ভূমিকম্পপ্রবণ দেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা এবং পানিসম্পদ বাঁচাতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে উপরিভাগের পানি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে বন্যাকে আপন করে তার সঙ্গে বসবাসের পদ্ধতি আয়ত্ত করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পানির অপচয় কমানোর আহ্বান রেখে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও জলাধারের ব্যবস্থা রেখে আগামীতে সব নির্মাণ পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
বিশ্ব পানি দিবসে সোমবার সকালে রাজধানীর গ্রিন রোডের পানি ভবনে আয়োজিত আলোচনায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পানির অপর নাম জীবন। কাজেই পানিসম্পদকে রক্ষা করা, এটা আমাদের একান্তভাবে প্রয়োজন। আর ভূগর্ভস্থ পানি যত কম ব্যবহার করা যায়, আর ভূউপরিস্থ পানি যত বেশি ব্যবহার করা যায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে সমস্ত পরিকল্পনা আমরা নিজেরা গ্রহণ করেছি। ভবিষ্যতে বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন যখন করা হবে, এ বিষয়গুলোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
পৃথিবীতে ৩৬০ কোটি মানুষ নিরাপদ স্যানিটেশনের অভাবে রয়েছে। মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ২৩০ কোটি মানুষ। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ নিরাপদ পানির অভাবে রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, যেখানে সুপেয় পানি পাওয়া একান্ত কষ্টকর, কিন্তু আমাদের বিশাল পানিসম্পদ রয়েছে।’
‘আমাদের এই সম্পদ যদি আমরা যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে আমাদের দেশের মানুষের এ কষ্ট কোনো দিন হবে না; বরং আমরা বিশ্বকে পানি সরবরাহ করতে পারব। আমাদের সেই বিষয়টা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।’
‘বন্যাকে আপন করে নিতে হবে’
বাংলাদেশ বদ্বীপ হওয়ার কারণে বন্যাকে আপন করে, তার সঙ্গে বসবাসের পদ্ধতি শিখে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বন্যার সঙ্গে আমাদের বসবাস করতে হবে। বন্যাকে আমাদের আপন করে নিতে হবে। বন্যার সঙ্গে বসবাস করার পদ্ধতি আমাদের শিখতে হবে। কারণ যেহেতু বাংলাদেশে বদ্বীপ।’
বন্যায় নদী ভাঙনসহ সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যার জন্য আমরা ড্রেজিংয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। ড্রেজিং শুধু নদীর নাব্যতা বাড়াবে না, নদীর নাব্যতা যেমন বাড়াবে, আমাদের নৌপথগুলো সচল হবে। আমরা স্বল্পমূল্যে আমাদের পণ্য পরিবহন করতে পারব।’
দেশের নদ-নদীগুলো দীর্ঘদিন ড্রেজিং না হওয়াতে তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে, নদীর বিশালতা বেড়ে গেছে, নদী অনেক চওড়া হয়ে গেছে। এত চওড়া নদী আমাদের প্রয়োজন নেই। এখানে বিভিন্ন পকেট তৈরি করে, নদীর ড্রেজিং করে, ড্রেজিং করা পলি সেখানে ফেলে আমরা কিন্তু ভূমি উত্তোলন করতে পারি।’
নদী রক্ষায় বাঁধ নির্মাণও ড্রেজিং থেকে পাওয়া পলি দিয়ে করা সম্ভব বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের চাষ উপযোগী জমি কখনও যেন নষ্ট না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। ড্রেজিং করা পলি যেন চাষ উপযোগী জমিতে না পড়ে, তার জন্য আলাদা পকেট নদীতেই করা যাবে। কারণ বিশাল চওড়া নদী আমাদের সব জায়গায় প্রয়োজন নেই।’
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘অভিঘাত সহিষ্ণু উন্নয়ন দর্শন’ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এ উন্নয়ন দর্শনে আমরা নেচার বেইজড সল্যুউশনসের ওপর জোর দিয়েছি। পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার সম্ভ্যাব্য ক্ষেত্রগুলোতে প্রকৃতি নির্ভর ব্যবস্থাপনা কৌশল খুঁজে বের করতে হবে।’
কমাতে হবে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার
ভূগর্ভস্থ পানির ওপরে এখনও যথেষ্ট নির্ভরশীলতা রয়েছে বলে জানান প্রধামন্ত্রী। আর তা কমিয়ে আনতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা কিন্তু নদীর পানি পরিশুদ্ধ করে সরবরাহ করা শুরু করেছি। ঠিক সেভাবে জেলা-উপজেলায় সুপেয় পানির পাইপের মাধ্যমে দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেটাও কিন্তু আমরা নদীর পানি পরিশুদ্ধ করে দিচ্ছি। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার সীমিত করবার বিভিন্ন পদক্ষেপ ইতিমধ্যে আমরা হাতে নিয়েছি।’
