× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Bangladesh has not made any mistake of Sri Lanka
google_news print-icon

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কা
অর্থনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির মধ্যে তুলনাই চলে না। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশকে নিয়ে যে আশঙ্কার কথা বলাবলি হচ্ছে, সে বিষয়ে অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ও মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব খামোখা কথাবার্তা; অমূলক। বাস্তবসম্মত নয়। এ ধরনের আশঙ্কার কোনো ভিত্তি নেই। বাংলাদেশ সঠিক পথেই আছে। শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার একটি কারণও নেই বাংলাদেশের।’

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দুই কোটি জনসংখ্যার দেশটির অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ার পর তাদের বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধই শুধু অনিশ্চয়তায় পড়েনি, নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক সংকট।

দেশটির জনগণ যখন সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে, তখন বাংলাদেশে কথা উঠেছে, এই দেশের সামনেও এমন আশঙ্কা আছে কি না।

তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও অর্থনীতির বিশ্লেষকরা ভারত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিপর্যয়ের যেসব কারণ তুলে ধরছেন, সেগুলো বিবেচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকিগুলো সেভাবে নেই।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

পর্যটননির্ভর শ্রীলঙ্কান সরকারের রাজস্ব আয়ের খাত পর্যটনে ধস নেমেছে করোনার দুই বছরে। পর্যটকদের ভ্রমণ বন্ধ থাকায় কার্যত এ খাত থেকে দেশটির আয় হয়নি। কিন্তু পর্যটক আকৃষ্ট করতে গ্রহণ করা নানা প্রকল্পে আগে নেয়া বিপুল বিদেশি ঋণের কিস্তি ঠিকই পরিশোধ করতে হচ্ছে। শিল্প উৎপাদনে ধস নেমেছে, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সও পৌঁছেছে তলানিতে। পাশাপাশি কর ও ভ্যাট কমানো, কৃষিতে রাসায়নিকের ব্যবহার শূন্যতে নামিয়ে আনার কারণে উৎপাদনের ঘাটতি, সব মিলিয়ে কিছু ভুল পরিকল্পনা আর পদক্ষেপের কারণে এমন দশায় পৌঁছেছে দেশটি।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

বাংলাদেশের নেয়া মেগাপ্রকল্প পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ এমন প্রকল্পগুলো অপ্রয়োজনীয় এবং লাভজনক হবে না- এমন কথা কোনো বিশ্লেষকই বলেননি

বাংলাদেশের পরিণতিও শ্রীলঙ্কার মতো হবে কি না, তা নিয়ে নানা লেখা ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিরোধী দলের নেতারাও বক্তৃতায় তুলে ধরছেন প্রসঙ্গটি। অর্থনীতিবিদ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর গত ২ এপ্রিল ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্টস অফ বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনায় বলেছেন, ‘মেগা প্রকল্পের লগ্নি ফেরত না এলে বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কা হবে।

ভারতের গণমাধ্যমেও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশকে তুলনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। ‘প্রথম কলকাতা’ নামের একটি টেলিভিশনে ‘দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা, হ্যারিকেন খুঁজছে, ভারত সাহায্য করল! বাংলাদেশকে সাবধান’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রচার করেছে।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে কলম্বোতে সরকার পরিচালিত সুপারমার্কেট থেকে নিত্যপণ্য কিনে বাড়ি ফিরছেন এক নারী। ছবি: এএফপি

তবে এসব আশঙ্কার কথাকে ‘খামোখা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের দুই অর্থনীতিবিদ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ও বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেন।

তারা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির মধ্যে তুলনা চলে না। দুটির গতি-প্রকৃতি ভিন্ন। এখানে উৎপাদনে ঘাটতি নেই। পাশাপাশি রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। প্রধান খাদ্যপণ্যও আমদানিনির্ভর নয়। আর বাংলাদেশের বিদেশি ঋণও শ্রীলঙ্কার মতো মাথাপিছু এত বেশি নয়। বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কোনো চাপই তৈরি করছে না। দেশের রিজার্ভও শ্রীলঙ্কার তুলনায় আকাশচুম্বি বলা যায়।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারির পর কলম্বোতে কেরোসিনের জন্যে নগরবাসীর দীর্ঘ লাইন। ছবি: এএফপি

অদূর ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোনো ধসের আশঙ্কা করছেন কি না- এমন প্রশ্নে এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব খামোখা কথাবার্তা; অমূলক। বাস্তবসম্মত নয়। এ ধরনের আশঙ্কার কোনো ভিত্তি নেই। বাংলাদেশ সঠিক পথেই আছে। শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার একটি কারণও নেই বাংলাদেশের।’

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ পরিচালক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অযথাই কেউ কেউ নেগেটিভ চিন্তাভাবনা করছেন। এসব চিন্তার কোনো যুক্তি নেই। শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার একটি কারণও নেই বাংলাদেশের।’

শঙ্কার বদলে মির্জ্জা আজিজ উল্টো বাংলাদেশ নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘জুনেই পদ্মা সেতু চালু হবে, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ আরও কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলও চালু হবে এ বছরই। এসব প্রকল্প চালু হলে বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ হবে। আমার মনে হয় না আর পেছনে তাকাতে হবে।’

দুই দেশের মেগাপ্রকল্পের তুলনা

গত ১৫ বছরে শ্রীলঙ্কায় সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, রাস্তা এবং আরও নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানী কলম্বোর কাছেই সমুদ্র থেকে ভূমি উদ্ধার করে কলম্বো পোর্ট সিটি নামে আরেকটি শহর তৈরি করা হচ্ছে। এর কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২৫ বছর এবং বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার।

