দেশে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবকাঠামো বাড়লেও সেবার সক্ষমতা বাড়েনি। জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসায় নানামুখী সংকটে পড়ছে রোগীরা। এদের একটি অংশ বেসরকারি হাসপাতালের দিকে ঝুঁকছে। তবে বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসায় উচ্চ ব্যয়ের কারণে রোগীদের বড় একটি অংশই স্বাস্থ্য সুরক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালে সক্ষমতা বাড়াতে সর্বোচ্চ জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সঠিক সেবা নিশ্চিত করা গেলে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে মানুষ। সরকারি হাসপাতালের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরবে। দরিদ্র মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের একটি কক্ষে এয়ারকন্ডিশনার (এসি) নষ্ট থাকায় বৈদ্যুতিক পাখা চালিয়ে ভ্যাপসা গরম কোনোভাবেই দূর করা যাচ্ছে না। ওই কক্ষে রোগীদের কারও কারও হাতে দেখা গেছে হাতপাখা, কারও শয্যার কাছে রাখা ছোট্ট টেবিল ফ্যান। ফাইল ছবি
দেশের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ২০১২ সালে ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ কর্মসূচি নেয়া হয়। ইতোমধ্যে ১০ বছর পার হলেও তাতে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো জনগোষ্ঠীকে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩০ সাল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, ‘এই কর্মসূচির গতি বাড়াতে সম্প্রতি একটি বৈঠক করা হয়েছে। তবে সরকারের একার পক্ষে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। দেশে বর্তমানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশকে স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৬০ শতাংশের চিকিৎসা সেবাও সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিশ্চিত করতে হবে।
‘দেশে জেলায় জেলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে যে সার্ভিসটা দেয়ার কথা তা জনগণ এখনও পাচ্ছে না। জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবাটি দেয়া সম্ভব হলে তারা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। সরকারি হাসপাতালে সেবায় মানুষের আস্থা ফিরবে। এই ব্যবস্থাপনাটা আগে ঠিক করতে হবে। এই সেবা কেন্দ্রগুলোতে যে দুর্বলতা রয়েছে তা চিহ্নিত করে ট্রাসফোর্স গঠনের মাধ্যমে এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে।’
বিভিন্ন জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় ওয়ার্ডের বারান্দার মেঝেতে দুই সারিতে শুয়ে আছে রোগী। কেউ আবার মেঝেতে জায়গা না পেয়ে শুয়ে আছেন ট্রলিতে। ফাইল ছবি
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়নে আমাদের বেশিকিছু বিষয়ে বাড়তি নজর দেয়া উচিত। প্রথমেই নগরের দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের বিষয়ে নজর দিতে হবে। হাসপাতালগুলোতে সেবার মান উন্নত করতে হবে। কারণ হাসপাতালগুলোর অবস্থা এমন যে সেখানে গিয়ে উল্টো অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বা রোগ বাঁধিয়ে ফেলেন। নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা বা নৈতিক ব্যবসা নিশ্চিত করার বিষয়টি জরুরি।
‘ওষুধের দামের ওপর কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বেসরকারি খাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একে নিয়মনীতির মধ্যে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।’
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যস্তবায়নে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায় থেকে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। কর্মসূচি চালু হওয়ার পর অনেক সময় চলে গেছে। মাত্র তিনটি জেলায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশে সব মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে একটি বড় বাধা হলো বৈষম্য। আমরা একটি অসম পৃথিবীতে বসবাস করছি। কিছু মানুষ সুস্বাস্থ্য ও উন্নত জীবনযাপন করছে। অন্যদিকে অধিকাংশ মানুষ কোনো রকমে বেঁচে থাকতে নিরন্তর যুদ্ধ করছে।
‘কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সুযোগের অভাব, আবাসন সংকট, শিক্ষার ক্ষেত্রে সীমিত সুযোগ, সংকটাপন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবা, লিঙ্গবৈষম্য, নিরাপদ পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানি, নির্মল বায়ু ও নিরাপদ খাদ্য সংকটসহ নানা সমস্যা বিদ্যমান। এসব সমস্যা মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে কর্মসূচি
