জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র আবাসিক হল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’-এ চার দিনে প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অনিরাপদ পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।
তারা জানান, ১৬ তলা এই ভবনটিতে কেবল নিচতলায় একটি ফিল্টার আছে। সে কারণে সেখানে দীর্ঘ লাইন লেগে থাকে। ফলে ছাত্রীরা সরবরাহ করা পানি সরাসরি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন।
তবে হলে সরবরাহ করা পানি গবেষণাগারে পরীক্ষা করে জীবাণু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রভোস্ট শামীমা বেগম। তিনি দাবি করেছেন, পানি নিয়ে ছাত্রীদের অভিযোগ শুধু শুধু তোলা হচ্ছে। ছাত্রীরা এখানে নতুন উঠেছে উল্লেখ করে তিনি এমনও বলেছেন যে তাদের মানিয়ে নিতে সময় লাগবে।
দ্বিতীয় তলা থেকে ষোল তলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায় পানির ফিল্টার বসানো হবে জানালেও সেটি কবে হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
আক্রান্ত কত
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের তথ্য বলছে, ২৭ মার্চ থেকে চার দিনে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ৫৮ ছাত্রী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে বুধবার বেলা ২টা পর্যন্ত ১৫ জন, মঙ্গলবার ১৪, সোমবার ১২ ও রোববার ১২ ছাত্রী চিকিৎসা নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রী হলের পাঁচ শিক্ষার্থী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সেন্টারটিতে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। সেখান থেকে প্রাথমিক ওষুধ ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদেরকে কাছের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে একজনকে ন্যাশনাল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে আসছেন। বৃহস্পতিবার সাতজন অনাবাসিক শিক্ষার্থী সেখানে চিকিৎসা নেন।
বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শামসুন নাহার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার রুমে চারজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। আমি শুধু হলের খাবার ও পানি খাই। বাইরে কিছু খাই না। এখন হলের পানি, খাবার থেকে এ সমস্যা হতে পারে।’
আরেক ছাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পানির ফিল্টার একটা। এক হাজার ২০০ ছাত্রীর পানির জন্য সিরিয়াল সারা দিনে শেষ হয় না। পানির সিরিয়ালের ভয়ে পানিও ঠিকমতো খাওয়া হয় না। মেয়েরা তো অসুস্থ হবেই।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুন্নি আক্তার বলেন, ‘হলের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। হলে বেশ কয়েকটি তলায় অনেকের ডায়রিয়া হয়েছে। ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে প্রচুর আয়রন পাওয়া যায়। এই পানি দিয়ে হলের ডাইনিংয়ে রান্না করা হয়। এ কারণে রান্না করা খাবার লাল রঙের হয়ে থাকে।’
হল ডাইনিংয়ের প্রধান পরিচালক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘হলের প্রধান সমস্যা নিরাপদ পানি। পানি কিছুক্ষণ গ্লাসে রাখলেই আয়রনের কারণে লাল হচ্ছে। গ্লাস ও জগে কয়েক দিনের মধ্যে আয়রন পড়ে যাচ্ছে।’
প্রাধ্যক্ষ বললেন, মেয়েদের অভিযোগ শুধু শুধু
হল কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তারা।
প্রাধ্যক্ষ শামীমা বেগম বলেন, ‘যাদের ডায়রিয়া হয়েছে, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। আমরা হল পরিদর্শন করি। ছাত্রীদের অপরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও নজরে এসেছে। সুস্থ থাকতে নিজেদেরও পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।’
পানি নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা শুধু শুধু অভিযোগ করছে। তারা পানি ঘোলা ও গন্ধ বলছে। কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি, পানি পরিষ্কার।
‘তারা যেহেতু নতুন এসেছে, তাই মানিয়ে নিতে হয়তো কিছুদিন সময় লাগবে। এ ছাড়া প্রচণ্ড গরমেও এমন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাজেট ২০২২-২৩ : শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি।
সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রবন্ধে কোভিড-পরবর্তী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বলা হয়, এ ক্ষেত্রে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে বরাদ্দ অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মোকাদ্দেম আকাশ ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শিক্ষার মাধ্যমে একটি কল্যাণকর ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য তিনি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্ভাবনের প্রাণকেন্দ্র। উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও গবেষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:দেশের প্রথম এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস লালমনিরহাটে ক্লাস চালুর মধ্য দিয়ে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
লালমনিরহাট শহরের পাশে বিমানঘাঁটি এলাকায় অবস্থিত এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে রোববার সকাল ১০টার জাতীয় সংগীত গেয়ে ও পতাকা উত্তোলন করে ক্লাস চালু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) এয়ার ভাইস মার্শাল মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