আমার বিবেচনায় বাংলাদেশ যেসব বড় বা মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তার একটাও অপ্রয়োজনীয় নয়; সবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজন।

এই শহরটি হংকং, দুবাই ও সিঙ্গাপুরকে টেক্কা দেবে- এমন কথা বলা হচ্ছে। এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে শ্রীলঙ্কা ঋণ নিয়েছে, কিন্তু বিপুল অর্থ খরচ করা হলেও অনেক প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়নি।

গত এক দশকে চীনের কাছ থেকেই শ্রীলঙ্কা ঋণ নিয়েছে পাঁচ বিলিয়ন ডলার, যা তাদের মোট ঋণের ১০ শতাংশ।

অন্যদিকে বাংলাদেশের নেয়া মেগাপ্রকল্প পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রো রেল, ঢাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর, গভীর সমুদ্রবন্দর, এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে কেবল রামপাল নিয়ে বিতর্ক আছে এর অবস্থানগত কারণে। তবে এই প্রকল্পগুলো অপ্রয়োজনীয় এবং সেগুলো লাভজনক হবে না- এমন কথা কোনো বিশ্লেষক বলেননি। বরং প্রকল্পগুলো মানুষের জীবনমানকে সহজ এবং উন্নত করবে- এমন আশা করা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের
বাংলাদেশের নেয়া মেগাপ্রকল্পের অন্যতম পদ্মা সেতু

অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিবেচনায় বাংলাদেশ যেসব বড় বা মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তার একটাও অপ্রয়োজনীয় নয়; সবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সঙ্গে সঙ্গে রিটার্ন আসবে। দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। কর্মসংস্থান হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে।’

বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘এই সেতুটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী গতি সঞ্চার করেছে, তা এখন আমরা প্রতি মুহূর্তে অনুধাবন করছি। পদ্মা সেতুসহ যেসব প্রকল্প এখন চলমান রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন হলেও একই ধরনের রিটার্ন পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।’

বিদেশি ঋণের কী চিত্র

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ধসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কথা হচ্ছে বিদেশি ঋণ নিয়ে। দেশটি নানা মেগাপ্রকল্পে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, যেগুলো লাভজনক হয়নি। তবে করোনার সময় ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভে পড়েছে চাপ।

বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের স্থিতি বা পরিমাণ ৪ হাজার ৯৪৫ কোটি ৮০ লাখ (৪৯.৪৫ বিলিয়ন) ডলার। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৩ লাখ। এই হিসাবে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ হয় ২৯২ দশমিক ১১ ডলার।

বাংলাদেশের অর্থনীতি ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির মধ্যে তুলনা চলে না। দুটির গতি-প্রকৃতি ভিন্ন। এখানে উৎপাদনে ঘাটতি নেই। পাশাপাশি রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। প্রধান খাদ্যপণ্যও আমদানিনির্ভর নয়। আর বাংলাদেশের বিদেশি ঋণও শ্রীলঙ্কার মতো মাথাপিছু এত বেশি নয়। বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কোনো চাপই তৈরি করছে না। দেশের রিজার্ভও শ্রীলঙ্কার তুলনায় আকাশচুম্বি বলা যায়।

২ কোটি মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কার বিদেশি ঋণের মোট পরিমাণ ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এই হিসাবে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৬৫০ ডলার।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

বাংলাদেশের তুলনায় শ্রীলঙ্কার জনগণের মাথাপিছু ঋণ সাড়ে পাঁচ গুণেরও বেশি

অর্থাৎ বাংলাদেশের তুলনায় শ্রীলঙ্কার জনগণের মাথাপিছু ঋণ সাড়ে পাঁচ গুণেরও বেশি।

২০১৪ সাল থেকেই ঋণের বোঝা বাড়তে শুরু করে কলম্বোর। সেই সঙ্গে ক্রমেই মুখ থুবড়ে পড়ে জিডিপি।

২০১৯ সালে বিদেশি ঋণ পৌঁছে যায় জিডিপির ৪২ দশমিক ৮ শতাংশে, বাংলাদেশে এটা ১৩ শতাংশেরও নিচে।

বর্তমানে যা পরিস্থিতি, বছরে সব মিলিয়ে অন্তত ৮ বিলিয়ন ডলার শোধ করতেই হবে শ্রীলঙ্কাকে। অন্যদিকে প্রবাসী আয়, রপ্তানি ও পর্যটন খাতে আয় কমায় এই ঋণ পরিশোধ অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটি, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের ছোট-বড় সব প্রকল্পেই কিন্তু বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবি, জাইকাসহ অন্য উন্নয়ন সংস্থার ঋণ এবং নিজের অর্থ যোগ করেছে।

‘এসব সংস্থার সুদের হার খুবই কম। অনেক বছর ধরে শোধ করা যায়। কোনো কোনো ঋণ অবশ্য পরবর্তী সময়ে অনুদান হিসেবে অন্য প্রকল্পেও দেয়। বিশেষ করে জাইকার বেশির ভাগ ঋণের ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকে।

‘অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা চীনের কাছ থেকে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট (যে দেশ টাকা দেবে, সে দেশ থেকে পণ্য কেনা) ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। প্রয়োজন নেই, এমন অনেক প্রকল্পও তারা করেছে। এসব প্রকল্পের সুদের হার অনেক বেশি। সেসব ঋণ সুদে-আসলে পরিশোধ করতে গিয়েই এখন বিপদে পড়েছে শ্রীলঙ্কা।’

