ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে তৃতীয় আন্তর্জাতিক লাউঞ্জ চালু করেছে সিটি ব্যাংক ও আমেরিকান এক্সপ্রেস।
সোমবার সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে লাউঞ্জটি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার ও পরিচালক তাবাসসুম কায়সার।
সিটি ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন, লাউঞ্জটির ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন লিমিটেডের শমী কায়সার, সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মারুফ ও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং সিভিল এভিয়েশনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সিটি ব্যাংক ও আমেরিকান এক্সপ্রেস এর আগে ২০১০ সালে ঢাকা বিমানবন্দরে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ এবং ২০১৮ সালে একই এয়ারপোর্টে একটি প্লাটিনাম লাউঞ্জ চালু করে।
উন্নত বিশ্বের যে কোনো লাউঞ্জের সমতুল্য এ লাউঞ্জে অতিথিদের জন্য রয়েছে নানামুখী সেবা। এর মধ্যে বিজনেস সেন্টার, নামাজের স্থান, উচ্চগতির ইন্টারনেট, আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড সার্ভিস ডেস্ক ইত্যাদি অন্যতম।
লাউঞ্জটি সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস গোল্ড ও প্লাটিনাম কার্ড মেম্বারদের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকছে। অতিথিদের জন্য আন্তর্জাতিক পাঁচতারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে খাবারদাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে।
লাউঞ্জের সঙ্গেই রয়েছে একটি মুজিব কর্নার, যার সংগ্রহে থাকা হাজারখানেক বই মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে এই বিশেষ পরিষেবা চালু করার জন্য সিটি ব্যাংককে অভিনন্দন জানান এবং অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াতকে উপভোগ্য করার প্রচেষ্টায় সরকারের সঙ্গে ব্যাংকটি যৌথভাবে কাজ করার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার বলেন, ‘সিটি ব্যাংক আমেরিকান এক্সপ্রেস অভ্যন্তরীণ লাউঞ্জ দেশে আমাদের কার্ড মেম্বারদের দেয়া আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রতিশ্রুতি পূরণের সফল নিদর্শন। আমরা ভবিষ্যতেও এ ধরনের নানা সুবিধা আমাদের গ্রাহকদের দিয়ে যাব এবং বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ড মার্কেট উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করব।’
বড় কোন সংশোধনী ছাড়াই জাতীয় সংসদে পাস হতে যাচ্ছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট নিয়ে সমাপনী অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মত কণ্ঠভোটে পাস হবে এই বাজেট।
এর আগে ৯ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে আগামী অর্থ বছর জুড়ে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার ব্যায়ের বাজেট প্রস্তাব করেন।
এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে মূল লক্ষ্য হলো করোনার অভিঘাত পেরিয়ে দেশকে উন্নয়নের দাঁড়ায় প্রত্যাবর্তন। সেই লক্ষ্যে এবার বাজেটের মূল ফোকাস হল অর্থনীতির সব খাতে সক্ষমতার উন্নয়ন। এজন্য তিনি এই বাজেটে আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।
ফলে এ বাজেটে ঘাটতি পরিমাণ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা মোট দেশ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ দশমিক ৬ শতাংশের সমান। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার কর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আয় আসবে মূলত আয়কর, ভ্যাট এবং আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক থেকে।
এনবিআর–বহির্ভূত কর থেকে আসবে ১৮ হাজার কোটি টাকা আর কর ব্যতীত প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
ঘাটতির মধ্যে অনুদানসহ বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা; আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা।
অপরদিকে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভোক্তাকে মূল্যস্ফীতির সাপ থেকে সুরক্ষা দেয়ার লক্ষ্য রয়েছে বাজেটে। এজন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে অর্থমন্ত্রী আগামী বছর জুড়ে দেশের মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার প্রস্তাব করেছেন।
এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার, ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাড়িয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সক্ষমতা অর্জনে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:আসন্ন কোরবানি ঈদে যশোরে চাহিদার চেয়েও পশুর সরবরাহ বেশি বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর। এতে কোরবানির পরও জেলায় ৪ হাজারের বেশি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চাহিদার চেয়ে যোগান বেশি হওয়ায় দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন জেলার পশু খামারিরা। পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু মোটাতাজাকরণে তাদের ব্যয় বেড়েছে অনেক। সেই অনুযায়ী দাম না পেলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানিয়েছে, আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে যশোর জেলায় গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ৯১ হাজার ১৮৮টি। এর মধ্যে গরু ২৭ হাজার ৯৫৫টি, ছাগল ৬২ হাজার ৬৭৬টি ও ভেড়া ৫৫৭টি।
বিপরীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৯৫ হাজার ৭১০টি পশু। এর মধ্যে গরু ২৯ হাজার ১৭০, ছাগল ৬৫ হাজার ৯৮৩ এবং ভেড়া ৫৫৭টি। উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ৪ হাজার ৫২২টি। এর মধ্যে ১ হাজার ২১৫টি গরু আর ছাগল ৩ হাজার ৩০৭টি।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর আরও জানিয়েছে, যশোরের ৮ উপজেলায় মোট ২১টি পশুহাট রয়েছে। কোরবানি উপলক্ষে এই হাটগুলোতে মোট ২৪টি মেডিক্যাল টিম কাজ করবে। রোগাক্রান্ত ও অসুস্থ পশু যেন হাটে বিক্রি না হয়, তার দেখভাল করবে এই টিমগুলো।
যশোর সদরের বাহাদুরপুর গ্রামের খামারি জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি কোরবানির জন্য ৫টি গরু মোটাতাজাকরণ করেছেন। প্রতিদিন একটি গরুর পেছনে তার ব্যয় হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা।
গতবার চাহিদা অনুযায়ী পশু বিক্রি করতে পারেননি দাবি করে তিনি বলেন, ‘করোনা না থাকায় আশা করছি এবার ভাল দামে গরু বিক্রি করতে পারবো।’
অভয়নগর উপজেলার মশরহাটি গ্রামে রয়েছে পরশ অ্যাগ্রো লিমিটেডের ২০২টি গরু। কোরবানির পশুহাটে গরুগুলো বিক্রি করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বাণিজ্যিকভাবে গরু লালন-পালন করি। আমাদের খামারের সব গরু দেশি প্রজাতির। ক্রেতাদের পছন্দ হবার পর আমরা দরদাম করে গরু বিক্রি করব।’
খামারিরা জানিয়েছেন, গত দুই বছর করোনার মধ্যে কোরবানি ঈদ হয়েছে। ফলে লকডাউনসহ অর্থনৈতিক কারণে কোরবানি কম হয়েছে। পশু বিক্রি কম হওয়ায় খামারিদের লোকসানও গুণতে হয়েছে। এ বছর করোনামুক্ত ঈদ হওয়ায় তারা আশায় বুক বেঁধেছেন।
খামারিরা আরও জানান, অধিকাংশ খামারি নিজেদের গচ্ছিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজি বিনিয়োগ করে কুরবানির পশু পালন করছেন। আবার অনেকের রয়েছে ব্যাংক ও এনজিওর ঋণ। চাহিদার উদ্বৃত্ত থাকায় দেশি পশুতেই এবার কোরবানি হবে। কিন্তু সেটির প্রভাব দামের উপরে পড়ে কিনা তা নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে।
এদিকে, পশুখাদ্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় গরু ছাগল লালন পালনে খরচও অনেক বেড়েছে। ব্যাপারীরা ইতোমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরু ছাগল দেখছেন। কিন্তু তারা দাম বলছেন চাহিদার তুলনায় কম। ফলে দাম নিয়ে শঙ্কা থাকলেও খামারিরা আশা করছেন, পুরোদমে হাট শুরু হলে ভাল দাম পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক বলেন, ‘যশোর জেলায় এবার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে গরু-ছাগল উদ্বৃত্ত থাকবে। ইতোমধ্যে কোরবানির পশুহাট শুরু হয়েছে। জেলার হাটগুলোর জন্য ২৪টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। সুস্থ ও সবল পশু ক্রয়-বিক্রয়ে সহযোগিতার জন্য এই টিমগুলো হাটে কাজ করছে। আমরা খামারিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখভাল করছি।’
আরও পড়ুন:মূল্যস্ফীতির পারদ ঊর্ধ্বমুখী। অস্থির মুদ্রাবাজার। ডলার লেনদেন হচ্ছে এক শ টাকার আশপাশে। রয়েছে করোনার ধাক্কা। পাশাপাশি বৈশ্বিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সংকটকালে টিকে থাকতে কর্মসংস্থান আর বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার মধ্যে নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে আসছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় আগামী অর্থবছরের জন্য এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন তিনি।
করোনার কারণে গত দুই বছর আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া শুধু ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতি প্রকাশ করা হয়।
