হিন্দু সম্প্রদায়ের নিম্নবর্ণের লোকজনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কারণে বাগেরহাটের চিতলমারীর পাঙ্গাশিয়া গ্রামে সম্প্রতি এক হিন্দু পরিবারকে একঘরে করার অভিযোগ ওঠে। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে নিউজবাংলাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। প্রকাশিত সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সংবাদটি ফেসবুক পোস্টে অনেকে শেয়ারও করেন। সৌগত বোস নামে একজন সেটি শেয়ার করে ফেসবুকে লেখেন- ‘এরা মানুষ হবে না। সমাজপতি নাম নিয়ে মরে যাবে।’
রুম্পা রায় নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী সেটি শেয়ার করে লেখেন, ‘পরিবারটি এখন বসতভিটা বিক্রি করে ওই এলাকা ছেড়ে অন্য গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে... সমাজপতিদের এসব নিয়ম আর কতদিন চলবে!’
বিষয়টি নিয়ে আরও অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাঙ্গাশিয়া গ্রামের শিক্ষক সভারঞ্জন গুহ সমাজচ্যুতির যে অভিযোগটি করেছেন, তা মূলত প্রতিবেশীর বাড়ির একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াতবঞ্চিত হয়ে। গ্রামের উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দাবি, সভারঞ্জনের পরিবারকে একঘরে করার ঘটনা ঘটেনি।
নিউজবাংলার প্রতিবেদক স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, পাঙ্গাশিয়া গ্রামটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ পরিবারের বসবাস।
গ্রামটি হিজলা ইউনিয়নের আওতাভুক্ত। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবু সাহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাঙ্গাশিয়া গ্রামে এক হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। তাদের মধ্যে মতুয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীও আছেন।’
হিন্দু বর্ণ প্রথা অনুযায়ী মতুয়ারা নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে তাদের এড়িয়ে চলার প্রবণতা আছে।
ঘটনার সূত্রপাত
একঘরে হওয়ার অভিযোগটি তোলেন পাঙ্গাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল্পনা হালদার। তিনি স্থানীয় এক সাংবাদিককে বলেন, “গত ১৮ মার্চ পাঙ্গাশিয়া গ্রামের মতুয়া সম্প্রদায়ের কালিদাস মণ্ডলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়। ওই অনুষ্ঠানে আমার স্বামী সভারঞ্জন গুহ অংশ নিয়ে অতিথি আপ্যায়নে সহযোগিতা করেন।
“এ ঘটনার জেরে ‘সমাজ ডেকে’ মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি গুহ আমাদের পরিবারকে একঘরে করার ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে তারা সমাজ থেকে আমাদের বাদ দিয়ে ৩০ মার্চ বাড়ির পাশে অন্নদা গুহর বাড়িতে বিশাল অনুষ্ঠান করেন।”
শিক্ষক আল্পনা হালদারের স্বামী সভারঞ্জন গুহ বলেন, ‘একজনের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য আমাদের পরিবারকে সমাজ থেকে একঘরে করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর পর থেকে আমরা সামাজিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। বসতভিটা বিক্রি করে এই এলাকা ছেড়ে আমরা অন্য গ্রামে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।’
যে কারণে দ্বন্দ্ব
নিউজবাংলার বিস্তারিত অনুসন্ধানে অভিযোগের আংশিক ভিত্তি পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, বর্ণগত বিভাজনের কারণে একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াত পায়নি ওই পরিবার। তবে তাদের একঘরে করা হয়নি।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্য সৌম দীপ মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায় ও মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে কিছু পার্থক্য রয়েছে। যে কারণে একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আরেকটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা অংশ নেয় না।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৮ মার্চ আমার বাবা কালিদাস মণ্ডলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে সভারঞ্জন গুহসহ তার পরিবারকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। তিনি আমাদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে তার একটি দ্বন্দ্ব শুরু হয়।’
ওই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যাওয়ার কারণে গ্রামের উচ্চবর্ণের হিন্দুদের আরেকটি অনুষ্ঠানে দাওয়াতবঞ্চিত হয় সভারঞ্জনের পরিবার।
সভারঞ্জন গুহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ৩০ মার্চ আমার পাশের বাড়ি অন্নদা গুহর বাড়িতে বিশাল ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে আমি বা আমার পরিবারের কাউকে দাওয়াত দেয়া হয়নি। একই বংশের লোক হওয়ার পরও আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হলো কেন? আমার বিপদ-আপদে তারা যে আসবে না, দাওয়াত না দেয়ায় তার প্রমাণ পেয়েছি।’
