পুঁজিবাজারে আরও কমল শেয়ারের দর। রোজায় পরপর চার কর্মদিবসে সূচকের পাশাপাশি কমল লেনদেনও। প্রায় এক বছর পর তা নেমে গেল ৫০০ কোটি টাকার নিচে।
টানা পড়তে থাকা বাজার ঘুরে দাঁড়াবে- এমন আশ্বাসের কথা নানাজন বলে এলেও তেমন কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।
বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আস্থাহীনতার কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার না কিনে বাজার পর্যবেক্ষণে আছে।
সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার লেনদেন হয়েছে ৪৯০ কোটি ৫০ লাখ ২৩ হাজার টাকা, যা ২০২১ সালের ১১ এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন। সে সময় করোনা পরিস্থিতির কারণে লকডাউনের মধ্যে লেনদেন হয়েছিল ৪৫৬ কোটি ৫৫ লাখ ৩ হাজার টাকা।
টানা চার দিন ঢালাওভাবে দর পতন হয়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিরগুলোর মধ্যে যতগুলোর দর বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। দর বেড়েছে ৪৪টি কোম্পানির, কমেছে ২৯৩টির। আর অপরিবর্তিত থাকে ৩৮টির দর।
দিন শেষে সূচক কমল ৩১ পয়েন্ট। তিন দিনে পড়ল সব মিলিয়ে ১০৯ পয়েন্ট।
বাজারের যখন এই চিত্র, তখন এমন কোনো খাত থাকার কথা নয়, যেগুলোর বিনিয়োগকারীরা স্বস্তিতে থাকবে। এর মধ্যে টেলিযোগাযোগ, চামড়া, সিরামিক ও কাগজ ও প্রকাশনা খাতের সবগুলো কোম্পানি দর হারিয়েছে।
আর্থিক ও জীবন বিমা, সেবা ও আবাসন খাতে কেবল একটি করে, ব্যাংক, সিমেন্ট, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে কেবল দুটি করে কোম্পানি বা ইউনিটের দর বেড়েছে।
যেসব কোম্পানি দর হারিয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই পতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশের কাছাকাছি দর কমার পর ক্রেতা শূন্য হয়ে গেছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর বাজারে যে ধস দেখা দেয়, সেটি ঠেকাতে দরপতনের সীমা ১০ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ কমিয়ে দেয়া হয়। এতে এক দিনে বড় পতন ঠেকানো গেলেও শেয়ার বিক্রি করা যাচ্ছে না।
বিনিয়োগকারীরা বিপুল পরিমাণ বিক্রয়াদেশ দিয়ে বসিয়ে রাখলেও ক্রেতা নেই। শেয়ারদর ২ শতাংশ কমলেই ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে শেয়ারের চাহিদা তৈরি না হওয়ায় দর পরের দিনও কমছেই।
এভাবে বিনিয়োগকারীরা কোনো কোম্পানির শেয়ার না কিনে আরও এক দিন পর্যবেক্ষণের নীতি নিয়েছে বলে মনে করেন স্টক ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘যখন ২ শতাংশ দর পড়ে যায়, তখন বায়াররা আর বাই দিতে চান না। পরের দিন দেখতে চান। ট্রেড ভলিউম ফল করার এটি একটি অন্যতম কারণ হয়ে গেছে।
‘একটা নির্দিষ্ট দিনে যখন বায়াররা দেখেন যে একটা লো রেটে সেলার বসে রয়েছে। তখন মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো পরের দিনের জন্য অপেক্ষা করে। যার কারণে একটা কিউমিলেটিভ নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট ভলিউমে দেখা যাচ্ছে।’
শতাধিক কোম্পানির দর কমেছে সর্বোচ্চ সীমায়
৩৯টি কোম্পানির দর পতন হয়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশের কাছাকাছি। ২২টির দরপতন হয়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশের বেশি, ২৪টির ১ দশমিক ৭ শতাংশ, ১৫টির ১ দশমিক ৬ শতাংশ, ১৪টির ১ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৪টির ১ দশমিক ৪ শতাংশ, এবং ৫৬টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে ১ থেকে ১ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে।
এক দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ দরপতন হলেও পুঁজিবাজারে কোনো শেয়ারের দর বৃদ্ধি কমা সর্বনিম্ন ১০ পয়সার হিসাবে হওয়ার কারণে কোনো কোনো কোম্পানি এক দিনে দর কমতে পারে ১০ পয়সা, কোনো কোম্পানি ২০ পয়সা কোনোটি ৩০ পয়সা।
