চট্টগ্রাম সিডিএর অধীন জলবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। প্রকল্পের ৩৬ খালের মধ্যে ইতোমধ্যে সাতটি খালের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এসব খালের রক্ষণাবেক্ষণ সিডিএর কাজ নয়।
এ কারণে তা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিতে চায় সিডিএ। তবে টাকা ছাড়া এসব খালের দায়িত্ব নিতে নারাজ চসিক। জলাবদ্ধতা প্রকল্প থেকে ১০০ কোটি টাকা দেয়া হলে তবেই এসব খালের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত সংস্থাটি।
বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চসিক-সিডিএ সমন্বয় সভায় এ কথা জানান মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অধীনে খাল ও নালার রক্ষণাবেক্ষণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কোনো বরাদ্দ নেই। বর্তমানে করপোরেশনের ফান্ডের অবস্থাও তত ভালো না। এই পরিস্থিতিতে নালা-খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব করপোরেশনের পক্ষে নেয়া সম্ভব নয়।
‘কারণ করপোরেশনের ফান্ড ও প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প থেকে ১০০ কোটি টাকা দেয়া হলে চসিক খালের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। যদি সিডিএ নালা-খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজে কোনো বরাদ্দ দিতে না পারে, সে ক্ষেত্রে আমাদের মন্ত্রণালয়ে যাওয়া হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।’
সভায় সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘এবারের জলাবদ্ধতা অন্যান্যবারের মতো হবে না। প্রকল্পের চলমান চার বছরের কাজের মধ্যে এখনও দুই বছরের কাজ বাকি। এখনই শতভাগ ফল পাব এটা মনে হয় না। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিংও প্রয়োজন। এ বিষয়ে পানি বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়াও যায়।’
সমন্বয় সভার শুরুতে বক্তব্য রাখেন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলী বলেন, ‘বর্ষার আগে চলতি মাস পর্যন্ত আমরা কাজ করতে পারব। আমরা নগরীর বিভিন্ন এলাকার খালগুলোয় ১৭৬ কিলোমিটারের মতো রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণকাজ শেষ করেছি। জলাবদ্ধতা নিরসন কাজে এটা বড় অগ্রগতি বলা যায়।
‘পাশাপাশি অনেক এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানও চালাতে হচ্ছে। পুরো প্রকল্পের কাজ সমানতালে করা সময়সাপেক্ষ। কারণ এখানে বহু প্রতিবন্ধকতা আছে। তবে এ বছর প্রতিবারের মতো জলাবদ্ধতা হবে না বলে আশা করা যায়।’
পঞ্চগড়ে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের হত্যা ও অমানবিক নির্যাতন বন্ধ করে কারাবন্দি লক্ষাধিক মুসলিমের মুক্তির দাবিতে মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শহরের এম আর সরকারি কলেজ রোডে রোববার বেলা ১১টায় সচেতন নাগরিক সমাজ নামক একটি সামাজিক সংগঠনের আয়োজনে এক প্রতিবাদ মিছিল বের যা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে এসে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় পরিনত হয়।
মানববন্ধনে বলা হয়, ১৯৩০ সাল থেকে ৯৩ বছর ধরে উইঘুর মুসলিমদেরকে জাতিগত বিনাস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নির্যাতন করে আসছে। বর্তমানে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নামে কারাগার তৈরী করে প্রায় পনের লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে আটক করে রাখা হয়েছে।
এ সময় বক্তারা এ নির্যাতন বন্ধ করে কারাবন্দি উইঘুর মুসলিমদের মুক্তির দাবি জানান। তারা অবিলম্বে চীনের হাতে আটক দশ লাখ উইঘর পুরুষকে বন্দিশালা থেকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানান। তারা উইঘুরদের ওপর অত্যচার বন্ধ করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ তৈরী করে দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সচেতন নাগরিকের আহবায়ক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘গত ৭ বছর ধরে কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার নামে উইঘর পুরুষদের পরিবার থেকে আলাদা করে জেলে বন্দি করে অত্যাচার চালোনো হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ করে দিন।’
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারন সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘২০০৯ সালে চীন দেশের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘর মুসলিম হত্যাযজ্ঞ চালায় রাষ্ট্র। সেই থেকে আজও সেখানে মুসলিম হত্যা নির্যাতন লেগেই আছে। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় গনহত্যা চালানো হয়।’
পরিবেশকর্মী সরকার হায়দার বলেন, ‘উইঘুর মুসলমান সন্তানদের তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কৌশলে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হচ্ছে। গর্ভপাত না ঘটালে উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু নারীদের বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে ।
‘যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি তাদের জরায়ুতে জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণ ডিভাইস প্রতিস্থাপনের আইনি বৈধতা দেয়া হয়েছে। অনেকের অপারেশনের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যা করা হচ্ছে। এছাড়া যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি তাদের বড় অংকের জরিমানা করা হচ্ছে। তিনি উইঘর নারীদের প্রতি যৌন নির্যাতন বন্ধের আহবান জানান।’
