রোজার মধ্যে স্কুল-কলেজে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ক্লাস চলবে।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত খোলা থাকবে। শুধু রমজান মাসে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।’
সাধারণত রমজানের প্রায় পুরো সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকে, কিন্তু এবার করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এর আগে গত ২৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব নজরুল ইসলামের সই করা অফিস আদেশ ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস চালু রাখার কথা জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাসের বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজ নিজ কর্তৃপক্ষকে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সই করা অফিস আদেশে গত ২২ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ রমজান পর্যন্ত খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সে সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
করোনা আসার আগে কয়েক বছর রোজায় ক্লাস বন্ধ থাকলেও টানা দুই বছর শিক্ষাঙ্গন বন্ধ রাখার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রোজায় আর ক্লাস বন্ধ রাখতে চায়নি সরকার। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনায় এসে বলেছেন, এখন এক মাস টানা স্কুল বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। তবে তারা ছুটি বাড়ানোর কথা ভাবছেন।
রমজানে ক্লাস হয় যে রুটিনে
গত ৩১ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক নেহাল আহমেদের সই করা অফিস আদেশে বলা হয়, রমজানে স্কুল-কলেজে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন ঘণ্টা ক্লাস হবে।
আদেশে আরও বলা হয়, এক শিফটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্লাস চলবে। এ ছাড়া দুই শিফটের প্রতিষ্ঠানে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা ১০ মিনিট এবং দিবা শিফটে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ক্লাস চলবে।
এক শিফটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন পাঁচটি ক্লাস এবং দুই শিফটে চারটি ক্লাস হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজ নিজ রুটিন প্রণয়ন করবে বলেও অফিস আদেশে বলা হয়।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করা হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গনগুলো আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে।
গত ২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস। টানা দুই বছর বন্ধের পর গত ১৫ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার।
আরও পড়ুন:সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা। পরে শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাদের পুলিশে সোপর্দ করেন।
আটক দু’জন হলেন- ইবি ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক শাহিনুর পাশা এবং নাট্য ও বিতর্ক সম্পাদক আল আমিন সুইট। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বুধবার আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। ছাত্রলীগের ওই দুই পদধারী নেতা পরীক্ষা দিতে আসার খবর পেয়ে বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকরা তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে বের করে দেয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা বাধা হয়ে দাঁড়ান। পরে শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা দুই নেতাকে তাদের হেফাজতে নেন। বিকেল ৩টার দিকে প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাদেরকে ইবি থানা পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আজ এই সেমিস্টারের সবশেষ পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা দিতে না পারলে ক্ষতি হয়ে যেত। আমাদের ভুল হয়েছে বিভাগের শিক্ষকদের না জানিয়ে এসে। তবে আমাদের পরীক্ষা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের ওপর যাতে মব জাস্টিস না হয় সেটাকে গুরুত্ব দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা মিলে তাদেরকে নিরাপদে থানায় সোপর্দ করেছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাদের আসার কথা জানতে পেরেই স্লোগান শুরু করে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়েছি এবং শিক্ষার্থীদের আইন নিজের হাতে না তুলে নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রক্টরের সহযোগিতায় তাদের পুলিশ সোপর্দ করা হয়েছে।’
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান বলেন, ‘তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে না জানিয়েই পরীক্ষা দিতে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাদেরকে থানায় হস্তান্তর করেন। তারা আমাদের হেফাজতে আছেন।’
আরও পড়ুন:জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ হয়েছে। যদিও এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের ফেসবুক পেজ থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকায় ১৪ জনের নাম রয়েছে।
কমিটিতে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের একজন, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের একজন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তিনজন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আটজন এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
এর আগে প্রকাশ্যে এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি আবু সাদিক কায়েম ও সেক্রেটারি এসএম ফরহাদের নাম।
