বর্তমানে দেশের ৯০ ভাগ প্রকল্পই নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ভবন ‘বিজয়-৭১’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত ছিল পরপর তিনবার। এ কারণে অনেক উন্নয়ন আমরা করতে পেরেছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে আমরা আরও স্বাবলম্বী হতে চাই। কারও কাছে যেন হাত পেতে চলতে না হয়। নিজেরাই যেন নিজেদের উন্নয়নকাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
‘আল্লাহর রহমতে এখন প্রায় ৯০ ভাগ উন্নয়ন পরিকল্পনা আমরা নিজেদের অর্থায়নে করতে পারি। সে সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। এর সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত হচ্ছে নিজস্ব অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতুর মতো একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। এটার মধ্য দিয়েই আমি মনে করি দেশের ভাবমূর্তি বিদেশে অনেক উজ্জ্বল হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে দেশের অগ্রযাত্রায় বিচার বিভাগের ভূমিকা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের প্রতি, উচ্চ আদালতই রায় দিয়ে এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত করে দিয়েছেন। সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল যে অবৈধ সে রায় তারা দিয়েছেন, এ জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই।
‘পাকিস্তান আমলে আমরা দেখেছি এ ধরনের অনিয়ম। যেমন আইয়ুব খান একাধারে সেনাপ্রধান আবার নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে জেনারেল জিয়াউর রহমান যাকে খন্দকার মোস্তাক ১৫ আগস্টের পর সেনাপ্রধান নিয়োগ করে এবং তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ছিল তারা। তারা ষড়যন্ত্র করেই জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়া সেনাপ্রধান আবার একাধারে রাষ্ট্রপতি। এই অনিয়ম করতে গিয়ে সে সেনা আইন যেমন ভঙ্গ করে, আবার সংবিধানকেও পদদলিত করে এবং মার্শাল ল জারি করে। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আবার জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করেন। এই ক্ষমতা দখলের পালা যখন চলছে, তখন বাংলাদেশে একের পর এক ক্যু হতে থাকে। প্রায় ১৯-২০টি ক্যু হয়েছে এই দেশে। এর খেসারত দিয়েছে আমাদের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর অফিসার ও সৈনিকরা, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা আর আমাদের দেশের মানুষ।
‘কাজেই বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়ে এইসব খুনি যারা জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, শিশু ও নারীদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার না করে ইমডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করা হয়েছিল, যার মাধ্যমে খুনিদের পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়া হয়েছিল, নির্বাচন করার অধিকার দেয়া হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। সে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিয়ে যারা কারাগারে বা সাজাপ্রাপ্ত তাদেরকে মুক্তি দিয়ে এ দেশে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও সেই একই কাজ করেছিল। সেই যুদ্ধাপরাধীরাই ছিল ক্ষমতায়।
তিনি বলেন, ‘যে আদর্শ যে চেতনায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই আদর্শ-চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। আমি মনে করি এই একটি রায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে। সেই সঙ্গে আমি এবং আমরা যারা ১৫ আগস্ট আপনজন হারিয়েছিলাম, আমাদের কোনো অধিকার ছিল না বিচার চাওয়ার। এমনকি আমি বাংলাদেশে ফিরে এসে মামলা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু করতে দেয়া হয়নি।
‘কারণ ইমডেমনিটি দেয়া হয়েছে খুনিদের। এই যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ দেশে চালু করা হয়েছিল সেটা একমাত্র পরিবর্তন করতে পেরেছি যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি সরকার গঠন করতে পেরেছি তখন। সেখানেও অনেক বাধা, অনেক কিছুই আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। আমি ধন্যবাদ জানাই বিচারকদের সাহসী পদক্ষেপে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এই খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এর জন্য সব সময় আমি নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি অন্তত ন্যায়বিচার আমরা পেয়েছি। বিচারহীনতা থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছে।’
জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার কথা জানান তার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন এ দেশের মানুষের জন্য। কাজেই আমাদেরও সেটাই লক্ষ্য। গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশের মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায়, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি যেন হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
‘৯৬ সালে যখন আমরা সরকারে এসেছি, সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি যে আমাদের বিচার বিভাগ আরও শক্তিশালী হবে এবং বিচার বিভাগ আমাদের ৭২ সালের যে সংবিধান, যে সংবিধানে জাতির পিতা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন তা যেন কার্যকর হয়। আমাদের সরকারই সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কার্যকর করার পদক্ষেপ নেয়।’
