খুলনার ফুলতলা উপজেলায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির তৎপরতা কমলেও তাদের স্মৃতি ফিরে আসতে শুরু করেছে।
যারা এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন তারা এখনও পলাতক। আত্মগোপনে থেকে কিশোরদের মদদ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। এই কিশোরের দল ‘কিশোর গ্যাং’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
সদ্যঃসমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় ওই কিশোর গ্যাংটির নানা কর্মকাণ্ড নজরে এসেছিল একটি গোয়েন্দা সংস্থার।
তাদের প্রতিবেদন বলছে, উপজেলায় ২০ থেকে ২৫ জন কিশোরের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে ‘হাসনাত বাহিনী’ নামের দল। এদের নেতৃত্বে এলাকায় মাদক কারবার, জুয়া, ছিনতাই, স্কুলছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা, গভীর রাতে মোটরসাইকেল মহড়া, ভয়ভীতি প্রদর্শন চলে। হুমকি-ধমকি, অপমান-অপদস্ত ও মারপিটের ভয়ে কেউ বিরোধিতা করে না, থানায় অভিযোগ দিতেও সাহস পায় না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কয়েকজন পলাতক নেতা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে মূলত ওই কিশোর গ্যাং তৈরি করেছেন। এসব কিশোরদের মধ্যে কেউ কেউ বালু ব্যবসায়ী, পানের দোকানি, ভ্যানচালক, পাপড় বিক্রেতা ও মিল শ্রমিক পেশায় জড়িত।
তাদের বিভিন্ন সময়ে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করে চরমপন্থি সংগঠনের পলাতক নেতার এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা নেতিবাচক কার্যক্রম চালায়।
গত ৩১ মার্চ খুলনার ফুলতলা উপজেলায় সৈয়দ আলিফ রোহান নামে ২২ বছর বয়সী এক ছাত্রকে এম এম কলেজের ভেতরে দিনে-দুপুরে হত্যা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় করা মামলার এজাহারে পাঁচ কিশোরের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ইভ টিজিংয়ে বাধা দেয়ায় খুন
আলিফ রোহানকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা সৈয়দ আবু তাহেরের করা মামলায় আসামি দীপ্ত সাহাকে ১ এপ্রিল বিকেলে ফুলতলার দামোদর এলাকার নিজবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
দীপ্তর প্রাথমিক স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কয়েক দিন আগে পায়গ্রাম কসবা এলাকার একটি স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। ওই অনুষ্ঠানে কয়েকজন মেয়েকে উত্ত্যক্ত করা হচ্ছিল। এতে বাধা দেন আলিফ।
এ ঘটনায় ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে আলিফকে ‘শিক্ষা’ দেয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। ৩১ মার্চ আলিফ ফুলতলা এম এম কলেজে ক্লাস করতে গেছেন, খবর পেয়ে তারা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে কলেজে এসে তাকে ছুরিকাঘাত করে।
কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে এসে আলিফ ক্লাস করেছিল। পরে কলেজে দ্বিতীয় ফটকের সামনে গেলে তাকে হত্যা করা হয়। এ সময়ে এক শিক্ষক চিৎকার করলে আমরা গিয়ে দেখি, আলিফকে হত্যা করে খুনিরা পালিয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যে ছেলেরা আলিফকে হত্যা করেছে, তারা সমাজের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অনেকে বলছেন, তারা মাদক বিক্রি করে থাকেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে অনেককে তারা হত্যার হুমকি ও মারধর করেছে।’
কিলিং মিশনে পাঁচজন
মামলার এজাহার, গ্রেপ্তার আসামির স্বীকারোক্তি ও প্রতক্ষ্যদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আলিফকে হত্যার জন্য চারটি মোটরসাইকেলে করে ৮ থেকে ৯ কিশোর কলেজে এসেছিল। তার মধ্যে হত্যায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল পাঁচজন। তারা হলো তাছিন মোড়ল, সাব্বির ফারাজি, শান্ত গাজী, দীপ্ত সাহা ও আবুল হাসনাত।
তারা আলিফকে কলেজের উত্তর গেটসংলগ্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে। পরে দীপ্ত সাহা, আলিফের দুই হাত চেপে ধরে। তখন তাছিন, আলিফের বুকের ডান পাশে ছুরিকাঘাত করে। এরপর শান্ত গাজী, আলিফের গলা চেপে ধরে। অতঃপর সাব্বির আবার তার পেটের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে। সবশেষে হাসনাত তার পিঠের মেরুদণ্ড বরাবর ছুরিকাঘাত করে। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে তারা সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
ফুলতলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আলিফের শরীরে মোট তিনটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আলিফকে হত্যায় সরাসরি জড়িত ছিল ওই পাঁচজন। তাদের নামে থানায় মামলা হয়েছে।’
এখনো বেপরোয়া গ্যাং
এ হত্যার পরে পুলিশ আসামি দীপ্ত সাহাকে গ্রেপ্তার করলেও বাকি চারজন পলাতক। তাদের সঙ্গীরা বাদীপক্ষকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মামলার বাদী সৈয়দ আবু তাহের বলেন, ‘তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। এখন আমার পরিবারের বাকি সদস্যদের হত্যার চেষ্টা করছে, যাতে মামলা করার কেউ না থাকে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিভিন্নভাবে ইঙ্গিত পাচ্ছি, এসব কিশোরের মদদে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা রয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক একটি গোষ্ঠীও ওই কিশোরদের বাঁচাতে চেষ্টা করছে।’
যা বলছে পুলিশ
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ও ফুলতলা থানার তদন্ত পরিদর্শক এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এ হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল দীপ্ত সাহা। তাকে গ্রেপ্তার করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার অগ্রগতি হয়েছে।’
ওসি ইলিয়াস তালুকদার বলেন, ‘ফুলতলার কিশোর গ্রুপের সদস্যরা একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের প্রশ্রয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় কলেজছাত্র খুনের ঘটনা ঘটেছে। ওই গ্রুপের বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
এসব কিশোরের সঙ্গে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।’
আরও পড়ুন:তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘ এক যুগ বন্ধ থাকার পর পুনরায় শ্রীমঙ্গল-পাত্রখোলা সড়কে বাস পরিষেবা চালু করেছে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া বাস মালিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিদ আলী ও ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই রুটে ৫০ মিনিট পরপর ২৪টি বাস চলাচল করবে বলে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ মাধবপুর সড়ক দিয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগান পর্যন্ত এ বাস চলাচল করবে।
