দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মুজিববর্ষের উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত ভূমিহীনরা বাড়ি না পেলেও সেখানে বাড়ি পেয়েছেন বিত্তশালীরা। এমনকি সেখানে টাকা দিয়ে বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে সেগুলো বিক্রিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়গুলো নিয়ে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন বাড়ি বরাদ্দ না পাওয়া প্রকৃত ভূমিহীনরা।
এসব অনিয়মের প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আরাজী জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনের রাস্তায় ভূমিহীনরা মানববন্ধন করেছে।
তার আগে তারা বাড়ি বরাদ্দের দাবিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের খালি ঘরগুরোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
রোববার অন্তত ৬০ জন ভূমিহীনের স্বাক্ষরসহ ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করেন ভূমিহীনরা।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ভেড়ভেড়ি ইউনিয়ন পরিষদের তহশিদার মোকতার হোসেন টংগুয়া বাজারের সেফালী আকতারের কাছে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে আরাজী জাহাঙ্গীপুর গ্রামে বাড়ি বরাদ্দ দিয়েছেন।
এই এলাকায় এমন বহু মানুষের কাছে টাকা নিয়ে বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। অথচ ওই গ্রামে অন্তত ১০০টি ভূমিহীন পরিবার রয়েছে।
আবু তালেব নামের এক তরুণ বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগ করি। আমরা ভূমিহীনরা রোববার ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।’
মরিয়ম বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘আমার কোনো ঘরবাড়ি নাই। মেম্বার আর চেয়ারম্যানের কাছে ঘুরাফেরা করতেই আছি। কিন্তু টাকা ছাড়া বাড়ি পাওয়া যায় না। আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাই। আমি টাকা পাব কোথায়?’
টাকা দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি কিনেছেন মোস্তফা শেখ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ গ্রামে অনেক মানুষ টাকা দিয়ে সরকারি বাড়ি কিনেছে। অনেকে বাড়ি বরাদ্দ নিয়েও থাকে না, আবার অনেকের বাইরে জমি আছে, তারাও বাড়ি পেয়েছে। অথচ গ্রামের বহু ভূমিহীন আছে। কিন্তু তারা বাড়ি পাচ্ছে না। আমি সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ সরকারকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি নিয়েছি।’
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ সরকারের মধ্যস্থতায় ৩০ হাজার টাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি বাড়ি কিনেছেন ওই গ্রামে হুসেন আলী। তার ছোট ভাই মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বড় ভাই সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় একটি বাড়ি কিনেছেন। ভাই ঢাকায় থাকেন, তাই আমি এই বাড়িতে থাকি।’
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। অভিযোগ আসতেই পারে। আপনি নিউজ করেন।’
ইউএনও রাশিদা আক্তার বলেন, ‘আমি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাদের ডাকা হবে। তারা যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পরের ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৫২টি বাড়ি নির্মাণ করার কথা জানান তিনি। সেখানে প্রকৃত ভূমিহীনদের বরাদ্দ দেয়ার বিষয়টি কঠোরভাবে তদারকি করা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:সিলেটে আবার বাড়ছে সুরমা নদীর পানি। বুধবার সবগুলো পয়েন্টে নদীর পানি কয়েক ইঞ্চি বেড়েছে।
সিলেটে চলমান বন্যার পানি এখনও পুরো নামেনি। এখনও প্লাবিত জেলার বেশির ভাগ এলাকা। তবে কয়েক দিন ধরেই পানি কমতে শুরু করে। আর বুধবার এসে ফের বাড়ছে পানি। এতে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সিলেটে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেট কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ২৯ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে এক সেন্টিমিটার বেড়েছে। বেড়েছে লোভা নদীর পানিও।
মঙ্গলবার রাতের ভারি বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে নগরের বেশির ভাগ এলাকা। উপশহর, তালতালা, মির্জাজাঙ্গালসহ কিছু এলাকার ঘরবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়ে। এতে ফের দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব এলাকার বাসিন্দাদের। পানি আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে অনেকের। তবে বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় নগরের পানি কিছুটা কমেছে।
নগরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা মাসুক আমিন বলেন, ‘মঙ্গলবার আতঙ্কে আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। রাত জেগে পানি পাহারা দিয়েছি। রাতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘টানা ১০ দিন পর মাত্র দুদিন আগে ঘর থেকে পানি নেমেছে। এখন আবার ঘরে পানি উঠলে দুর্ভোগের কোনো সীমা থাকবে না।’
জামতলা এলাকার বাসিন্দা সাগর চৌধুরীর বলেন, ‘বারবার এভাবে পানি ঢুকে পড়ছে। আমরা কী করব, কোথায় যাব কিছুই বুঝতে পারছি না।’
তবে বুধবার সকালে ঘর থেকে পানি নেমেছে বলে জানান তিনি।
বাসাবাড়ির পাশাপাশি পানি ঢুকে পড়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও। এক মাসে তিনবার দোকানে পানি ঢোকার কথা জানান ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাশ টুকু। তিনি বলেন, ‘৮-৯ দিন পর গত সোমবার দোকান থেকে পানি নেমেছিল। গত রাতে আবার ঢুকে পড়ে। এক মাসে এই তিনবার পানি ঢুকল।’
টুকু বলেন, ‘কান্না করা ছাড়া এখন আর কিছুই করার নেই আসলে। কারও কাছে তো অভিযোগ জানানোরও নেই। আমাদের যে কী ক্ষতি হচ্ছে তা বলে বোঝানো যাবে না।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা বলেন, ‘সিলেটের পাশাপাশি উজানেও বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে নদ-নদীর পানি বাড়ছে।’
