খুলনা মহানগরীতে অভ্যন্তরীণ গণপরিবহন চলাচল বন্ধ চার বছর ধরে। শহরে গন্তব্যে পৌঁছাতে নগরীবাসী নির্ভর করে তিন চাকার বাহনের ওপর। এতে তাদের পরিবহন খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। সেই সঙ্গে বেড়েছে যানজটে ভোগান্তি।
দেশ স্বাধীনের পর ৬০টি বাস নিয়ে খুলনা শহরে ‘নগর পরিবহন’ সেবা চালু হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এই গাড়িগুলো টানা সেবা দেয়। এরপর সেগুলো চলাচলে অনুপোযোগী হতে শুরু করে। তখন স্থানীয়রা এর নাম দেয় ‘মুড়ির টিন’।
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের মধ্যে ৫৫টি বাসই চলাচলের যোগ্যতা হারায়। এর পরের বছরই শহরে গণপরিবহন সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০১৬ সালে বিআরটিসির পাঁচটি দোতলা বাস চালু করলে গণপরিবহন বন্ধের ওই সিদ্ধান্ত এড়ানো যায়নি।
২০১৮ সালে শহরের নগর পরিবহন সেবা বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। একই বছরে অনুষ্ঠিত হয় খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নির্বাচনি ইশতেহারে ‘নগর পরিবহন’ পুনরায় চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশ জনপ্রিয়তা পান। তবে তিনি চার বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করলেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
বেড়েছে পরিবহন খরচ
‘নগর পরিবহন’ বন্ধের পর ২০১৮ সাল থেকে খুলনা শহরের রূপসা-ফুলতলা রুটে চলছে তিন চাকার যান (মাহিন্দ্রা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা)। এ যানে যাত্রীপ্রতি ভাড়া আদায় করা হয় ৬০ টাকা। অথচ বন্ধ হওয়ার আগে নগর পরিবহনে এ রুটে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ছিল মাত্র ২৫ টাকা। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হতো অর্ধেক ভাড়া।
খুলনা শহরের দৌলতপুরে অবস্থিত সরকারি বিএল কলেজ। শহরের রূপসা থেকে এ কলেজের দূরত্ব ১০ কিলোমিটারেরও বেশি। প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে কলেজে যান।
তাদের একজন আরাফাত হোসেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খুলনার শিববাড়ী থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত মাহেন্দ্রায় ভাড়া নেয়া হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এ হিসাবে আমার কলেজে যেতে প্রতি মাসে খরচ হয় দেড় হাজার টাকারও বেশি।
তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি নগর পরিবহনে এই রুটে ভাড়া ছিল ১০ টাকা। আর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেয়া হতো। ফলে নগর পরিবহন থাকলে প্রতি মাসে আমার পরিবহন খচর হতো ৩০০ টাকারও কম।
খুলনা মহানগরীতে একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি পদে চাকরি করেন আহমেদ আলী। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আমাকে শহরের বিভিন্ন ফার্মেসি, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়। এ ক্ষেত্রে আমি মোটরসাইকেল ব্যবহার করি। তবে অনেক সময় যানজটের কারণে বিভিন্ন স্থানে যেতে দেরি হয়।
‘আমাদের প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ওষুধ বিক্রি করতে হয়। না হলে পর্যাপ্ত বেতন পাওয়া যায় না। যানজটের ফলে অনেক সময় আমি বেশিসংখ্যক ফার্মেসি বা হাসপাতালে যেতে পারি না।’
শহরে বাড়ছে যানজট
সরকারি হিসাবে খুলনা শহরে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ বাসবাস করে। এ বিপুলসংখ্যক মানুষ চলাচলের জন্য তিন চাকার যান (মাহেন্দ্রা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও রিকশা) ব্যবহার করে।
কেসিসির মতে, শহরে প্রায় ২০ হাজার রিকশা, ১০ হাজার ইজিবাইকসহ অন্যান্য যান চলাচল করে। তবে বাস্তবে সেই সংখ্যা আরও বেশি।
এসব ছোট যান ও অদক্ষ চালকের কারণে শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে যানজট।
সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর শিববাড়ী, ময়লাপোতা মোড়, শামসুর রহমান রোড, কমার্স কলেজ মোড়, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, সিমেট্রি রোড, পাওয়ার হাউস, ফেরিঘাট, ডাকবাংলো, শান্তিধাম, স্যার ইকবাল রোড, পিটিআই মোড়, টুটপাড়া কবরখানা মোড়, সাতরাস্তার মোড়, ফুলমার্কেট, ক্লে রোড, মহারাজ চত্বর, কদমতলা স্টেশন রোড, কালীবাড়ি রোড, গল্লামারী মোড়, দৌলতপুর বাসস্ট্যান্ডসহ ব্যস্ততম সড়কে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে।
