× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Police will also fly in the sky
google_news print-icon

আকাশেও উড়বে পুলিশ

আকাশেও-উড়বে-পুলিশ
পুলিশের এয়ার উইং সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
এয়ার উইং গঠন করছে পুলিশ। এ জন্য রাশিয়া থেকে দুটি হেলিকপ্টার কেনা হচ্ছে। চার সহকারী পুলিশ সুপার বিমান চালনা শিখছেন।

এবার আকাশপথেও শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের তৎপরতা। পুলিশে যুক্ত হচ্ছে এয়ার উইং। এরই অংশ হিসেবে চার পুলিশ কর্মকর্তা বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাদের একজন নারী।

আর্মি এভিয়েশন স্কুলে গত বছরের মে মাস থেকে শুরু হওয়া প্রশিক্ষণ শেষ হবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে। সলো ফ্লাই বা কো-পাইলট ছাড়া একক উড্ডয়ন সম্পন্ন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত এই চার পুলিশ কর্মকর্তা।

তারা হলেন বিসিএস ৩৫ ব্যাচের মো. মুশফিকুল হক, সারোয়ার হোসেন, ৩৬ ব্যাচের ফাতেমা তুজ জোহরা ও ৩৭ ব্যাচের আবুল হোসাইন। পুলিশ এয়ার উইংয়ে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত এই চার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি)।

এয়ার উইংয়ে যুক্ত হওয়া, বিমান চালনার প্রশিক্ষণ নেয়া, একা একা উড্ডয়ন এবং ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে এই চার পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।

সারোয়ারের কাছে পুলিশে এসে পাইলট হওয়া স্বপ্নের মতো

এএসপি সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘পুলিশ এয়ার উইংয়ে সুযোগ পাওয়াটা স্বপ্নের মতো। ভলান্টারি কাজ করার জন্য আবেদন চাওয়া হয়। আমি আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করি। ‘পুলিশের এয়ার উইং নতুন, আমিও প্রফেশনে নতুন। ভালো-খারাপ সেটা ভাবার খুব কম সময় পেয়েছি। নতুনভাবে কাজ করার সুযোগ এসেছে। আমি সেটা গ্রহণ করেছি।’

একজন পাইলট হওয়ার জন্য যতগুলো ধাপ পার করে বাছাই করা হয়, পুলিশের চারজনের ক্ষেত্রেও এ ধাপগুলো পার করতে হয়েছে বলে জানান সারোয়ার।

তিনি বলেন, ‘এয়ার ফোর্স বা আর্মি এভিয়েশনে পাইলট নেয়ার জন্য যত রকমের টেস্ট নেয়া হয়ে থাকে, তার প্রত্যেকটি ধাপ অতিক্রম করার পরই আমরা সিলেক্টেড হয়েছি। মেডিক্যাল, সাইকোলজি, ফ্লাই টেস্ট সবকিছু দিয়েই আমরা এসেছি।’

আকাশেও উড়বে পুলিশ

সৈয়দপুরে এক মাস ট্রেনিং হয়েছে। সেখানেই সলো ফ্লাই করার ক্লিয়ারেন্স পান সারোয়ার। তিনি বলেন, ‘আমার ও মুশফিকের সলো ফ্লাই সম্পন্ন হয়েছে একই দিনে। ২৩ নভেম্বর। আমি আগে গেলাম। আধাঘণ্টা একটি সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টরের সঙ্গে ফ্লাই করতে হয়, যিনি আমার বেসিক ইনস্ট্রাক্টর না।

‘উনি এক্সাম নেন। আমার সঙ্গে ৪০ মিনিট ফ্লাই করার পর আমাকে ক্লিয়ার করলেন। এরপর একই এয়ারক্রাফটে মুশফিকের সলো সম্পন্ন হলো। এটা হয়েছে সৈয়দপুরে।’

