ড্রোন প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লেজার শো এবং আতশবাজিসহ নানা আয়োজনে শেষ হলো স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর হাতিরঝিলে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ হয় ‘জয় বাংলার জয়োৎসব’ নামের এই আয়োজন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, শুভ্র দেব, কোনালসহ বিভিন্ন শিল্পীরা। এছাড়া লেজার শো ও প্রথমবারের মতো ড্রোন প্রদর্শনীর পর হয় আতশবাজি।
লেজার শো এবং ড্রোন প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি আয়োজনে এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘আজকের সমাপনী অনুষ্ঠানে একটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা থাকবে যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দর্শনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব।’
২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এর আগে গণহত্যা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার, গণহত্যা বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শনী, মুক্তিযুদ্ধ কনসার্ট, জাতীয় পর্যায়ে কুইজ, রচনা ও সঙ্গীত প্রতিযোগিতা, আলোচনা, সাংস্কৃতি ও যাত্রাপালার আয়োজন ছিল।
অনুষ্ঠানের জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর হাতিরঝিলে মধুবাগ ক্রসিং থেকে পুলিশ প্লাজা পর্যন্ত সড়কের একপাশ বন্ধ করে দেয়ায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। পরে রাত ৮টার দিকে রাস্তা খুলে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বংশালে একটি বাসায় গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুনে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন।
শনিবার ভোর ৪টার দিকে বংশালের আগাসাদেক রোড এলাকার এ ঘটনায় দগ্ধদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
দগ্ধরা হলেন ৬২ বছর বয়সী মো. ইসরাফিল, ৫০ বছর বয়সী মোছাম্মদ সালমা বেগম, ৩৫ বছর বয়সী মোছা. শাহজাদী আক্তার ও ২৮ বছর বয়সী মো. ইমরান হোসেন।
ইসরাফিলের ভাতিজা মো. তারেক বলেন, আগাসাদেক রোডের ৫৬ নম্বর বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। পরে দগ্ধ অবস্থায় ওই চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কীভাবে আগুন লেগেছে; এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, দগ্ধদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি দুজনের অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। তাদের শরীরে ৫০ থেকে ১৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বংশালের আগাসাদেক এলাকার একটি বাসা থেকে চারজন দগ্ধ হয়ে এসেছেন। তাদের চারজনকেই ভর্তি নেয়া হয়েছে। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বনানীর আওয়াল সেন্টারের ৯ তলা ভবন থেকে পড়ে মো. নাসির উদ্দিন নামের এক ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
বনানী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত ব্যক্তি বনানীর আওয়াল সেন্টারের ৯ তলা থেকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। তারপর হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের আইডি কার্ড দেখে নাম-ঠিকানা আমরা জানতে পারি। তিনি খুলনা জেলার মোংলা থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর হাতিরঝিলকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।
হাতিরঝিলে নানা রং বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড শোভা পাচ্ছে। বর্ণিল এলইডিতে ছেয়ে গেছে পুরো হাতিরঝিল। বর্ণিল আলোয় এক নতুন রূপ পেয়েছে হাতিরঝিল।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন, তার উপর হাতিরঝিলের সাজ, সব মিলিয়ে হাতিরঝিল ঘিরে মানুষ আর মানুষ। অনেকে আবার ওয়াটার ট্যাক্সিতে ও ভাড়া করা প্যাডেল বোটে করে ঘুরে হাতিরঝিলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হাতিরঝিলে এসেছেন আনোয়ার সম্রাট। রামপুরা ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে আলোকিত হাতিরঝিল উপভোগ করছেন তারা।
সম্রাট নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে বন্ধের দিন। গতকাল অফিস থেকে ফেরার পথে দেখলাম হাতিরঝিল সাজানো হচ্ছে। তাই ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে এখানে আসা। ভাবছি ওদেরকে নিয়ে চক্রাকার বাসে পুরা হাতিরঝিল একটা রাউন্ড দেব।’
মাসুম আব্দুল্লাহ ও তার বন্ধুরাও হাতিরঝিলের মধুবাগ ব্রিজ এলাকায় হাতিরঝিলের আলোয় ছবি তুলছেন।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আজকে পুরা হাতিরঝিলে এই লাইটিং করা হয়েছে। ভালোই লাগছে। বন্ধুদের নিয়ে ছবি তুলছি। আমরা বাইক নিয়ে এসেছি। হাতিরঝিলের পুরা এলাকা এক চক্কর দিয়ে এখন আড্ডা দিচ্ছি।’
সেতু বিভাগের আয়োজনে এবং যমুনা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় হাতিরঝিলে এই আয়োজন করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে হাতিরঝিলের পুলিশ প্লাজা প্রান্তে সংবাদ সম্মেলন করে আয়োজকরা।
অনুষ্ঠানে যমুনা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর মুহাম্মদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু বিশ্বের কাছে আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা বাস্তবায়ন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ সাহসিকতা না থাকলে এটা সম্ভব হত না। পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব।’
