পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশের পুঁজিবাজারে মন্দাভাবের মধ্যে হঠাৎ ব্যাপক চাঙাভাব দেখা দিয়েছে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোকে নিয়ে গঠন করা এসএমই বোর্ড।
এই বোর্ডের ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৯টির দর লাফাচ্ছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে একটি ছাড়া সব কটির শেয়ারদর কমপক্ষে দ্বিগুণ হয়েছে। অন্য একটির দর এই সাত দিনের আগের ১০ কর্মদিবসে আড়াইগুণের মতো বেড়েছে।
এক মাসের মধ্যে এই কোম্পানিগুলোর কোনোটির তিন গুণ, কোনোটির প্রায় চার গুণ হয়ে গেছে।
তবে আরেক কোম্পানি হিমাদ্রির লেনদেন হচ্ছে না বললেই চলে। এই কোম্পানটির ৯৯ শতাংশেরও বেশি শেয়ার মালিকপক্ষের হাতে। বাকি শেয়ারের সংখ্যা হাজারের ঘরেও না।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এসএমই বোর্ড চালুর আগে থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বেশ আশাবাদী ছিল। এই বোর্ডের কোম্পানির শেয়ারদর এক দিনে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বৃদ্ধি বা কমার সুযোগও রাখা হয়, যেখানে মূল বাজারে এক দিনে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা হ্রাস হওয়া সম্ভব সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।
তবে চলতি বছরের মার্চের শুরু পর্যন্ত এই এমএসই বোর্ডে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল সীমিত। শুরুতে বিএসইসি জানায়, এই বাজারে কেবল যোগ্য বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারবে যাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কম পক্ষে এক কোটি টাকা।
এই বোর্ড উদ্বোধন করা হয় ছয়টি কোম্পানি নিয়ে। এর মধ্যে চারটি ওটিসি ফেরত, দুটি নতুন তালিকাভুক্ত। পরে আরও চারটি নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়।
ওটিসির সব কটি কোম্পানি তো বটেই এমনকি নতুন তালিকাভুক্ত পাঁচটি কোম্পানির বেশ কয়েকটি অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে নেমে আসে, যদিও কোম্পানিগুলো আগামী তিন বছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেবে- এমন শর্ত আছে।
যোগ্য বিনিয়োগকারীর শর্ত শিথিল করার সিদ্ধান্ত জানানোর দিন ২৮ মার্চ এসএমইতে লেনদেন হয় ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। পরের দিনই তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ কোটি ২০ লাখ ৮৩ হাজারে। এর পরের দিন লেনদেন বাড়ে আরও এক কোটি টাকার কাছাকাছি। হাতবদল হয় ৬ কোটি ৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ওই সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারে লেনদেন গিয়ে ঠেকে ১২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৬ হাজারে।
কিন্তু বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কম থাকায় শেয়ারের লেনদেন হতে থাকে খুবই কম। এরপর লেনদেন বাড়াতে এক পর্যায়ে বিনিয়োগের পরিমাণ এক কোটি থেকে কমিয়ে ৫০ লাখে নামায় বিএসইসি।
যাদের এই পরিমাণ বিনিয়োগ আছে, তারা যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে আবেদন করবেন, এরপর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে এসএমই বোর্ডে বিনিয়োগের অনুমতি দেবে- এমন একটি পদ্ধতি চালু করা হয়।
কিন্তু এবারও বিনিয়োগকারীর খরায় ভুগতে থাকে এসএমই বোর্ড। তবে সব কিছু পাল্টে যায় গত ২৮ মার্চ। ১৭ মার্চ বিএসইসি যোগ্য বিনিয়োগকারীর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা নামিয়ে আনে ২০ লাখ টাকায়। এর ১১ দিন পর জানানো হয়, যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে না।
আবার তালিকাভুক্ত হতে নিবন্ধনের শর্ত তুলে দেয়া হয়। নতুন সিদ্ধান্ত কারও পোর্টফোলিওতে ২০ লাখ টাকার বিনিয়োগ (ক্রয় মূল্য বা বাজার দরের সর্বোচ্চটা বিবেচ্য) থাকলেই ডিএসই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন করে দেবে।
