× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Imports exceed exports by two lakh crore rupees
google_news print-icon

রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি ২ লাখ কোটি টাকা

রপ্তানির-চেয়ে-আমদানি-বেশি-২-লাখ-কোটি-টাকা
আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ার কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। পাশাপাশি জাহাজ ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায়ও বাড়তি খরচ হচ্ছে। গত বছরের মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৬০ ডলার। সেই তেল এখন ১০০ ডলারের বেশি। খাদ্যপণ্য, ভোজ্যতেল, মূলধনি যন্ত্রপাতি, শিল্পের মধ্যবর্তী কাঁচামাল- বেড়েছে প্রায় সব আমদানি পণ্যের দাম।

আমদানির জোয়ার, পাশাপাশি বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে বাণিজ্য ঘাটতি চূড়ায় উঠেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৩০ কোটি ৬০ লাখ (২২.৩০ বিলিয়ন) ডলার। বর্তমান বিনিময়হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ২০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা।

এই অঙ্ক গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (১২ মাস, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন) প্রায় সমান। আর জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।

২০২০-২১ অর্থবছরের এই আট মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। আর পুরো অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল ২ হাজার ২৮০ কোটি লাখ (২.৮০ বিলিয়ন) ডলার।

এর আগে আট মাসে এত বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতির মুখে কখনই পড়েনি বাংলাদেশ। আর এর ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ১২ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন (১ হাজার ২৮৩ কোটি)। অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি ২ লাখ কোটি টাকা

পণ্য আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্য ও লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতিতে এই মাইলফলক অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর ও মঞ্জুর হোসেন।

তারা বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমদানির লাগাম টেনে ধরা। যে করেই হোক এটা করতে হবে। তা না হলে সংকটে পড়বে অর্থনীতি।’

করোনা মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই আমদানিতে জোয়ার বইছে। আর এতে আমদানি-রপ্তানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৪ হাজার ৩৪৭ কোটি ৭০ লাখ (৫৪.৩৭ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৬ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরের এই আট মাসে ৩ হাজার ৭০৬ কোটি ৭০ লাখ (৩৭.০৬ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩ হাজার ২০৭ কোটি ১০ লাখ (৩২.০৭ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।

এ হিসাবেই অর্থবছরের আট মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।

সেবা বাণিজ্যে ঘাটতিও বাড়ছে

জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫০ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ১৭৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।

লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার

২০২১-২২ অর্থবছর শুরুই হয়েছিল লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ে। দিন যত যাচ্ছে, ঘাটতি ততই বাড়ছে। প্রথম তিন মাসে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৩১ কোটি ৪০ লাখ (২.৩১ বিলিয়ন) ডলার। চার মাস শেষে (জুলাই-অক্টোবর) তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। জুলাই-নভেম্বর সময়ে ঘাটতি ছিল ৬ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।

ডিসেম্বর শেষে তা আরও বেড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। সবশেষ জানুয়ারি শেষে ১০ দশমিক শূন্য ১৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে।

ফেব্রুয়ারি শেষে তা ১২ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। এর আগে কোনো অর্থবছরেও এত ঘাটতিতে পড়েনি বাংলাদেশ।

করোনা মহামারির কারণে আমদানি কমায় ৯২৭ কোটি ৪০ লাখ (৯.২৭ বিলিয়ন) ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের বছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

তবে আর্থিক হিসাবে এখনও বড় উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে এই উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৩ কোটি ১০ লাখ (১০.৯৩ বিলিয়ন) ডলার। গত অর্থবছরের এই সময়ে ৬৪৭ কোটি ৪০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।

রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি ২ লাখ কোটি টাকা

করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ অন্য দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত ঋণসহায়তা পাওয়ায় আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত হয়েছে বলে জানান আহসান মনসুর।

তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের আট মাসে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে ৫৯০ কোটি (৫.৯ বিলিয়ন) ডলারের ঋণসহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি।

২০২০-২১ অর্থবছরের এই আট মাসে ৩৭৩ কোটি ৬২ লাখ ডলারের ঋণসহায়তা পেয়েছিল বাংলাদেশ।

তবে জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে সামগ্রিক লেনেদেনে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২২ কোটি ২০ লাখ (২.২২ বিলিয়ন) ডলার। অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ৬৮৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।

রেমিট্যান্স কমেছে ১৯.৪৬ শতাংশ

জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি (১৩.৪৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম।

২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে ১৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

যে কারণে বেড়েছে আমদানি ব্যয়

আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ার কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। পাশাপাশি জাহাজ ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়াও বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।

গত বছরের মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৬০ ডলার। বৃহস্পতিবার সেই তেল ১০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় এর দর ১৩৯ ডলারে উঠে গিয়েছিল।

