উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হুমকির মুখে পড়েছে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জিওলের বাঁধ। উপজেলার ইটনা সদর, ধনপুর, মৃগা ও জয়সিদ্দি ইউনিয়নের কৃষকরা স্বপ্ন বুনেছেন এই হাওরে।
ফসল রক্ষার এ বাঁধটি ভেঙে গেলে তলিয়ে যাবে এই চার ইউনিয়নের হাজার হাজার একর বোরো ধান। এমন পরিস্থিতিতে বাঁধটি রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয়রা।
গ্রামে মাইকিং করে জড়ো হচ্ছেন কৃষকরা। কোদাল, পাইছা, প্লাস্টিকের বস্তা আর বাঁশের চাটাই নিয়ে বাঁধে এসেছেন গ্রামবাসী। কেউ কোদাল দিয়ে মাটি কাটছেন, কেউ তুলে দিচ্ছেন মাথায়, কেউবা আবার বস্তার ভেতরে মাটি ভরে নিয়ে ফেলছেন বাঁধের ঢালুতে। অনেকে দিনভর থাকছেন বাঁধ পাহারায়, রাতের খাবারও খান বাঁধে বসে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে জিওলের বাঁধে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।
এ বছর সুনামগঞ্জে আগেভাগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে ভারতের মেঘালয়েও। ফলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তলিয়ে যাচ্ছে তীরবর্তী চর। এই ঢলেই শনিবার টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালী বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে এরই মধ্যে ইটনার বিভিন্ন হাওরের প্রায় ২০০ একর, ধনপুর ইউনিয়নের নালুয়া হাওরে প্রায় ৩০০ একর নিচু জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
পাকার আগ মুহূর্তে কষ্টে বোনা ফসল চোখের সামনে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা কৃষকরা, তাদের চোখেমুখে হতাশার ছাপ।
কৃষকরা বলছেন, পুরো বাঁধটি ১৪ ফিট প্রস্থ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি করা হয়েছে ৭-৮ ফিট, কোথাও কোথাও আরও কম। এ ছাড়া বাঁধের যেখানে প্রয়োজন সেখানে কাজ না করে কাজ হয়েছে অপ্রয়োজনীয় জায়গায়। তাই এটি এখন ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে এই বাঁধ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পরস্থিতিতে হাওরের কৃষকদের সঙ্গে তাদের কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। যেসব জমির ধান ৮০ ভাগ পেকেছে তা দ্রুত কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
ইটনা সদর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি শাহজাহান মিয়া। এই হাওরে ৪১ একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। উজানের ঢল নেমে আসার পর থেকেই এই বাঁধে সার্বক্ষণিক রয়েছেন তিনি।
নিউজবাংলাকে শাহাজাহান বলেন, ‘এই হাওরে চারটি ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার ৫০০ একর জমি রয়েছে। জিওলের বাঁধটি কোনোভাবে ভেঙে গেলেই তলিয়ে যাবে কামারকোনা হাওরের এই জমিগুলো। তাই বাঁধ রক্ষায় সন্ধ্যা থেকেই গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ কৃষক কাজ করছেন সেখানে।
‘আমাদের চোখে ঘুম নাই, ঠিকমতো খাওয়াদাওয়াও নাই। বাঁধ রক্ষায় সার্বক্ষণিক থাকতে হচ্ছে সেখানে। আজও পানি বেড়েছে, আরেকটু বাড়লেই বাঁধ ভেঙে যাবে।’