আলোচনা আছে সব ধরনের ঋণে ৯ শতাংশ সুদহারের যে ঊর্ধ্বসীমা রয়েছে তা তুলে দেয়ার ঘোষণা থাকতে পারে নতুন মুদ্রানীতিতে। তবে একেবারে বাজারের ওপর ছেড়ে না দিয়ে নতুন করে একটি সীমা দেয়া হতে পারে।
বাংলাদেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার বেশি- এমন আলোচনার মধ্যে ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ কার্যকর হয়। সেই সঙ্গে আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ঠিক করা হয় ৬ শতাংশ।
তবে পরে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার আড়াই শতাংশ পর্যন্ত নামিয়ে আনে। ফলে মূল্যস্ফীতি হিসাব করে দেখা গেছে, ব্যাংকে টাকা রাখলে আসলে তার মূল্যমান এক বছর পরে কমে যায়।
এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবার আমানতের সুদহার নিয়ে নতুন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে আমানতের সুদহার এখন ৬ শতাংশের সীমায় রাখা যাচ্ছে না।
গত বছরের ৮ আগস্ট এক নির্দেশে আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে বেশি রাখার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও গত মে মাসে তা উঠেছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ব্যাংকগুলোকে যদি আমানতের বিপরীতে সুদহার এরচেয়ে বেশি রাখতে হয়, তাহলে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে রাখা কঠিন।
আবার মূল্যস্ফীতি ক্রমেই বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে মুদ্রার সরবরাহ কমাতে চাইছে। অন্যদিকে আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রবৃদ্ধি অর্জন দুটি দিক সামনে রেখেই মুদ্রানীতি দেয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী রেপোর সুদহার আরও বাড়ানো হতে পারে। সম্প্রতি রেপোর সুদ বেসিস পয়েন্ট ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের মুদ্রনীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলন করা হয় ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত এপ্রিল পর্যন্ত ঋণ বেড়েছে ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। আগামী অর্থবছরের জন্যও একই রকম প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হতে পারে।
সরকার বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে এক লাখ ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নেয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে তা ঠিক সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
কেমন হবে মুদ্রানীতি? জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হতে পারে। বাড়তে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী সুদহার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘করোনার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডকে যাতে নিরুৎসাহিত না করা হয়, সেদিকে মুদ্রানীতির দৃষ্টি থাকবে। এবারের মুদ্রানীতি হবে সতর্কতামূলক। পুরোপুরি সংকোচন বা সম্প্রসারণমূলক নয়।’
গভর্নরের জন্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুদ্রানীতিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করেন বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘একদিকে মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে বিনিয়োগও বাড়ানো– এ দুই বিষয় ভারসাম্য বজায় রাখাটা মুদ্রানীতির বড় চ্যালেঞ্জ।’
আরও পড়ুন:পাচারের অর্থ-সম্পদ দেশে ফেরত আনতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে যেসব সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল তাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।
সে অনুযায়ী পাচারের সব ধরনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেশে আনার প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে। শুধু নির্ধারিত হারে কর দিয়ে নগদ টাকা দেশে আনা যাবে।
সংশোধনীতে নতুন করে একটি শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। তা হলো, দেশের বাইরে কারও সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেলে সেই সম্পদ অর্জনের উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। সন্তোষজনক জবাব পাওয়া না গেলে ওই সম্পদের মূল্যের সমপরিমাণ জরিমানা অথবা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
