রমজান মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর ডাইনিং ও ক্যানটিন খোলা থাকে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত। একই সঙ্গে দিনের বেলায় বন্ধ থাকে ক্যাম্পাসের প্রায় সব ঝুপড়ি দোকান ও হোটেল।
এতে বিপাকে পড়েছেন রোজা না রাখা মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। অনেককেই বিস্কুট বা শুকনা খাবার খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি হলের ক্যান্টিন খুলে দেয়া হবে।
রোজার সময় দিনের বেলা ডাইনিং ও ক্যানটিন বন্ধ রাখা নিয়ে ফেসবুকে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্বজিৎ রায় নামে এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘ক্যাম্পাস খোলা রেখেছে, ক্লাস চলছে আবার এইদিকে ডাইনিং অফ, ক্যাফেটেরিয়া অফ। তাহলে আমরা কোথায় খাব, কোথায় যাব?’
মেঘা কর্মকার বলেন, ‘চার বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি। প্রত্যেক রোজায় বিষয়টা খুবই হীনমন্যতায় ভোগায় যে অন্য ধর্মের হয়ে কি দোষ করলাম? প্রথম বর্ষে তো কাউকে কিছু বলতে না পেরে এক সপ্তাহ না খেয়েই ছিলাম।’
কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও তারা অতিরিক্ত দাম রাখছেন।
বিপ্লব চন্দ্র দাস ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ডাইনিংয়ে দুপুরের খাবার হচ্ছে না। ক্যাফেটেরিয়াগুলোও তাদের দরজা বন্ধ করে রেখেছে। হোটেলে খাবারের গলাকাটা দাম। সনাতন, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের জন্য কী ভেবেছে আমাদের প্রশাসন?’
‘আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি, এত এত অব্যবস্থাপনা-নৈরাজ্যের স্বর্গরাজ্যে আমরা থাকি। স্বপ্নের মতো সবুজ ক্যাম্পাসে মায়া হরিণ হলে ভালো হতো। অন্তত ঘাস-লতাপাতা খেয়ে দিন পার করতাম,’ বলেন জনি রায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শহীদ আবদুর রব হলের প্রভোস্ট ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির কাছে এসেছে। অন্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য সোহরাওয়ার্দী হলের ক্যানটিন খোলার জন্য বলেছি। মেয়েদের হলের বিষয়টা তাদের হলের প্রাধ্যক্ষরা দেখবেন।’
মেয়েদের চারটি হলের মধ্যে খালেদা জিয়া ও শামসুন্নাহার হলের ক্যানটিন দুপুরে খোলা রাখা হয়েছে।
খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিষয়টি আমাদের মাথায় ছিল। আমরা দিনেও হলের ক্যানটিন খোলা রেখেছি।’
আরও পড়ুন:সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ বলে জানিয়েছেন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামায়। প্রার্থীদের মধ্যে সম্পদে এগিয়ে থাকা বাবুলের নামে জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলাও রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান স্নাতক পাস। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এ ব্যবসায়ী নিজের বার্ষিক আয় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা বলে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।
সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ১১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে যাছাই-বাছাইকালে ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আর ছয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়া প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু ও মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন।
এবারের সিটি নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। তাই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে প্রার্থী হননি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
আরিফ প্রার্থী না হওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ তিন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী জাতীয় পার্টির প্রার্থী শিল্পপতি মো. নজরুল ইসলাম বাবুল। হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তার বার্ষিক আয় ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৯ টাকা। আর শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। আনোয়ারুজ্জামান বিএ (সম্মান) এবং মাহমুদুল হাসান এলএলবি পাস।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাদের হলফনামায় সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। এতে তারা ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি তাদের আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা, দেনাসহ বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন।
হলফনামায় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য প্রদানকে ইতিবাচক উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এর ফলে প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটাররা একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে পারেন, তবে প্রার্থীরা হলফনামায় সঠিক তথ্য দিয়েছেন কি না, সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা উচিত। কারণ সিলেটে অনেক প্রবাসীও প্রার্থী হন। প্রবাসেও তাদের অনেক সম্পদ থাকে। সেসব তথ্যও হলফনামায় আসা উচিত।’
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী
হলফনামায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নিজের পেশা ব্যবসা উল্লেখ করে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা। এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদই আছে ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা। এর বাইরে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দুটি টিভি, একটি রেফ্রিজারেটর, দুটি এয়ার কন্ডিশনার (এসি) এবং দুই সেট সোফা, চারটি খাট, একটি টেবিল, ১০টি চেয়ার ও দুটি আলমারি আছে। তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৪৭ ভরি স্বর্ণালংকার।
আনোয়ারুজ্জামানের স্থাবর সম্পদের মধ্যে তিন বিঘা কৃষি জমি, ২৩ শতক অকৃষি জমি, একটি দালান ও একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাট আছে, তবে তার কোনো দায় বা দেনা নেই। তার নামে কোনো ফৌজদারি মামলাও নেই।
নজরুল ইসলাম বাবুল
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বাবুলও পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি ফিজা অ্যান্ড কোং লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মেসার্স ফিজা এক্সিমের ব্যবস্থাপনা অংশীদার, পাথর আমদানিকারক ও ‘দৈনিক একাত্তরের কথা’র প্রকাশক। বাবুলের বার্ষিক আয় ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৯ টাকা।
বাবুলের ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৬৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। পাশাপাশি অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি, একটি টয়োটা প্রাডো, চারটি কার্গো ভ্যান, আটটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল আছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর নামে ২১ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।
নজরুলের স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩৫ দশমিক ৭৮ শতক অকৃষি জমি, একটি ফ্ল্যাট এবং চারটি পাকা ও টিনশেড বাড়ি আছে। এ ছাড়া তার ব্যাংক ঋণ আছে পাঁচ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৭ টাকা।
বাবুলের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা তদন্তাধীন। এ ছাড়া অতীতে তার নামে তিনটি মামলা হলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
মাহমুদুল হাসান
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানও পেশায় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অতীতে তার নামে একটা মামলা হলেও বেকসুর খালাস পেয়েছেন। কোনো দায় বা দেনা না থাকা মাহমুদুল হাসানের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।
তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে মাহমুদুলের যৌথ মালিকানায় বাণিজ্যিক দোকান ও বাড়ি আছে। এসব সম্পদের ৬ ভাগের ১ অংশ তার।
আরও পড়ুন:বজ্রপাতে একদিনেই দেশের চার জেলায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে মুন্সিগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় ২ জন প্রাণ হারান। এছাড়া সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাট ও ময়মনসিংহে একজন করে নিহত হয়েছেন।
শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এ ঘটনাগুলো ঘটে। এ সময় আরও একজন আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জে ধান কাটতে গিয়ে প্রাণ গেল শ্রমিকের
ধান কাটতে গিয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বজ্রপাতে সুলতান প্রামানিক নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের চর আঙ্গারু গ্রামে শনিবার সকাল ১০ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৬০ বছর বয়সী সুলতান ওই গ্রামের মৃত ফয়জাল প্রামানিকের ছেলে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কায়েমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল আলম ঝুনু।
তিনি বলেন, ‘ধান কাটার সময় হঠাৎ ঝড় শুরু হলে শ্রমিকেরা মাঠ থেকে দৌড়ে পাশে আশ্রয় নিলেও বৃদ্ধ সুলতান প্রামানিক আস্তে আস্তে হেঁটে আসছিলেন। এসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।’
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, ‘ধান কাটতে গিয়ে ও শ্রমিকের বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
মুন্সিগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ২
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার কুসুমপুর এলাকার লেবুতলায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকশার গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মোহাম্মদ কাউসার ও উপেন সর্দারের ছেলে জুম্মন সর্দার।
প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে ওই দুই ব্যক্তি কুসুমপুর লেবুতলা গ্রামের সড়কে এসে অটো থেকে নামেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তারা নিহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
মোংলায় বালু শ্রমিক নিহত
বাগেরহাটের মোংলায় ড্রেজারে কাজ করার সময় বজ্রপাতে এনামুল শেখ নামে এক বালু শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় মিলন শেখ নামে আরও এক শ্রমিক আহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুরে উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের বালুর মাঠ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৩৫ বছর বয়সী এনামুল শেখ রামপাল উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের কালেখার বেড় গ্রামের ফজিলত শেখের ছেলে। আহত ২২ বছরের মিলন শেখ মোংলা উপজেলার গোয়ালের মাঠ এলাকার রেজাউল শেখের ছেলে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ সামসুদ্দীন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