আবু সাদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আর এসএম ফরহাদ সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনিস্টিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রকাশিত ১৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন মহিউদ্দিন খান, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক পদে হোসাইন আহমাদ জুবায়ের, ছাত্র আন্দোলন ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম, অফিস সম্পাদক পদে ইমরান হোসাইন, বায়তুল মাল সম্পাদক পদে আলাউদ্দিন আবিদ, দাওয়াহ ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক পদে হামিদুর রশিদ জামিল।
এছাড়া সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নুরুল ইসলাম নূর, বিজ্ঞান ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. ইকবাল হায়দার, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে মো. আনিছ মাহমুদ ছাকিব, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে রিয়াজুল মিয়া, ব্যবসায় শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে হাসান মোহাম্মদ ইয়াসির এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক হিসেবে আব্দুল্লাহ আল আমিনের নাম রয়েছে।
কমিটির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম বলেন, ‘অন্যান্য সংগঠনের মতো করে আমাদের কমিটি হয় না। এজন্য আমাদের কমিটিতে সদস্য সংখ্যা কম মনে হতে পারে। ছাত্রদের নীতি-নৈতিকতা, স্কিল ডেভেলপমেন্টসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমাদের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। সেই বিভাগগুলো আমাদের কার্যক্রমগুলো তদারকি করে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই কমিটি গত জানুয়ারি মাসেই গঠিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে আমরা তা পাবলিকলি প্রকাশ করতে পারিনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এবং শহীদদের আত্মত্যাগের ফলে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে এবং আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছি।’
আরও পড়ুন:আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। অন্যথায় আইন উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মঙ্গলবার আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন থেকে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো প্রত্যাহার, এসব মামলায় হওয়া রায় বাতিল, তার ওপর হামলায় জড়িত পুলিশ যাকে প্রমোশন দেয়া হয়েছে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানানো হয়।
মানববন্ধনকালে শিক্ষার্থীরা ‘সাহসের অপর নাম, মাহমুদুর রহমান’; ‘জেলের তালা ভাঙবো, মাহমুদ ভাইকে আনবো’; ‘মাহমুদ ভাইয়ের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’; ‘মাহমুদ ভাই ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ইসলাম হাদী বলেন, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপোষহীন মাহমুদুর রহমানকে যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি না দেয়া হয়, তার বিরুদ্ধে আনীত মামলাগুলো যদি আইন উপদেষ্টার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে বাতিল না করা হয় তাহলে আগামী রোববার আমরা ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে আইন উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেবো। আমরা সেদিন প্রয়োজনে রক্তাক্ত হবো। কিন্তু মাহমুদুর রহমান মুক্ত না হলে আমরা কেউ বাসায় ফিরবো না।’
এর আগে শরীফ ইসলাম হাদী বলেন, মাহমুদুর রহমান প্রথম ব্যক্তি যিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে নৈতিকতার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি একজন সাংবাদিক হিসেবে, একজন সম্পাদক হিসেবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। মাহমুদুর রহমানই প্রথম লিখেছেন ‘শাহবাগে ফ্যাসিবাদের প্রতিধ্বনি’। তিনি একাই একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন৷
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান ভাই যখনই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লেখা শুরু করলেন ঠিক তখনই তার বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের পক্ষ থেকে মামলা দেয়া শুরু হয়। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে আতিফ হোসাইন বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান ফ্যাসিবাদ বিলোপের অন্যতম অগ্রনায়ক। এই দ্বিতীয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রবক্তা এই মাহমুদুর রহমান। আর সেই মাহমুদ ভাইকে যদি দুই মিনিটের জন্য জেলে রাখা হয় তাহলে বুঝতে হবে বাংলাদেশকেও দুই মিনিটের জন্য জেলে রাখা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানে মুক্তি চাই।’
মানববন্ধনে আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, সাংবাদিক আবদুল আনোয়ার ঠাকুর, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে আতিক মুজাহিদ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য ও ঢাবি শিক্ষার্থী ফাতিমা তাসনিম, ঢাবি শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:দেশব্যাপী অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা ও বিদ্বেষী আচরণের বিষয়ে সরকারের নীতির ‘অস্পষ্টতা’ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বরাবর খোলা চিঠি দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক (ইউটিএন)। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই চিঠি পাঠানো হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টা ও প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাকে চিঠির অনুলিপি দেয়ার কথা জানিয়েছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় শিক্ষক নেটওয়ার্কের হয়ে এই খোলাচিঠি পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন।
খোলা চিঠি পাঠকালে অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন বলেন, ‘পরিতাপের বিষয়, অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন ধরনের অসহিষ্ণু, আক্রমণাত্মক ও নৈরাজ্যবাদী জমায়েত আমরা লক্ষ্য করছি। সেসব জমায়েত থেকে অপছন্দের গোষ্ঠী ও দলের বিরুদ্ধে কেবল হিংসাত্মক কথাবার্তাই বলা হচ্ছে না, ক্ষেত্রবিশেষে সেসব মানুষের ওপর হামলাও চালানো হচ্ছে।
