।’

সুনীলের এলাকা ছাড়ার প্রসঙ্গে গভর্নিং বডির সভাপতি বলেন, ‘উনি একজন ভদ্রলোক। তিনি যদি মনে করেন তার নিরাপত্তা হুমকিতে, তাইলে এলাকা ছেড়ে চলে যেতেই পারেন।’

সুনীলের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত। এখন আর কোনো ঝামেলা নেই। কিছু লোক গুজব ছড়াচ্ছে। এতে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।’

আরও পড়ুন:
শিক্ষক-কর্মচারীদের ফেসবুকে নজর দেবে সরকার
হিজাব বিতর্ক: হামলার ৩ দিন পর ধরণী কান্তের জিডি
খোদার কাছে প্রার্থনা ওরা স্বাভাবিক মানুষ হোক: হৃদয় মণ্ডল
এবার চট্টগ্রামের স্কুলে হিজাব নিয়ে ভুয়া অভিযোগ
ধরণী কান্তের ছকে ‘হিজাব বিতর্কে’ আমোদিনী পাল?

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The main accused arrested in the murder of UP member

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।

শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র‍্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন

র‍্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।

মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।

এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।

পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মন্তব্য

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।

কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।

ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”

স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
July in Kaliganj People from all walks of life took oath with millions of voices

কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ: লাখো কণ্ঠের সঙ্গে শপথ নিলেন সর্বস্তরের মানুষ

কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ: লাখো কণ্ঠের সঙ্গে শপথ নিলেন সর্বস্তরের মানুষ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।

বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Snake panic in Feni after flood

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The creation of waterlogging at Benapole ports

পানি নিষ্কাশনের অভাবে  বেনাপোল বন্দরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি

ব্যাহত হচ্ছে বন্দরে খালাশ প্রক্রিয়া
পানি নিষ্কাশনের অভাবে  বেনাপোল বন্দরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি

টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।

তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chakrias escaped accused Sajjad was detained in Coxs Bazar DB

চকরিয়ার সেই পালাতক আসামি সাজ্জাদ কক্সবাজারে ডিবির জালে আটক

চকরিয়ার সেই পালাতক আসামি সাজ্জাদ কক্সবাজারে ডিবির জালে আটক

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।

চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।

এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Panchagarh has fined Tk 2 lakh in a joint operation at night 

পঞ্চগড়ে রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে  ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বালু উত্তোলনকারীকে 

পঞ্চগড়ে রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে  ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বালু উত্তোলনকারীকে 

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।

দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।

মন্তব্য

p
উপরে