এর ফলে বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারীর এসএমই বোর্ডে বিনিয়োগের যোগ্য হয়। আর মূল বাজারে মন্দাভাবের কারণে তারা এই বাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে থাকে।
বাড়ছে বিনিয়োগ
বিনিয়োগ সহজ করার আগে যেখানে লেনদেন এক কোটি টাকার আশেপাশে ওঠানামা করত, সেখানে বুধবার হাতবদল হয়েছে ৩৮ কোটি ২০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৩৩ কোটি ৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।
যোগ্য বিনিয়োগকারীর শর্ত শিথিল করার সিদ্ধান্ত জানানোর দিন ২৮ মার্চ এসএমইতে লেনদেন হয় ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। পরের দিনই তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ কোটি ২০ লাখ ৮৩ হাজারে।
এর পরের দিন লেনদেন বাড়ে আরও এক কোটি টাকার কাছাকাছি। হাতবদল হয় ৬ কোটি ৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
ওই সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারে লেনদেন গিয়ে ঠেকে ১২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৬ হাজারে।
এটা পাগলামো ছাড়া কিছুই নয়। এটা কোনো যৌক্তিক কারণে হতে পারে না। লেনদেন সীমা কমিয়ে দিয়ে ইনভেস্টরদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একদিনেই দর বাড়ছে ২০ শতাংশ করে। পরে দেখা যাবে বিমার শেয়ারের মতো দাম বাড়িয়ে শেয়ার বিক্রি করে কেটে পড়বে মালিকরা। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির লোক পাবে না: অধ্যাপক আবু আহমেদ
তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিনে লেনদেন কমে হয় ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। তবে পরের দিনই লাফ দিয়ে তিনগুণ বেড়ে যায়। সোমবার লেনদেন দাঁড়ায় ১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকায়।
টানা কয়েক দিন বাড়ার পর বুধবার চারটি কোম্পানির দর কিছুটা সংশোধন হয়। বাকি পাঁচটির দাম আরও বেড়েছে।
এই দর বৃদ্ধির প্রভাবে এক মাসেরও কম সময়ে সূচক বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়ে গেছে। গত ১০ মার্চ সূচক ছিল ৫৮২ পয়েন্ট। সেটি এখন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৩০ পয়েন্টে।
শেয়ারদর বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে
১ ফেব্রুয়ারি ১০ টাকায় লেনদেন শুরু করা নিয়ালকো অ্যালয়েজ লিমিটেডের শেয়ারদর গত ৮ মার্চও ছিল ১১ টাকা। সেখান থেকে ২০ মার্চ বেড়ে হয় ১৪ টাকা ৬০ পয়সা। সেখান থেকে বেড়ে ২৮ মার্চ হয় ১৮ টাকা ৫০ পয়সা।
এসএমই বোর্ডে বিনিয়োগ সহজ করার পর দিন থেকে শুরু হয় লাফ। সাত কর্মদিবসে এখান থেকে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা।
অর্থাৎ এক মাসেরও কম সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে চার গুণেরও বেশি।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে লেনদেন শুরু করা মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোটেকের শেয়ারদর গত ১০ মার্চ নেমে আসে ৮ টাকা ৩০ পয়সায়। ২৮ মার্চ সেখান থেকে কিছুটা বেড়ে হয় ১০ টাকা ১০ পয়সা।
পরের সাত দিনে সেখান থেকে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে হয় ২০ টাকা ৬০ পয়সা। এই কোম্পানির শেয়ারদরও এক মাসের মধ্যে প্রায় আড়াই গুণ হয়ে গেছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর লেনদেন শুরু করা অরিজা অ্যাগ্রোর শেয়ারদর গত ৮ মার্চ নেমে আসে ৭ টাকা ৯০ পয়সা। গত ২৮ মার্চ দর কিছুটা বেড়ে অভিহিত মূল্যে ছাড়িয়ে হয় ১০ টাকা ১০ পয়সা। এরপর দেয় লাফ। এই কোম্পানির শেয়ারদর এখন ২২ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ এক মাসের কিছু বেশি সময়ে শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।
