বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল সব বিজ্ঞানশিক্ষকের কণ্ঠস্বর উল্লেখ করে যে বই পড়ানোর জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বই লেখার জন্য নিজের গ্রেপ্তার চেয়েছেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
জাতীয় জাদুঘরের সামনে শনিবার বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বক্তব্যে তিনি এমন কথা বলেন।
নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম এই সমাবেশ আয়োজন করে।
গত ২০ মার্চ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পড়ানোর সময় বিজ্ঞান ও ধর্ম নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন হৃদয় মণ্ডল। সেটি গোপনে রেকর্ড করে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
এরপর ২২ মার্চ স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে মিছিল করে। পরে পুলিশ হৃদয় মণ্ডলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সে রাতেই ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত ও বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী মামলা করেন। পরে হৃদয় মণ্ডলকে সে মামলায় জেল-হাজতে পাঠায় আদালত।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদ করতে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও ঘটনার প্রতিবাদ করে হৃদয় মণ্ডলের মুক্তি দাবি করেন।
বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তির দাবিতে শাহবাগে শনিবারের সমাবেশে জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি আজ এখানে দাঁড়িয়েছি মনে অনেক দুঃখ এবং কষ্ট নিয়ে। হতাশাও বলতে পারতাম, কিন্তু যেহেতু প্রতিজ্ঞা করেছি, জীবনে হতাশ হব না, সে কারণে হতাশ কথাটা ব্যবহার করলাম না। তবে আমি ক্ষুব্ধ; অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। কারণ কী আপনারা সবাই জানেন।
‘আমরা সব সময় শুনে আসছি, আমাদের দেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এটার প্রথম ধাপ হচ্ছে, আমরা যেন স্কুল-কলেজে আমাদের সন্তানকে সঠিকভাবে বিজ্ঞান শেখাতে পারি। ঠিক সেই দায়িত্বটি পালন করতে গিয়েছিলেন হৃদয় মণ্ডল। শুধু এ কারণে তাকে হাজতে থাকতে হচ্ছে। এটি আমাদের দেশ, আমার বিশ্বাস হতে চায় না। এটি কীভাবে সম্ভব?’
এই সাহিত্যিক বলেন, ‘একজন মানুষ, একজন শিক্ষক তার দায়িত্ব পালন করেছেন। বিজ্ঞান পড়াচ্ছেন এবং সেখানে কোনো একজন ছাত্র কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেন এবং তিনি সেখানে সে প্রশ্নের সবচেয়ে যৌক্তিক উত্তরটি দিচ্ছেন। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে হাজতে রাখা হয়েছে। এটা বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।
‘আমার দুঃখটা কোথায়? যে বিজ্ঞান পড়াতে গিয়ে তিনি নিগৃহীত হচ্ছেন বা হয়েছেন, সেই বিজ্ঞান বইগুলো আমরা মিলে লিখেছিলাম। এখানে সৌমিত্র আছে, সে বায়োলজি বই লিখেছিল, আমি পদার্থবিজ্ঞানের বই লিখেছিলাম এবং আমরা সবাই মিলে বইগুলো সম্পাদনা করেছিলাম। সেই বই পড়াতে গিয়ে তার কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে।’
বক্তব্যে জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি বলেছি অলরেডি, যে কথাগুলো উচ্চারণ করার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যে কারণে হাজতে রাখা হয়েছে, যে কারণে জামিন দেয়া হচ্ছে না, হুবহু এই কথাগুলো শুধু আমি না, পৃথিবীর সব বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ এ কথাগুলো বলে থাকে এবং উচ্চারণ করে থাকে।
‘তাহলে এটা কীভাবে সম্ভব, আমরা বাইরে ঘোরাফেরা করছি আর তিনি জেলখানায় আছেন। আমরা কেন জেলে নাই, আমাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না?’