প্রশিক্ষণে সলো ফ্লাইটটা হলো ১৫ মিনিটের একটা সার্কিট কমপ্লিট করা। রানওয়ে থেকে উড্ডয়ন করে ১ হাজার ফুট ওপরে রানওয়ে চক্কর দিয়ে ল্যান্ড করা। একটি সলো ফ্লাইট সম্পন্ন করতে সাধারণত ১৫ মিনিট লাগে। উড্ডয়নের পর ল্যান্ডিং সবচেয়ে কঠিন বলে ধরা হয়। রানওয়ে থেকে উড্ডয়ন করার পর কোনো কারণে ল্যান্ড করতে সমস্যা হলে আবারও সার্কিটটি পূর্ণ করে নেমে আসতে হয়।

আর্মি এভিয়েশন স্কুল এবং এর ইনস্ট্রাক্টররা পূর্ণ সহযোগিতা করছেন বলে জানান সারোয়ার। তিনি বলেন, ‘উনারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমরা এতে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ লক্ষ করি নাই। কখনও কখনও আমরা সুবিধা পেয়েছি। স্যারেরা খুবই আন্তরিক।’

প্রশিক্ষণ শেষ করার পর সামনে অনেক দায়িত্ব আছে বলে মনে করেন এএসপি সারোয়ার। তিনি বলেন, ‘আমরা পাইওনিয়ার। ফ্লাইং ছাড়াও আমাদের কাঁধে অনেক দায়িত্ব আসবে। সেগুলো আমাদের পালন করতে হবে। পুলিশ এয়ার উইং শুধু পাইলট নিয়ে না; পাইলট, গ্রাউন্ড স্টাফ, এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স, ইঞ্জিনিয়ার, ক্রুসহ সবই লাগবে। র‌্যাবের এয়ার উইং দাঁড়াতে ৮-১০ বছর সময় লাগছে। আমাদের আরও অনেক পথ যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একজন অপারেশনাল পাইলট হতে ৩০০ ঘণ্টা ফ্লাইং অভিজ্ঞতা লাগে। আমাদের তো মাত্র শুরু। আমাদের গড়ে ৩৫ ঘণ্টার মতো হয়েছে। হেলিকপ্টার এলেই আমাদের পাইলট হিসেবে দায়িত্ব দেবে এমন না। আর্মি এভিয়েশন থেকে হয়তো পাইলটরা আসবেন। আমরা কো-পাইলট হিসেবে থাকব। আমাদের সক্ষমতা এলে বসব।’

এএসপি সারোয়ারের বাড়ি কুমিল্লায়, জন্ম রাঙ্গামাটিতে। এসএসসি পাস করেন রাঙ্গামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। এইচএসসি আদমজী ক্যান্টনমেন্টে। পরিসংখ্যানে অনার্স সম্পন্ন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আর আইবিএ থেকে মাস্টার্স।

অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মুশফিকুল পেয়েছেন পছন্দের কাজ

ছোটবেলা থেকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার চালানো ভীষণ পছন্দ বিসিএস (পুলিশ) ৩৫ ব্যাচের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মুশফিকুল হকের। পাইলট হয়ে বিমান চালনার সুযোগ সামনে এলে তাই এক মুহূর্ত না ভেবে আবেদন করে ফেলেন।

মুশফিকুল বলেন, ‘পছন্দের জায়গা থেকেই আমি পুলিশের পেশা বেছে নিয়েছিলাম। আমার প্যাশন হচ্ছে যেকোনো কিছু ড্রাইভ করা, কার হোক বা বাইক হোক। অ্যাডভেঞ্চার আমার প্রিয়। পুলিশ এভিয়েশন উইংয়ে যুক্ত হয়ে পাইলট হওয়ার সুযোগটা যখন এলো, তখন মনে হয়েছে, এটা পুলিশে একটা ডাইমেনশন ক্রিয়েট করবে, যেখানে আমি অংশগ্রহণ করতে পারব। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটা বড় একটা সুযোগ, যা আমি হাতছাড়া করতে চাইনি।’

তিনি বলেন, ‘একে তো পুলিশ, তার ওপর পাইলট। দেশকে সার্ভ করার আরও বেশি সুযোগ পাব। নতুন ডাইমেনশন যুক্ত হবে। উন্নত সব দেশেই পুলিশের এভিয়েশন আছে।’