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কায় পণ্যের উচ্চমূল্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে পোড়া পাউরুটি হাতে এক প্রতিবাদকারী। ছবি: এএফপি

দুই দেশের রেমিট্যান্সের চিত্র

শ্রীলঙ্কার রেমিট্যান্সের জানুয়ারি মাসের তথ্য পাওয়া গেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে। তাতে দেখা যায়, জানুয়ারিতে মাত্র ২৭ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশটিতে। বাংলাদেশ ব্যাংক মার্চ মাসের তথ্যও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, এই মাসে ১৮৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা মহামারির মধ্যেও ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী সোয়া কোটি বাংলাদেশি।

শ্রীলঙ্কা ক্যালেন্ডার বছরকে আর্থিক বছর ধরে। ২০২১ সালে দেশটিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ৮ বিলিয়ন ডলারের মতো।

অর্থাৎ করোনায় শ্রীলঙ্কার প্রবাসী আয় কমেছে বহুলাংশে। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই সময়ে রেমিট্যান্স-প্রবাহ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়া বিস্মিত করেছে অর্থনীতিবিদ এমনকি বিশ্বব্যাংকের মতো দাতা সংস্থাগুলোকেও। তাদের পূর্বানুমান ছিল, করোনার সময় রেমিট্যান্স অনেক কমে যাবে।

দেড় বছর বাড়ার পর রেমিট্যান্সের প্রবাহ আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমলেও গত কয়েক মাসে আবার গতি ঊর্ধ্বমুখী।

রপ্তানি আয়ের তুলনা

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও বাংলাদেশ রপ্তানি আয়ে চমক দেখিয়ে চলেছে। গত অর্থবছরে ১৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) প্রবৃদ্ধি হয়েছে তারও দ্বিগুণ ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স গত অর্থবছরের চেয়ে কমলেও আগের বছরগুলোর চেয়ে বেশি এসেছে। শ্রীলঙ্কায় রপ্তানি আয় তলানিতে নেমেছে। রেমিট্যান্সের অবস্থাও করুণ।’

সোমবার মার্চ মাসের রপ্তানি আয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। তাতে দেখা যায়, এই মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা পণ্য রপ্তানি থেকে আয় করেছে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

করোনা শ্রীলঙ্কার রপ্তানি আয়ে ধস নামালেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো। কলম্বোর একটি বন্দর। ছবি: এপি

করোনার প্রথম ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৮ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি মুদ্রা এসেছিল দেশে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে অর্থাৎ জুলাই-মার্চ সময়েই এসেছে গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (১২ মাস, জুলাই-জুন) প্রায় সমান ৩৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।

২০২১ সালে পণ্য রপ্তানি থেকে শ্রীলঙ্কা আয় করেছিল সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার।

অর্থাৎ করোনা শ্রীলঙ্কার রপ্তানি আয়ে ধস নামালেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর এই আয় এখন আরও বাড়ছে।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

করোনায় শ্রীলঙ্কার প্রবাসী আয় কমেছে বহুলাংশে। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে

শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ বনাম বাংলাদেশের রিজার্ভ

সোমবার দিন শেষে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪৪ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। আর শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলারেরও কম। গত জানুয়ারি মাস শেষে শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ছিল ২ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। ডিসেম্বর শেষে ছিল ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

গত বছরের এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ছিল ৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল আরও বেশি, ৪৬ বিলিয়ন ডলারের ওপরে।

করোনা আঘাত হানার আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দেশটির রিজার্ভ ছিল ৭ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। তখন বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশিই ছিল।

অর্থাৎ করোনার ধাক্কা শ্রীলঙ্কার রিজার্ভকে তলানিতে নিয়ে এলেও বাংলাদেশে তেমনটা হয়নি। সেটি বেড়েছে বহুলাংশে। মাঝে একবার ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল। পরে আমদানি বৃদ্ধি ও জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্যের কারণে কিছুটা কমেছে।

অন্যদিকে করোনা মহামারি আসার পর থেকেই রিজার্ভ সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। রিজার্ভ বাড়াতে গত বছরের মে মাসে সোয়াপ কারেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশের কাছে ২৫ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ তা দিয়েছে। ওই ঋণ এখনও শোধ করেনি দেশটি। এরই মধ্যে আরও ২৫ কোটি ডলার চেয়েছে।

অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানি অনেক বাড়ার পরও বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ এখন ৪৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এই রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। অথচ শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ দুই বিলিয়ন ডলারেরও কম; এক সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানোর রিজার্ভ নেই দেশটির। সেই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করে অযথা আতঙ্ক ছড়ানোর কোনো কারণ নেই বলে আমি মনে করি।’

কৃষিতে ব্যর্থতা বনাম সাফল্য

২০১৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশে অর্গানিক কৃষি চালু করেন। তিনি কৃষিতে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন।

এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশটিতে। চালের উৎপাদন কমে যায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত। চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ শ্রীলঙ্কা তখন প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলারের চাল আমদানি করতে বাধ্য হয়। এর প্রভাবে ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় পণ্যটির দাম।

অর্গানিক কৃষির নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশটির চা উৎপাদনেও। এই পণ্যটি রপ্তানিতেও দেখা দেয় নেতিবাচক প্রভাব।