নতুন বাজেটে এটিসহ আর কিছু কর প্রস্তাবে পরিবর্তন এনে অর্থবিল-২০২২ পাস হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এসব সংশোধনী আনেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিদেশ থেকে পাচারের টাকা ফেরত আনতে গত ৯ জুন ঘোষিত বাজেটে বিশেষ সুযোগ দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
বলা হয়, স্থাবর সম্পদ দেশে আনার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ এবং অস্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর দিয়ে ফেরত আনা যাবে। আর কেউ যদি নগদ টাকা দেশে আনতে চায় তাকে কর দিতে হবে ৭ শতাংশ।
এ নিয়ে দেশ জুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মূলত এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাজেট প্রস্তাবে এই সংশোধন আনা হয়েছে।
সংশোধনীতে শুধু নগদ টাকা আনার সুযোগ রেখে বাকি দুটি অর্থাৎ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আনার প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে।
কোম্পানির করপোরেট কর সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সংশোধন আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানি বছরে ৩৬ লাখার টাকার বেশি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করবে তারা কম হারে করপোরেট কর পরিশোধের সুবিধা পাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই সীমা ছিল বছরে ১২ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে কোম্পানিকে ছাড় দেয়া হয়েছে।
নতুন কোম্পানির বার্ষিক রিটার্ন জমার নিয়ম সহজ করা হয়েছে। যেসব কোম্পানির ব্যবসার বয়স এক কিংবা দুই বছর সেসব কোম্পানি শুধু টিআইএন সনদ দিলেই রিটার্ন গ্রহণ করা হবে। সঙ্গে অন্যান্য আনুষঙ্গিক দলিলপত্র জমা না দিলেও চলবে। তবে তৃতীয় বছর থেকে সব ডকুমেন্টসহ রিটার্ন জমা দিতে হবে।
শ্রমিকদের কল্যাণে সব প্রতিষ্ঠানে একটি তহবিল থাকার কথা। নিয়ম অনুযায়ী, মালিক পক্ষ ওই তহবিলে যে পরিমাণ টাকা দেয় তা কোম্পানির খরচ হিসেবে গণ্য করা হয়। এতে করে কোম্পানির ওপর করের চাপ কমে।
প্রস্তাবিত বাজেটে খরচের বিধান বাতিল করলেও সংশোধন করে তা ফের আগের অবস্থানে নেয়া হয়। তবে এই সুযোগ এক বছরের জন্য বহাল থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন:বাজেটে আরও কিছু পরিবর্তন হয়েছে। মেডিটেশন সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর–ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত এসেছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে আমদানিকরা লিফটের ভ্যাট। অন্যদিকে, আমদানিকরা বিটুমিনে (আলকাতরা) নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে বুধবার এই পরিবর্তনের প্রস্তাব আনেন অর্থমন্ত্রী, যা পাস হয় কন্ঠভোটে।
গত ৯ জুন বাজেট ঘোষণায় মেডিটেশন সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়। এতে প্রবল আপত্তি জানায় মেডিটেশন সেবাগ্রহণকারীরা।
এমন প্রেক্ষাপটে এই সেবার ওপর ভ্যাট হার ১৫ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এতে যারা মেডিটেশন সেবা নেবেন, তাদের খরচ কমবে।
বাজেট ঘোষণার সময় আমদানি করা লিফটের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে মোট ৩১ শতাংশ করা হয়। মূলত দেশীয় লিফট শিল্পের সুরক্ষায় বাড়তি কর আরোপ হয়।
লিফট আমদানিকারকরা বলছে, এত বেশি কর দিয়ে লিফট আনলে খরচ অনেক বাড়বে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আবাসনখাতে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লিফট আমদানিতে ভ্যাট হার ১৫ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়।
বাজেট ঘোষণায় বিটুমিন আমদানিতে বাড়তি ভ্যাট আরোপ করা হয়নি। দেশে বিটুমিন শিল্প নতুন করে গড়ে উঠেছে। তাই এই শিল্পের সুরক্ষায় আমদানি করা বিটুমিনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। এতে করে আমদানি করা বি-টুমিন দাম পড়বে বেশি। পক্ষান্তরে, দেশীয় বি-টুমিন শিল্পের চাহিদা বাড়বে।
আরও পড়ুন:ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখে দেশের সব পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন ব্যবহারসহ বিনা খরচে নোট যাচাইয়ের সেবা দেবে ব্যাংক।
বুধবার এ সংক্রান্ত্র নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।
সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদিত হাটগুলোতে জালনোট সনাক্তকারি মেশিনের সহায়তায় অভিজ্ঞ ক্যাশ কর্মকর্তাদের দিয়ে নোট যাচাই সেবা দিতে হবে।
হাট শুরুর দিন থেকে ঈদের পূর্ব রাত পর্যন্ত বিরতিহীনভবে পশু ব্যবসায়ীদের এ সেবা দিতে হবে। এজন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া যাবে না।
