মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুর সহযোগী রিজভী হাসান ওরফে বোচা বাবুকে হত্যা করা হয়েছিল যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যাকাণ্ডসহ আধিপত্য বিস্তারের জেরে। আর সেই হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে এবার হত্যা করা হয়েছে টিপুকে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এরই মধ্যে এই হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ওরফে কানা ফারুক, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শ্যুটার সালেহ, মো. নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মো. মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ।
ঘটনার পর থেকে ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর মুগদা, শাহজাহানপুর ও মিরপুর এলাকা থেকে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩-এর সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানান, দীর্ঘদিন ধরে টিপু ও তার হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত অনেক পুরোনো বিষয়।
তিনি জানান, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের পরম্পরায় ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে মিল্কী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মিল্কী হত্যার তিন বছরের মধ্যে একই এলাকার বাসিন্দা রিজভী হাসান ওরফে বোচা বাবু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, বোচা বাবু হত্যা মামলায় ওমর ফারুক, নাসির ও সালেহ চার্জশিটভুক্ত আসামি আর কাইল্লা পলাশ মামলাটির একজন সাক্ষী। এই মামলার বিচারকাজ প্রভাবিত করতে একই মামলার আরেক আসামি মুসার সঙ্গে ওমর ফারুক, নাসির, সালেহ ও কাইল্লা পলাশ যুক্ত হয়ে টিপু হত্যার পরিকল্পনা করেন।
তিনি জানান, মিল্কী হত্যাকাণ্ডের পর এই হত্যায় টিপুর সম্পৃক্ততা প্রমাণে নানাভাবে চেষ্টা করে আসছিল ওমর ফারুক, পলাশসহ একটি পক্ষ। কিন্তু এরপরও জাহিদুল ইসলাম টিপু মামলা হতে অব্যাহতি পান। পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তার ওমর ফারুক ও অন্য সহযোগীরা স্বার্থগত দ্বন্দ্বের কারণে টিপুর অন্যতম সহযোগী রিজভী হাসান ওরফে বোচা বাবুকে ২০১৬ সালে হত্যা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই ঘটনায় বাবুর বাবা ও টিপুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবুল কালাম আজাদ মামলা করেন। বর্তমানে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মামলার বিচারকাজ চলছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানান, আসামিদের ধারণা প্রতিপক্ষ টিপুর কারণেই রিজভী হাসান হত্যাকাণ্ডের মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তরিত হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার বাদী রিজভী হাসান বাবুর বাবা আবুল কালামের সঙ্গে গ্রেপ্তার ওমর ফারুক ও তার সহযোগীরা ৫০ লাখ টাকায় দফারফা করার চেষ্টা করেন।
তিনি জানান, কিন্তু জাহিদুল ইসলাম টিপুর কারণে কালাম মীমাংসায় আসেননি বলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানান। তারা একপর্যায়ে কালামকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন, কিন্তু জাহিদুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে চলাচল করার কারণে তা সম্ভব হয়নি। একসময় তারা চিন্তা করেন টিপুকে হত্যা করা হলে বাদী কালাম একা মামলাটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৩ মাস আগে সাক্ষ্য শেষে আদালত চত্বর এলাকায় টিপু হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক আলোচনা করেন তারা।
গত ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচা বাজারসংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাহজাহানপুর আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজছাত্রী প্রীতি। টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় পরের দিন টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়।
দুবাই বসে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন
র্যাব জানিয়েছে, বোচা বাবু হত্যা মামলার মূল আসামিরা টিপুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে মামলাটিকে প্রভাবিত ও বাদীকে ভয় দেখানো যাবে বলে মনে করেন। সে অনুযায়ী বোচা বাবু হত্যা মামলার আসামি ওমর ফারুক টিপু হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করার জন্য সন্ত্রাসী ও শুটার মুসাকে দায়িত্ব দেন ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক। মূসা ও তার ভাই সালেহও বাবু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মোট ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। এতে ৯ লাখ টাকার যোগান দেন ওমর ফারুক। বাকি ৬ লাখ টাকা দেন মুসা, সালেহ ও নাসির। গ্রেপ্তার মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য ফারুক ও মুসাকে ফোনে কয়েকজন সন্ত্রাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডটি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সমন্বয়ের জন্য মুসা গত ১২ মার্চ দুবাই যান। দুবাইয়ে যাওয়ার সময় মুসা ৫ লাখ টাকা নিয়ে যান এবং হুন্ডির মাধ্যমে মুসাকে আরও ৪ লাখ টাকা পাঠানো হয়। বাকি ৬ লাখ টাকা দেশে হস্তান্তর করার চুক্তি হয়।
দুবাই পৌঁছে মুসা শুটার ভাড়া করাসহ ব্যাকআপ টিম দিয়ে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা সাজান। হত্যাকাণ্ডটি দেশে সংঘঠিত হলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। আর নজরদারির কাজ দেয়া হয় ওমর ফারুক, নাসির ও পলাশকে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশ থেকে নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশসহ আরোও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন যাবত মুসার কাছে তথ্য পাঠাতেন।
ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর নাছির চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে জানান। পরবর্তীতে জাহিদুল ইসলাম টিপু গ্রান্ড সুলতান রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় কাইল্লা পলাশ তাকে নজরদারিতে রাখেন এবং তার অবস্থান সম্পর্কে আন্ডারওয়ার্ল্ড সন্ত্রাসী ফ্রিডম মানিককে জানান। এরপর আনুমানিক রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে কন্ট্রাক্ট পাওয়া কিলার টিপুকে হত্যা করে।
হত্যার চারজনের ভূমিকা
ব্রিফিংয়ে টিপু হত্যায় গ্রেপ্তার চারজনের ভূমিকা সম্পর্কে জানান র্যাব মুখপাত্র। তিনি জানান, গ্রেপ্তার ওমর ফারুক টিপু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও হত্যাকাণ্ডের জন্য তত্ত্বাবধান ও অর্থ লেনদেন করেন।
গ্রেপ্তার ওমর ফারুক ২০১৬ সালে রিজভী হাসান হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটভুক্ত ৪ নম্বর আসামি এবং ওই মামলায় তিনি আগে কারাভোগ করেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির হত্যাকাণ্ডের সময় জাহিদুল ইসলাম টিপুকে নজরদারি ও হত্যাকাণ্ডের জন্য অর্থ দিয়েছেন। ঘটনাস্থলের কাছে তাকে সাদা শার্ট, জিন্স প্যান্ট ও কেডস-জুতা পরা অবস্থায় দেখা যায়।
ঘটনার পর তিনি মোবাইল ফ্লাশ করে বিক্রি করে দেন ও সিমকার্ড ভেঙে ফেলেন। র্যাব পরবর্তীতে ওই মোবাইলফোন ও সিমকার্ড উদ্ধার করে। এছাড়া ঘটনার আগেরদিন তিনি সীমান্তবর্তী চৌদ্দগ্রাম এলাকায় একদিন অবস্থান করেছিলেন।
গ্রেপ্তার মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ ঘটনার দিন জাহিদুল ইসলাম টিপুকে নজরদারি ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সমন্বয় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডটি বাস্তবায়নে সহায়তা করেছেন। ইতোপূর্বে তিনি মতিঝিল থানায় অস্ত্র আইনের একটি মামলায় কারাভোগ করেছেন।
র্যাব জানায়, এর বাইরে হত্যা মিশনের মূল সমন্বয়ক মুসা দেশের বাইরে থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। হত্যাকাণ্ড পরিচালনার জন্য কোন কোন শুটারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত ছিলেন কি না তা একমাত্র মুসাই জানেন।
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য