অন্যদিকে বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং উৎপাদন বছর বছর বাড়ছেই। এর মধ্যেও সরকার বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়ার পর এই মুহূর্তে খাদ্যের মজুত ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের

স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের কৃষিতেও ঘটেছে বিপ্লব

২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তির ৪০ দশমিক ৬২ শতাংশ এখনও কৃষিতে নিয়োজিত, মানে কৃষি এখনও নিয়োগের বড় ক্ষেত্র।

বর্তমানে বাংলাদেশে ফসলের নিবিড়তা ২১৬ শতাংশ, যা ২০০৬ সালে ছিল ১৬০ শতাংশ।

২০২০-২১ অর্থবছরে করোনার মধ্যে কৃষিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

একই অর্থবছরে ধানের প্রধান মৌসুমে বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছে ২ কোটি টনের বেশি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

একই সময়ে মোট চাল উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন, গম ১২ লাখ টন, ভুট্টা প্রায় ৫৭ লাখ টন, আলু ১ কোটি ৬ লাখ টন, শাক-সবজি ১ কোটি ৯৭ লাখ টন, তেলজাতীয় ফসল ১২ লাখ টন ও ডালজাতীয় ফসল ৯ লাখ টন।

করোনার আগের বছরের চেয়ে করোনার বছরে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে ৭ লাখ টন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ পরিচালক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবচেয়ে স্বস্তির জায়গা হচ্ছে, বাংলাদেশে প্রচুর খাদ্য মজুত আছে। সরকারি গুদামগুলোতে মজুত অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি, ২০ লাখ টনের মতো। কয়েক বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় মানুষের কাছেও প্রচুর ধান-চাল মজুত আছে। তাই খাদ্য নিয়ে এক-দুই বছর বাংলাদেশকে ভাবতে হচ্ছে না। মূল্যস্ফীতি শ্রীলঙ্কার মতো ২০ শতাংশে ওঠার কোনো কারণ নেই।’

দেশের অর্থনীতির শক্তির ভর কেন্দ্র মজবুত, টলেছে শ্রীলঙ্কার

মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা পর্যটননির্ভর অর্থনীতির দেশ। করোনার কারণে গত দুই বছর দেশটিতে কোনো পর্যটক যায়নি। ধ্বংস হয়ে গেছে এই খাত। দুই বছর একটি দেশের অর্থনীতির প্রধান খাত বন্ধ, সে দেশের অর্থনীতি সংকটে পড়াটাই স্বাভাবিক।

‘কিন্তু বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রেই ঘটেছে তার উল্টোটা। করোনার সময়ে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বেড়েছে। কোনো খাতই বন্ধ ছিল না। কৃষি খাতে বাম্পার ফলন হয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলা করেছে। সে কারণেই কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। অল্প সময়ের মধ্যেই করোনার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’

আরও পড়ুন:
আমরা শ্রীলঙ্কার পথে যাচ্ছি না: পরিকল্পনামন্ত্রী
শ্রীলঙ্কার ভুলের একটিও নেই বাংলাদেশের
বাংলাদেশের হাত ধরে ৭২ বছর আগে ফিরল প্রোটিয়ারা
শ্রীলঙ্কা সংকট: সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
দলের মানসিক শক্তিতে ভরসা রাখছেন মুমিনুল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Masterplan to raise foreign tourists in the Sundarbans

সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটক বাড়াতে মাস্টারপ্ল্যান

সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটক বাড়াতে মাস্টারপ্ল্যান ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য অক্ষুণ্ন রেখে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০ বছর মেয়াদি ‘সুন্দরবন ইকোট্যুরিজম মাস্টারপ্ল্যান (২০২৫-২০৪৫)’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি গতানুগতিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মতো নয়, বরং সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশকে অক্ষুন্ন রেখে কীভাবে টেকসই পর্যটন বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন করা যায়, তার একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ করা হয়েছে।
মাস্টারপ্ল্যানটি বন বিভাগ অনুমোদন দিলে ইউনেস্কো ঘোষিত এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইউএসএআইডির আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় বাংলাদেশ বন বিভাগ ও সোলিমার ইন্টারন্যাশনাল এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। ইউএসএআইডি ইকোট্যুরিজম অ্যাক্টিভিটি পাইলট প্রকল্পের অধীনে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে তিন বছর মেয়াদে এ মাস্টারপ্ল্যানের বড় একটি অংশ বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে।
ডেপুটি চিফ অব পার্টি হিসেবে এ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে নেতৃত্ব দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম।
তিনি জানান, এই মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে প্রায় দুই বছর সময় লেগেছে। এটি মূলত সুন্দরবনের পরিবেশ ও অর্থনীতির সমন্বয়ে একটি টেকনিক্যাল রোডম্যাপ। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশীয় পর্যটন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ঘটবে, স্থানীয়দের অর্থনৈতিক ভিত মজবুত হবে এবং এর মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।’
ড. মো. ওয়াসিউল বলেন, ‘সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটক আকর্ষণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথও খুলবে, যা জাতীয় অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশি পর্যটকরা সুন্দরবনের কোলাহলমুক্ত, শান্ত, সুনিবিড় পরিবেশ এবং রাতের জ্যোৎস্না বিশেষভাবে উপভোগ করে থাকেন। এই চাহিদা কাজে লাগাতে পারলে পর্যটন খাত দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।’
মাস্টারপ্ল্যানটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর কমিউনিটিভিত্তিক ইকোট্যুরিজম মডেল। বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয়, ট্যুরিস্ট পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ও আঞ্চলিক ট্যুর অপারেটর এবং স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
ড. ওয়াসিউল বলেন, ‘স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে পরিকল্পনাটি তৈরি হওয়ায় বিরোধের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। স্থানীয়রা সরাসরি ইকোট্যুরিজমে অংশ নেবে এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগতভাবে উপকৃত হবে।’
পরিকল্পনায় বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরতা কমানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার পেয়েছে। পর্যটনের মাধ্যমে বিকল্প ও টেকসই জীবিকা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে সুন্দরবনের পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই পদ্ধতি ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের ওপর চাপ কমাবে এবং ঘূর্ণিঝড় ও জোয়ার-ভাটার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে এর সহনশীলতা বাড়াবে।’
এই প্রকল্পের অধীনে ২০০ জনের বেশি ইকো-গাইডকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা পর্যটকদের গাইড করবে এবং মানুষ-বন্যপ্রাণীর সংঘাত কমিয়ে আনবে। তাদের তত্ত্বাবধানে নিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিশ্চিত হবে, যা পরিবেশের ক্ষতি কমাবে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষক জানান, দাকোপ এলাকায় যে সকল ইকো-কটেজ স্থাপন করা হয়েছে, সেসব কটেজে কর্মরত স্থানীয় কর্মচারীদেরও গেস্ট ম্যানেজমেন্ট এবং পর্যটক সেবা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে পর্যটকদের সাথে কোনো ধরনের সংঘাত বা ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার সুযোগ কম থাকে।
পর্যটকদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য মাস্টারপ্ল্যানে প্রধান তিনটি প্রবেশপথ মোংলা, মুন্সীগঞ্জ ও শরণখোলায় তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের নৌকা ভাড়া করা, ইকো-গাইড নিয়োগ করা এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক পর্যটন সুবিধা পেতে সাহায্য করবে।
বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বাসসকে জানান, প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ পর্যটক সুন্দরবনে ভ্রমণ করতে আসেন।