ময়মনসিংহে বজ্রপাতে প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বজ্রপাতে নয়ন মিয়া নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার বিকেলে উপজেলার জুগলী ইউনিয়নের রান্ধুনীকুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
১৩ বছর বয়সী নয়ন মিয়া রান্ধুনীকুড়ার রাসেল মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় জুগলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হালুয়াঘাট থানার (ওসি) সুমন চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ‘মেঘলা আকাশের নিচে বিকেলে নয়ন বাড়ির পাশের ফসলি জমিতে বক শিকার করার জন্য একপর্যায়ে আকস্মিক বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।’
এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলেও জানান ওসি সুমন চন্দ্র রায়।
আরও পড়ুন:ভোটে জিতে কাউন্সিলর হওয়ার একদিন পর ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাতে বের হয়ে হেরে যাওয়া প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীর এক কাউন্সিলরের সমর্থকরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় দেওড়া পুরোনো মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে টঙ্গীর পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) শাহ আলম।
ভোটে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের আহত সমর্থকরা হলেন ৩৩ বছর বয়সী আলমাস, ১৯ বছরের শাহজালাল মোল্লা, ২৬ বছর বয়সী আজাহার, ৩২ বছর বয়সী হেলাল উদ্দিন, ২৫ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম সাগর, ২৪ বছরের নিয়ামত, ২১ বছরের তানভীর ও ৩১ বছর বয়সী মর্জিনা আক্তার।
বিজয়ী কাউন্সিলর সোলেমান হায়দারের আহত সমর্থকরা হলেন ৩২ বছর বয়সী রাজিব হায়দার সাদিম, ৩৫ বছর বয়সী আজিম হায়দার আদিম, ৩০ বছর বয়সী ঝলক হায়দার, ২৮ বছরের বিজয় হায়দার ও আরিফ মণ্ডল।
আহতদের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঠেলাগাড়ি প্রতীকে সেলিম হোসেন ও লাটিম প্রতীকে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে সেলিম হোসেনকে পরাজিত করে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
নির্বাচনে জয়ের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় ভোটার ও সমর্থকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে বের হন কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার। এ সময় বড় দেওড়া আদর্শপাড়া এলাকায় পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের সমর্থক আলমাসের সঙ্গে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ঝগড়া হয়। পরে তা সংঘাতে রূপ নেয়।
এক পর্যায়ে সেলিম হোসেনের ভাই মামুন ও তাদের সমর্থক হারুন, অনিক ও মানিকসহ বেশ কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার পুরোনো মসজিদের সামনে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এ সময় সাদিম, আদিম, ঝলক, বিজয় ও আরিফ আহত হন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার লোকেদের মারধর করে আহত করা হয়েছে। আমি এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করব।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার বলেন, ‘ভোটে হেরে সেলিমের লোকজন এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছি। আহতরা সুস্থ হয়ে ফিরলেই সালিশের মাধ্যমে এর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের জমির হোসেন রুবেল তিনটি বিয়ে করেও সংসার টেকাতে পারেননি। চতুর্থ বিয়ের জন্য উদগ্রীব রুবেল সন্ধান পান এক রোহিঙ্গা নারীর। তাকে দেখতে দুই বন্ধুকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন।
কিন্তু রোহিঙ্গা নারীকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়ার শখ পূরণ হয়নি রুবেলের। তিন বন্ধু ২৫ দিন নিখোঁজের পর বুধবার রাতে টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার পাহাড় থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
এদিকে ভুক্তভোগীদের উদ্ধারে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই রোহিঙ্গা নারীর নাম কোহিনুর আক্তার, মামলা সুরাহা করতে যাকে খুঁজছে পুলিশ। এ ছাড়া মিনা নামে আরেক রোহিঙ্গা নারীর নামও বলছেন পরিবারের সদস্যরা।
২৮ এপ্রিল নিখোঁজ হন তিন বন্ধু জমির হোসেন রুবেল, শেখ ইমরান সরকার ও মোহাম্মদ ইউছুপ। পরদিন রুবেলের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করে পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবিসহ অপহৃতদের ওপর নিযার্তনের ভিডিও পাঠানো হয়।
ইউসুফের ভাই মো. ইউনুছ জানান, তার ভাই গত ২৮ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। এর তিন দিন পর একটি নম্বর থেকে একের পর এক কল করে ৫০ হাজার টাকা পাঠাতে করা হয়।
সর্বশেষ গত ১৫ মে পাঁচ লাখ টাকা পাঠাতে বলে তার ভাই জানান, ‘টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলবে অপহরণকারীরা।’ এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