একই এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের চেষ্টাটুকু করে যাচ্ছি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা। এই হাওরে যাদের জমি আছে, তারা অদল-বদল করে বাঁধে কাজ করছেন। দূর থেকে মাটি কেটে ট্রলি দিয়ে এনে ফেলা হচ্ছে বাঁধে। বাঁশ, চাটাই দিয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় মাটি ভরে ফেলা হচ্ছে বাঁধের গোড়ায়। তারপরও বৃষ্টি হলেই যেকোনো মুহূর্তে বাঁধটি ভেঙে যেতে পারে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক কৃষক বলেন, ‘বাঁধের অবস্থা ভালো না। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি বছরই এই বাঁধের কাজ করা হয়। কিন্তু স্থায়ীভাবে কাজ না করার জন্য আজকে এই পরিণতি। অতীতে এই বাঁধটি যতবার মেরামত করা হয়েছে, ততবারই মাটি তোলা হয়েছে বাঁধের একদম নিচ থেকে। পুরো বাঁধটি ১৪ ফিট প্রস্থ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি করা হয়েছে ৭-৮ ফিট। অনেক জায়গায় আরও কম।’
এই কৃষকের মতো বাঁধের কাজ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ কৃষক আবুল বাশারেরও। তিনি বলেন, ‘এই বাঁধের যে জায়গাটাতে ভাঙনের সম্ভাবনা, সেখানের প্রস্থ সর্বোচ্চ ৭ ফিট। আর সেখানে ভাঙনের সম্ভাবনা নেই, সেখানকার প্রস্থ ১২-১৪ ফিট। যেখানে প্রয়োজন, সেখানে কাজ না করে কাজ হয়েছে অপ্রয়োজনীয় জায়গায়। এখন এমন একটা অবস্থা হয়েছে, আল্লাহ যদি রক্ষা না করে আমরা শেষ।’
পূর্বগ্রাম নয়াহাটির কৃষক আসাদ মিয়া কামারকোনা হাওরে জমি করেছেন ২৫ একর। তিনিও বাঁধরক্ষায় সার্বক্ষণিক রয়েছেন সেখানে। তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ কৃষক সুদের উপরে ঋণ করে জমি চাষাবাদ করেছেন। জিওলের এই বাঁধ ভেঙে গেলে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে। পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’
একই অবস্থা এলংজুরী ইউনিয়নের নাও টানার খালেরও। সেখানেও ভাঙন ঠেকাতে গ্রামের মসজিদে মাইকিং করে জড়ো হয়েছেন কৃষকেরা। চেষ্টা করছেন এটি রক্ষার।
কাকটেংগুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, ‘এই খালের অবস্থাও বেশি ভাল না। যেকোনো সময় খালের বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এই হাওরে জমি রয়েছে ৫০০ একরের মত। বাঁধটি ভেঙে গেলে পুরো হাওর তলিয়ে যাবে।’
নিউজবাংলাকে কৃষক রেণু মিয়া বলেন, ‘এই হাওরের জমির ধান পাকতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। পুরো হাওরের একটি জমির ধানও কাটা হয়নি। নাওটানার খালের উপর বাঁধটি ভেঙে গেলে নিমিষেই সবশেষ হয়ে যাবে।’
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই বাঁধ পরিদর্শনে এসেছিলেন। বাঁধরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমি সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে বাঁধে আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে। বাঁধের নিচ থেকে মাটি তোলা হয়নি। অতীতে যারা কাজ করেছেন, তারা নিচ থেকে মাটি তুলে কাজ করেছেন। নিচে গভীর হওয়ার কারণে বাঁধরক্ষায় বেগ পেতে হচ্ছে।
‘তারপরেও এই বাঁধের পাশেই আরেকটি বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুতই বিকল্প বাঁধের কাজ শেষ হবে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘হাওরের কৃষকদের সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আবারও বৃষ্টি হলে বিভিন্ন হাওরের ফসল তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যে সব জমির ধান ৮০ ভাগ পেকেছে, সে সব ধান দ্রুত কেটে ফেলার জন্য কৃষকদেরকে বলা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উজানের ঢলে নদীর তীরবর্তী চরে এবং নিচু জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে। ধনু নদীতে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে পাহাড়ি ঢলের পানি নিম্নাঞ্চলসহ মোহনায় ছড়িয়ে পড়েছে। নদীর গভীরতা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আমরা লিখব, যাতে এই নদীর তলদেশ খনন করা হয়।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য