তিনি বলেন, ‘এ বিপুল সংখ্যক পর্যটককে নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ। এই মাস্টারপ্ল্যানটি বনের ক্ষতি না করে দায়িত্বশীল ইকো-ট্যুরিজমকে উৎসাহিত করছে। এটি একটি সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

ইমরান আহমেদ জানান, পরিকল্পনাটি বর্তমানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সুন্দরবনভিত্তিক ইকোট্যুরিজম খুলনাকে জাতীয় রাজস্বের একটি বড় উৎসে পরিণত করবে।’

সুন্দরবনের আশপাশের গ্রামবাসীরাও পরিকল্পনাটি নিয়ে আশাবাদী। তারা জানান, আগে কিছু ব্যক্তিগত কটেজে অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছিল। তবে নতুন পরিকল্পনায় সরকারি তত্ত্বাবধান থাকায় একসঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনকল্যাণ নিশ্চিত হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ২০ বছর মেয়াদি এই মাস্টারপ্ল্যান সুন্দরবনকে টেকসই পর্যটনের আদর্শ রূপে গড়ে তুলবে, যা বন সংরক্ষণকে উৎসাহিত করবে, স্থানীয়দের শক্তিশালী করবে এবং বিশ্বজুড়ে প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করবে।
সূত্র: বাসস

মন্তব্য

বাংলাদেশ
DESCO loss is not a dividend of Tk 120 crore

ডেসকোর লোকসান ১২৫ কোটি টাকা, নেই লভ্যাংশ

ডেসকোর লোকসান ১২৫ কোটি টাকা, নেই লভ্যাংশ

বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ঢাকা ইলেকটিক্স সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ১২৫ কোটি টাকার বেশি লোকসান করেছে। রোববার প্রকাশিত কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি ।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ডেসকোর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ১৫ পয়সা। ডেসকোর মোট শেয়ারের সংখ্যা ৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৪। সে হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নিট লোকসান হয়েছে ১২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা ৪৪ হাজার ৮৮২ টাকা।

নিরীক্ষিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছর শেষে ডেসকোর শেয়ার প্রতি নিট সম্পত্তি দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকা ৩৩ পয়সা, শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৯৩ পয়সা।

কোম্পানির মূল্য-সংবেদনশীল তথ্যের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেহেতু কোম্পানির চলতি বছরে লোকসান হয়েছে এবং অবণ্ঠিত পুঞ্জীভূত মুনাফা ঋণাত্মক, তাই পরিচালনা পর্ষদ এ বছর কোনো লভ্যাংশ সুপারিশ করতে পারেনি।

টানা তিন বছর ধরে লোকসানে রয়েছে ডেসকো। এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ১২ টাকা ৭২ পয়সা। সে হিসেবে নিট লোকসান হয় ৫০৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কোম্পানি শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ১৩ টাকা ৬১ পয়সা। সে হিসাবে নিট লোকসান হয় ৫৪১ কোটি ২১ লাখ টাকা।

কোম্পানির মূল্য-সংবেদনশীল তথ্যের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত শনিবার ডেসকোর পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত ৩০ জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব বিবরণী অনুমোদিত হয়। সভায় ২০২৬ সালের ১৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ২৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। এর জন্য রেকর্ড ডেট রাখা হয়েছে আগামী ২০ নভেম্বর।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The price of LNG has risen in the Asian spot market