যমুনা ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন পদ্মা সেতু করার পদক্ষেপ নেন তখন বিশ্বব্যাংক পিছিয়ে যায়। সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকগুলোর কাছে আর্থিক যোগান চাওয়া হয়। সেদিন কোন ব্যাংক এগিয়ে আসেনি, কিন্তু আমাকে যখন বলা হলো তখন আমার ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রথম সাহসিকতার পদক্ষেপ নেই, ৬০০ কোটি টাকা ঋণ দেই। এজন্য যমুনা ব্যাংক আজ আনন্দিত।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে এটা শতাব্দীর পর শতাব্দী ইতিহাস হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বাংলাদেশ আজ পরিপূর্ণ। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে সম্মান লাভ করেছে। পদ্মা সেতুর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’
আরও পড়ুন:প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘এটি কেবল খসড়া বাজেট। বাজেট নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হবে। তারপর এটি সংসদে পাস হবে।’
রাজধানীর একটি হোটেলে শুক্রবার সকালে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট এবং অর্থনৈতিক গতিধারা’ শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাজেটের নানামুখী বিশ্লেষণের লক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করে সিজিএস। সেমিনারে বক্তারা বাজেটে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রতি জোর দেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারপারসন ও অর্থনীতিবিদ ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর।
আলোচনায় আরও অংশ নেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী এবং সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দেশ চালাতে সুশাসন অবশ্যই দরকার। তবে সবার আগে প্রয়োজন সাধারণ জনগণের চাহিদাকে মূল্যায়ন করা।
‘সুশাসনের রাস্তা অনেক দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় সরাসরি কেউ যেতে পারে না। পৃথিবীর বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশগুলোও বহু বছরের অপেক্ষার পর সুশাসন অর্জন করতে পেরেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন বিএনপির হরতাল দেয়ার সাহস নেই। কারণ জনগণই তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এই পদ্মা সেতুর সঙ্গে জনগণের স্বপ্ন এবং অভিলাষ জড়িয়ে আছে।
‘শেখ হাসিনার শাসনামলে ১৫ বছর ধরে দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ সরকারই দেশের মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। মহামারির সময়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ছিল বাংলাদেশের। এমনকি ভারত ও চীনের চেয়েও এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যানবিষয়ক একটি প্রতিবেদনের ফলাফল তুলে ধরে বলেন, ‘পরিসংখ্যান সক্ষমতার দিক দিয়ে বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের স্কোর ৬০, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন।’
বর্তমান সরকারকে তিনি কর্তৃত্বপরায়ণ এবং অনির্বাচিত সরকার দাবি করে বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রে যখন রাজনীতিকরণ অর্থনীতিকে গ্রাস করে ফেলে, তখনই সরকার কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে যায়। এতে জনগণের কথা বলার সুযোগ থাকে না।’
বাজেটের কথা উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, ‘বাজেটে সীমাবদ্ধতার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি জনসেবামূলক খাতগুলোতে প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে। যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে এই খাতগুলো এখন অবহেলিত।
সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারপারসন ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, ‘কার্যকরী গণতন্ত্রের জন্য জনপরিসরে অর্থনৈতিক আলোচনা বাঞ্ছনীয়।’
তিনি ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে উল্লেখ করেন, ‘মূল্যস্থীতিকে কেবল সংখ্যা দিয়ে বিচার করলে হবে না। এর সঙ্গে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ের প্রসঙ্গও জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তাজউদ্দীন আহমদ ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিলেন, যার মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা ছিল উন্নয়ন ব্যয় এবং ১৮৬ কোটি টাকা ছিল পরিচালন ব্যয়।
‘বর্তমান বাজেটে আমরা ঠিক এর বিপরীত চিত্র দেখতে পাই। প্রাক-কোভিডকালে দেশের কর্মসংস্থান ঋণাত্মক পর্যায়ে চলে গিয়েছে। ফলে কোভিডকালে এবং কোভিডের পর দেশে নতুন করে দারিদ্র্য যুক্ত হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা, তারা অন্তর্ভুক্ত হতে পারছেন না।’
আরও পড়ুন:১৯৮৮ সাল থেকে হাওর এলাকায় পানি ধারণক্ষমতা ৮৭ শতাংশ কমে যাওয়ায় এবার সিলেট এলাকায় বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে উঠে এসেছে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আয়োজনে এ তথ্য জানানো হয়।
‘হাওর এলাকার ভূমি ব্যবহারের কয়েক দশকের পরিবর্তন ও এবারের বন্যার ব্যাপকতা’ বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয় এতে। ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট- আইপিডি ছিল এর আয়োজক।
