পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন ঠেকানোর ‘টোটকা’ এক দিনে কোনো একটি শেয়ারের দরপতনের সীমা ২ শতাংশ বেঁধে দেয়াকে লেনদেন কমার একটি কারণ হিসেবে দেখছেন ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও।
তিনি বলেছেন, মন্দা বাজারে শেয়ারদর ২ শতাংশ কমে যাওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের মনে ধারণা জন্ম হচ্ছে দর আরও কমে যাবে। ফলে এই দামে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে লোকসান দিয়েও শেয়ার থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ মিলছে না।
আবার ২ শতাংশ কমে পতন কবে থামবে- এটা দেখার জন্য শেয়ারের ক্রেতা না আসায় চাহিদা তৈরি হচ্ছে না। এতে আবার সেই শেয়ারের দর বৃদ্ধির সুযোগও তৈরি হচ্ছে না- বলছেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা।
পুঁজিবাজারে মন্দাভাবের মধ্যে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার পর যে ধস নামে, তখন বড় পতন ঠেকাতে এক দিনে দরপতনের সীমা সর্বোচ্চ ২ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয় বিএসইসি।
রাশিয়া-ইউক্রেন, শ্রীলঙ্কার বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি গ্লোবাল ইস্যুতে সব দেশের পুঁজিবাজারেই একটা প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব বিদ্যমান। কী হবে না হবে সেই হিসাব কষতে ব্যস্ত সবাই। যার কারণেও লেনদেন কম হচ্ছে: এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম
এর পাশাপাশি বাজারে তারল্য বাড়াতে ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনাকারী সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ডিলারসহ বাজার মধ্যস্থতাকারীদের বৈঠকে বসে বিএসইসি। সব বৈঠকেই বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা আসে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, লেনদেন এখন প্রায় এক বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে। আর যে হারে তা কমছে, তাতে আগামী দিনে কোন অবস্থানে পৌঁছে, তা নিয়ে নানা আশঙ্কার কথা বলাবলি হচ্ছে পুঁজিবাজারবিষয়ক নানা ফেসবুক পেজে।
ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারে ওঠানামা থাকবেই। ১০০-১৫০ পয়েন্ট কমবে আবার বাড়বে, এটা কিন্তু কোনো বড় ব্যাপার নয়। এটাই স্বাভাবিক। এটা নিয়ে কনসার্ন হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যদি ভলিউম কমে তাহলে মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়।’
লেনদেন বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা আলোচনা আর উদ্যোগের মধ্যে উল্টো কেন কমছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভলিউম কমার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ২ শতাংশ দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা।’
এই ধারণা করার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘ধরুন, কারও পোর্টফোলিওতে সাতটি আইটেম আছে। আজকে তিনি লাফার্জ কিনেছেন, অন্য একটি শেয়ার বিক্রি করার কথা।
বাজারে তারল্য বাড়াতে ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনাকারী সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ডিলারসহ বাজার মধ্যস্থতাকারীদের বৈঠকে বসে বিএসইসি। সব বৈঠকেই বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা আসে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, লেনদেন এখন প্রায় এক বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে। আর যে হারে তা কমছে, তাতে আগামী দিনে কোন অবস্থানে পৌঁছে, তা নিয়ে নানা আশঙ্কার কথা বলাবলি হচ্ছে পুঁজিবাজারবিষয়ক নানা ফেসবুক পেজে।
‘ধরি তার কাছে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স আছে। ভেবেছিলেন তিনি সেটা বিক্রি করে লাফার্জের টাকাটা সমন্বয় করবেন। কিন্তু ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণার পরও দাম পড়ে গেছে অনেকটা। তখন তিনি কী করবেন?
‘ধরা যাক, তার কাছে বেক্সিমকোও ছিল। তিনি সেটা বিক্রি করতে চাননি। কিন্তু প্রগতির দর ২ শতাংশের বেশি পড়ে যাওয়ায় সেটি বিক্রি করতে না পেরে বেক্সিমকো বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ, উপায় নেই।
‘তার মানে যে শেয়ারগুলো সেল হওয়ার কথা নয়, সেগুলোও সেল হচ্ছে। এর কারণে একটা হচ্ছে ভলিউম কমছে এবং অযাচিত শেয়ারের সেল আসছে।’
তিনি বলেন, ‘যখন ২ শতাংশ দর পড়ে যায়, তখন বায়াররা আর বাই দিতে চায় না। পরের দিন দেখতে চায়। ট্রেড ভলিউম ফল করার এটি একটি অন্যতম কারণ হয়ে গেছে।’
ডিবিএ সভাপতি বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট দিনে যখন বায়াররা দেখেন যে একটা লো রেটে সেলার বসে রয়েছে। তখন মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো পরের দিনের জন্য অপেক্ষা করে। যার কারণে একটা কিউমিলেটিভ নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট ভলিউমে দেখা যাচ্ছে।’
তাহলে ২ শতাংশের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়া কি ঠিক হয়নি?- জানতে চাইলে রোজারিও বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের আতঙ্কে মার্কেট ফল ঠেকাতে ওই সময়ে বিএসইসির সিদ্ধান্ত হয়তো ঠিক ছিল। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই বাজারকে এভাবে ঠেকা দেয়া কোনো সুস্থ পদ্ধতি না। বাজারকে আপন গতিতে চলতে দিতে হবে।’
২ শতাংশের সীমা না থাকলেও পারত। তবে থাকলেও এক রকম লাভ আছে। হঠাৎ করে দাম কমে আতঙ্ক তৈরি হতে পারত। আবার এর খারাপ দিকও আছে: শাকিল রিজভী
বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে যেসব ডিলার অ্যাকাউন্ট থেকে রোজায় এক কোটি করে আড়াই শ কোটি আর মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো তিন শ কোটি বিনিয়োগ করবে অঙ্গীকার দিয়ে এসেছে- তার কী হবে?