এশিয়ার স্পট মার্কেটে বেড়েছে এলএনজির দাম

এশিয়ার স্পট মার্কেটে বেড়েছে এলএনজির দাম

প্রায় এক মাসের স্থিতিশীলতা ভেঙে আবারও বেড়েছে এশিয়ার স্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম। ইউরোপে আগেভাগে শীত শুরু হওয়া এবং ইউক্রেনের গ্যাস অবকাঠামোয় রাশিয়ার হামলার প্রভাবেই এই জ্বালানি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। খবর: রয়টার্স ও মার্কেট স্ক্রিনার।

শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় নভেম্বরে সরবরাহের জন্য গত সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১১ ডলার, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১০ ডলার ৬০ সেন্ট। ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য গড় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ ডলার ২০ সেন্ট প্রতি এমএমবিটিইউ।

এফজিইর গ্যাস ও এলএনজি সাপ্লাই অ্যানালিটিকস বিভাগের পরিচালক সিয়ামাক আদিবি বলেন, ‘ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে গেছে, কারণ অক্টোবরের শুরুতেই ঠাণ্ডা আবহাওয়া দেখা দিয়েছে। ফলে বৈশ্বিক বাজারে এলএনজির দামও ঊর্ধ্বমুখী।’

তিনি আরও জানান, ‘ইউরোপে গ্যাস মজুত বাড়ানোর গতি কমলেও রিগ্যাসিফিকেশন টার্মিনাল থেকে সরবরাহ উচ্চমাত্রায় রয়েছে। তবে এশিয়ার বাজারে চাহিদা এখনো তুলনামূলক কম। মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার বাজারেও মৌসুমি প্রভাবে চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। ফলে চলতি শীত মৌসুমে এলএনজির দিকনির্দেশনা নির্ভর করবে ইউরোপের ওপর।’

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে নভেম্বরে সরবরাহের জন্য এলএনজির গড় মূল্য ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১০ ডলার ৩৩ সেন্ট, যা নেদারল্যান্ডসের টিটিএফ ফিউচার সরবরাহ চুক্তির তুলনায় ৬৩ সেন্ট কম।

অন্যদিকে, আর্গাস এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ১০ ডলার ৩৬ সেন্ট এবং স্পার্ক কমোডিটিস ১০ ডলার ৩০ সেন্ট প্রতি এমএমবিটিইউ।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের আটলান্টিক এলএনজির ব্যবস্থাপক এলি ব্লেকওয়ে জানান, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলায় প্রায় ৩০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন ব্যাহত হয়েছে। তা ছাড়া অক্টোবরেই ইউরোপে শীত শুরু হওয়ায় গ্যাস মজুত থেকে উত্তোলন শুরু হয়েছে, যা দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত গত বছরের তুলনায় ১১ শতাংশের বেশি কম। ফলে পর্যাপ্ত সরবরাহ বজায় রাখতে শীত মৌসুমে ইউরোপকে তুলনামূলক বেশি দামে এলএনজি আমদানি করতে হতে পারে।’

তবে আইসিআইএসের সিনিয়র এলএনজি বিশ্লেষক অ্যালেক্স ফ্রোলি মনে করেন, সেপ্টেম্বরে চীনের এলএনজি আমদানি হ্রাস এবং মিসরের দুর্বল চাহিদা ইউরোপীয় বাজারের দামের ওপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনতে পারে।

অন্যদিকে স্পার্ক কমোডিটিসের বিশ্লেষক ম্যাক্স গ্লেন-ডোয়েপেল জানান, ‘বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপে রপ্তানির প্রণোদনা এখনো বেশি, কারণ উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় সরবরাহের তুলনায় ইউরোপীয় বাজারে মূল্য সুবিধা বেশি।’

এদিকে এলএনজির পরিবহন খরচও কিছুটা কমেছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত আটলান্টিক রুটে পরিবহন ব্যয় কমে দৈনিক ২২ হাজার ডলার, আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় রুটে তা স্থির হয়েছে ২৪ হাজার ডলারে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
UNICEF wants an active role in the protection of children

শিশুদের সুরক্ষায় বেসরকারি খাতের সক্রিয় ভূমিকা চায় ইউনিসেফ

আইসিসি বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ
শিশুদের সুরক্ষায় বেসরকারি খাতের সক্রিয় ভূমিকা চায় ইউনিসেফ

শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে বেসরকারি খাতের পুঁজি, উদ্ভাবন ও সম্পৃক্ততা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে আইসিসি বাংলাদেশের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংলাপে ইউনিসেফের প্রাইভেট ফান্ডরেইজিং ও পার্টনারশিপস বিভাগের পরিচালক কার্লা হাদ্দাদ মারদিনি এ আহ্বান জানান।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ ও ইউনিসেফের মধ্যে আয়োজিত এ সংলাপে শিশুদের অধিকার রক্ষা, টেকসই উন্নয়ন এবং সামাজিক কল্যাণে বেসরকারি খাতের ভূমিকা নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা হয়। রোববার আইসিসি বাংলাদেশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নে আইসিসি বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুতিবদ্ধভাবে কাজ করছে। প্যারিসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের বাংলাদেশ অধ্যায় হিসেবে আইসিসি বাংলাদেশ দায়িত্বশীল ব্যবসা পরিচালনা ও নৈতিক কর্পোরেট চর্চা প্রচারে নিরলসভাবে কাজ করছে, যা জাতীয় অগ্রাধিকার ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তিনি আরও জানান, ইউনিসেফের বিভিন্ন কর্মসূচিতে আইসিসি বাংলাদেশ নিয়মিত সহযোগিতা করে আসছে। ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় ইউনিসেফ বাংলাদেশের কার্যক্রমে ১৫ লাখ টাকা অনুদান দেয় সংস্থাটি। পরে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার শিশুদের জন্য চিকিৎসা, খাদ্য ও মানবিক সহায়তায় ইউনিসেফ প্যালেস্টাইনের কার্যক্রমে তিন কোটি টাকা অনুদান প্রদান করে।