কুরমা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এছাড়া পাত্রখোলা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৫০ টাকা, মাধবপুর থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪০ টাকা, কুরমা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ৪০ টাকা, পাত্রখোলা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ২৫ টাকা, মাধবপুর থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ১৫ টাকা এবং ভানুগাছ থেকে শ্রীমঙ্গল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কুরমা নতুন বাস স্ট্যান্ডে বাস চলাচলের উদ্বোধন শেষে মতবিনিময় সভায় শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর-কুলাউড়া বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. তসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী যোগেশ্বর চন্দ্র সিংহের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়া, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান শাওন, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ, নুরুল হক, বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, গ্রুপ সভাপতি কাসেম মিয়া ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।
এর আগে মাধবপুর বাজারে বাস প্রবেশ করলে এলাকাবাসী বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
এদিকে সিএনজি থেকে ভাড়া কম করে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বেজায় খুশি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে আলমি আক্তার ও ইসরাত জাহান সিফাত নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চাওয়াই নদীর চৈতন্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১২ বছরের আলমি ওই এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে এবং ৯ বছরের সিফাত সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তারা দুজনে সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে আলমি ও সিফাত বাড়ির পাশে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে যায়৷ গোসল করতে গিয়ে সিফাত পানিতে ডুবে যেতে থাকলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় আলমি৷ পরে দুজনেই পানিতে ডুবে যায়। এ সময় নদীর পাড়ে থাকা অন্য আরেক শিশু ঘটনাটি দেখে দৌড়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মৃত অবস্থায় নদী থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দুই শিশুর মরদেহের সুরতহাল করে।
পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত, আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থনীয়রা।’
মরদেহের সুরতহাল শেষে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম। বাড়ি তার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার সুত্রাপুর থানায় কর্মরত।
৩৮ বছর বয়সী এ যুবকের নেশা বিয়ে করা। যেখানেই যান সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। এ পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করেছেন।
সর্বশেষ তিনি বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার। ঢাকায় থাকাকালে সেঁজুতি নামের পবহাটির একটি মেয়ের সঙ্গে সপ্তমবারের মতো সংসার শুরু করেন তিনি।
তবে এর মানে এই নয় যে, তার আগের সব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী পারভীন তার গ্রামের বাড়িতে এবং ষষ্ঠ স্ত্রী রয়েছেন যশোরের বেনাপোলে। ২ স্ত্রীর ঘরে ২টি সন্তানও রয়েছে তরিকুলের।
সম্প্রতি সংসার জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই যুবক। স্বামীকে ফিরে পেতে আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের পবহাটিতে আসেন ষষ্ঠ স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার সাথী। তরিকুলকে স্বামী দাবি করলে সেখানে বেঁধে যায় রণক্ষেত্র। স্বামীকে নিয়ে সেঁজুতির সঙ্গে শুরু হয় তার কাড়াকাড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে সাথী জানান, বেনাপোল বন্দরে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে এতিম পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন তরিকুল। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের পর থেকে একসঙ্গেই ছিলেন দুজন। তবে ২০২২ সালে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান তরিকুল। তার কিছুদিন পর থেকে সাথীর সঙ্গে তার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
তিনি জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।
সাথী বলেন, ‘গত ঈদে আমার কাছে গিয়ে ৬ দিন ছিল। সেখানে আমাকে ভুলিয়ে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে। তারপর আবার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার আড়াই বছরের মেয়েটি বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ঝিনাইদহ আছে- এমন খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আর এর মধ্যে আবার পালিয়েছে সে (তরিকুল)। আমি তরিকুল ও সেঁজুতির বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে আনসার সদস্য তরিকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের মধ্যে পড়ে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নেমাজপুর গ্রামে মাঠের মধ্যে থাকা ওই পাইপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মানসিক প্রতিবন্ধী রনি বর্মনকে (২৩) অবশেষে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিএমডিএর গভীর নলকূপটির পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায়, নতুন করে আরেকটি গভীর নলকূপ কিছুদিন আগে বসানো হয়, ফলে আগেরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে ছিল। ওই পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপের মধ্যেই পড়ে যান রনি বর্মন।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারেকুর রহমান জানান, প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রনি বর্মনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।
স্থানীয়রা জানান, রনি বর্মন গভীর নলকূপের ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। সকালে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের কাছে গেলে,পড়ে যান। এ সময় মাঠের কয়েকজন কৃষক ওই নলকূপের কাছে পানি খাওয়ার জন্য এসেছিলেন, তারা ছেলেটির কান্নার আওয়াজ শুনে সবাইকে জানান, খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে।
মন্তব্য