আকাশেও উড়বে পুলিশ

আরেক সহকর্মী সারোয়ারের সঙ্গে একই দিনে সলো ফ্লাই সম্পন্ন করেন মুশফিকুল। তিনি বলেন, ‘আমাকে ১১ ঘণ্টা ফ্লাই করিয়েছিলেন। এরপর সলো ফ্লাইয়ের ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়। একা একা ফ্লাই করে সুন্দরভাবে ল্যান্ড করার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। ল্যান্ড করার সময়টায় একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ফিল করেছি। মনে হচ্ছিল, পুলিশের জন্য এটি একটি মাইলফলক, পাশাপাশি নিজের পারসোনাল লাইফে একটা ভ্যালু অ্যাড করলাম। সবকিছু মিলিয়ে একটি অসাধারণ মোমেন্ট ছিল।’

এয়ার উইং এবং ‍নিজের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুল বলেন, ‘এখনকার টাস্কটা ভালোভাবে সম্পন্ন করা প্রথম টার্গেট। এরপর কাজটা হবে পুলিশ এয়ার উইংকে পূর্ণাঙ্গ করার পথে এগিয়ে নেয়া। প্রথম হিসেবে আমাদের কাঁধে অনেক দায়িত্ব থাকবে। আমাদের টার্গেট থাকবে পরে যারা আসবে, তারা যেন আমাদের দেখে উৎসাহ পায়, সেই পথটা তৈরি করা। পুলিশে যোগদান করে অন্যভাবেও নিজের ক্যারিয়ার করা যায়, এটা পুলিশ এভিয়েশন দেখে নতুনরা ভাবতে পারবে। পুলিশ বাহিনী ও নিজেকে গর্বিত করার জন্য কাজ করে যাব।’

মুশফিকুল বলেন, ‘অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি রাষ্ট্রকে সেবা দেয়াই আমার মূল লক্ষ্য।’

মুশফিকুলের জন্ম নাটোরে। এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন রাজশাহীতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন।

ভিন্ন জগতে পা রাখা ফাতেমা তুজ জোহরার

এয়ার উইংয়ের অংশ হওয়াকে একটি বড় সুযোগ হিসেবেই দেখেছেন ৩৬তম ব্যাচের সহকারী পুলিশ সুপার ফাতেমা তুজ জোহরা।

তিনি বলেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেই, আবেদন করব। কারণ এটা সম্পূর্ণ আলাদা একটা জগৎ। আমি এটাকে এক্সপ্লোর করব। আমি চেষ্টা করব, এই সুযোগটা যেন নিতে পারি। তখনও তো জানতাম না, আমি সুযোগ পাব। তবে আমি প্রচণ্ড আগ্রহবোধ করি। খুব দ্রুতই আবেদন করি।’

আকাশেও উড়বে পুলিশ

ফাতেমা সলো ফ্লাই সম্পন্ন করেন ১৬ মার্চ। এ অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের ট্রেনিং এয়ারক্রাফট দিয়ে সার্কিটে ঘোরা শেখানো হয়। ইনস্ট্রাক্টর যখন প্রশিক্ষণার্থীর বিষয়ে পুরোপুরি আস্থা পান, তখনই তাকে সলো করতে দেয়া হয়। ওড়ার প্রশিক্ষণ শুরুর পর থেকেই সবার মাথায় ঘুরতে থাকে কখন সলো ফ্লাই করব। আমারও তাই ছিল।’

ফাতেমা বলেন, “ইনস্ট্রাক্টর যখন বলেন, ‘ইউ আর ক্লিয়ার ফর সলো’, তখন থেকেই দারুণ একটা উত্তেজনা কাজ করতে থাকে। সলোতে যখন কাউকে পাঠানো হয়, তখন তা প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থী সবার জন্যই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। সবাই উদ্গ্রীব হয়ে অপেক্ষা করে।”