প্রেসক্লাবের সভাপতি ও পঞ্চগড় সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে গণসংহতি আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা শাখার আহ্বায়ক সাজেদুর রহমান সাজু, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারন সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল, সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মী সরকার হায়দার, সাবেক ছাত্র নেতা বাবুল হোসেন, গ্রামবাংলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান পরিবেশ কর্মী সাইফুল ইসলাম শান্তি, সাংবাদিক নেতা মোশারফ হোসেন, সাবেক ছাত্র নেতা বাবুল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বাজিতপুরে হেরোইনসহ এক পুলিশ সদস্য ও তার সঙ্গীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সোমবার বিকেলে মেহেরপুর সদর উপজেলার বাজিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম ও তার সঙ্গী সবুজ শেখ আটক হন।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেন বিজিবি সদস্যরা। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে মাদক মামলা দিয়ে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটক আশরাফুল ইসলাম মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার পরানপুর গ্রামের আফসার আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি সুপ্রিম কোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল কোর্টে কনস্টেবল পদে কর্মরত। তার সঙ্গী সবুজ শেখ মেহেরপুর সদর উপজেলার রায়পুর গ্রামের মন্টু শেখের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুর বাজিতপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার আলাউদ্দিন বিশ্বাস জানান, বাজিতপুর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা সড়ক দিয়ে মাদক পাচার হচ্ছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৩ গ্রাম হেরোইনসহ পুলিশ কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম ও সবুজ শেখকে আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে মেহেরপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ময়মনসিংহে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা।
ঈশ্বরগঞ্জ থানায় রোববার ময়মনসিংহ বিভাগীয় রোড মার্চ কর্মসূচির সমাবেশে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণে ঘটনায় আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনিকে প্রধান আসামি করে এবং ছয়জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১২০ জনকে আসামি করে এ মামলাটি হয়।
মালমা বাদী মশিউর রহমান কাঞ্চন ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বাদী ও তার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চর হোসেনপুর ভূইয়া ফিলিং স্টেশনের সামনের সড়কের পাশে আড্ডা দিচ্ছিলেন।
এ সময় বিএনপির রোড মার্চ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বেশকিছু নেতা-কর্মী অতর্কিতে তাদের ওপর ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। পরে তাদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দেয়। হামলাকারীরা পাশের একটি দোকানে হামলা চালিয়ে ফ্রিজ ভাঙচুর ও মালামাল তছনছ করে।
ভাঙচুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা উত্তর বিএনপির সদস্য ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমীরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘সরকার হটানোর আন্দোলন থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের দূরে রাখতে এখন ঘটনা সাজিয়ে মামলা দেয়া হচ্ছে। গত রোববারের রোডমার্চ কর্মসূচির সমাবেশে যোগ দিতে আসা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের গাড়ি বহরে হামলা করেছে সরকারের পেটোয়া বাহিনী। এসব করে সরকার পতনের আন্দোলন থামানো যাবে না।
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান কাঞ্চন বলেন, ‘আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা করে গাড়ীতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
ওসি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (Ecologically Critical Area-ECA) থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকিতে পড়েছে ওই এলাকার পরিবেশ। বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য।
জাফলংয়ে ইসিএ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে সোমবার অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। এ সময় বালুবাহী পাঁচটি নৌকা জব্দ করা হয়। এছাড়া এসব নৌকার মালিকদের দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর, বিজিবি, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে সোমবার দুপুরে এই অভিযান চালায়।
গোয়াইনঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন জানান, সোমবার জাফলংয়ের পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে তাদের একটি টিম, বিজিবি ও গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের অংশগ্রহণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে বালুবাহী পাঁচটি নৌকা আটক করে মামলা দেয়া হয়। এছাড়া এসব নৌকার পরিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরিবেশ রক্ষায় এমন অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হবে বলে জানান তানভীর হোসেন।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি। কিন্তু এই পর্যটন কেন্দ্র এখন পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ পাথর কোয়ারিতে। অনিয়ন্ত্রিত পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে পর্যটন কেন্দ্রটির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হুমকিতে পড়ছে পরিবেশও।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাফলংকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়।
এর আগে পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জাফলংকে ইসিএ ঘোষণার নির্দেশনা দেয় আদালত।
ইসিএ ঘোষণার পর জাফলং থেকে সব ধরনের বালু ও পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও একটি গোষ্ঠী বালু ও পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে জাফলংয়ের পরিবেশ বিনষ্ট করে চলেছে।
টাঙ্গাইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের হামলায় গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ ও পদযাত্রা পণ্ড হয়ে গেছে।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে সোমবার বিকেলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে সমাবেশ ও পদযাত্রার আয়োজন করে জেলা গণঅধিকার পরিষদ। কর্মসূচি চলার সময়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে এবং এক পর্যায়ে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয় ও তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে হামলা করা হয় বলে নিউজবাংলার কাছে অভিযোগ করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মির্জা আনোয়ার হোসেন বাবুল বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছিল। তাই আমাদের কর্মীরা তাদের মানববন্ধন বন্ধ করে দেয়।’