সংলাপে ইউনিসেফের পরিচালক কার্লা হাদ্দাদ মারদিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এখনই বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও সহযোগিতাকে কাজে লাগানো জরুরি। ব্যবসায়ী সমাজকে একত্রিত করে যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমরা আইসিসি বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এ. কে. আজাদ, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি. রহমান, ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার বিদ্যা অমৃত খান, প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেডের এমডি ফজলুল হক, উত্তরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, সায়হাম কটন মিলসের এমডি প্রকৌশলী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, আইসিসি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল আতাউর রহমানসহ ইউনিসেফ ও আইসিসি বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ইউনিসেফ প্রতিনিধি দল বৈঠকে বলেন, বেসরকারি খাত শুধু অর্থনৈতিক সহায়তার মাধ্যমেই নয়, তাদের প্রভাব, প্ল্যাটফর্ম ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে শিশু অধিকার, লিঙ্গ সমতা ও তরুণদের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সভা শেষে আইসিসি বাংলাদেশ ও ইউনিসেফ ভবিষ্যৎ সহযোগিতার জন্য একটি যৌথ রোডম্যাপ প্রণয়নে সম্মত হয়। এই রোডম্যাপের মূল লক্ষ্য হবে করপোরেট সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, নীতিগত সংলাপ জোরদার এবং শিশু ও তরুণদের কল্যাণে সম্প্রদায়ভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা। এটি ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর স্বাক্ষরিত আইসিসি বাংলাদেশ–ইউনিসেফ সমঝোতা স্মারকের আওতায় পরিচালিত হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Three terminals of Chittagong port are going to the hands of foreign operators
নৌ-সচিব

বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের তিন টার্মিনাল

চুক্তি ডিসেম্বরে
বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের তিন টার্মিনাল

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি, লালদিয়ার চর এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনাল ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশি অপারেটরের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ।

তিনি বলেন, তিন টার্মিনালের মধ্যে পানগাঁও ছেড়ে দিতে কিছুটা সময় নেওয়া হবে।

এছাড়া নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) অক্টোবরের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল, সেটারও কিছুটা সময় নেওয়া হচ্ছে।

রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপার্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পে বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব এ কথা বলেন।

মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আলোচনা শুরু হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি অপারেটরদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্ট্র্যাটেজিক ইস্যু আছে, ভৌগোলিক ইস্যু আছে। আমরা মনে করি, সেটা বড় কোনো বিষয় হবে না। শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বন্দরে বিদেশি অপারেটর কাজ করছে। সেখানে কোনো সমস্যা না হলে এখানে সমস্যা হবে কেন?

চট্টগ্রাম বন্দরের ক্যাপাসিটি বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও যেটা নেই, আমরা তা করছি, বন্দরের মধ্যে কন্টেইনার খুলে পণ্য ডেলিভারি দিচ্ছি। চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩টি গেট আছে, এর মধ্যে স্ক্যানিং মেশিন আছে মাত্র ৬টি। তার মধ্যে আবার ৩-৪টি নষ্ট থাকে। এভাবে বন্দর চলতে পারে না। এজন্য আমরা বন্দরের ক্যাপাসিটি বাড়াতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা করতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে যাবে।

‘ব্যবসায়ীরা বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার বিরোধিতা করছেন, এরপরও বন্দর কি ছেড়ে দেওয়া হবে?’— এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, তারা আগে এমন নানা কথা বলেন, কিন্তু পরে পরিস্থিতি দেখে আর কথা বলেন না।

‘বন্দরের উন্নয়নে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে, এজন্য খরচ বাড়ানো হবে, এটা বহন করতে পারবেন কি না’—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, সেবার মান বাড়ানো হলে, দ্রুত সেবা দেওয়ার মাধ্যমে বন্দরে অযথা জাহাজ বসিয়ে রাখা হ্রাসের মাধ্যমে ড্যামারেজ কমিয়ে আনতে পারলে বাড়তি খরচ দিতে কোনো সমস্যা হবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমুদ্রগামী জাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, জাহাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে একই দেশে দুই ধরনের পতাকার অস্তিত্ব রয়েছে। আইন অনুযায়ী সরকারি টাকায় কেনা পণ্য শুধু দেশের পতাকাবাহী জাহাজ বহন করতে পারবে। সরকার মালিকানাধীন জাহাজ বোঝাতে সরকারি পতাকাবাহী জাহাজের কথা বলা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, তাহলে দেশের বেসরকারি জাহাজ কোন দেশের পতাকা বহন করে?