চলতি শিক্ষাবর্ষে ১৫০ জন শিক্ষার্থী সেখানে ভর্তি হয়েছেন।
ভিসি নজরুল বলেন, ‘মূল ক্যাম্পাস লালমনিরহাটে হলেও আমরা ২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ঢাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু করি। এখন যেহেতু লালমনিরহাট ক্যাম্পাসে অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ হয়েছে, তাই আজ পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হলো।
‘তবে মূল ক্যাম্পাসের কাজ শেষ হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।’
২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত।
ভিসি বলেন, ‘স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ৬২০ একর জমির অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা আসবেন। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এভিয়েশন ম্যানেজমেন্টের ওপর এমবিএ, এভিয়েশন সেফটি অ্যান্ড অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশনে এমএসসি এবং আন্তর্জাতিক ও মহাকাশ আইনে এলএলএম বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভিসি।
আরও পড়ুন:শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন অধিদপ্তর ও দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেবার মান বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। একই অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘সেবার মান বাড়াতে হবে। কোনো সেবাগ্রহীতা যেন আমাদের কাছে বিমুখ হয়ে ফিরে না যান। যদি সেবাগ্রহীতাকে তার কাজ করে দেয়া সম্ভব নাও হয়, তবু তিনি যেন তৃপ্তি নিয়ে ফেরত যেতে পারেন।’
রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন ২৩ টি অধিদপ্তর, দপ্তর ও সংস্থার মধ্যে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘সেবা নিয়ে পাবলিক পারসেপশন ভালো না, প্রভাবমুক্ত ও ভোগান্তিহীন সেবা দিতে হবে। যারা প্রন্তিক পর্যায়ের সেবা গ্রহিতা তারা সেবা পাচ্ছে না। আমরা ভোগান্তিহীনভাবে সেবা দিতে পারছি না।
‘জেলা ও উপজেলার শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের বাজেট বাড়ছে কিন্তু সেবার মান বাড়ছে না। অর্থ অনেক খরচ হচ্ছে অথচ প্রভাবমুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে পারছি না। প্রভাবমুক্ত ও ভোগান্তিহীন সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
সেবার মান ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমরা প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিয়েছি ২৩৩ জনকে। এই পদোন্নতির জন্য আমরা ছাড়পত্র পেয়েছিলাম ডিসেম্বর মাসে। আমরা যদি জানুয়ারিতে পদোন্নতি দিয়ে দিতাম, কোনো সমস্যা ছিল না। এতে কোনও বাধা ছিল না আমাদের। আমরা দিতে দেরি করায় আট জন মারা গেছেন, ২৪ জন পিআরএল এ গেছেন। শেষ পর্যন্ত যখন প্রস্তাব পাঠাই তখন আরও একজন পিআরএল এ চলে গেছেন। আমার মনে হয়, তাদের এ ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করায় আমাদের জবাব দিতে হবে।’
২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপ্রিএ) চূড়ান্ত মূল্যায়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সরকারের ৫১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার ফল সোমবার প্রকাশ করা হবে।
রোববার বিকেলে জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করবেন।
চলতি মাসের ৪ তারিখ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সাতটি বিভাগীয় শহরে খ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়।
‘খ’ ইউনিটে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৫৫১ জন। আর মোট আসন সংখ্যা ১৭৮৮টি। সেক্ষেত্রে এ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়েছেন প্রায় ৩৩জন।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে (এপিএ) সই করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে রোববার বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক ও ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
অনুষ্ঠানে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সফলতা ও দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে সনদপত্র পায় ইউজিসি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ড. ফেরদৌস জামান অভিনন্দন ও সনদপত্র নেন।
এপিএ বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অধীন ২৩টি দপ্তর/অধিদপ্তর/সংস্থার সঙ্গেও রোববার চুক্তি সই করে।
ইউজিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, এপিএর মূল উদ্দেশ্য সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎকর্ষ সাধন।
আরও পড়ুন:বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য রোববার থেকে শিক্ষকের শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত।
শূন্য পদের তথ্য পেয়ে গেলে দুই সপ্তাহের মধ্যেই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
রোববার বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সচিব ওবায়দুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আজ শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই কার্যক্রম। এটা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রথম ধাপ। ই-রিকুইজিশন পেলে আমরা গণবিজ্ঞপ্তি দেব। আশা করছি ই-রিকুইজিশন পাওয়ার পর প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষ করতে এক-দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।