প্রথম সলো উড্ডয়নের দিনটির বিবরণ দিতে গিয়ে ফাতেমা বলেন, ‘সবাই অপেক্ষা করছে, এমন একটি মুহূর্তে একা একা টেকঅফ করা, সেফলি ল্যান্ড করে যখন নেমে আসলাম, তখনও মনে হচ্ছিল উড়ছি।

‘একে তো সলো অনেক প্রতীক্ষার বিষয়। সেটা স্বস্তির সঙ্গে শেষ হওয়া একটা কমিটমেন্টের বিষয়। আর প্রচণ্ড ভালো লাগা তো থাকেই। সলো শেষে ইনস্ট্রাক্টর, ব্যাচমেট সবাই অপেক্ষা করতে থাকেন। দারুণ সেলিব্রেশন হয়।’

ফাতেমা বলেন, ‘পুলিশ এভিয়েশন উইং এবং আমরা চারজন– সবই নতুন। উইং ও আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠছি।’

ফাতেমা জানেন, দুর্গম এলাকায় অপারেশন, দুর্যোগকালীন উদ্ধার অভিযান, আকাশপথে নজরদারি–এগুলোই হবে পুলিশের এয়ার উইংয়ের কাজ, সে কাজটা পেশাদারিভাবে করতে চান তিনি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের কাজে গতি আনা তার লক্ষ্য থাকবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা তো মাত্র চারজন। পূর্ণাঙ্গ এয়ার উইংয়ের জন্য আমাদের আরও অনেক পথ হাঁটতে হবে। নতুন নতুন ছেলেমেয়েরা এই উইংয়ে যুক্ত হবে। তারুণ্য ও দক্ষতা দিয়ে দেশের মানুষকে পুলিশ আরও ভালো সেবা দিতে পারবে।’

ফাতেমার জন্ম পাবনায়। রাজবাড়ীর পাংশা গার্লস হাই স্কুল থেকে এসএসসি, পাংশা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন তিনি। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্সে।

আরও পড়াশোনা করার একটা আকাঙ্ক্ষা ফাতেমার বরাবরই ছিল, তবে বন্ধু-সহপাঠীদের বিসিএস দিতে দেখে তিনিও পরীক্ষা দেন। পছন্দের তালিকায় রাখেন পুলিশ ক্যাডার। সেটা এক শিক্ষকের পরামর্শে।

সুপ্ত বাসনা পূরণ হতে চলছে আবুল হোসাইনের

শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন পছন্দ ৩৭তম ব্যাচের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল হোসাইনের। ছোটবেলা থেকে বিমানচালক হওয়ার বাসনা ছিল তার। পুলিশ এয়ার উইংয়ে যুক্ত হওয়ার সুযোগ তার সেই সুপ্ত বাসনা পূরণ করে দিয়েছে।

আবুল হোসাইনের ভাষ্য, ‘আমি মনে করি, মানুষের সুপ্ত বাসনাগুলো আল্লাহতায়ালা কোনো না কোনো দিন পূরণ করে দেন। ছোটবেলায় মনের অজান্তে বলতাম, বড় হয়ে পাইলট হব। সেনাবাহিনীতে যোগদানের ইচ্ছা ছিল। সেটা হয়নি। পরবর্তী সময়ে পুলিশে জয়েন করি। ডিফেন্স বিষয়টা আমার পছন্দ। পাইলট হওয়ার সুযোগ সামনে আসার পর আমি এক মুহূর্তও ভাবিনি। পছন্দ আমার সামনে এসে হাজির হয়।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ দেশের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এয়ার উইংটা হলে আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সেবা পৌঁছে দিতে পারব।’

আকাশেও উড়বে পুলিশ

সলো ফ্লাইয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই বয়সে এসে ফ্লাইং প্রশিক্ষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি যে সলো কমপ্লিট করতে পেরেছি, এর পুরো ক্রেডিট আর্মি অ্যাভিয়েশনের প্রশিক্ষকদের। আমাদের চেষ্টা-একাগ্রতা তো ছিল, সঙ্গে উনাদের নির্দেশনা।’