খুলনা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। কেএমপির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘খুলনা শহরে কিছুটা যানজট বেড়েছে। এর মূল কারণ হলো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। বর্তমানে শহরের বেশ কিছু স্থানে রাস্তা বা ড্রেনের কাজ চলছে। এ কাজগুলো হয়ে গেলে যানজট অনেকটা কমে যাবে।’
‘নগর পরিবহন’ চায় নগরবাসী
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা মহানগরের সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, ‘খুলনায় শহরের জন্য অবিলম্বে কমপক্ষে ২০-২৫টি গণপরিবহন চালু করা দরকার। এতে নগরবাসীর পরিবহন খরচও কমবে, একই সঙ্গে যানজটও কমে যাবে।’
খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির সভাপতি শিবলি বিশ্বাস বলেন, ‘মাহেন্দ্রা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার কারণে নগর পরিবহন চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তাদের একটি শক্ত রাজনৈতিক সিন্ডিকেট রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান মেয়র নির্বাচনের সময়ে আমাদের শহরের ‘নগর পরিবহন’ চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি।
‘বাস মালিক সমিতির সঙ্গে সমন্বয় করে নগর পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সহজে নগরবাসীকে পরিবহন সেবা দিতে পারবে।’
যা বলছেন কেসিসি মেয়র
কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খুলনা শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তার অবস্থা ভালো না। আমরা প্রথমত শহরের রাস্তাগুলো মেরামতের জন্য কাজ করছি।
‘এ ছাড়া বর্ষাকালে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পানিতে ডুবে যায়। আমরা জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।’
তবে নগর পরিবহন সেবা চালুর কোনো পরিকল্পনা এই মুহূর্তে কেসিসির নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তের বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি একটি বন্যহাতি নিহত হয়েছে। বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বনবিভাগ।
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হাতিটির শুড়ে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে। এটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হবে। এটি একটি মাদি হাতি। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খেতে ফসল না থাকায় হাতির দল বাড়িঘরেও হানা দিচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যেখানে বন্যহাতির দেহটি পড়ে ছিল, সেখানে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকলেও হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে অনেক বসতি ও বাড়িঘর রয়েছে।
এ নিয়ে চার মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করল বনবিভাগ।
এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর গত ২৯ মে দাওধারা পাহাড় থেকে সদ্যোজাত একটি হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘন ঘন হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।
নিধারঞ্জন কোচ নামে এক অধিকারকর্মী নিজের ফেসবুক ওয়ালে শনিবার নিহত হাতির মরদেহের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিসনে সরকারি উদ্যোগ কী? ক্ষতিপূরণ প্রদানই কি যথেষ্ট? হাতি-মানুষের সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি নাই হয়ে যাবে!’
সিলেটের ওসমানীনগরে এনা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুরুয়া বাজারের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু মিয়ার (২৬) বাড়ি ফরিদপুর জেলার তারাকান্দা থানায়। তিনি ইউনিক বাসের হেলপার ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা এনা পরিবহনের বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউনিকের হেলপার রাজু মিয়ার নিহত হন। বেপরোয়া গতিতে ভুল পাশ থেকে এসে এনা পরিবহনের ওই কোচটি এ দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়াস সার্ভিস, ওসমানীনগর থানা পুলিশ ও শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এসে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্ঘটনার পর কুরুয়া বাজারের দুই পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে যানজট নিরসন করে পুলিশ।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাতে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ রাজুর লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাস দুটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য