‘তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘবদ্ধ হিংস্রতায় নিহত হয়েছেন তিনজন। অপরাধীদের ধরতে গিয়ে একজন সেনা কর্মকর্তা হামলায় নিহত হয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ভিন্ন জাতিসত্তার মানুষকে।’
গীতি আরা নাসরিন আরও বলেন, ‘রাস্তায় ও পর্যটন অঞ্চলে নারীদের ওপর হামলা, নিগ্রহ এবং চরম হেনস্তা করা হয়েছে। শ্রমিকদের নিগৃহীত করেছে মালিক পক্ষের গুণ্ডারা। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল ও দপ্তরে ছোট ছোট অজস্র হিংস্রতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। মাজার, মন্দির, শিল্প-স্থাপনা ভাঙচুর থেকে শুরু করে বাউল এবং আহমদিয়াদের ওপরও আক্রমণ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনা সমাজের মধ্যকার দীর্ঘদিনের নানাবিধ অমীমাংসা ও গণতন্ত্রহীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে আমরা মনে করি। এভাবে চলতে থাকলে নাগরিকদের নিরাপত্তাবোধের অভাব তীব্রতর হবে এবং সংকট উত্তরণে সরকারকে আরও বেগ পেতে হবে। আমরা দু-একদিনের মধ্যেই এই চিঠি পাঠাব।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সায়েদ ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা সরকারকে সময় না দিয়ে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিচ্ছি। মালিক পক্ষের গুন্ডারা শ্রমিকদের অত্যাচার করছে। মাজার, মন্দির ও বিভিন্ন শিল্প স্থাপনা ভাঙচুর করা হচ্ছে।
‘আমরা দেখেছি, একটা গোষ্ঠী আমাদের অনেক শিক্ষককে ইসলামবিদ্বেষী বলে ট্যাগ দিচ্ছে। আমাদের যোগ্যতা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলতে পারে। কিন্তু ঢালাওভাবে কেন এসব ট্যাগ দিয়ে শিক্ষকদের হেনস্তা করা হচ্ছে আমরা বুঝতে পারছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-রাজনীতি কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু সেখানে গণতন্ত্র থাকতে হবে। রাজনীতির নামে কেউ চাঁদাবাজি, হল দখল, সিট দখল করলে সেটা তো কোনো রাজনীতি নয়।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী প্রমুখ এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য গঠিত ১০ সদস্যের সমন্বয় কমিটি বাতিল করা হয়েছে।
শনিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ইয়ানুর রহমানের সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের গত ১৫ সেপ্টেম্বরের স্মারকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত এবং মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন এবং সমন্বয়ের লক্ষ্যে গঠিত সমন্বয় কমিটি নির্দেশক্রমে বাতিল করা হলো।
সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গুচ্ছভুক্ত (জিএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হবে।
এ ছাড়াও চতুর্থ ধাপের প্রাথমিক ভর্তি প্রক্রিয়া শনিবার শুরু হচ্ছে। আগামী ৫ অক্টোবর ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত ভর্তি নেয়া হবে।
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন শনিবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটেও একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান তিনি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চতুর্থ পর্যায়ের প্রাথমিক ভর্তি প্রক্রিয়া ২৮ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টা হতে ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে জিএসটি ওয়েবসাইট (https://gstadmission.ac.bd) ব্যবহার করে সম্পন্ন করতে হবে। অনলাইনে ৫ হাজার টাকা প্রাথমিক ভর্তি ফি দিতে হবে শিক্ষার্থীদের।’
তিনি জানান, চূড়ান্ত ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৫ থেকে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন কোটার ভর্তিসহ চূড়ান্ত ভর্তি সম্পন্ন করবে। স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কোটা ও চূড়ান্ত ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।
তিনি আরও জানান, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে প্রাথমিক ভর্তিকৃত এবং বিভিন্ন কোটায় ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের মূল নম্বরপত্রগুলো (এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান) চূড়ান্ত ভর্তির সময় জমা দিতে হবে। ২০ অক্টোবর থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হবে।
স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় সুবিধা অনুযায়ী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। চূড়ান্ত ভর্তি ও কৃষি গুচ্ছের ভর্তি প্রক্রিয়ার পর আসন শূন্য থাকা বা হওয়া সাপেক্ষে জিএসটি গুচ্ছের সাবজেক্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সমাপ্ত করা হবে।
প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রাথমিক ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর মূল নম্বরপত্র দুইটি (এসএসসি ও এইচএসসি) সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চূড়ান্ত ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেয়ার তারিখ পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