মূল প্রবন্ধে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়দী সাত্তার বলেন, দেশে জাহাজভাঙা শিল্প ও ছোট জাহাজ নির্মাণ খাত বড় জাহাজ নির্মাণের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছে। জাহাজ রপ্তানির জন্য প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের কার্যাদেশ আছে। এগুলো ঠিক মতো সরবরাহ করতে পারলে কার্যাদেশ আরও বাড়বে। এজন্য প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে জাহাজ নির্মাণশিল্প উপযোগী ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নির্ভর করে জাহাজ নির্মাণশিল্প। বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য এখন ইতিবাচক রয়েছে। এ সুবিধা কাজে লাগাতে পারলে জাহাজ নির্মাণশিল্প দুই বিলিয়ন ডলারের শিল্পে পরিণত করা সম্ভব।

স্বল্পোন্নত (এলডিসি) থেকে দেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন উন্নয়নশীল দেশের উপযোগী শিল্পের দিকে যেতে হবে। জাহাজ নির্মাণশিল্প সেই শিল্প যা শুধু তৈরি পোশাক নির্ভর শিল্পের বাইরে টেকসই শিল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা, পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chittagong traders demanded suspension of the ports extended tariff

বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিত করার দাবি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের

বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিত করার দাবি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। অস্বাভাবিক ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রতিবাদে রোববার চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু বে ভিউতে ব্যবসায়ীদের সমন্বয় সভায় বক্তারা এ দাবি করেন। বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা না করা পর্যন্ত এ ট্যারিফ স্থগিত করার দাবি জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমির হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের ব্যানারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম, চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি এসএম আবু তৈয়বের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এশিয়ান গ্রুপের প্রধান এমএ সালাম।

এতে চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক, বিজিএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিম রহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বারের

সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন, সাবেক পরিচালক খায়রুল আলম সুজন, বিজিপিএমইএর সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী, বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরীসহ, বেপজার সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভিরসহ ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি আমির হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০০৩ সালে বাফার সঙ্গে গার্মেন্টসের যখন সমস্যা হয়েছিলো তখন আমি চেম্বারের সভাপতি ছিলাম। বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ একসঙ্গে প্রতিরোধ করতে পেরেছিলাম। এবার বন্দরের নতুন ট্যারিফ সাধারণ মানুষকে দিতে হবে। বন্দর নিয়ে যে খেলা শুরু হয়েছে তা খেলতে দেওয়া হবে না। বন্দরে চট্টগ্রাম চেম্বার থেকে একজন প্রতিনিধিকে পরিচালক করতে হবে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, বন্দরের মাশুল ব্যবসায়ীরা পেমেন্ট করব না। এটা জনগণকে পেমেন্ট করতে হবে। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে স্বাধীন পরিচালক আছে, বন্দরে নেই কেন? আমরা কারও গোলাম না। আমার টাকায় আপনারা চালান। ট্যারিফ বাড়ানো ষড়যন্ত্র। মোংলা, পায়রায় বাড়াননি। আমি ৪০ বছর ব্যবসা করছি। কচি খোকা নই। বন্দর বাঁচাতে হবে। বন্দরকে কস্ট বেইজড ট্যারিফ করতে হবে। আমরা কি গোলাম? কলুর বলদ? অন্তর্বর্তীকালীন কেন ট্যারিফ বাড়াবে? আর কোনো টাকা বন্দরের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। এনসিটির পর একটি পতেঙ্গা টার্মিনাল হয়েছিল, সেটি দিয়ে দিয়েছেন!

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সেলিম রহমান বলেন, আরএমজি ব্যবসায়ীরা বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি দুটোই করে। ভিয়েতনাম, ভারত ও মালয়েশিয়ার চেয়ে আমাদের কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস বেশি। ২৯ বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতায় বন্দরকে লস করতে দেখিনি। তাহলে বন্দরে ৪১ শতাংশ ট্যারিফ কেন বাড়াতে হবে?

মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী বলেন, আমরা ট্যারিফ বাড়ানোর বিরুদ্ধে। চট্টগ্রাম বন্দর জনগণের টাকায় তৈরি সেবার জন্য। ২০২৩ সালের বন্দর আইনে উপদেষ্টা পরিষদ বাতিল করেছে। স্বাধীনতার সময় বন্দরে কাঁটাতারের বেড়া ছিল। পৃথিবীতে সাড়ে চার হাজার বন্দর আছে। আড়াই হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। বাড়াতে হলে জাতীয় সংসদ বাড়াবে। এ দেশের গার্মেন্টস থেকে বায়ার পোশাক কিনবে না। ভিয়েতনাম, ভারতে চলে যাবে বায়ার। বন্দর আমাদের কাছে নেই। আমাদের চুষে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করছে। আমদানি খরচ বাড়লে রপ্তানি খরচ বাড়বে। সব শিপিং এজেন্টদের সমভাবে নির্ধারণের দায়িত্ব চিটাগাং চেম্বারের।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bangladesh is interested in doing FTA with the European Union

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এফটিএ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতিনিধি দলের বৈঠক
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এফটিএ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি এবং পরবর্তীতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ইইউ) বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার। ইইউ-এর সাথে বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রচুর সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্ভাবনার সম্ভাব্যতা যাচাই ও বাণিজ্যিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণের পর বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি এবং পরবর্তীতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে চায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার বলেন, সম্পর্কোন্নয়নে বাণিজ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে উভয় পক্ষেরই সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ আছে।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিসটিয়াগা, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মুলার, ফ্রান্স দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ফ্রেডরিক ইনজা, জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন এনজা ক্রিস্টেন, ইতালি দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ফ্রেডরিকো জামপ্রেল্লি, সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ইভা স্মেডব্রেগ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ ডেলিগেশনের ট্রেড অ্যাডভাইজার আবু সাইদ বেলাল উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

p
উপরে