গত ৩ নভেম্বর লেনদেন শুরু করা কৃষিবিদ ফিডের শেয়ার অভিহিত মূল্যের অনেকটাই নিচে নেমে আসে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। সেদিন শেয়ারদর দাঁড়ায় ৮ টাকা ৪০ পয়সা। গত ২৮ মার্চ সেখান থেকে দর কিছুটা বেড়ে হয় ১০ টাকা ২০ পয়সা। সাত কর্মদিবসেই সেখান থেকে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে হয়েছে ২১ টাকা ১০ পয়সা।
গত ১৭ অক্টোবর লেনদেন শুরু করা মোস্তফা মেটালের শেয়ারদর প্রথম দিন বাড়ে ২০ শতাংশ। তবে গত ২০ মার্চ দাম অভিহিত মূল্যের চেয়ে নিতে নেমে আসে। সেদিন দর দাঁড়ায় ৯ টাকা ৯০ পয়সা।
২৮ মার্চ যেদিন এই বোর্ডে বিনিয়োগ সহজ করার সুযোগ দিয়ে আদেশ আসে, সেদিনও দর ছিল ১১ টাকা ২০ পয়সা। এরপর সাত কর্মদিবস পরে দাম দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৫০ পয়সা।
এক মাসেরও কম সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শুরু করা মামুন অ্যাগ্রোর দর ২৮ মার্চ ছিল ১০ টাকা ১০ পয়সা। এর পরের সাত কর্মদিবসে সেখান থেকে দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা ৩০ পয়সা।
ওটিসিফেরত কোম্পানিগুলোর কী চিত্র
ওটিসি থেকে এসএমই মার্কেটে ফিরেই লাফাচ্ছিল ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজের দর। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম দিন প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে শেয়ারদর হয় ১৯ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে দাম বেড়ে ৮ ডিসেম্বর হয় ১১০ টাকা। এরপর তা কমতে থাকে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তা নেমে আসে ১৪ টাকায়।
২৮ মার্চ শেয়ারদর দাঁড়ায় ২৩ টাকা ৫০ পয়সা। এর পরের সাত কর্মদিবসে দাম আড়াইগুণেরও বেশি বেড়ে হয়েছে ৬১ টাকা ৯০ পয়সা।
গত এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে হয়েছে তিন গুণ।
বেঙ্গল বিস্কুটের শেয়ারদর লেনদেন শুরু করার দিন ছিল ২১৩ টাকা ৩০ পয়সা। এটিই সর্বোচ্চ দর নিয়ে ফিরেছিল। সেখান থেকে কয়েক দিনের মধ্যেই হয়ে যায় ২৪৯ টাকা ৬০ পয়সা। তবে গত ১২ ডিসেম্বর শেয়ারদর নেমে আসে ৭১ টাকা ৩০ পয়সায়। গত ২৮ মার্চ শেয়ারদর ছিল ১০২ টাকা। সেটি এখন ২০১ টাকা ৪০ পয়সায়।
আরেক কোম্পানি অ্যাপেক্স উইভিং ৩০ মার্চ ১৪ টাকা ৪০ পয়সা। তবে গত ১৩ মার্চ দাম কমে হয় ৫ টাকা ৬০ পয়সা। ২৮ মার্চ সেখান থেকে দাম তিন গুণ হয়ে যায়; ১৬ টাকা ১০ পয়সা। এখন দাম দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৭০ পয়সা, যদিও বুধবার দর কমেছে ১১ টাকা ৩২ শতাংশ।
অর্থাৎ এক মাসের কম সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর চার গুণেরও বেশি বেড়েছে।
‘পাগলামো চলছে’
এসএমই বোর্ডের কোম্পানির শেয়ারদরে এভাবে উল্লম্ফন নিয়ে সতর্ক করেছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ।
এই বাজারে এক দিনে যেমন ২০ শতাংশ দাম বাড়তে পারে, তেমনি ২০ শতাংশ কমতেও পারে-এই বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা পাগলামো ছাড়া কিছুই নয়। এটা কোনো যৌক্তিক কারণে হতে পারে না। লেনদেন সীমা কমিয়ে দিয়ে ইনভেস্টরদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একদিনেই দর বাড়ছে ২০ শতাংশ করে। পরে দেখা যাবে বিমার শেয়ারের মতো দাম বাড়িয়ে শেয়ার বিক্রি করে কেটে পড়বে মালিকরা। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির লোক পাবে না।’
মূল মার্কেট শেয়ারদর বৃদ্ধির সীমা ১০ শতাংশ হলেও এসএমইতে তা কেন ২০ শতাংশ হবে- সেই প্রশ্নও রাখেন তিনি। বলেন, ‘আসল মার্কেটে কেন শেয়ারদর বাড়তে দিচ্ছে না? বিএসইসি কেন যে এসব সিদ্ধান্ত নেয় তা বোঝে আসে না।’
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য