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ বৃহস্পতিবার। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘আওয়ার প্লানেট আওয়ার হেলথ অর্থাৎ সুরক্ষিত বিশ্ব, নিশ্চিত স্বাস্থ্য। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শোভাযাত্রা বের করবে। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া বেলা ১১টায় ওসমানী মিলনায়তনে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার আগে আগে সরকার আবার ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি ঘোষণা করলেও ভ্রুক্ষেপ নেই সাধারণের। মাস্ক পরছে খুব কমসংখ্যক মানুষই।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু নির্দেশনা দিলেই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন আসবে না। এই নীতি বাস্তবায়নে প্রশাসনকে মাঠে থাকতে হবে।
গত ১৬ জুন থেকে প্রতি দিনই পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার টানা ১৪ দিন ৫ শতাংশের বেশি হওয়ায় এরই মধ্যে বাংলাদেশের করোনার চতুর্থ ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
যেদিন চতুর্থ ঢেউয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়, তার আগের দিন মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়, তাতে ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান, শপিং মল, বাজার, হোটেল-রেস্টুরেন্টে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক না পরলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকার আবার ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি ঘোষণা করলেও ভ্রুক্ষেপ নেই সাধারণের। মাস্ক পরছে খুব কমসংখ্যক মানুষই। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
তবে বুধবার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো নমুনা চোখে পড়েনি। নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাউকে মাঠেই পাওয়া যায়নি।
এটাও ঠিক, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনা যতটা প্রাণঘাতী ছিল, তৃতীয় ঢেউয়ে ছিল না ততটা। চতুর্থ ঢেউ যেদিন নিশ্চিত হয়, সেদিনসহ পর পর তিন দিন রোগী পাওয়া গেছে দুই হাজারের বেশি। তবে এই রোগীদের মধ্যে জটিলতা কম। হাসপাতালে চাপ কম, রোগীর মৃত্যুও প্রথম তিন ঢেউয়ের তুলনায় অনেক কম।
চতুর্থ ঢেউ নিশ্চিত হওয়ার দিন দুই হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হলেও ২৪ ঘণ্টায় শূন্য মৃত্যুর স্বস্তিদায়ক তথ্যও জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তবে জনগণের এমন উদাসীনতা চলতে থাকলে করোনা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে প্রভাতী উচ্চ বিদ্যানিকেতন ও ইস্পাহানী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঘুরে ছাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি বললেই চলে।
ইস্পাহানীর দশম শ্রেণির ছাত্রী তাহমিনা বিনতে রশিদ বলে, ‘এখন তো করোনা কমে গেছে। আর আমার করোনার টিকাও দেয়া হয়েছে, তাই মাস্ক তেমন একটা পরা হয় না।’
প্রভাতীর সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মারুফ হোসাইন বলে, ‘টিকা দেয়ার পর এখন আর করোনাকে ভয় পাই না। তাই সব সময় মাস্ক পরা হয় না।’
মাস্ক পরার বিষয়ে জনগণের এমন উদাসীনতা চলতে থাকলে করোনা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাহন পরিবহনে’ উঠে দেখা যায় অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। এ বিষয়ে কাউকে চিন্তিতও দেখা গেল না।
মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে একজন যাত্রী মুখ ভেংচিয়ে বলেন, ‘এমনি’।
করোনা বাড়ছে বলার পর তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরলে গরম লাগে।’
এটুকু বলেই মুখ উল্টোদিকে ঘুরিয়ে নিলেন।
একটি পরিবহন সার্ভিসের টিকিট কালেক্টর মোহাম্মদ তাওহীদ বলেন, ‘মানুষ বেশির ভাগই তো দেখি মাস্ক পরে না।’
তাওহীদ নিজেও মাস্ক পরেননি। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘আমার মাস্ক পরার সময় নাই। আগে কাজ করতে হবে।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা থেকে বাঁচতে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে সরকার একটি নির্দেশনা দিয়েছে, তবে তার বাস্তবায়ন চোখে পড়েনি। নো মাস্ক, নো সার্ভিস নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকাকে উদ্যোগী হতে হবে। একই সঙ্গে জনগণকে সচেতন হতে হবে।’