ব্যাপক দরপতনের মধ্যেও বলা যায় কিছুটা ভালো ছিল বস্ত্র খাত। ৪০টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে ১০টির দর বৃদ্ধি ও ৯টির দর অপরিবর্তিত ছলি।
তবে সংখ্যায় সবেচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পেয়েছে প্রকৌশল খাতে। দর বেড়েছে ১৩টি কোম্পানির, কমেছে ২৯টির।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ২১টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২টির। জ্বালানি খাতে ৭টির দাম বেড়েছে, দুটি কোম্পানির দর ধরে রাখতে পেরেছে। আর কমেছে ১৪টির।
আগের দিন ৫টির দর বৃদ্ধি ও ১৬টির দর হ্রাস পাওয়া ব্যাংক খাতের ২টি কোম্পানির দাম বেড়েছে আজ। আগের দরে লেনদেন হয়েছে ১০টির। বিপরীতে দর হারিয়েছে ১৬টি কোম্পানি।
রোববার দরপতন শুরু হওয়া বিমা খাতের ৩৪টির দর বৃদ্ধিও বিপরীতে বেড়েছে চারটির ও অপরিবর্তিত ছিল ২টির। আর জীবন বিমার ১২টির দরপতনের বিপরীতে বেড়েছে মাত্র একটির। এছাড়াও বিবিধ, খাদ্য, সিমেন্ট, আইটি খাতের হাতে গোনা দুয়েকটি কোম্পানির দর বেড়েছে।
লেনদেনের শীর্ষ পাঁচ খাত
লেনদেন সবচেয়ে বেশি হয়েছে প্রকৌশল খাতে। ৭২ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে খাতটিতে। আগের দিন ৬১ কোটি ৯০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছিল।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। মোট লেনদেনের ৬৯ কোটি বা ১৪.৬১ শতাংশই ছিল খাতটির দখলে। আগের দিনে এ খাতের লেনদেন ছিল ৫৮ কোটি ৬০ লাখ।
তৃতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের লেনদেন গতকালের চেয়ে কিছুটা কমেছে। আগের দিন এ খাতের লেনদেন ছাড়ায় ৫২ কোটি ১১ লাখ টাকা। আজ কিছুটা কমে সেটি দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এরপরে বিবিধ খাতে ৪৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ খাতেও গতকাল লেনদেন বেশি হয়েছে। মঙ্গলবার খাতটিতে হাতবদল হয়েছিল ৫৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার।
লেনদেনের ৮.৮৪ শতাংশ নিয়ে তালিকার পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে সিমেন্ট খাত। মোট ৪১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, আগের দিন ছিল ৩৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার।
সূচক পতনে দায়ী যেসব কোম্পানি
সবচেয়ে বেশি ৬.০৭ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির ০.৮ শতাংশ দরপতনে এই পয়েন্ট কমেছে।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিমিটেডের ০.৪৮ শতাংশ দরপতনের কারণে সূচক পড়েছে ২.৬১ পয়েন্ট। এরপরেই স্কয়ার ফার্মার ০.৬৪ শতাংশ দর পতনের কারণে সূচক কমেছে ২.১৫ পয়েন্ট।
ইউনাইটেড পাওয়ারের দরপতনে ১.৫ পয়েন্ট, আইসিবি ১.৩৯ পয়েন্ট, পাওয়ার গ্রিড ১.৩৬ পয়েন্ট, পূবালী ব্যাংক ০.৮৯ পয়েন্ট, ফরচুন ০.৭৩ পয়েন্ট, আইডিএলসি ০.৭২ পয়েন্ট এবং ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দরপতনে সূচক কমেছে ০.৬৪ পয়েন্ট।
অর্থাৎ এই ১০টি কোম্পানিই সূচক ফেলেছে ১৮.০৬ পয়েন্ট ।
সূচক বাড়িয়েছে যারা
লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের দর ২.১৫ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচক বেড়েছে ৩.৪১ পয়েন্ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১.৫২ পয়েন্ট সূচকে যোগ করেছে ওয়ালটন। এদিন কোম্পানিটির দর বেড়েছে ০.২৭ শতাংশ।
এরপরেই ১.০১ পয়েন্ট বাড়িয়েছে বিবিএস ক্যাবলস। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৫.০৬ শতাংশ।