তার স্ত্রী শিক্ষক আল্পনা হালদার বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী গুহ বংশের লোকজন আমাদের বাড়িতে আসছে না। তাদের কোনো অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াতও দিচ্ছে না। পরিস্থিতি এখন এমন যে নিজ বংশের লোক হয়েও আমাদের বিপদ-আপদে তারা কেউ এগিয়ে আসবে না।’
এ বিষয়ে সভারঞ্জনের প্রতিবেশী গুহ পরিবারের সদস্য অনাদি গুহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু রীতিনীতি আছে। সভারঞ্জন গুহকে আগেও সেগুলো মেনে চলতে বলা হয়েছে। তবে তিনি তার মতো করে চলছেন। আমাদের যে রীতিনীতি আছে, সেই রীতিনীতি অনুযায়ী যারা চলে, সামাজিক যে আচার-অনুষ্ঠান আছে, তাতে তাদের নিমন্ত্রণ করা হয়। এ ছাড়া যারা রীতিনীতি মানে না, তাদের নিমন্ত্রণ করা হয় না।
‘আমাদের বাড়িতে একটি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের (নামযজ্ঞ) আয়োজন করা হয়, যেখানে সভারঞ্জন গুহকে নিমন্ত্রণ করা হয়নি। বিষয়টি এমন নয় যে শুধু তাকে নিমন্ত্রণ করা হয়নি। অনেককেই ওই অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হয়নি। তার মানে এই না যে, তাদের একঘরে করা হয়েছে।’
সভারঞ্জন গুহের আরেক প্রতিবেশী অমল গুহ বলেন, ‘সভারঞ্জন গুহকে সমাজচ্যুত করা হয়নি। মূলত সমস্যা হচ্ছে, আমাদের সামাজিক যে ক্রিয়াকলাপ, তারা তা অমান্য করে চলছে। সামাজিকভাবে মিটিং করে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা তারা মেনে নেয়নি। তার পর থেকেই গ্রামের বিভিন্ন সমাজিক অনুষ্ঠানে তাদের দাওয়াত না দেয়া শুরু হয়েছে।’
বহুকাল ধরে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের একজনকে প্রধান হিসেবে মানা হয়। তাকে বলা হয় সমাজপতি। বর্তমান সমাজপতি হলেন মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি গুহ।
মৃণাল কান্তি বলেন, ‘হিন্দু ধর্মে বাবার মৃত্যুর পর সন্তানের কিছু আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে হয়। যেমন মাথা মুণ্ডন করা, তুলসীতলায় জল দেয়াসহ নানা বিষয় রয়েছে। কিন্তু মতুয়া সম্প্রদায়ের কিছু লোক এই রীতিনীতি মানতে নারাজ। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব চলছে।
‘সম্প্রতি ওই সম্প্রদায়ের কালিদাস মণ্ডল মারা গেলে তার সন্তানরা এই রীতিনীতি পালন করেনি, যে কারণে কালিদাসের শ্রদ্ধানুষ্ঠানে আমরা কেউ যাইনি। তবে আমাদের সম্প্রদায়ের সভারঞ্জন গুহ সপরিবারে সেখানে গিয়েছিলেন। এরপর আমাদের সম্প্রদায়ের একটা অংশ মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়, সভা রঞ্জনসহ যারাই আমাদের রীতিনীতি মেনে চলবে না, তাদের সঙ্গে আমাদের সামাজিক সম্পর্ক থাকবে না।
‘তবে সভারঞ্জনের বিষয়ে যেটি বলা হচ্ছে, তাকে একঘরে করা হয়েছে। সেটা সত্য নয়। সবাই মিলে সামাজিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেখানে সভারঞ্জনও উপস্থিত ছিলেন। এরই জেরে গ্রামের গুহ বংশের পরিবারগুলো রঞ্জন গুহর সঙ্গে তাদের সামাজিক দূরত্ব তৈরি করেন। সেটাকে তো আর একঘরে করা বলে না। গুহ বংশের লোকজন ছাড়া গ্রামের অন্য সবার সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে।’
সভারঞ্জন গুহের প্রতিবেশী নির্মল চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সোভাদাকে একঘরে ঘোষণা দেয়ার পর গুহ বংশের কেউ তার বাড়িতে যাতায়াত না করলেও আমিসহ অন্য পরিবারের লোকজন সবাই তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। বিপদে তার পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা হিন্দু সম্প্রদায় লোকজন মিলেমিশে এই গ্রামে বসবাস করছি। আগে আমাদের মধ্যে এ ধরনের বিরোধ কখনও হয়নিই বলেই জানি।’
হিজলা ইউনিয়নের এই পাঙ্গাশিয়া গ্রামে মোট হিন্দু পরিবারের সংখ্যা ১০৮টি। গ্রামটিতে মতুয়ারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এ ছাড়া আছেন মাঝি, বাড়ই, চৌধুরী, হালদার ও গুহ বংশের লোকজন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবু সাহিন জানান, গ্রামটিতে ২৫টির মতো গুহ পরিবারের বসবাস। ধর্মীয় আচার পালন নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। পরে তা মীমাংসাও করা হয়েছে।
যা বলছে প্রশাসন ও পুলিশ
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, ‘একঘরে বলতে আমরা যা বুঝি, এ ঘটনাটি তেমন নয়। মূলত শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের যাওয়ার পর সভারঞ্জন গুহকে তার প্রতিবেশীরা নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেয়ার কারণে তিনি অভিযোগ করছেন তাকে একঘরে করা হয়েছে।
‘এ ছাড়া আমি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছিলাম, তিনি আমাকে জানিয়েছেন ধর্মীয় রীতিনীতি পালন নিয়ে গ্রামের মানুষের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।’
তিনি জানান, দুই পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। সবাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারা মিলেমিশে বসবাস করবেন।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনায় ঘটনাস্থলে থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোয় তারা আগের মতোই অংশগ্রহণ করবেন বলে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য