এমনকি সেচ কাজেও ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়ানোরও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বর্ষাকালের পানি এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতে হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাহলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর আমাদের নির্ভরতা কমে যাবে। আর বাংলাদেশের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির বেশি ব্যবহার করার ক্ষতি এ জন্য যে, কারণ বাংলাদেশে ভূমিকম্পপ্রবণ একটি জায়গা। এই পানি কিন্তু আমাদের রক্ষা করে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশের নিচে বিশাল শিলা আছে। তার নিচে আরও বিশাল পানির স্তর আছে এবং এটাই কিন্তু আমাদের রক্ষা করছে। সেখানে যদি আমরা বেশি পানি ব্যবহার করে ফেলি ভূগর্ভস্থ, তাহলে কিন্তু ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কাও বেশি দেখা দেবে। সেদিকে মাথায় রেখে আমাদের সমস্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
ওই সময় বর্ষা ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং জলাধার নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ বা বাসস্থান নির্মাণ বা যেটাই আমরা নির্মাণ করি না কেন, সব ক্ষেত্রে আমাদের দুটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। একটা হচ্ছে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা, আরেকটা হচ্ছে জলাধার থাকা।
‘জলাধার থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন, সেখানেও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ হয়। তা ছাড়া বৃষ্টির পানি ব্যবহার, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, এদিকে আমাদের আরও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে এবং সেভাবে আমাদের কাজ করতে হবে।’
কমাতে হবে অপচয়
দেশের জেলা-উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এলাকার বাসাবাড়িতে পরিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এগুলো করতে কিন্তু অনেক খরচ হয়। পানির অপচয়টা বন্ধ করতে হবে। সেটা নির্মাণকাজে হোক, গৃহস্থালি কাজে হোক বা সেই গাড়ি ধোয়ার কাজে হোক বা যে কাজেই হোকে, লন্ড্রি ব্যবহার হোক, সব ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এই পানিসম্পদ অপচয় করলে, কোনো সম্পদ থাকে না শেষ পর্যন্ত।
তিনি বলেন, ‘এই যে আমাদের অমূল্য সম্পদ রয়েছে, সেই সম্পদ আমরা কীভাবে সংরক্ষণ করে ব্যবহার করতে পারি বা ভবিষ্যত বংশধররা ব্যবহার করতে পারে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।’
জলাবদ্ধতা দূরীকরণ
জলাবদ্ধতা সংকট দূর করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যখনই যেকোনো নির্মাণ হবে বা আমাদের কোনো প্ল্যান প্রোগ্রাম নেয়া হবে, প্রত্যেকটা প্রোগ্রামে এটা মাথায় রাখতে হবে, বন্যার সময় আমাদের যে পানি বহমান থাকে, সেটা যেন বহতা থাকে। আর সেই সঙ্গে সঙ্গে পানি যেন কোথাও বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে দেখতে হবে।’
রাস্তা-সড়ক নির্মাণের সময়ও যাতে পানির প্রবাহ যেন ঠিক থাকে, সেভাবে পরিকল্পনা করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘হাওর-বাঁওড় এলাকায় রাস্তা হলে সেগুলো যেন মাটি ভরাট করে না করা হয়, সেটা পিলার দিয়ে এমনভাবে তৈরি করা, যেন পানির প্রবাহ বা গতিটা বাধাগ্রস্ত না হয়। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’
অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ নিয়েও নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘যেখানে-সেখানে যত্রতত্র নির্মাণ বা বাঁধের উচ্চতা…আমি জানি হয়তো একটু উঁচু হলেই বেশি পয়সা খরচ হয়। বেশি পয়সা খরচ হলে কিছু লোক কমিশন পাবে, এ ধরনের মানসিকতা পরিহার করতে হবে। দেশের জন্য কল্যাণকর যেটা, সেভাবে পরিকল্পনা নিতে হবে।’
আরও পড়ুন:ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে। সবাই ভোট দিতে পারবেন। ভোট হবে দিনের বেলা, রাতের বেলা নয়। নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পুরোনো ঠিকানায় চলে যাব। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সুযোগ সব সময় আসে না। একবার সুযোগ আসতে ৫৪ বছর লেগে যায়। আবার কবে সুযোগ আসবে জানি না। তাই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যই শক্তি, শক্তিই শান্তি।’
রাজধানীর বকশিবাজারে গতকাল বুধবার সকালে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫৪ বছর পর সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘অতি আধুনিক শিক্ষার নামে মাদ্রাসা শিক্ষায় কোরান-হাদিস থেকে সরে গিয়ে কোণঠাসা হয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষায়িত শিক্ষা। আধুনিকতার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার মূল ভিত্তি থাকতে হবে কোরান এবং হাদিস, ফেকাহ।’
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আলিয়া পদ্ধতির মাদ্রাসার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। অনেক যোগ্য ব্যক্তি এখানে তৈরি হয়েছেন। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আরবি, ইংরেজি জানলে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পাবেন।’
রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে যুগ যুগ ধরে আলিয়া মাদ্রাসা ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নামে দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করতে হবে। এ সময় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমদের আল্লাহ এক, কোরান এক, কেবলা এক। এই মিল আমাদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাহিরের ইন্ধনে দুষ্কৃতকারীরা পূজাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। তারা সফল হতে পারেনি।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের ইছাপুরায় শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পূজার শুরুতে ধর্ষণের ঘটনা প্রচার করে পূজাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ কাজে বাহিরের ইন্ধন ছিল কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা সফল হতে পারেনি।
এবার বাংলাদেশের সব জায়গায় ভালোভাবে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পূজা সম্পন্ন হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা ও বৌদ্ধদের বিজু উৎসব যাতে ভালোভাবে হতে না পারে তার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের সহযোগিতায় কিছু সন্ত্রাসী এ ধরনের কাজ করেছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন এবং বিশেষ করে পূজা কমিটির সহযোগিতায় এ বছর শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল ) মো. ইব্রাহিম, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাদর পাল। সূত্র : বাসস
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দ্রুত প্রত্যাহার হবে এমন কোন সম্ভাবনা নেই।
বরিশাল নগরীর শংকর মঠ পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আজ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন একটা দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়, স্থায়ী কি অস্থায়ী এ ধরনের প্রশ্ন থাকে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হবে এরকম কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না।
বিদেশি গণমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অশান্ত পাহাড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড়কে যারা অশান্ত করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।
তিনি আজ দুপুরে বরিশাল সার্কিট হাউজে পৌঁছে নগরীর নতুন বাজার সংলগ্ন শংকর মঠ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার মো. শরীফ উদ্দীন, শংকর মঠ পূজা মণ্ডপ কমিটির সভাপতি কানু লাল সাহা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তম্ময় তপু প্রমুখ।
বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মঙ্গলবার এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে এগোচ্ছে। এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়, একদিনে সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, যারা বিদেশে টাকা পাচার করে তারা সাধারণত খুব কৌশলী ও প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ হয়। ফলে ফেরত আনার কাজ দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল হয়ে পড়ে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘অর্থ ফেরত আনা মানে সুইস ব্যাংকে ফোন দিয়ে টাকা নিয়ে আসা নয়। আন্তর্জাতিক আইনি ও আর্থিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এটি করতে হয়। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে এবং বেশ কিছু বিখ্যাত আইনি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিছু নির্দিষ্ট বিচার ব্যবস্থার সঙ্গেও আলোচনা এগোচ্ছে। আমরা আশা করি ফেব্রুয়ারির মধ্যে কিছু ফল পাওয়া যাবে।’
অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ১১-১২ টি মানিলন্ডারিং মামলা চিহ্নিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট সম্পদের তদন্ত অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পদ জব্দ করেছে, বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেছে এবং সংশ্লিষ্টদের পাসপোর্ট ও বসবাসের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এসব মামলা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এগোচ্ছে।’
আগামী নির্বাচনের পর নতুন সরকার আপনাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাধ্য হয়ে তাদের চালিয়ে যেতে হবে। কারণ আমরা প্রক্রিয়াগুলো চালু করে গেলাম, সেটা অব্যাহত না থাকলে তো টাকা ফেরত আনতে পারবে না। তারা বসে থাকলে টাকা ফেরত আসবে না। আর যদি আনতে হয় এই প্রক্রিয়াগুলো মানতে হবে। এটা তো ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস। আমরা যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি তা বজায় রাখতে হবে।’
খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আতপ চালের একটি বাফার মজুত রাখি। অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটলে যাতে সংকট না হয় সে জন্য নীতিগতভাবে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সার বিশেষ করে-ডিএপি ও ইউরিয়া আমদানিতে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সুখবর হচ্ছে-আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কিছুটা কমেছে। আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করছি, পাশাপাশি যথেষ্ট চাল ও সারের মজুদও রাখছি।
