বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মণ্ডল স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুরে। বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসায় শিক্ষার্থীদের যে কক্ষে পড়াতেন সেখানে একটি লেখা স্কচটেপ দিয়ে দেয়ালে সাঁটানো।
সাদা কাগজে কালো কালির অক্ষরে লেখা হয়েছে (বাক্য-বানান অপরিবর্তিত), ‘মানুষ স্রষ্টার সৃষ্টি, ধর্ম সৃষ্টি মানুষের। মহামানবেরা ধর্ম নিয়ে সৎ ও বাস্তব গল্প লিখে আর বিজ্ঞ ব্যক্তিরা তা বিশ্বাস করে বাস্তব কর্ম স্ব-চোক্ষে দেখে, ফলে উভয়ের কল্যাণ ও মঙ্গল এর মাধ্যমে স্রষ্টার সঙ্গে দূরত্ব কমে, ধরায় শান্তি আসে, সৃষ্টি রক্ষা পায়।
‘শয়তানেরা ধর্ম নিয়ে আজগুবি ও কাল্পনিক গল্প লিখে আর মূর্খেরা তার বাস্তব কর্ম না দেখে অন্ধ বিশ্বাসে জড়িয়ে পড়ে, ফলে স্রষ্টার সাথে দূরত্ব বাড়ে, শয়তানেরা ইহকালে লাভবান হয় আর মূর্খেরা ইহকাল-পরকাল উভয় জায়গায় ঠকে।
‘শয়তান নিজেই মানুষের সৎকর্মের স্বানিধ্যে আসে না, কারণ সৎকর্মের সংস্পর্শে শয়তানের মৃত্যু ঘটে।’
কথাগুলো অন্য কারো নয়, হৃদয় মণ্ডলেরই লেখা।
ওই লেখার শেষভাগে তিনি লিখেছেন, ‘ধর্ম, রাজনীতি ও বিবাহের আলাপ আমার রুমে সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় অনাগ্রহী এই বিজ্ঞানশিক্ষক ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দুই সপ্তাহ ধরে কারাগারে বন্দি। দিনে দিনে তার মুক্তির দাবি জোরাল হচ্ছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালন হচ্ছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। হৃদয় মণ্ডলের মুক্তির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও সরব।
তিনি জামিন পাচ্ছেন কিনা, জানা যাবে রোববার। এদিন মুন্সীগঞ্জের আদালতে তার জামিন শুনানির কথা রয়েছে।
হৃদয় মণ্ডল মুন্সীগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে। তার স্ত্রী ববিতা হাওলাদার রাজধানীর ওয়ারির একটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে চাকরি করছেন। দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ হৃদয় বসবাস করছেন মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর এলাকায়।
হৃদয় মণ্ডলের বৈশিষ্ট্য এবং শিক্ষকতা জীবন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। তার স্ত্রী ববিতা হাওলাদার বলেন, ‘আমার স্বামীকে সব সময় প্রতিবাদী ভূমিকায় পেয়েছি। তিনি সব কিছু যুক্তি দিয়ে বলার চেষ্টা করেন। বিদ্যালয়ের সবার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো। কখনও শুনিনি তিনি কারও সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়েছেন।’
হৃদয় মণ্ডলের বাল্যবন্ধু তপন চন্দ্র সরকার একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাইমারি স্কুল থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত আমরা একই সঙ্গে পড়াশোনা করেছি। হৃদয় মণ্ডল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের কালাগাইয়ের চর সরকারি বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শেষ করে। বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ করেন কুচিয়ামোড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে।
‘শ্রীনগর কলেজ থেকে বিজ্ঞানে এইচএসসি পাশ করে ১৯৮২ সালে। পরে ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে।’
তপন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘হৃদয় বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে ২১ বছর ধরে শিক্ষকতা করছে। এর আগে অন্য একটি স্কুলে পড়িয়েছে। তবে এই মুহূর্তে সেটির নাম আমার মনে পড়েছে না।’
ব্যক্তি মানুষ হিসেবে হৃদয় মণ্ডল পরোপকারী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো অন্যায় দেখলে আমার বন্ধু সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করত। এই অভ্যাসটা ছোট বেলা থেকে তার ছিল। গরিব-দুঃখীদের সব সময় সহযোগিতা করত।’