গত আট মাসে জ্বালানি তেল আমদানিতে খরচ বেড়েছে ৭৩ শতাংশ। মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে ৫৬ শতাংশ। শিল্পে কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৩২ শতাংশ।

মহামারির পর চাহিদা বাড়ায় খাদ্যপণ্য (বিশেষ করে গম), ভোজ্যতেল, শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনি যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি), শিল্পের মধ্যবর্তী কাঁচামালসহ সব ধরনের জিনিসের দামই বেড়েছে।

গত বছরের মার্চে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৮৫০ থেকে ৯০০ ডলার। বর্তমানে এই তেল ১ হাজার ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। মাঝে দর ১ হাজার ৮০০ ডলারে উঠেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মোট আমদানি ব্যয়ের ৭০ শতাংশের মতো খরচ হয়েছে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও অন্য পণ্য আমদানিতে। একই সঙ্গে এ খাতে নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানিও বেড়েছে।

তৈরি পোশাকের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে তুলা। গত বছরের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে ৩০ কাউন্ট মানের সুতার দাম ছিল ৩ ডলারের মতো। বছরের মাঝামাঝি সময়ে তা ৪ দশমিক ২০ থেকে ৪ দশমিক ৩০ ডলার পর্যন্ত উঠে যায়। এখন তা ৪ দশমিক ১০ থেকে ৪ দশমিক ১৫ ডলারে নেমেছে।

যে করেই হোক আমদানি কমাতে হবে

অস্বাভাবিক আমদানিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক হয়েছে আর নয়। আমাদের কোমরের বেল্টটা এখন টাইট করতে হবে। যে করেই হোক আমদানি কমাতেই হবে। এ ছাড়া এখন আর অন্য কোনো পথ খোলা নেই।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে অর্থনীতিতে আমদানি বাড়াকে ইতিবাচকভাবে দেখা হয়ে থাকে। বলা হয়, আমদানি বাড়লে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে, কর্মসংস্থান বাড়বে। এতদিন আমরাও সেটা বলে আসছি। কিন্তু এখন অসনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। ৫০ শতাংশ আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির ধাক্কা সামলানোর ক্ষমতা আমাদের অর্থনীতির নেই। এখন এটা কমাতেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘দাম বাড়ায় সরকারের জ্বালানি তেলে ভর্তুকি কয়েক গুণ বেড়ে গেছে, গ্যাসে বেড়েছে, সারে বেড়েছে, বিদ্যুতেও বেড়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এবার ভর্তুকি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে বাজেট ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের চাপ পড়বে।’

এ ক্ষেত্রে এখন করণীয় কী- এ প্রশ্নের উত্তরে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করা আহসান মনসুর বলেন, ‘সরকারকে সাশ্রয়ী হতে হবে। একই সঙ্গে দেশের মানুষকেও সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কম খরচ করতে হবে। আমাদের অনেক কিছুই কিন্তু জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীল। গ্যাস, বিদ্যুৎ, সার, পানি- এসব কিছু উৎপাদনে তেলের প্রয়োজন হয়। এই সংকটের সময়ে এসব কিছু যেন মানুষ কম ব্যবহার করে।

‘পরিবহন খাতে যদি জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমানো যায়, তাহলে আমদানি খাতে খরচ কমবে। সরকারের ভর্তুকি কমবে। অন্যদিকে বিলাসবহুল পণ্য যাতে কম আমদানি হয়, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। প্রয়োজন নেই এমন পণ্য আমদানি থেকে এখন বিরত থাকতে হবে।’

একই কথা বলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক মঞ্জুর হোসেন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘যে পণ্যের খুব বেশি প্রয়োজন নেই, এলসি মার্জিন বাড়িয়ে এবং অন্য সব উদ্যোগ নিয়ে সেগুলোর আমদানি বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে পণ্য আমদানির আড়ালে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে।’

আরও পড়ুন:
আমদানির জোয়ারে বাণিজ্য ঘাটতি চূড়ায়
লেনদেন ভারসাম্যে বড় ঘাটতিতে বাংলাদেশ
আমদানির জোয়ারে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে তিন গুণ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
On the occasion of the martyrdom anniversary of Shaheed President Ziaur Rahman
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।

জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Return is not obligated to get a credit card and trade license purchased by savings

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।

এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Proposes to increase the special advantage of government employees in the budget

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Online shopping will be more expensive

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।

জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।

তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Inflation will come down to 5 percent this June Finance Advisor 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’

মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In the twilight of international finance the new challenge of IMF

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।

আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।

ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?

আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।

এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।

আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান

এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।

বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।

আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
There is no new surprise in the budget Devpriya Bhattacharya

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’

‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’

তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’

‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।

সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

মন্তব্য

p
উপরে