এমন প্রশ্নে রোজারিও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। শেয়ারদর কমলে ভবিষ্যতে লাভের সম্ভাবনায় তো সবাই বিনিয়োগ করবেই।’
তিনি মনে করেন, শেয়ারদর কমা একটি সুযোগও। বলেন, ‘দাম কমলে কিনবে, বাড়লে বেচবে- এটাই তো বাজারের স্বাভাবিক নিয়ম। এটা যদি না থাকত, তাহলে কেউ আসত না। যদি খালি দাম বেড়েই যায়, তাহলেও কেউ আসবে না। আবার যদি দাম কমেই যায়, তাহলে কেউ আসবে না।’
তাহলে ২ শতাংশের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়া কি ঠিক হয়নি?- জানতে চাইলে রোজারিও বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের আতঙ্কে মার্কেট ফল ঠেকাতে ওই সময়ে বিএসইসির সিদ্ধান্ত হয়তো ঠিক ছিল। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই বাজারকে এভাবে ঠেকা দেয়া কোনো সুস্থ পদ্ধতি না। বাজারকে আপন গতিতে চলতে দিতে হবে।’
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২ শতাংশের সীমা না থাকলেও পারত। তবে থাকলেও এক রকম লাভ আছে। হঠাৎ করে দাম কমে আতঙ্ক তৈরি হতে পারত। আবার এর খারাপ দিকও আছে।’
তিনি বলেন, ‘এক দিনে ১০ শতাংশ করে শেয়ারদর পড়ে গেলে ১০০ থেকে দেড় শ পয়েন্ট সূচক পড়ে গেলে বিনিয়োগকারীরা আরও ভয় পেয়ে যেত। আমাদের মার্কেটটা ম্যাচিউরড না। এটাও তো একটা বিষয়।’
লেনদেন কমে যাওয়ার পেছনে তিনি আরও একটি বিষয় তুলে এনেছেন। সেটি হলো ব্রোকারেজ হাউস থেকে ক্যাশ টাকা তুলে নেয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেয়া।
শেয়ারদর কমা একটি সুযোগও। দাম কমলে কিনবে, বাড়লে বেচবে- এটাই তো বাজারের স্বাভাবিক নিয়ম। এটা যদি না থাকত, তাহলে কেউ আসত না। যদি খালি দাম বেড়েই যায়, তাহলেও কেউ আসবে না। আবার যদি দাম কমেই যায়, তাহলে কেউ আসবে না।’
নিউজবাংলাকে তিনি বলেছেন, ‘অনেক সময় দেখা যেত জরুরি প্রয়োজনে, বিশেষ করে সপ্তাহের শেষ দিন কারও ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকা ক্যাশে নিয়ে যেত। বিভিন্ন হাউসে এই সুযোগে নানা অনিয়ম হওয়ার কারণে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন নিয়ম করা হয়েছে অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক লাগবে। কিন্তু সেটার জন্য তো এক দিন বাড়তি সময় লাগে। আর বৃহস্পতিবার নিলে তো সেটি ভাঙানো যায় না। আমার মনে হয় এটাও লেনদেন কমার একটি কারণ।’
শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক মন্দার পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন, শ্রীলঙ্কার বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি গ্লোবাল ইস্যুতে সব দেশের পুঁজিবাজারেই একটা প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব বিদ্যমান। কী হবে না হবে সেই হিসাব কষতে ব্যস্ত সবাই। যার কারণে লেনদেন কম হচ্ছে।’
মির্জ্জা আজিজ বলেন, ‘মার্কেট ভালো করার জন্য, ট্রেড বাড়ানোর জন্য উচিত হবে ভালো কোম্পানিগুলোকে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা। শেয়ার ছাড়াও অন্য আইটেম নিয়ে আসা।’
সূচকের অবস্থান সাত হাজারের কাছাকাছি থাকলে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীলই বলতে চান তিনি। বলেছেন, ‘দু-তিন দিন হয়তো কমেছে। সেটা উঠে যাবে।’
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সন্দেহ অবিশ্বাস
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করছে না। মাসুম জামান নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ব্রোকাররা যে বিনিয়োগ করছে, লেনদেনের পরিমাণ দেখে কিন্তু তা মনে হচ্ছে না। তারা বিনিয়োগ করছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখার দাবি রাখে।’
বাজারের পতনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আগেই বেশি দামে শেয়ার কিনেছেন। এদিকে শেয়ারের দাম কমতে থাকায় তাদের পুঁজি আটকে গেছে। অন্যদিকে হাতে পুঁজি না থাকায় আর শেয়ার কিনতে পারছেন না।’
আহসান হাবীব নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘বাজার খারাপের স্বাভাবিক কোনো কারণ নেই, কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। একটি চক্র বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে এনে বাজার নিয়ে খেলছে।’
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য