এই অধ্যাপক বলেন, ‘যা-ই হোক, দেরিতে হলেও আমরা দেখছি, দেরিতে হলেও আমাদের দেশের মানুষ বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবাদ করছেন।’
এ ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, বিষয়টি ঘটেছিল মার্চ মাসের ২২ তারিখে। কিন্তু তখন তারা এটি নিয়ে বেশি নাড়াচাড়া করেনি। তখন ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার সময়। তারা বুঝেছিল এ সময় সাম্প্রদায়িকতার বিষয়ে কথা বলে তেমন লাভ হবে না। কখন শুরু করেছে? যখন রমজান শুরু হয়েছে তখন। তখন চেতনা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। সেই ফাঁদে পা দিয়ে আমাদের পুলিশ বাহিনী হৃদয় মণ্ডলকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে গেছে।’
‘আমরা এখানে আজ সবাই মিলে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে চাই। আমরা বলতে চাই, এ দেশটা আমাদের, এ দেশটাকে আমরা ভালোবাসি। এ দেশটাকে আমরা জ্ঞানভিত্তিক দেশে পরিণত করতে চাই,’ বলেন তিনি।
জাফর ইকবাল বলেন, ‘এ জন্যই হৃদয় মণ্ডলের মতো যে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, তাদের আমরা অভিনন্দন জানাতে চাই। এ ঘটনা যেন বাংলাদেশে আর না ঘটে আমরা সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের প্রিয় দেশ, এই দেশটি আমাদের। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে যখন হেফাজত দাবি করেছিল টেক্সট বই থেকে অনেক লেখা সরিয়ে দিতে হবে, সেই টেক্সটগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। আমরা তখন প্রতিবাদ করেছিলাম। আমাদের কথাকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
‘কিন্তু একসময় তারা দেখতে পারল এই হেফাজত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে নদীতে ফেলে দেয়ার কথা উচ্চারণ করেছে। সরকারের তখন বোধোদয় হয়েছে। এখানেও সেই একই ব্যাপার। আমরা একই কথা বলতে চাই, আমরা মাত্র বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি। আপনারা সবাই জানেন, বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অসাম্প্রদায়িক লোক কেউ ছিলেন না। তিনি সব মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য তার দল আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম কথাটি সরিয়ে আওয়ামী লীগ করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সব মানুষ যেন দলটি বহন করে। সেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর পর এখন আমরা যদি এ দেশে এমন একটি সাম্প্রদায়িক ঘটনা দেখতে পাই, সেটা আমাদের পক্ষে মেনে নেয়া খুব কষ্টকর।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করব, আপনারা আপনাদের দায়িত্বটুকু পালন করেন। কারণ ঘটনাটা ঘটার পরও আমি অনেক দিন পরে এর খবর পেয়েছি।
‘আমি কেন এতদিন পর খবরটি পেয়েছি তা জানি না। কেন সংবাদমাধ্যমে, টেলিভিশনে খবরটি আসেনি, সেটা আপনাদের কাছে জানতে চাই। অনুগ্রহ করে সত্য ঘটনাটি তুলে ধরুন। বাংলাদেশি আপনাদের এবং আমাদের হৃদয় মণ্ডল এবং তার মতো শিক্ষকদের। আমরা সবাই মিলে আমাদের দেশটাকে গড়ে তুলব- এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
সমাবেশে মানবধিকারকর্মী খুশি কবীর বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ধর্মীয় রাষ্ট্র থেকে নিজেকে আলাদা করে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখন যা ঘটছে বা ঘটতে দেয়া হচ্ছে, এটির জন্য যদি আমরা স্পষ্টভাবে প্রতিবাদ না করি বা রুখে না দাঁড়াই, তাহলে আমরা আবার পিছিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষককে ছাত্ররা অনেক প্রশ্ন করতে পারে বা বুঝার জন্য অনেক কিছু জিজ্ঞেস করতে পারে। এটি তাদের অধিকার আছে। কিন্তু বিজ্ঞান বিজ্ঞানই৷ বিজ্ঞানের ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে পড়াশোনা এবং বিষয়গুলো বুঝানোর বিষয়ে যদি আপত্তি থাকে... সবচেয়ে জঘন্য ব্যাপার হলো, যে শিক্ষক, ছাত্র বা ছাত্রের অভিভাবকও না, সে তার ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত এনেছে দাবি করে মামলা ঠুকে দিয়েছে। আর সাথে সাথে শিক্ষককে গ্রেপ্তার এবং এই মামলায় জামিন না মঞ্জুর করা হচ্ছে। এটি কোন ধরনের কথা? এটি কোন ধরণের রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি?’
গৌরব একাত্তরের সভাপতি এসএম শাহিন বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গি মস্তিষ্কের যারা সাম্প্রদায়িক শক্তি তারা আজ নতুনভাবে নতুন মোড়কে আমাদের ঘিরে রাখার চেষ্টা করছে। আর আমরা গুটিকয়েক মানুষ, যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তারা চিৎকার করছি। এখন শুধু কি আমরা চিৎকার করব নাকি প্রতিরোধের ডাক দেব?’