সংলাপে গবেষণার সারাংশ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান।
তিনি বলেন, ‘পূর্ববর্তী বছরগুলো থেকে বর্তমানে বন্যার ভয়াবহতা আরও বেশি হওয়ার কারণ অতিবৃষ্টি ও নদী-নালার নাব্য সংকটের পাশাপাশি জলাভূমির ভরাট করে বাড়িঘর ও বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ।’
তিনি জানান, হাওর এলাকার জলাভূমি ১৯৮৮ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ কমে যায় এবং ২০০৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আরও ৩৭ শতাংশ কমে গিয়ে এখন প্রায় ১৩ শতাংশ এলাকা অবশিষ্ট আছে।
এর বিপরীতে হাওর এলাকায় নির্মিত এলাকা (বিল্ট আপ এরিয়া) ২০০৬ সালে ২ দশমিক ২ গুণ ও ২০২০ সালে ৩ দশমিক ৮ গুণ বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি হাওর এলাকায় পতিত জমি, কৃষিজমি ও বনজ এলাকাও কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে।
তিনি বলেন, ‘হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মধ্যে ১৯৮৮ সালের তুলনায় ২০২০ সালে শুষ্ক মৌসুমের জলাভূমির পরিমাণ সিলেটে ৭৫ শতাংশ, সুনামগঞ্জে প্রায় ৮০, নেত্রকোণায় প্রায় ৯০, কিশোরগঞ্জে প্রায় ৮৫, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ৭০, হবিগঞ্জে প্রায় ৯০ ও মৌলভীবাজারে প্রায় ৭০ শতাংশ কমেছে।’
পরিকল্পনাবিদ ইনজামাম উল হক রিফাত বলেন, ‘হাওর এলাকার জলাভূমির আশঙ্কাজনক পরিবর্তন এখনই রোধ না করা গেলে এই এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বন্যার আশঙ্কা আরও ব্যাপকতর হবে।’
আইপিডির পরিচালক ও পরিকল্পনাবিদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এবারের বন্যার জন্য দায়ী আন্তদেশীয় নদীর অতিরিক্ত পানির প্রবল চাপ, পলি জমাটের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা সংকট ও নদী-জলাশয়ের পানি ধারণক্ষমতা কমে যাওয়া। আমাদের উৎকণ্ঠার জায়গা, হাওর এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রম টেকসই হচ্ছে কি না।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরহাদুর রেজা বলেন, ‘এবারের বন্যার কারণ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বোচ্চ কতটুকু বৃষ্টি হতে পারে তার একটা সম্ভাব্য প্রজেকশন ও হাওর এলাকার পানি ধারণ করার সক্ষমতা জানা থাকলে এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগ মোকাবিলা করা আমাদের জন্য সহজতর হবে।
‘হাওর এরিয়ার জন্য সেখানে কতটুকু রোড দরকার, ডিমান্ড অ্যানালাইসিস এবং ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে ইন্টিগ্রেটেড পদ্ধতিতে মাস্টার প্ল্যান তৈরির করে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সেখানকার জীবন-মানের উন্নয়ন সম্ভব।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মুগদায় একটি বাসার ছয়তলা থেকে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে মুগদা থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহ উদ্ধার করে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
ওই কিশোরীর নাম ফারিয়া আক্তার রিয়া। তার বয়স ১৭ বছর।
রিয়ার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায়।
মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌসী আক্তার বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে দক্ষিণ মুগদার একটি ভবনের ছয়তলা থেকে ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
‘বাসার লোকের মুখে জানতে পারি নিহত কিশোরীর ছয় মাস আগে বিয়ে হয়। অসুস্থতার কারণে ঢাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় আসে চিকিৎসার জন্য। রাতে মোবাইল ফোনে তার মায়ের সঙ্গে কথা হয়। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিমান করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে আমরা গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠাই।’
এসআই আরও বলেন, ‘কী কারণে সে গলায় ফাঁসি দিয়েছে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর ওয়ারীর একটি বাসায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) শিশু বিভাগের এক চিকিৎসক আগুনে দগ্ধ হয়েছেন।
ওই চিকিৎসকের নাম অদীতি সরকার। বয়স ৩৮ বছর।
ওয়ারীর ১০ নম্বর হেয়ার স্ট্রিটের বাসার ষষ্ঠ তলায় শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ চিকিৎসক শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দগ্ধ চিকিৎসকের স্বামী প্রকৌশলী মানষ মণ্ডল বলেন, ‘এটি একটি দুর্ঘটনা। বাসায় কিছু দাহ্য পদার্থ ছিল, তা অদীতির পায়ে লেগে পড়ে যায়, সেখানে আগুন লাগে এবং ওই আগুনে দগ্ধ হয়। ওই সময় তার দুই সন্তানসহ পরিবারের লোকজনও ছিল।’
মানষ মণ্ডল আরও বলেন, ‘অদীতি মিটফোর্ড হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্টার হিসেবে কর্মরত। তাদের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জে।
‘দীর্ঘদিন ধরে অদীতি শারীরিকভাবে অসুস্থ ও আপসেট ছিল। কাজ শেষে দুপুরে বাসায় ফিরে জামাকাপড় পাল্টানোর সময় পাশের রুমে হঠাৎ অতীদির চিৎকার শুনতে পাই। দৌড়ে গিয়ে দেখি তার শরীরে আগুন জ্বলছে। সঙ্গে সঙ্গে বাথরুমে নিয়ে তার শরীরে পানি ঢালি। এরপর ৯৯৯-এর মাধ্যমে একটি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য