করোনার সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরার বিষয়ে অনেকেরই এমন উদাসীনতা রয়েছে। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোশতাক হোসেনের ধারণা করোনার চতুর্থ ঢেউ এবার বেশিদিন স্থায়ী হবে না।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ওমিক্রনের যে সংক্রমণ আমরা দেখেছি, সেটা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংক্রমণ চূড়ায় উঠে আবার দ্রুত নেমে গেছে। করোনার চতুর্থ ঢেউয়ে ওমিক্রনের যে দুটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, এটি আরও দ্রুত সংক্রমিত করতে সক্ষম। আমার ধারণা, এই হার জুলাইয়ের মধ্যে নেমে যাবে।’
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একই বছরের মার্চে ডেল্টা ধরনের করোনায় আসে দ্বিতীয় ঢেউ। এ পর্যায়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় গত জুলাইয়ে। একপর্যায়ে শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর দেশে তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আসে করোনার আরেক ধরন ওমিক্রন। তৃতীয় ঢেউয়ের সময় ২৮ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দাঁড়ায়, যা দেশে করোনা সংক্রমণ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত বেশি হলেও মৃত্যু ছিল তুলনামূলক কম। এই ঢেউ দ্রুত নিয়ন্ত্রণেও আসে। গত ১১ মার্চ তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর মাস্ক পরা ছাড়া করোনাসংক্রান্ত সব বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হয়। তবে জনগণের মধ্যে মাস্ক পরা নিয়ে অনীহার বিষয়টি আবার দেখা যায়।
সন্তান প্রসবের পর ইমোশনাল এবং হরমোনাল এক সাইক্লোন বয়ে যায় মাতৃমনে। মানে আনন্দ, ভয় এবং আতঙ্কের এক মিশ্র অনুভূতি কাজ করে তখন। এর পরিণতি হতে পারে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা!
বিষণ্ণতা শব্দটি আমাদের চারপাশে হরহামেশা শোনা যায়। সবাই আমরা কম-বেশি বিষণ্ণতায় ভুগছি।
নানা কারণে বিষণ্ণতায় ভোগে মানুষ। একেকজনের একেক কারণ। এর ফলে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও।
তবে সন্তান প্রসবের পর বেশির ভাগ মায়েরা এক ধরনের বিষণ্ণতায় ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তা ‘মাতৃত্বকালীন বিষণ্ণতা’ নামে পরিচিত।
বেশির ভাগ মা প্রসবের পর ‘বেবি-ব্লু’-তে আক্রান্ত হন; যা সাধারণত মুড সুইং। এটা মূলত অকারণে কান্নাকাটি করা, আতঙ্কিত বা শঙ্কিত হওয়া, ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার মতো বিষয়গুলোতে সীমাবদ্ধ থাকে। এটি সাধারণত প্রসবের ২-৩ দিন পর শুরু হয়ে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
কিছু মায়ের ক্ষেত্রে তা আরও দীর্ঘ হয়ে থাকে। তারা আরও মারাত্মক বিষণ্ণতায় (সিভিয়ার ডিপ্রেশন) ভোগেন, যাকে পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন বলা হয়। এর থেকে আরও মারাত্মক একটা কনসিকোয়েন্স হতে পারে, যাকে মেডিক্যাল ভাষায় ‘পোস্টপারটাম সাইকোসিস’ বলা হয়।
পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন কখনই চারিত্রিক সমস্যা কিংবা মায়েদের ইচ্ছাকৃত কোনো কাণ্ড নয়। দেশের বেশির ভাগ পরিবার অবশ্য এ জন্য মায়েদেরই দায়ী করে থাকে।
বাস্তবতা হলো, এটি প্রসব-পরবর্তী অন্য সব সমস্যার মতোই একটি শারীরিক জটিলতা। চিকিৎসায় তা পুরোপুরি সেরে ওঠে।
বেবি-ব্লুজের লক্ষণ এবং উপসর্গ:
পোস্টপারটাম ডিপ্রেশনের লক্ষণ এবং উপসর্গ:
মারাত্মক পোস্টপারটাম সাইকোসিসের লক্ষণ ও উপসর্গ:
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
শেষকথা
বিষণ্ণতায় ভোগা রোগীরা চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। যারা বিষণ্ণতায় ভুগছেন, তারা নিজেরা হয়তো বুঝতে পারেন না। তাই এগিয়ে আসতে হবে স্বামীকে, পরিবারকে। আপনার কাছের কেউ এমন সমস্যায় ভুগলে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। তাকে একজন মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
জেকেজি হেলথ কেয়ারের শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার নামে প্রতারণা ও জাল সনদ দেয়ার অভিযোগের মামলায় রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছে আদালত।
আগামী ১৯ জুলাই রায় দিতে দিন ঠিক করেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আদালতে বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়। শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ঠিক করেন বিচারক। মামলাটিতে ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন বিভিন্ন সময় সাক্ষ্য দেন।
এর আগে ২০ এপ্রিল আদালতে সাক্ষ্য দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভুইয়া। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করে। ১১ মে আসামিরা আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন। তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান।