সহকর্মী হিসেবে হৃদয় মণ্ডলের প্রশংসা করেন বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক রানী সাহা। তিনি বলেন, ‘স্যার খুব ভালো মানুষ। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। অনিয়ম চোখে পড়লেই তাকে প্রতিবাদ করতে দেখেছি। তিনি খুব ভালো পড়ান। কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার আমার চোখে পড়েনি।’
সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক সমমেহর বেগম সুমি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এই স্কুলে ১৯৯৬ সাল থেকে পড়াই। তবে আমি স্যারকে আরও আগে থেকে চিনি। তিনি ভালো মানুষ। মানুষের সঙ্গে সহজে মিশতে পারে। কারও সঙ্গে ঝগড়া হলেও তা বেশি দিনে মনের মধ্যে রাখতেন না।’
আরেক শিক্ষক তরুণ চন্দ্র বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আগে কখনও ওঠেনি। তিনি একটু জেদি প্রকৃতির। তবে মানুষ হিসেবে খারাপ না।’
হৃদয় মণ্ডলের সাবেক ছাত্র জয় ঘোষ বলেন, ‘স্যার আগে মেয়েদের সেকশনে পড়াতেন। কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক স্তরে ছেলেদের পড়াচ্ছেন। আমরা কখনও স্যারের খারাপ আচরণ দেখিনি। তবে অন্যায়-অনিয়ম হলে তাকে প্রতিবাদ করতে দেখেছি।’
আরেক ছাত্র রাহুল বর্মন, ‘স্যার ক্লাসে খুব ভালো পড়ান। তিনি আমাদের সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার করেননি।’
দশম শ্রেণির ছাত্র মো. আকাশ নিউজবাংলাকে বলে, ‘স্যার পড়ান ভালো। তবে সব সময় জোরে কথা বলতেন। এতে তাকে সবাই একটু ভয় পায়।’
নবম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় বলেন, ‘স্যার খুব মিশুক ছিলেন না। তার গাম্ভীর্য আমাদের ভীত করত। তবে তিনি খুব ভালো পড়ান।’
প্রতিবেশী সীমা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হৃদয় স্যার খুব একটা বাসা থেকে বের হতেন না। স্কুলের পাশে আমাদের বাসা হওয়ায় ছাত্ররা এই রাস্তা দিয়ে যেতে বলাবলি করত শুনতাম যে স্যার খুব জেদি ছিলেন। ছাত্ররা খুব ভয়ে থাকতো।’
গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির ক্লাসে হৃদয় মণ্ডল ধর্মকে একটি ‘বিশ্বাস’ এবং বিজ্ঞানকে ‘প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। গোপনে তার অডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় এক শিক্ষার্থী।
ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদের কাছে ওই শিক্ষকের নামে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ দেয়। প্রধান শিক্ষক কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তিন দিনের মধ্যে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে জবাব দিতে বলেন। তবে এর আগেই ২২ মার্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা জোটবদ্ধ হয়ে হৃদয় মণ্ডলের শাস্তির দাবিতে স্কুলে মিছিল বের করে।
বিদ্যালয় চত্বরের পাশের রিকাবীবাজার এলাকাতেও মিছিল হয়। এই মিছিলে বহিরাগতরা উসকানি দেয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
প্রধান শিক্ষক পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের খবর দেন। স্কুলে গিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে ভেস্তে যায় সেই আলোচনা। একপর্যায়ে হৃদয় মণ্ডলকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রাতে তার নামে মামলা করেন স্কুল সহকারী মো. আসাদ।
আসাদ শুরুতে জানান তিনি প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে মামলা করেছেন। তবে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদ দাবি করেন তিনি আসাদকে মামলা করতে বলেননি। তাকে পুলিশ মামলা করতে বলতে পারে। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজ উল ইসলাম (সদর সার্কেল) জানান, প্রশাসন থেকে মামলার জন্য কাউকে জোর করা হয়নি।
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য