সাম্প্রতিক বিবিএস প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার শিশু ও মাতৃকল্যাণ বিষয়ে সতর্ক। তাই ভিজিএফ কর্মসূচি এবং উপকূলীয় ও হাওর অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, আসন্ন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞাকালে জেলেদের প্রতিটি পরিবারকে ২০ কেজি চাল দেওয়া হবে।’
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মজুত ভালো থাকায় চালের দাম সম্প্রতি কমেছে। তবে শাকসবজি ও অন্যান্য দ্রুত নষ্ট হওয়া পণ্যের দাম মৌসুমি কারণে ওঠানামা করে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কারসাজি এখনো অব্যাহত রয়েছে। ‘ এ কারণেই আমরা এখনো পূর্ণ সাফল্য দাবি করতে পারছিনা,’ স্বীকার করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটি (সিএলসিসি) এর প্রথম সভা আজ নগর ভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া এঁর সভাপতিত্বে স্থানীয় সরকার বিভাগের "সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সম্পৃক্ততকরণ নির্দেশিকা" এর আলোকে গঠিত সিএলসিসির ৭১ জন সদস্য উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটি (সিএলসিসি) সভায় আলোচনাপূর্বক উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মপরিকল্পনা সুপারিশ করতে পারে। এ সভায় সিটি কর্পোরেশনের বার্ষিক বাজেট ও উন্নয়ন পরিকল্পনা, আর্থিক বিবরণীসহ বার্ষিক অর্জন সম্পর্কিত প্রতিবেদন, নাগরিক জরিপ, সামাজিক সমস্যাবলি সমাধানের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ, সিটি কর্পোরেশনের সেবাসমূহের মান উন্নয়ন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নাগরিকদের যথাযথভাবে সেবা প্রদানে চ্যালেঞ্জসমূহ আলোচিত হতে পারে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, "জুলাই পরবর্তী নাগরিক প্রত্যাশা পূরণে সিএলসিসি কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা তাদের মাধ্যমে সরাসরি নাগরিকদের মতামতের প্রতিফলন হয়।" এ সময় প্রশাসক ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসির গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে জনগণকে এ বিষয়ে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় সদস্যবৃন্দ ডিএসসিসির সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা ও সুপারিশ প্রদান করেন এবং সিটি কর্পোরেশন নাগরিক জরিপে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, সকল বিভাগীয় প্রধান এবং মিস নাউকু আনজাই, টিম লিডার, সিফরসি২ উপস্থিত ছিলেন।
তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের মধ্যে বাল্যবিয়ে ও কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের প্রবণতা উদ্বেগজনক আকারে বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই শ্রমিকদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি (৬৬ শতাংশ) ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়েছে। তাদের অধিকাংশই অপ্রাপ্ত বয়সে প্রথমবারের মতো গর্ভধারণ করেছেন। একই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হারও এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক বেশি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি মিলনায়তনে ‘তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা বলছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী শ্রমিক অন্তত একবার অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন এবং প্রতি চারজনের একজন গর্ভপাত বা মেনস্ট্রুয়াল রেগুলেশন করেছেন।
জানা গেছে, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় আইসিডিডিআরবি প্রায় ২৪ মাসব্যাপী এই গবেষণা পরিচালনা করে, যা বাংলাদেশে পরিচালিত প্রথম এমন কোনো গবেষণা। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গবেষণাটি কড়াইল ও মিরপুর বস্তি এবং গাজীপুরের টঙ্গী বস্তিতে আইসিডিডিআরবির আর্বান হেলথ অ্যান্ড ডেমোগ্রাফিক সার্ভেইলেন্সের আওতাধীন এলাকায় পরিচালিত হয়। ১৫-২৭ বছর বয়সি মোট ৭৭৮ জন বিবাহিত নারী গার্মেন্ট শ্রমিককে এই গবেষণাটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর এদের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়।