বক্তব্য শেষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ প্লাটফর্মের অন্যতম সংগঠক আকরামুল হক।
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই শুনানিতে যদি শিক্ষকের মুক্তি না হয় তাহলে আমরা আগামী ১৩ এপ্রিল বুধবার ফের শাহবাগে সমাবেশ করব।’
যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মাসুমের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি বরিন্দ্র কুমার নাথ, অগ্নি ফাউন্ডেশনের নেত্রী ক্রিস্টিয়ানা, মাইনরোটি রাইটস ফোরাম বাংলাদেশের সহসভাপতি খন্দকার এনায়েত মজুমদার, শিক্ষাবিদ ড. রতন সিদ্দিকি, জনরাষ্ট্র আন্দোলনের সদস্য সচিব কামরুল হোসেন, অ্যাডভোকেট বিকাশ চন্দ্র জয় প্রমুখ।
আরও পড়ুন:অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
উপদেষ্টা আজ সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়, মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণ যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর হবে।
পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগ ও পদায়ন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এবার বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদায়ন অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। তাই সবাইকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাদককে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি উল্লেখ করে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকার কথা বলেন।
দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কৃষকরাই এদেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল কারিগর। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকেরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এসময় পতিত কৃষিজমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সিলেটের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
উপদেষ্টা এর আগে বিজিবি'র সিলেট সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স এবং সিলেট পুলিশ লাইন পরিদর্শন করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’
সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।
এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সারাদেশে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত প্রযুক্তি সুবিধাপ্রাপ্ত লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলায় নীতিগত সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা একথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নারীদের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ সকল অপকর্ম প্রতিরোধে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাল্য বিয়ের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্রটি। মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে ছোট ছোট মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
মেয়েরা অবুঝ এজন্য অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। যাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী সহিংসতা শিকার না হয়।
উপদেষ্টা বলেন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা, নারী পক্ষ, হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ, সাইবার টিনস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাকসহ বাইশটি সংগঠন আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
উপদেষ্টা বলেন এই ২২ টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্মে যে সমস্ত শিক্ষিত তরুন যুবক যুবতীরা আছেন তাদেরকে টেকনোলজির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ও পরিবারের সচেতনতাই পারে একটি মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে। এজন্য সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।
ইলিশের উৎপাদন একদিকে কমছে, এতে প্রাকৃতিক কারণও রয়েছে। নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে, মেঘনা নদীর অববাহিকায় দূষণের মাত্রা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টি না হলে ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে পারে না। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকৃতিক কারণ ও তথাকথিত উন্নয়নের কারণে নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। বরিশাল ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সাধন শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ইলিশ একটি মাইগ্রেটরি মাছ এটি সমুদ্র থেকে নদীতে আসে এবং আবার ফিরে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে তা হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঝাটকা নিধন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালালেও এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়নি। এছাড়া অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের প্রাপ্যতা কমাচ্ছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তিনি জানান,খুব শীঘ্রই ঢাকায় একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নদী থেকে মাছ ধরে হাত বদলের সিন্ডিকেট বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি বাজারে মাছ পাবে এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আসবে।
ফরিদা আক্তার বলেন, উপকূল এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা গবেষণায় দেখেছি এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নির্মিত হচ্ছে। আমাদের দেশে গরু, ছাগল ও মহিষ পালন অন্তত মানুষের খাদ্য ও জীবন রক্ষার জন্য জরুরি। চারণভূমি বিষয়ে আমরা দেখছি যে অনেক কিছু পরিকল্পনা বিহীনভাবে তৈরি হচ্ছে। এতে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে সঠিক নীতি ও ব্যবস্থা নিলে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,পিকেএসএফ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জিজেইউএস নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. ওমর ফারুক, প্রেসিডেন্ট।
বক্তারা বলেন, নদী ও সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। মৎস্যজীবী, প্রশাসন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিতভাবে কাজ করলে মাছ চাষ ও সংরক্ষণ কার্যকর হবে।
এছাড়া তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মহিষ পালনের সম্ভাবনা অনেক, তবে জলবায়ু পরিবর্তন, চারণভূমির অভাব ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা খাতটির উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। গবেষণা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মহিষ পালনকে লাভজনক ও টেকসই খাতে রূপান্তর করা সম্ভব।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম মান বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শ্রম সচিব বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রটোকল অনুমোদন করেছে। আইএলও সংবিধান অনুযায়ী, অনুমোদিত ও অননুমোদিত উভয় ধরনের সনদের প্রয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সকল সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক। এই কমিটি আইএলও কনভেনশন ১৪৪-এর বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ নিশ্চিত করবে।
সচিব আরও উল্লেখ করেন যে, আইএলও এর ১১টি কনভেনশন (C-01, C-14, C-19, C-81, C-89, C-100, C-106, C-111, C-118, C-138, MLC-2006) নিয়ে আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে C-81 (শ্রম পরিদর্শন), C-100 (নারী ও পুরুষের সমান পারিশ্রমিক), C-111 (কর্মসংস্থান ও পেশায় বৈষম্য) এবং C-138 (ন্যূনতম কাজের বয়স) বিষয়ক চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইএলও সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার জেনেভাস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।
সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রাজমুঠান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ইমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন এর প্রতিনিধি , ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি , বেপজা প্রতিনিধি , NCCWE এর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য