তিনি বলেন, ‘শুরুতে আমার অনেক ভুল হচ্ছিল। আমার স্ট্রাগল করতে হয়েছে। সৈয়দপুরে প্রশিক্ষণের শেষ দিন পর্যন্ত তারা আমাকে নিয়ে চেষ্টা করেছেন। শেষ দিনে আমার সলো ক্লিয়ার হয়েছে। আমার একজন প্রশিক্ষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোছাদ্দেক। তার নাম না বললেই না। উনার কারণেই আমি সলোটা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি।’

আবুল হোসাইন মনে করেন, এয়ার উইংয়ের বিমানচালকের কাজ অনেক বড় দায়িত্ব। তাদের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সেই প্রত্যাশা পূরণই এখন তার লক্ষ্য।

কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন আবুল হোসাইন। ভিক্টোরিয়া কলেজে এইচএসসি এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিজিক্স থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন।

এখনও অনেক পথ বাকি

পুলিশ এয়ার উইংয়ের জন্য রাশিয়া থেকে দুটি হেলিকপ্টার কেনার অনুমোদন হয়েছে। চার সহকারী পুলিশ সুপারের বিমান চালনার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কয়েকজন এসআই ও কনস্টেবল র‌্যাবের এয়ার উইংয়ে যুক্ত হয়ে মেনটেইনেন্স শিখছেন। পুলিশ এভিয়েশনের জন্য আরও জনবল প্রয়োজন হবে।

১৬৮ জনবলের একটি প্রস্তাব পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, তবে তা সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।

পুলিশ এয়ার উইংয়ের বর্তমান কার্যক্রম দেখভাল করছেন পুলিশ সদরদপ্তরের পুলিশ সুপার আফ্রিদা রুবাই। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ এয়ার উইং হতে সময় প্রয়োজন। মাত্র তো শুরু হলো। ১৬৮ জন লোকবলের একটি চাহিদা তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় সেটা যাচাই-বাছাই করবে। অনুমোদন হওয়ার পর তাদের প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন পড়বে।’

র‌্যাব প্রথম পাঁচ বছর এয়ার উইং মেইনটেন্যান্স সাপোর্ট দিতে পারে বলে জানান আফ্রিদা রুবাই। তিনি বলেন, ‘আমরা আর্মি হেডকোয়ার্টার্সের সঙ্গে একটা প্রসেস করছি, যাতে তারা প্রথম পাঁচ বছর সাপোর্টটা দেয়। এটা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এখনও আমাদের কোনো জনবল নেই। সবকিছু গুছিয়ে আনতে আরও সময় লাগবে।’

২১ মার্চ এক অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এভিয়েশন উইং চালুর ফলে বাংলাদেশ পুলিশ ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জন করবে। এটি দুর্গম অঞ্চলে দ্রুত যোগাযোগ, গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা, তল্লাশি অভিযান এবং উদ্ধার কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’

আরও পড়ুন:
জুয়ার আসরে অভিযানে গিয়ে মার খেলেন ৬ পুলিশ
পুলিশের দেয়া ঘরে বিধবার হাসি
ধর্মনিরপেক্ষতাবিরোধী পোস্ট দেয়া নিষেধ পুলিশের
পিরোজপুরে ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন কার্যক্রম চালু
সালথার সেই ওসিকে বদলির আদেশ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Live to appeal hearing next Sunday in the August 28 grenade attack case

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।

এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।

তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।

আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মন্তব্য

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কাঁপল সিলেট

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The government is working to implement the demands of the workers Home Ministry

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে মোড়া লা রিভের ঈদ কালেকশন
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Environment adviser

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: ইউএনবি
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।

তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।

‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’

সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন:
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিদিন ২ হাজার শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদন
ছুটির দিনে বাতাসের নিম্ন মানে সপ্তম ঢাকা
সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
ছুটির দিনে মানে উন্নতি, তবু ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Holy Lilatul Kadar today

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।

আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।

মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।

৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।

‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’

হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।

এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।

পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The chief adviser to create a clear roadmap to build a prosperous Asia

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‌এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।

‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।

আরও পড়ুন:
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

p
উপরে