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ করা, আর্থিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত করা, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। উচ্চ আদালতে ড্রাফটের জন্য আলাদা কোনো কাঠামো বা কিছুই ছিল না, সেটার জন্য আমরা উদ্যোগ নিই। একটা স্থায়ী আইন কমিশন গঠন করি। বিচার বিভাগ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আমরা প্রতিষ্ঠা করি। সেই সঙ্গে বিচারকদের বিদেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি।
‘আমাদের দেশের যারা দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, বিচার পাওয়ার মতো যাদের আর্থিক সক্ষমতা থাকে না, তারা যেন ন্যায়বিচার পেতে পারে এ জন্য আমরা আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০ প্রণয়ন করি এবং বাস্তবায়ন করি। নারী ও শিশু অপরাধ দমনে বিশেষ আদালত আমরা প্রতিষ্ঠা করি। সুপ্রিম কোর্টের যে এনেক্স ভবন সেটা আমরা নির্মাণ করে আরও অধিক বিচারক নিয়োগ দিয়ে বিচারটা যেন মানুষ পায় সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’
করোনা মহামারির সময় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার বিভাগকে সচল রাখায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদও জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ঘোষণা ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে দিয়েছিলাম। করোনাভাইরাসে যখন মানুষ দুর্দশাগ্রস্ত, যখন কোর্ট পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল, সে সময় আমি চেয়েছিলাম এবং পরামর্শ দিয়েছিলাম একটি ডিজিটাল ব্যবস্থায় এবং ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করা।
‘সেই সাথে কেরানীগঞ্জে যে কারাগার সেখানে একটি কোর্ট রুম এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আমরা চালু করেছিলাম যে ভাচুয়াল কোর্ট চালু করলে সেখান থেকে ভার্চুয়ালি যেন যুক্ত হতে পারে, তাদের আইনজীবী যেন থাকতে পারেন। এরপর মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেছিলাম যে ভার্চুয়াল কোর্ট আপনি চালু করেন, এতে অন্তত কিছু বিচার চলবে, নাহলে সবকিছু স্থবির হয়ে যাচ্ছে। বহু মানুষ গ্রেপ্তার হচ্ছে, বন্দি হচ্ছে কিন্তু বিচার পাচ্ছে না। আমরা আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন প্রণয়ন করে ভার্চুয়াল কোর্ট আমরা চালু করতে পেরেছি, তাতে অনেক বিচারকাজ সম্পন্ন হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে রায় সব সময় ইংরেজিতেই দেয়া হয়। যদিও এখন আমাদের সাক্ষরতার হার আমরা সরকার গঠনের পর ৭৫ ভাগে উন্নীত করেছি, এটা ঠিক। কিন্তু রায় ইংরেজিতে সবার জন্য বোঝা সম্ভব নয়। কাজেই এটা বহুদিনের দাবি ছিল যে রায়গুলো যেন বাংলায় দেয়া হয়। আমি খুবই আনন্দিত যে এটার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ওয়েবসাইটে রায়গুলো বাংলায় প্রচার করা হয়। এতে মানুষ অন্তত যারা বিচার পায় তারা সঠিকভাবে জানতে পারে রায়ে কী বলা হলো। সাধারণ মানুষের এটা জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
‘সম্পূর্ণ ডিজিটাইজড করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বিষয়টি নিজে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাস্তবায়ন যাতে করা যায় সে ব্যবস্থা নিয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় অনেক টাকা সাশ্রয়ও করে দিয়েছে। খুব বেশি টাকার একটি প্রজেক্ট নেয়া হয়েছিল, সেখান থেকে অনেক টাকা কাটছাট করে বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জেলা আদালতগুলোকেও আমরা উন্নত করে দিচ্ছি। জজ সাহেবদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারণ এই বাংলাদেশে এমন ঘটনাও ঘটেছে বোমা মেরে। জজদেরও হত্যা করা হয়েছে। সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে জনগণ ন্যায়বিচার পাবে এবং বিচারকাজ আরও ভালোভাবে চলবে।
‘সুপ্রিম কোর্টের নতুন ভবনে আরও ৩২টি আদালত বসার সুযোগ হবে। আরেকটি বিষয় বলতে চাই। রেকর্ডরুম খুবই প্রয়োজন। এটা যাতে নষ্ট না হয় তার ব্যবস্থা করা এবং এগুলোকে ডিজিটালাইজড করে ফেলা। হার্ডকপিও রাখতে হবে ডিজিটাইজডও করতে হবে। এরই মধ্যে রেকর্ডরুম করার জন্য অর্থসচিবকে বরাদ্দের জন্য নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি।’
দেশে আইন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিচারপতি ও আইনজীবীদের সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা এসেছে। আপনারা জানেন বাংলাদেশে মাত্র কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখন আমরা বহুমুখী জ্ঞানসংবলিত বিশ্ববিদ্যালয় করছি। বহু অ্যাকাডেমি আমরা করে দিয়েছি। কাজেই আইন বিশ্ববিদ্যালয় করার বিষয়ে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ আমরা নেব। এটার কারিকুলাম কী হবে তাও আপনাদের ঠিক করে দিতে হবে।
‘জেলা পর্যায় আমরা যেমন আদালত ভবন করে দিচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে আমি মনে করি আইনজীবীরাও যাতে সুস্থভাবে বসে কাজ করতে পারেন। আমরা যারা ক্লায়েন্ট থাকি, আমাদের তো মামলা-টামলা অনেক খেতে হয় রাজনীতি করলে, আমি নিজেই তো ১২-১৪টা মামলার আসামি ছিলাম, কোর্টে যেতে হয়েছে। কাজেই সবাই যদি ভালো ও ঠান্ডা মাথায় কাজকর্ম করেন তাহলে ন্যায়বিচার পাওয়া সহজ হয়। আমরা সে ব্যবস্থাও করব। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সর্বস্তরের মানুষ যেন ন্যায়বিচারটা পায়। আটটা বিভাগে সঠিক আদালত গড়ে তুলে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে আমরা বদ্ধ পরিকর।’