জানা গেছে, চতুর্থ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের লক্ষ্যে দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসা ব্যবস্থাপনা) থেকে অনলাইনে এমপিওভুক্ত শূন্য পদের অধিযাচন সংগ্রহের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ওই কার্যক্রম আজ রোববার থেকে শুরু হয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
এনটিআরসিএর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির আওতায় নিয়োগ সুপারিশ কার্যক্রম চলমান থাকায় তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে যেসব শূন্য পদের ই-রিকুইজিশন দেয়া হয়েছে তা বাদ দিয়ে আগামী ৩০ জুন যেসব এমপিওভুক্ত পদ শূন্য হবে, ওইসব শূন্য পদের অধিযাচন দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের অনুরোধ করা হয়েছে। তৃতীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আওতায় নিয়োগ সুপারিশ দেয়ার পর যেসব এমপিওভুক্ত পদে শিক্ষক যোগদান করে অন্যত্র চলে গেছেন, সেসব এমপিওভুক্ত শূন্য পদের বিপরীতেও অধিযাচন দিতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা তাদের নিজস্ব ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে http://ngi.teletalk.com.bd লিংকে অথবা এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটের (www.ntrca.gov.bd) ই-রিকুইজিশন সেবা বক্সের লগইন অপশনে ক্লিক করে ই-রিকুইজিশন প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে অনলাইন ফরমটি পূরণপূর্বক শুধু এমপিওভুক্ত শূন্য পদের অধিযাচন পাঠাবেন।
অনলাইন ফরমটি পূরণের সময় এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত ই-রিকুইজিশনসংক্রান্ত নির্দেশিকাটি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএ বলছে, প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক অনলাইনে ই-রিকুইজিশন দাখিলের পর সংশ্লিষ্ট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং পরবর্তী সময়ে জেলা শিক্ষা অফিসার তাদের নিজ নিজ ইউজার আইডি/পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ই-রিকুইজিশন প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করবেন এবং প্রতিষ্ঠানপ্রধান কর্তৃক পাঠানো শূন্য পদের তালিকাটি সঠিকভাবে যাচাইপূর্বক অনলাইনে সাবমিট করবেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পর্যায়ের এমপিও ক্যাটাগরির শিক্ষকের শূন্য পদের অধিযাচন প্রদানের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো। নন-এমপিও পদের জন্য শূন্য পদের চাহিদাসংক্রান্ত অধিযাচন পরবর্তী সময়ে গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন:গুচ্ছ পদ্ধতিতে দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন পড়েছে প্রায় ৩ লাখ। তিনটি ইউনিটে প্রায় ২ লাখ ৯৩ হাজার শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করেছেন।
গুচ্ছভুক্ত টেকনিক্যাল কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার নিউজবাংলাকে রোববার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে তিন ইউনিটে মোট আবেদন পড়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে। সবচেয়ে কম আবেদন পড়েছে বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটে।
গুচ্ছের টেকনিক্যাল সাবকমিটি সূত্রে জানা গেছে, ‘এ’ ইউনিটে ১ লাখ ৬০ হাজারের কিছু বেশি, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে ৯০ হাজারের অধিক ও মানবিকের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ‘সি’ ইউনিটে ৪২ হাজার ভর্তীচ্ছু আবেদন করেছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব এবং সময় বাঁচাতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা মাত্র একটি আবেদনের মাধ্যমেই ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
শিক্ষার্থীরা www.gstadmission.ac.bd ওয়েবসাইটে ঢুকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সব তথ্য পাবেন।
এর আগে গত ১৫ জুন গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদন শুরু হয়। ২৫ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলে আবেদন গ্রহণ।
এবার ৩০ জুলাই বিজ্ঞান বিভাগ, ১৩ আগস্ট মানবিক বিভাগ এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য বিভাগের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার ফি এবার ধরা হয়েছে ১৫০০ টাকা।
আবেদনের যোগ্যতা
২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের এসএসসি ও সমমান এবং ২০২০ ও ২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমান, ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল), A লেভেল এবং অন্যান্য সমমান পরীক্ষায় (সমমান নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক অনুমোদনক্রমে) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাই কেবল ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখা হতে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে যথাক্রমে ইউনিট-এ, ইউনিট-বি ও ইউনিট-সি-তে আবেদন করতে পারবে।
গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য