মামলায় বলা হয়, জেকেজি হেলথকেয়ার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই ২৭ হাজার মানুষকে রিপোর্ট দেয়। করোনার জাল সনদ দেয়ার অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়া হয়। পরে তেজগাঁও থানায় মামলা হলে দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার এ মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট চার্জশিট জমা দেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
চার্জশিটে থাকা অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা। তারা একই প্রতিষ্ঠানের কর্মী। চার্জশিটে সাবরিনা ও আরিফকে প্রতারণার মূল হোতা হিসেবে দেখানো হয়। বাকিরা জালিয়াতিতে তাদের সাহায্য করেছেন।
একই বছরের ২০ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারী আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার শেষে এ মামলার রায় দিতে ১৯ জুলাই দিন ঠিক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:করোনার ঊর্ধ্বগতির মধ্যে আবার মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে উপস্থিতির ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলার অনুরোধ করেছে।
শিশু, বয়বৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিতদের জামাতে উপস্থিত না হওয়ার নির্দেশ জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে সবাইকে আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছে। মসজিদে পর্যাপ্ত সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতেও বলা হয়েছে।
করোনার চতুর্থ ঢেউ দরজায় কড়া নারার অবস্থার মধ্যে মঙ্গলবার সাত দফা নির্দেশনায় এ কথা বলা হয়।
গত ১৩ দিন ধরে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি। গত কয়েক দিন ধরে তা ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে এবং দিনে শনাক্ত দুই হাজারের বেশ এখন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী পর পর দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে করোনার পরবর্তী ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হবে। সেই হিসেবে আর একদিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলেই চতুর্থ ঢেউয়ে দেশের পদার্পণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
করোনার রোগী ব্যাপক হারে বাড়লেও এবার মৃত্যুর হার অবশ্য কম। গত চার মাসের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ তিন জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে চলতি সপ্তাহে। আর রোগী বাড়লেও হাসপাতালে ভিড় এবার তুলনামূলক কম, রোগীদের মধ্যে জটিলতাও কম।
এই পরিস্থিতিতে করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন ভাবান্তর নেই। মাস্ক পরাসহ যেসব স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, সেগুলো মানতে অনীহার বিষয়টি স্পষ্ট।
ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, ভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারাদেশে করোনায় আক্রান্তের হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিধি-নিষেধ আরোপ করে কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদে আবশ্যিকভাবে নিম্নবর্ণিত শর্তসমূহ পালনের জন্য অনুরোধ করছে।
নির্দেশের মধ্যে বলা হয়েছে, মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
মসজিদে আগতদের প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু করে, সুন্নাত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতেও বলা হয়েছে।
মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না জানিয়ে নির্দেশে বলা হয়েছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দ্বারা পরিস্কার করতে হবে।
অন্যান্য নির্দেশের মধ্যে রয়েছে, মুসল্লিরা সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন, কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে, মসজিদের ওযুখানায় সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে এবং মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন, পরিবেশ ও সক্ষমতা তৈরিসহ ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বাড়াতে সুপারিশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। ওয়াশ খাতে বরাদ্দ না বাড়ালে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাজ ধীরগতিতে হবে বলে মনে করছেন তারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেট বরাদ্দ কম হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। যদিও ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে।