রুবেলের ভাগনি রূপা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘রুবেল মামা এর আগে তিনটি বিয়ে করেন, তবে সব বিয়ে ভেঙে যায়। তাই বিয়ের জন্য তিনি নতুন পাত্রী খুঁজছিলেন। এর মধ্যে মামা কোহিনুর নামে এক রোহিঙ্গা নারীর ফাঁদে পড়েন। ওই নারীই কৌশলে মামা ও তার বন্ধুদের টেকনাফ নিয়ে অপহরণকারীদের হাতে তুলে দেন।’
পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ
এদিকে ইমরানের বাবা মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘২৮ এপ্রিল থেকে ইমরানের খোঁজ নেই। সন্ধান চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে আমাদের গুরুত্ব দেয়নি দুই থানার ওসি ও অফিসাররা। আমার ছেলেসহ তিনজনকে অপহরণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপহরণকারীরা নির্যাতন করছে, এমন ফুটেজ দেখিয়ে জিডি করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছি। রহস্যজনক আচরণ করছে কক্সবাজার সদর থানা ও টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ। ওই দুই থানায় ঘুরতে ঘুরতে আমাদের পাঁচদিন সময় চলে গেছে। অভিযোগ এবং এর সপক্ষে কোনো প্রমাণকেই পাত্তা দিল না থানা। যদি তারা দ্রুত জিডি নিয়ে অভিযান চালাত ছেলেকে ফিরিয়ে পেতাম। এদের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা।’
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিন বন্ধুর স্বজনরা মামলা ও জিডি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনজন তো এখান থেকে নিখোঁজ হননি। তারা যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছেন, সেখানের থানায় মামলা করতে বলেছি। সর্বশেষ আমার থানায় জিডি এন্ট্রি করেছি। আমার থানায় তাদেরকে কোন হয়রানি করা হয়নি।’
নিহত ইমরানের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘গত ২৯ এপ্রিল অপহরণকারীরা ইমরানের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমরা ধার করে ইমরান ও রুবেলের নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে এক লাখ এক হাজার টাকা দেই। বাকি টাকা দিতে না পারায় তাদের খুন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টেকনাফ থানায় আমার স্বামী ইব্রাহিম অন্তত সাতবার গিয়েছেন। কোনোবারই পুলিশ জিডি বা মামলা নেয়নি। কক্সবাজার সদর থানা কর্তৃপক্ষও জিডি বা মামলা রেকর্ড করেনি। এটাই কষ্ট আমাদের।’
অভিযোগ অস্বীকার করে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমার একবার দেখা হয়। তারা সদর থানায় জিডি করায় আমরা জিডি না নিয়ে স্বজনদের অভিযোগের পরপরই অপহৃত তিনজনকে উদ্ধারে কাজ শুরু করি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরপরই স্বজনদের অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।’
আরও পড়ুন:কাদিয়ানিদের ‘ঈমানবিধ্বংসী অপতৎপরতা’ বন্ধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ করেছে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ। এতে ধর্মীয় নেতাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
শনিবার দুপুরে সিলেট শহরের রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশ’ নামে ওই কর্মসূচিতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়।
সমাবেশে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘হযরত মোহাম্মদ (স.) ইসলামের শেষ নবী। এর পর যারা নিজেদের নবী দাবি করে তারা ইসলামের শত্রু। আমি আজকের এই সমাবেশের উলামা মাশায়েখদের দাবির প্র্রতি একাত্মতা পোষণ করছি।’
রেজিস্ট্রারি মাঠে বেলা ১২টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। তার আগে সকাল থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস ও ট্রাকযোগে সমাবেশে লোকজন আসতে থাকেন। নগর থেকে মিছিল নিয়েও আসেন অনেকে। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশে যোগ দেন।
দুপুরের পর রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়ে জনতা। এতে আশপাশের কয়েকটি সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত জনতা স্লোগান দেয় ‘নবীর পরে নবী নাই, সংসদে আইন চাই’, ‘কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করতে হবে’ ইত্যাদি। অনেকে এসব দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়েও হাজির হন সমাবেশে।
আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশের সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা ও পূর্ব সিলেট আযাদ দ্বীনি আরবী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা শায়খ আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, বেফাকুল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বরুণা, উলামা পরিষদ বাংলাদেশের মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মাওলানা শায়খ নুরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী প্রমুখ।
বিকাল ৫টায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সমাবেশ।
প্রসঙ্গত, সুন্নি মুসলিমদের অনেকে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীদের অমুসলিম বলে মনে করেন। আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।
ভারতের পাঞ্জাবের কাদিয়ান থেকে এই দর্শনের জন্ম বলে অনেকে এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাদিয়ানি বলে থাকেন। এই সম্প্রদায়কে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিরোধ রয়েছে।