সেমিনারে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে জানানো হয়, গার্মেন্টস কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন ৪৯ শতাংশ শ্রমিক, যা দুই বছর শেষে বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে। জরুরি গর্ভনিরোধক বড়ি সম্পর্কে জ্ঞান ছিল মাত্র ১৫ শতাংশ নারীর; গবেষণা শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ শতাংশে। একই সময়ে পরিবার পরিকল্পনায় লিঙ্গ সমতার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ৫৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, নারী শ্রমিকরা ঘর ও কর্মস্থল দুই জায়গাতেই সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। গত ১২ মাসে স্বামীর সহিংসতার হার ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। যৌন সহিংসতা ছাড়া অন্য সব ধরনের সহিংসতা গত দুই বছরে বেড়েছে। কর্মক্ষেত্রেও সহিংসতার প্রবণতা উল্টোদিকে গেছে— গবেষণার শুরুতে যেখানে প্রায় ৪৮ শতাংশ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন, গবেষণার শেষ দিকে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশে।
তবে সহিংসতার শিকার হওয়ার পরও খুব কম সংখ্যক নারী আনুষ্ঠানিকভাবে সাহায্য চাইছেন। গবেষণার শুরুতে যেখানে ৩৫ শতাংশ নারী অনানুষ্ঠানিকভাবে (পরিবার বা বন্ধুদের কাছে) সাহায্য চাইতেন, গবেষণার শেষ দিকে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ২১ শতাংশে। কর্মক্ষেত্রের সহিংসতার ঘটনাতেও মাত্র এক-পঞ্চমাংশ নারী কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, এবং দুই বছর পরেও এ হার অপরিবর্তিত থাকে।
তরুণ বয়সে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমাতে কিছু নিয়ামকও চিহ্নিত হয়েছে গবেষণায়। দেখা গেছে, যারা সন্তান ধারণের আগেই গর্ভনিরোধক ব্যবহার শুরু করেছিলেন, তাদের কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের ঝুঁকি ৪৭ শতাংশ কম। এছাড়া যারা প্রথম গর্ভধারণের আগে গার্মেন্ট খাতে কাজ শুরু করেছিলেন, তাদের ঝুঁকি আরও কম।
অন্যদিকে, স্বামী কর্তৃক সহিংসতার অভিজ্ঞতা থাকলে কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের ঝুঁকি ২৬ শতাংশ বেড়ে যায় বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণার উপাত্ত বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, নারীর ক্ষমতায়নের বিভিন্ন মাত্রা স্বামীর সহিংসতাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যেমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বেশি থাকলে মানসিক ও যৌন সহিংসতা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। মতামত প্রকাশের ক্ষমতা থাকলে যৌন সহিংসতা কমে। আবার চলাচলে স্বাধীনতা থাকলে শারীরিক সহিংসতার ঝুঁকিও কমে যায়।
ঢাকার মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি ক্যাম্পাসে আয়োজিত সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (পরিকল্পনা ও গবেষণা) সহকারী পরিচালক ডা. সেকেন্দার আলী মোল্লা, পপুলেশন কাউন্সিল বাংলাদেশের সাবেক পরিচালক ডা. উবাইদুর রব, বিকেএমইএর যুগ্ম সচিব ফারজানা শারমিন এবং মেরী স্টোপস বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও স্বতন্ত্র গবেষক ইয়াসমিন এইচ আহমেদ।
বিকেএমইএর যুগ্ম সচিব ফারজানা শারমিন বলেন, গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শমূলক সেবা বৃদ্ধির কাজ চলছে। তবে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
এই গবেষণার প্রধান গবেষক ছিলেন আইসিডিডিআরবির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. রুচিরা তাবাসসুম নভেদ। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেলে তারা শুধু পরিবারে নয়, কর্মক্ষেত্রেও সহিংসতা থেকে সুরক্ষিত হতে পারেন। গার্মেন্ট শ্রমিক নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, খাগড়াছড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর রমনায় ডিএমপি’র পাঁচটি থানার ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, খাগড়াছড়িতে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সেখানে আছেন। তিনি বিষয়টি দেখাশোনা করছেন এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিতে প্রতিবেশী একটি দেশের অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি কোনো দেশের নাম উল্লেখ করতে চাই না, তবে পতিত ফ্যাসিস্টদের দল খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।’
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট দলটি সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। যাতে চলমান দুর্গাপূজা উৎসবমুখর ও বাধাহীনভাবে উদযাপন করা না যায়।
দুর্গাপূজা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গতকাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়েছে। কেউ যেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে ও পূজা নির্বিঘ্নে আয়োজিত হয়, সেজন্য সবাইকে সহায়তা করতে হবে।
পাহাড়ে আটকে পড়া পর্যটকদের বিষয়ে তিনি বলেন, আটকে পড়া পর্যটকদের অধিকাংশকেই নিরাপদভাবে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিএমপিতে ৫০টি থানা রয়েছে, যার অর্ধেক ভাড়া করা ভবনে আছে। আমরা সমস্ত থানাকে তাদের নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করার জন্য কাজ করছি।
খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক অস্থিরতায় তিনজন নিহত এবং পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
মন্তব্য