বাজেটে হাওর এবং পার্বত্য এলাকায় বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে, তবে চর এবং উপকূলীয় এলাকায় বরাদ্দ বাড়েনি। প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। ওয়াশ খাতের আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বরাদ্দ বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
নিরাপদ পানি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ওয়াটার এইড বাংলাদেশ, পিপিআরসি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএন নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইনটিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে উপস্থিত ছিলেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ওয়াটার এইডের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর হোসেন ইশরাত আদিবসহ ওয়াশ নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:এখন থেকে করোনার টিকা পাবে ৫ বছরের শিশুরাও। ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী সবাইকে দেয়া হবে ফাইজারের টিকা।
শিশুদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তাদের টিকা দেয়া হবে জন্ম নিবন্ধন কার্ডের মাধ্যমে।
টিকা পেতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। কিছুদিনের মধ্যে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার দুপুরে ক্যানসার, অটিজম শব্দদূষণ মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের নিবন্ধন কার্ডের মাধ্যমে এই টিকা দেয়া হবে।’
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগের চেয়ে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এখন যারা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের উপর্সগ প্রকাশ পাচ্ছে না তাই, সামাজিক দূরুত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি।’
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘শিগগির ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের করোনা ভাইরাসের টিকার আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে ফাইজার টিকার একটি বড় চালান আসার কথা রয়েছে। টিকা দেশে আসলে নিবন্ধন অনুযায়ী টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আয়োজিত ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে রোববার দুপুরে মূল আলোচক হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
দেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ছাড়াও দেশের ২২টি বিশেষায়িত হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধারা বিনা মূল্যে চিকিৎসা পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে রোববার এ তথ্য জানান তিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট, আইডি কার্ড, চিকিৎসাসেবা দেয়াসহ সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের শতভাগ চিকিৎসা বিনা মূল্যে দেয়া হচ্ছে। দেশের উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় হাসপাতাল এবং দেশের ২২টি বিশেষায়িত হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা বিনা মূল্যে দেয়া হবে।’
সেই তালিকায় রয়েছে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোল), জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ফাউন্ডেশন হাসপাতাল মিরপুর ও বারডেম হাসপাতাল শাহবাগ।
এ ছাড়া রয়েছে খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
তিনি বলেন, ‘এসব হাসপাতালে ওষুধপত্র সবকিছু বিনা মূল্যে দেয়া হবে। বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেলে মুক্তিযোদ্ধারা এক লাখ টাকা আর্থিক অনুদান পাবেন। এসব হাসপাতালে যে মুক্তিযোদ্ধারা সেবা পাচ্ছেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
‘এ ছাড়া সরকার থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মন্ত্রণালয় একটি বুকলেট প্রকাশ করেছে। সেখানে সব বিষয় স্পষ্ট বলা আছে। সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের এমএ ডিজিটাল সার্টিফিকেট আইডি কার্ড দেয়া হবে, যা রোববার থেকে শুরু। সার্টিফিকেটে ১৪ ধরনের তথ্য দেওয়া থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা আইডি কার্ড ও সনদপত্র পাবেন আর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সনদপত্র দেয়া হবে।‘
মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়া ওই আইডি কার্ড ও সার্টিফিকেটে কিউআর কোড স্ক্যান করলে মোবাইলে জাতীয় সংগীত ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শোনা যাবে। গুগল প্লে স্টোর থেকে ফ্রিডম ফাইটার ভেরি ফায়ার এই মোবাইল অ্যাপসটি ডাউনলোডের পর কিউআর কোডে স্ক্যানের মাধ্যমে এটা শোনা যাবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।’
মন্তব্য