সদর থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সামনে তাদের মানববন্ধন করার অনুমতি ছিল না। কিন্তু তারা তারপরও সেখানে প্রোগ্রাম করেছে। কিন্তু সেই প্রোগ্রাম পণ্ড হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেনি।’
সমাবেশ ও পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান, জেলা শাখার সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রাসেল, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসানসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
হত্যার রাজনীতি করতে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরে ঈদগাহ ময়দানে সোমবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার বিবরণ জনগণের মাঝে পৌছে দেয়া এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের তৃণমূল প্রতিনিধি ও নেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে দিকনির্দেশনামূলক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি হিট অ্যান্ড রান করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চায়। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপি জামাত যদি বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের একজন মানুষের ওপর আঘাত হানে বা হত্যা করে, তাহলে আমরা ক্লিলিং এজেন্টদেরকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করব।’
তিনি বলেন, ‘স্যাংশন দিয়ে কোনো লাভ নেই, সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনব। বিএনপিকে মোকাবেলা করেই বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বিঘ্নে ও স্বাধীন-সার্বভৌম নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা করব। যাতে সুষ্ঠ, স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভাবে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে ও স্বস্তিতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে।’
উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও ভয়ে ভীত হয়ে নয়, জামাত-শিবির ও বিএনপি, এমনকি অশুভ শক্তি ও অশুভ রাজনীতির বিপক্ষে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিপক্ষে আপনারা লড়াই করতে অভ্যস্ত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপক্ষের শক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতা-কর্মীদের আঘাত করে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা যায় না।
‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রক্তচক্ষু ও মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে কেউ টিকে থাকতে পারেনি । খুনি জিয়া ও মোস্তাকরা উৎখাত হয়ে গেছে। জাতীর পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরও জাতীর পিতার আদর্শের সুযোগ্য সন্তান জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে ২১ বছর লড়াই সংগ্রাম করে টিকে আছেন।’
রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেকান্দার আলী শেকের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, পৌর মেয়র নাজমা রশীদসহ আরও অনেকে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) সৈয়দ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘দেশের ১২টা বেজে গেছে। এ সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়, ক্ষমতাপ্রেমীদের মসনদ ভেঙে এবার বঙ্গোপসাগরে ফেলা হবে।’
জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচনের কমিশনারের পদত্যাগ; বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য পণ্য দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে সোমবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জে আয়োজিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সোমবার মুন্সিগঞ্জ শহরের কৃষিব্যাংক সংলগ্ন সড়কে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দলটির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী।
রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমান সরকার অবৈধ সরকার। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তবে আমাদেরকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে আবারও সরকার ক্ষমতায় যাবে- এই স্বপ্ন বাংলার মাটিতে আর বাস্তবায়ন হবে না। তারা বলে থাকে- আমরা দেশপ্রেমিক, আমরা জনগণ প্রেমিক। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমাদের দাবি আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, যে নির্বাচন হবে স্বচ্ছ, যে নির্বাচন থাকবে প্রশ্নের উর্ধ্বে। বিভিন্ন দেশেও একই কথা বলছে। আমেরিকাও বলছে, বাংলাদেশ একটি সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন- বিদেশীরা তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করে। আপনারা যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি করেন, তাহলে তারা আর এসব কথা বলার সাহস পায় না।’
ভিসা নীতি দেশের জন্য লজ্জাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ভিসা স্যাংশনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। ভিসা স্যাংশন বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। তাই এর পরিবর্তন দরকার। চোরের দিক থেকে, দুর্নীতিবাজের দিক থেকে এ দেশ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এ অবস্থা আমরা আর দেখতে চাই না। তাই দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য এক নীতি, আদর্শ দরকার; যার নাম ইসলাম।
‘ইসলামী নীতি, আদর্শের মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি আসবে। এ শান্তির পক্ষে আমরা সবাই একত্রিত হব। যারা ক্ষমতাপ্রেমিক রয়েছে, আমরা দেশ প্রেমিকরা একত্রিত হয়ে এদের মসনদকে ভেঙে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করা হবে।’
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মুফতি শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদসহ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য