গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেষে তিনি গণমাধ্যমে এমন আশা ব্যক্ত করেন।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, বৈঠকে নির্বাচন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরসহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
মোমেন বলেন, ‘ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে চমৎকার আলোচনা হয়েছে। ব্লিঙ্কেন তার সূচনা বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র- বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা এবং ঢাকার সঙ্গে একত্রে কাজ করতে ওয়াশিংটনের ইচ্ছার কথা জানান।
‘ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেল হয়ে উঠেছে। ওয়াশিংটন সত্যিই দুই দেশের মধ্যে অংশীদারত্ব জোরদার করতে আগামী ৫০ বছর একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছে।’
মোমেন বলেন, ‘আমি ব্লিঙ্কেনকে বলেছি যে ৫০ বছর আগে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু এখন বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনার ভূমিতে পরিণত হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তর, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল, রোহিঙ্গা ইস্যু, ইন্দো-প্যাসেফিক কৌশল, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াসহ ব্যাপক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
র্যাব প্রসঙ্গে আলোচনা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রকে র্যাব এবং এর কিছু বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছি। কারণ এই এলিট ফোর্স বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমন এবং মাদক পাচার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’
‘তাদের বলেছি যে আমরা সব প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি (মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্যা সমাধানের জন্য)।’
গত চার মাসে র্যাবের সঙ্গে কোনো বন্দুকযুদ্ধ ঘটেনি বলেও আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন মোমেন।
তিনি বলেন, ‘র্যাব হয়তো কখনও কখনও কিছু বাড়াবাড়ি করেছে। কিন্তু জবাবদিহিতার জন্য একটি নিজস্ব ব্যবস্থা রয়েছে। এবং যারা অন্যায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে।’
বাংলাদেশে যখন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছিল তখন আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয় বলেও জানান মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের ক্ষেত্রে র্যাব একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে (জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন)।’
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টি র্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন এবং এটিকে এফবিআইয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন বলেও জানান তিনি।
ড. মোমেন বলেন, ‘ব্লিঙ্কেন গত চার মাসে র্যাবের কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি খুব আশাবাদী যে র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া
একটি স্বচ্ছ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন ড. মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা আছে। আমাদের একটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) আছে। তারা (কমিশন) স্বাধীন এবং নির্বাচনের সময় তারাই বস।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে।’
রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তর
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি ও দণ্ডপ্রাপ্ত রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টিও বৈঠকে উত্থাপন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
একজন খুনিকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেয়া উচিত নয় বলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তর দুই দেশের ৫০ বছরের সম্পর্ক উদযাপনে একটি গেম চেঞ্জার হবে।’
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ
অবকাঠামো, আইটি ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
বৈঠকে মন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকায় বিনিয়োগের নব্বই শতাংশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে। আমি চাই আপনারা বাংলাদেশে আইটি ও ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো খাতগুলোতে বিনিয়োগ করুন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ালে দেশে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি বাড়বে যা ওয়াশিংটনকে নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিকের উদ্বেগ নিরসনে সাহায্য করবে।’
মোমেন বলেন, ‘আমি বলেছি যে আমরা একটি মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, উন্মুক্ত এবং সুরক্ষিত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল চাই। এতে আপনাদের উপস্থিতি থাকলে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। যুক্তরাষ্ট্র বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।’
জিএসপি পুনর্বহালের উদ্যোগ
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা ২০১৩ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। এই বাজার সুবিধা পুনর্বহালের বিষয়টিও বৈঠকে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশে শ্রম পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল করবে বলে জানিয়েছেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সহিংসতাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান এ কে আব্দুল মোমেন।
সংকট সমাধানে আসেম ও কোয়াড সদস্যদের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা-নিউইয়র্ক-ঢাকা রুটে সরাসরি বিমানের ফ্লাইট চালুতে উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ, নাইম রাজ্জাক, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আমেরিকা) তৌফিক ইসলাম শাতিল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আজ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুর ১২টায় বেবিচক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Mostafa Mahmood Siddiq, BSP, GUP, ndc, afwc, acsc, psc) এর সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক জনাব নাদির শাফি দার (Mr. Nadir Shafi Dar) এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন বিষয়ে ফলপ্রসূ মতবিনিময় হয় এবং উভয় পক্ষই এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে ভবিষ্যতে বিমান চলাচল খাতে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো আরও সুদৃঢ় করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেন যে, বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেবিচক এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং PIA এর CEO ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেল ৫টায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে অংশ নেন- এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
এরআগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন।
ধারাবাহিক এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। বিগত সরকারের হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ সব ধরনের অপরাধের বিচারের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন সংলগ্ন টিনশেড ভবন খালি হয়ে গেলে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করতে পারি। এটি করা গেলে গুমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার কাজ দ্রুত করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন আমাদের বিচারকসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত টিম।
আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশের ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আমাদের যে ন্যায়বিচার আছে, আইনের শাসন আছে ও মানবাধিকার আছে এটাকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং হাজারও মানুষকে পঙ্গু করার ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অপরিহার্য-অনিবার্য। সেই বিচারকার্যের প্রথম থেকেই আমরা অবিচল আছি। বিচারের যে গতি আছে সেটা নিয়েও আমরা সন্তুষ্ট আছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন আজ পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
উপদেষ্টা আজ সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়, মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণ যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর হবে।
পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগ ও পদায়ন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এবার বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদায়ন অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। তাই সবাইকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাদককে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি উল্লেখ করে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকার কথা বলেন।
দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কৃষকরাই এদেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল কারিগর। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকেরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এসময় পতিত কৃষিজমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সিলেটের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
উপদেষ্টা এর আগে বিজিবি'র সিলেট সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স এবং সিলেট পুলিশ লাইন পরিদর্শন করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’
সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।
এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মন্তব্য