নদী, ড্রেন ও ছড়া পানিতে ভরাট হয়ে পড়ায় অল্প বৃষ্টিতেই নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘সব জলাধার পানিতে টুইটম্বুর। নদী পানি টানতে পারছে না। ফলে বৃষ্টির পানি নামার জায়গা পাচ্ছে না। এ কারণে অল্প বৃষ্টিতেই মঙ্গলবার নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তবে বৃষ্টি থামার পর পানি নেমে গেছে।’
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে হামলায় শাহরিয়ার জনি নামে এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। এ সময় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পৌর শহরের শিলাসী এলাকায় মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলেন পৌর শহরের শিলাসী রেলপাড় এলাকার রনি মিয়া ও উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের মো. সজিব। তারা দুজন বন্ধু।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘রনি ও সজিব দীর্ঘদিন ধরে মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি রনি মাদক মামলায় জেল খেটে বাড়িতে এসেছে। এর পরও ওই দুজনের নিয়মিত মাদক কেনাবেচা করার তথ্য আসে আমাদের কাছে।
‘অনুসন্ধানে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে রনি ও সজিব এক ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সমস এএসআই আবু তাহেরের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ রনির বাড়িতে অভিযান চালায়।’
ওসি জানান, দরজায় টোকা দিলে সজিব দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে রনি রামদা দিয়ে কনস্টেবল শাহরিয়ার জনিকে কোপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কোপে জনির আঙুলের ওপরে কেটে গেলেও দুজনকে আটক করা সম্ভব হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৫ গ্রাম হেরোইন ও ১০৬ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।
ওসি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যের আঙুলে চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
আরও পড়ুন:স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে স্থাপন হয়েছে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ। একই সঙ্গে এই প্রকল্পের মাধ্যমেই তৈরি হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন।
এ লক্ষ্যে সেতু থেকে দুই কিলোমিটার ভাটিতে ইতোমধ্যে আলাদা সাতটি পিলার নির্মাণ শেষ করেছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, তবে এর জন্য সরকারের আলাদা কোনো অর্থ খরচ হয়নি।
মূল সেতুর জন্য বরাদ্দ ১২ হাজার কোটি টাকা থেকেই নদীর গভীরের এই পিলারগুলো তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ পিলারটি ৯ জুন সেতু বিভাগ হস্তান্তর করেছে বিদ্যুৎ বিভাগকে।
পদ্মা সেতুসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাঠামো স্টিলের হওয়ায় সেখান দিয়ে ৪০০ কেভি হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন টানা সম্ভব নয়। তাই মূল সেতু থেকে দুই কিলোমিটার ভাটিতে আলাদা করে সাতটি পিলার নির্মাণ করে বিদ্যুতের তার টানা হচ্ছে।
পদ্মা সেতুর পাইলিংয়ের জন্য যে শক্তিশালী হ্যামার বাংলাদেশে আনা হয়েছিল, সেটি দিয়েই বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য এসব পিলার তৈরি করেছে সেতু বিভাগ।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই সাতটি পিলারের সবগুলোর কাজ শেষ করে ৯ জুন আমরা বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছি। তিন-চার মাস আগে আমরা পাঁচটি পিলার বিদ্যুৎ বিভাগকে হস্তান্তর করেছিলাম। সেগুলোতে ইতোমধ্যে ইস্পাতের টাওয়ার নির্মাণ শেষ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।’
তিনি বলেন, ‘এই সাতটি পিলারের তিনটিতে চারটি করে আর চারটিতে ছয়টি করে মোট ৩৬টি খুঁটি নদীর তলদেশে প্রবেশ করানো হয়েছে। একটি পিলার থেকে আরেকটির দূরত্ব ৮৩০ মিটার। এসব পিলারে বসানো টাওয়ারের মাধ্যমে পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে বিদ্যুতের তার যাবে দক্ষিণবঙ্গের দিকে।’
দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতুর পাইলিংয়ের জন্য জার্মানি থেকে যে হ্যামার আনা হয়েছিল, সেটি দিয়েই এই সাতটি পিলারের ৩৬টি পাইলিংয়ের কাজ করা হয়েছে। পিলারের প্ল্যাটফর্ম থেকে টাওয়ারগুলোর উচ্চতা ১২৬ মিটার। আর নদীর তলদেশে পাইলিং করা হয়েছে অন্তত ১১০ মিটার।’
এর লাইনের মাধ্যমে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরাসরি জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে আরও এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত পোর্টালে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
মারা যাওয়া মো. আব্দুল গফুর মিয়ার বাড়ি টাঙ্গাইলের সখিপুরে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত এবারের হজযাত্রায় সাতজনের মৃত্যুর খবর জানাল মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২১ জুন দুজন, ১৭ জুন দুজন আর ১৬ ও ১১ জুন আরও দুই বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার হজ হতে পারে ৮ জুলাই। ৫ জুন থেকে দেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয়েছে।
স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর বিশ্বের ২০ থেকে ২৫ লাখ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সৌদি আরবের বাইরের কেউ হজ করার সুযোগ পাননি।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সৌদি সরকার এবার সারা বিশ্বের ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এ বছর সাড়ে ৫৭ হাজার মুসল্লি হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন চার হাজার মুসল্লি।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্যাকেজটি হলো ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। সর্বনিম্নটি ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকার।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে জনপ্রতি ন্যূনতম খরচ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিস অফ বাংলাদেশ।
সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ৩ জুলাই। হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১৪ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ৪ আগস্ট।
আরও পড়ুন:ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ও সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সুরমার পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও পানির উচ্চতা মঙ্গলবারের চেয়ে আট সেন্টিমিটার বেড়েছে। ছাতক পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর।
নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলে বাড়তে শুরু করেছে পানি।
স্থানীয়রা জানান, নবীনগর, কাজির পয়েন্ট, ছাতক ও দোয়ারাবাজারে তৃতীয় দফা বন্যার পানি এখনও নামেনি। এর মধ্যেই আবার পানি ঢুকছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ।
নবীনগরের মাহবুব আহমেদ বলেন, ‘পানি আবার বাড়ছে। মঙ্গলবার রাতে এখানে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ঘরের পানি এখনও শুকায়নি। ভয়াবহ বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আবার যদি পানি আসে তাহলে কীভাবে থাকব?’
দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজার গ্রামের খালেদ হাসানও বলেন, ‘এখান থেকে আগের পানিই যায়নি। তার মধ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি বাড়ছে। আমরা যারা নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দা তারা সবার আগে বিপদে পড়ছি।’
পাউবো জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সদরে ১৯৬ মিলিমিটার, তাহিরপুরে ৩২ মিলিমিটার, দিরাইয়ে সাত মিলিমিটার ও ছাতকে ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
চেরাপুঞ্জিতে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে যা তার আগের ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ৫০ মিলিমিটার কম।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল হওয়ায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে এ অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবারও সুনামগঞ্জে ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিতে হচ্ছে।
‘ভারি বৃষ্টি হওয়ায় সিলেট অঞ্চলের নদীর পানি বাড়ছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে ভয়াবহ বন্যার সম্ভাবনা নেই। তবে উজানে যদি তিন থেকে চার দিন টানা ভারি বৃষ্টি হয় তাহলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা আছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর আব্দুল গনি রোডে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন তার দুই বন্ধু।
মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর আহত অবস্থায় তাদের তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার ২ ঘণ্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুহাইমিনুল ইসলাম সিফাতের মৃত্যু হয়।
সিফাত কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার হাফেজ খন্দকারের ছেলে। তিনি পরিবারের সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট মাটিকাটা এলাকায় থাকতেন। বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায় ছিলেন সিফাত।
বুধবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘সিফাত ও তার বন্ধুরা মিলে দুটি মোটরসাইকেলে চড়ে পুরান ঢাকায় যাচ্ছিলেন তেহারি খেতে। সিফাতের মোটরসাইকেলে ছিলেন তার দুই বন্ধু মেহেদী হাসান ও শাকিল। শিক্ষা ভবনের সামনে যাওয়ার পর তাদের মোটরসাইকেলটি আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাস্তায় ছিটকে পড়ে। তখন চলন্ত একটি লরির চাকায় চাপা পড়েন সিফাত। পথচারীরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।’
ঘটনার পর লরিটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালক মাসুম হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।
মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে বোর্ড গঠন করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি মো নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে হারুন-অর-রশিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু ও মঈনুল ইসলাম।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটনি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, বোর্ড গঠন করে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। কারাকর্তৃপক্ষ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে আদেশ পালন করতে বলা হয়েছে।
গত ১২ মে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড এবং গ্রুপের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেয় আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ দণ্ড দেন।
ডেসটিনির দুই অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের নামে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই কলাবাগান থানায় দুটি মামলা হয়। এসব মামলায় ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ করা হয়।
দুই মামলার একটিতে ২০১৪ সালে ১৯ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অন্য মামলাটিতে অভিযোগপত্র দেয়া হয় ৪৬ জনের নামে।
ডেসটিনির কারাবন্দি এমডি রফিকুল আমীনসহ ১২ জন দুই মামলারই আসামি। এগুলোতে মোট আসামি ৫৩ জন।
দুই মামলায় ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করে আদালত। জরিমানার এই টাকা থেকে গ্রাহকদের দায়দেনা পরিশোধ করা হবে বলে আদেশে জানিয়ে দেয় বিচারিক আদালত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদন করলে গত ৯ জুন ডেসটিনির প্রেসিডেন্টের জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। তবে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলার নথি তলব করে মামলার পেপার বুক প্রস্তুতের নির্দেশ দেয়।
পাশাপাশি এ মামলায় পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য