গুচ্ছভুক্ত ২৪টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সিলেট), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুলনা), হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (দিনাজপুর), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (টাঙ্গাইল), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোয়াখালী), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুমিল্লা), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যশোর), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (রংপুর), পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবনা), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (বরিশাল), রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাঙ্গামাটি), রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (সিরাজগঞ্জ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (গাজীপুর), শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (নেত্রকোণা), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জামালপুর), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পটুয়াখালী), কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কিশোরগঞ্জ), চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চাঁদপুর), সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুনামগঞ্জ) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পিরোজপুর)।
আরও পড়ুন:ছাত্রশিবিরের নামে রগ কাটার যে অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়ে কোনো নথি নেই বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ। তিনি বলেছেন, বরং গুগলে সার্চ করলে রগ কাটার সব অপরাধ ছাত্রলীগের নামে পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ফরহাদ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি রগ কাটা লিখে গুগলে সার্চ করলে দেখবেন সব অপরাধ ছাত্রলীগের নামে। শিবিরের নামে কোনো নথি আপনি পাবেন না। বিগত সরকার বার বার বলে এই ন্যারেটিভ এস্টাবলিশ করেছে।’
বিগত সরকার কেন এটি করেছে প্রশ্নে ফরহাদ বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন তারা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েমের কিছু ব্যারিয়ার দেখে। প্রথমটি হল দেশপ্রেমিক সেনা সদস্য। বিডিআর বিদ্রোহের নামে তাদের হত্যা করা হয়।
‘তারপর ফ্যাসিবাদ কায়েমের সবচেয়ে শক্তিশালী বাধা মনে করেছে ছাত্রশিবিরকে। এরপর অ্যাটাক আসে শিবিরের ওপর। এমন কোনো লেয়ার নেই যেই লেয়ারে শিবিরের ওপর হামলা হয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ঢাবি শিবির সেক্রেটারি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোনো বিষয়ে হ্যাঁ বা না বলার অধিকার বা কাউকে অ্যাকসেস দেয়া-না দেয়ার অধিকার কেবল সিন্ডিকেট, সিনেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের রয়েছে। এই তিনটি অর্গানের কোনোটিতেই শিবির নিষিদ্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেখানে পরিবেশ পরিষদ কারও বিষয়ে একমত হলো কি হলো না সেটির কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।’
আত্মপ্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে ফরহাদ বলেন, ‘পতিত সরকার আমাদের বিষয়ে একটা ভীতি তৈরি করেছে জনগণের মনে। কিন্তু আমাদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের আত্মপ্রকাশের পর তা একেবারেই ভেঙে গেছে। কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের সাথেই ছিলাম।
‘দীর্ঘ পাঁচ বছর আমাদের যারা দেখেছেন তারা এখন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। আমি মনে করি, শিবির সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।’
শিবির কেন এতোদিন গোপনে রাজনীতি করেছে জানতে চাইলে এসএম ফরহাদ বলেন, “২০০৯ সাল পর্যন্ত ছাত্রশিবির প্রকাশ্যে রাজনীতি করেছে। এরপরও যেখানে সম্ভব হয়েছে, সেখানে প্রকাশ্যে রাজনীতি করে গেছে।
“ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতিকে ৫৬ দিনের রিমান্ডে দেয়া হয়, বিভিন্ন শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে গুম করা হয়, ক্রসফায়ার দেয়, মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ড দেয়া হয়; কেউ কিছু বলে না। এমন পরিস্থিতিতে ‘তুমি কেন পরিচয় দিচ্ছো না, এই প্রশ্ন যৌক্তিক নাকি ‘তোমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই’ প্রশ্নটি যৌক্তিক?”
নয় দফার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে ফরহাদ বলেন, ‘এই আন্দোলনটা সব মানুষের ছিল। বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজেদের দলের পরিচয় ভুলে গিয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী এখানে শামিল হয়েছেন। ছাত্রশিবিরও তার রিসোর্স নিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। কোনটা কার পরিকল্পনা, কীভাবে তা বাস্তবায়ন হয়েছে- এসবের কৃতিত্ব নেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্পিরিটের সাথে যায় না। এখানে সবাই দল-মত ভুলে একসাথে আন্দোলন করেছে।’
এসএম ফরহাদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ কায়েমে ছাত্রলীগ যে ধরনের ঘৃণ্য কাজ করেছে তার প্রতিটির বিচার হওয়া দরকার। শিক্ষার্থীরা সবাই আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে আমরা মনে করি। কেউ যদি আইনি সহায়তা চান, আমরা ছাত্রশিবির থেকে তা দেবো।’
ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে ঢাবি শিবির সেক্রেটারি বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটির কিছু প্রক্রিয়া আছে। আমি কখনও সেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করিনি। কখনও সিভি জমা দেইনি। তবু কেন আমাকে পদ দিল, সে প্রশ্ন ছাত্রলীগকে করা উচিত। বিতর্ক সংসদের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার সাথে আমার ছবি দেখা গেছে। আমি কেবল আয়োজক হিসেবে ছিলাম।’
ছাত্ররাজনীতি নিয়ে শিবিরের অবস্থানের বিষয়ে ফরহাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মনে রাজনীতি নিয়ে এখন যে চিন্তা-গঠন আছে, এটা গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী বয়ানের আউটপুট। তারা দেখেছে, ছাত্ররাজনীতি মানে নেতাকে প্রটোকল দেয়া, হলে আসন বণ্টন করা, ভিন্ন মতকে নির্যাতন করা এবং কেউ কথা বলতে না পারা।
‘কিন্তু যখন শিক্ষার্থীরা দেখবে ছাত্ররাজনীতির নামে এসব কেউ করবে না বা করলে পানিশমেন্ট পাবে তখন তারা ছাত্ররাজনীতির এই সুন্দর রূপ দেখে এটির প্রতি আকৃষ্ট হবে বলে আমি মনে করি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য