এছাড়া রেনাটা ০.৭৪ পয়েন্ট, বিকন ফার্মা ০.৭২ পয়েন্ট, জেএমআই হসপিটাল ০.৬ পয়েন্ট, ওয়ালটন হাইটেক ০.৫৫ পয়েন্ট, পদ্মা অয়েল ০.৪৭ পয়েন্ট, কাট্টালি টেক্সটাইল ০.৪২ পয়েন্ট, বিকন ফার্মা ০.৪২ পয়েন্ট, খুলনা পাওয়ার ০.৩৯ পয়েন্ট এবং বার্জার পেইন্টস সূচক যোগ করেছে ০.৩২ পয়েন্ট।
এই ১০ কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৭.৬৭ পয়েন্ট।
বিনিয়োগ বাড়ানোর সব উদ্যোগ ব্যর্থ
রোজার আগে শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার হাতবদল হয়েছিল এক হাজার এক শ কোটি টাকার বেশি শেয়ার। রোজার প্রথম কর্মদিবস রোববার নাম নেমে আসে আট শ কোটির ঘরে। পরের দিন তা নামে ছয় শ কোটির ঘরে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার পর বাজারে যে ধস নামে। সে সময় দরপতন এক দিনে শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয় বিএসইসি। পাশাপাশি বাজারে তারল্য বাড়াতে নানা চেষ্টা করে বিএসইসি।
গত ৯ মার্চ ৩৩টি ব্যাংকের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের পর জানানো হয়, যেসব ব্যাংকের বিনিয়োগ তাদের মূলধনের ২৫ শতাংশের নিচে, সেগুলো দ্রুত ২ শতাংশ বিনিয়োগ বাড়াবে। যেসব কোম্পানি বিশেষ তহবিলে এখনও ২০০ কোটি টাকা জমা দেয়নি, সেগুলো দ্রুত জমা দেবে, আর যেসব ব্যাংক টাকা জমা দিয়েও বিনিয়োগে যায়নি, তারা দ্রুত বিনিয়োগে যাবে।
পরের দিন মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে জানানো হয়, মৌলভিত্তির অনেক কোম্পানির শেয়ারদর অনেকটাই কমে এসেছে। এই মুহূর্তে সেগুলোতে বিনিয়োগ লাভজনক হতে পারে। বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা আসে এই বৈঠক শেষেও।
২৩ মার্চ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে চিঠি দেয় বিএসইসি। এতে বলা হয়, অনেক ব্যাংক সেই বিনিয়োগসীমা ও ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের চেয়ে কম বিনিয়োগ করেছে। এমনকি অনেকেই এখনও সে বিশেষ তহবিল গঠনই করেনি।
এমন অবস্থায় ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগসীমা অনুযায়ী ও বিশেষ তহবিল থেকে বিনিয়োগের জন্য চিঠিটি পাঠানো হয়। যারা বিশেষ তহবিল গঠন করেনি তাদের সেটি গঠন করতেও বলা হয় তাতে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে বিএসইসির ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে গত ৩১ মার্চ বাজার ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে হয় আলোচনা
গত ২৯ মার্চ আরও একটি পদক্ষেপ নেয় বিএসইসি। ২৬টি অতালিকাভুক্ত বিমা কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য ফাইল দাখিল ও তাদের ইক্যুইটির ২০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে পদক্ষেপ নিতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ-আইডিআরএকে চিঠি দেয় সংস্থাটি।
সবশেষ গত ৩১ মার্চ বাজার মধ্যস্ততাকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএসইসি। বৈঠক শেষে জানানো হয়, সু প্রতিটি ডিলার এই এক মাসে কমপক্ষে ১ কোটি করে ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। পাশাপাশি পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকেও বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। মার্চেন্ট ব্যাংক বিনিয়োগ করবে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা। বিনিয়োগ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি।
ফলে এই মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা নিশ্চিত বিনিয়োগের আশ্বাস আসে।
পরের দিন বৃহস্পতিবার লেনদেন ছাড়ায় এক হাজার ১৬৯ কোটি টাকা, যা ছিল আগের দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। কিন্তু এর পরের চার কর্মদিবসেই লেনদেন কমে বছরের সর্বনিম্নে চলে এসেছে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য