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে ইসলামের একজন নবী ঈসা ও ইমাম মাহদি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দাবি থেকে এই বিরোধের সূত্রপাত।
পাকিস্তানে আহমদিয়াদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
হবিগঞ্জের বাহুবলে পিকআপ ভ্যানে পাথরবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় তিন নারী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মৌচাক মোহনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে শনিবার ভোরের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তিনজন হলেন ৪৫ বছর বয়সী মঞ্জিলা বেগম, ৩৫ বছর বয়সী তানজিলা বেগম ও ৪৫ বছর বয়সী শাহিনুর বেগম। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে।
বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম খান জানান, কিশোরগঞ্জের গোবিন্দপুর গ্রাম থেকে ১৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি পিকআপ ভ্যান সিলেটের হযরত শাহ জালাল (র.) এর মাজার জিয়ারতের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে পিকআপ ভ্যানটি মহাসড়কের বাহুবলের মৌচাক মোহনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে পৌঁছলে সিলেট থেকে আসা ঢাকাগামী একটি পাথরবোঝাই ট্রাক পিকআপ ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ৩ নারী নিহত হন। আহত হন আরও অন্তত ১০ জন।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল ও বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।
চলমান সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী অংশ নেবে না বলে আনু্ষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে দাঁড়ানো একাধিক নেতা-নেত্রী।
তুমুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি আমার প্রাণের সংগঠন। যে সংগঠনকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি, সেই সংগঠনের ক্ষতি হোক আমি এটা চাই না। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’
বরিশালেও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিএনপির পাঁচজন মেয়র প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না। তবে সিটি নির্বাচনের শুরু থেকেই নেতা-কর্মীদের নির্বাচনে কোনোভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার কথা বলছে বিএনপি। এমনকি নির্বাচনে অংশ নিলে দল থেকে আজীবন বহিষ্কারেরও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
সেসব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই বরিশাল সিটিতে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিতে নাছোড়বান্দা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন দলটির ১৬ নেতা-নেত্রী। তাদের মধ্যে ৭ জন বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। অপর ৯ জন ওয়ার্ড বিএনপির পদধারীসহ সাবেক নেতা।
এদের মধ্যে মেয়র পদে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আহসান হাবীব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রুপনও রয়েছেন। তিনি নিজেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সদস্য হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। নির্বাচনী লিফলেটেও তিনি নিজেকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তবে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহিদুল কবিরের দাবি, রুপন বিএনপির কেউ নন।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কেউ অমান্য করবে না। এ সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে পালন করা হবে। গাজীপুরে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, এখানেও সেই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সবার জন্য একই ব্যবস্থা- আজীবন বহিষ্কার।’
বিসিসি নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপি নেতারা হলেন- নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান টিপু, ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হারুন অর রশিদ, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. আমিনুল ইসলাম, মহানগর কমিটির সদস্য ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম হাওলাদার, সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জাহানারা বেগম, ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সেলিনা বেগম ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে রাশিদা পারভীন।
এছাড়াও রয়েছেন- নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ড শাখার সদস্য সচিব জিয়াউল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম এবং ছাত্রদলের সাবেক জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জোবায়ের আব্দুল্লাহ সাদি।
পদ না থাকলেও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ওই ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ফারুক, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. ইউনুস, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফরিদউদ্দিন হাওলাদার, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে হুমায়ন কবির ও সংরক্ষিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহিলা দল নেত্রী মজিদা বোরহান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য