আরও পড়ুন:গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কারের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি আরও বলেন, এটি ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই দলিল মৌলিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা ব্যাপক ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২৬ সালের নির্বাচনের পথে দেশটি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই প্রমাণ।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে মিলারের উপস্থিতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত বহন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের পক্ষে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এ লক্ষ্যে ইইউ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এসব উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি ইইউর প্রতিশ্রুতির অংশ। সূত্র: বাসস
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করে মোট ১২ টি নতুন কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক গতকাল একটি সরকারি আদেশ জারী করা হয়েছে। কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগ দু’টির বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে জনবল বৃদ্ধি এবং নতুন ১২টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে ৩৭৩টি ক্যাডার পদ এবং ৩,২২৪ টি নন-ক্যাডার পদসহ মোট ৩,৫৯৭টি পদ নতুনভাবে সৃজন করা হয়েছে।
কর জাল সম্প্রসারণ করে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে স্বনির্ভরতা অর্জন, সেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি পরোক্ষ কর ব্যাবস্থাকে অধিকতর গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং মন্ত্রি পরিষদ বিভাগসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রশাসনিক অনুমোদন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক উক্ত আদেশ জারী করা হয়। উক্ত আদেশ অনুযায়ী ৩ পর্যায়ে ৫টি নতুন মূল্য সংযোজন কর কমিশনারেট, ৪টি নতুন কাস্টমস হাউস এবং ৩ টি বিশেষায়িত দপ্তর সৃজন করা হলো।
নতুন ১২ টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন ছাড়াও উক্ত সরকারি আদেশের মাধ্যমে বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিটসমূহের সম্প্রসারণ, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাস্টমস কার্যক্রম এবং কাস্টমস ও ভ্যাট গোয়েন্দা কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে।
কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ফলে পরোক্ষ কর আহরণ কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আগামীর স্বপ্নপূরণে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য প্রস্তুতি লাগবে।
তিনি বলেন, যোগ্য হয়েই সুযোগ্য স্থানে অধিষ্ঠিত হতে হবে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।
গতকাল সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র সংসদের আয়োজনে ১ম এমডিসি জাতীয় স্কুল, কলেজ ও আন্তঃমাদ্রাসা বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমাদেরকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আমরা একটি স্থানে আসতে পেরেছি। এখানেই শেষ নয়, আরো বহুদূর যেতে হবে। এই পথ পাড়ি দিতে কোনো বাঁধা আসলে আমাদেরকে থেমে গেলে চলবে না। সকল বাঁধা অতিক্রম করেই এগিয়ে যেতে হবে।’
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. খালিদ বলেন, সকল ভেদাভেদ ও মতপার্থক্য ভুলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যে সুযোগ এসেছে সেটাকে পরিপূর্ণ কাজে লাগাতে হবে। এ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলে আমাদেরকে বহুবছর সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তিনি সকলকে কালেমা তায়্যেবার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ জানান।
পরে উপদেষ্টা চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ ক্যাটাগরিতে বিজয়ী দলের সদস্যদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
উল্লেখ্য, তিন মাসব্যাপী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ৫৪টি প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
স্কুল ক্যাটেগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুগদা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রানারআপ হয়েছে বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
কলেজ ও উন্মুক্ত ক্যাটাগরিতে নটর ডেম কলেজ চ্যাম্পিয়ন এবং মনিপুর স্কুল ও কলেজ রানারআপ হয়েছে।
মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা চ্যাম্পিয়ন এবং বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান মাদানীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ড. শামসুল আলম, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব মো. মনিরুজ্জামান ভূইয়া, আল ফাতাহ পাবলিকেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সাঈদ, ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি আবু সাদিক কায়েম, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুন্নবী মানিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য