এসব হাটে সেবা দেয়ার লক্ষ্যে মনোনীত কর্মকর্তাদের নাম, পদবি ও মোবাইল নম্বরসহ ব্যাংকের সমন্বয়ক হিসেবে মনোনীত একজন উপযুক্ত কর্মকর্তার নাম, পদবি ও মোবাইল নম্বর আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে ইমেইলে পাঠাতে হবে। ব্যাংকের সমন্বয়কারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট হাটে দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করবেন।
ঢাকার বাইরে যেসব জেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিস রয়েছে সেখানে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অনুমোদিত পশুর হাটগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট অফিসের নেতৃত্বে অনুরূপ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য আঞ্চলিক কার্যালয় বা প্রধান শাখাগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিস নেই এমন জেলাগুলোর সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও খানা বা উপজেলার অনুমোদিত পশুর হাটে বিভিন্ন ব্যাংকের দায়িত্ব বণ্টনের জন্য সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের চেস্ট শাখাগুলোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের চেস্ট শাখা কর্তৃক বণ্টিত দায়িত্ব অনুযায়ী অন্যান্য ব্যাংক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শাখাগুলোও যাতে পশুর হাটগুলোতে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান করে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
হাটে স্থাপিত বুথে নোট কাউন্টিং মেশিনের সাহায্যে নগদ অর্থ গণনার সুবিধা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
বুথ স্থাপন কার্যক্রমের সুবিধার্থে ও সহযোগিতার জন্য (প্রয়োজনে) সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, জেলা মিউনিসিপালিটি কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা এবং সার্বিক নিরাপত্তার জন্য (প্রয়োজনে) সংশ্লিষ্ট পুলিশ, র্যাব ও আনসার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
বুথে নোট যাচাইকালে কোনো জাল নোট ধরা পড়লে জাল নোট পলিসির নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বুথে ব্যাংকের নাম ও সাথে “জাল নোট সনাক্তকরণ বুথ” উল্লেখ করে ব্যানার বা নোটিশ দিতে হবে।
ইতোপূর্বে সরবরাহকৃত ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ভিডিও চিত্রটি ব্যাংকের শাখাগুলোতে ঈদের আগ পর্যন্ত গ্রাহকদের জন্য স্থাপিত টিভি মনিটরগুলোতে পুরো ব্যাংকিং সময়ে দেখাতে হবে।
দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরকে দায়িত্বপালনের জন্য ব্যাংকের প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা সমাপ্তির পর পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে এসব নির্দেশনার পালন সংক্রান্ত্র প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট বিভাগ প্রেরণ করতে হবে।
জাল নোট শনাক্তকরণ বুথে নোট যাচাই সংক্রান্ত সেবা প্রদান কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরকে অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক সুনিশ্চিত করতে হবে।
বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ায় তিন দিনের মাথায় আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেপালকে ১০৩ কোটি (১.০৩ বিলিয়ন) ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৯ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।
এই অর্থের ৭৫ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার পাবে বাংলাদেশ। আর নেপাল পাবে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
আঞ্চলিক করিডোর বরাবর পরিবহন খরচ এবং ট্রানজিট সময় কমিয়ে বাংলাদেশ ও নেপালের আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে এই অর্থ ব্যয় হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই ঋণ অনুমোদন করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের কিছু মূল বাধা দূর করতে পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ায় এক্সিলারেটিং ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেক্টিভিটি প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশ ৭৫ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার পাবে।
এই অর্থ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা স্থলবন্দরকে সংযুক্ত করে ৪৩ কিলোমিটার দুই লেনের সিলেট-চরকাই-শেওলা সড়কটিকে জলবায়ু-সহনশীল চার লেনের সড়কে উন্নীত করা হবে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, এতে ভ্রমণের সময় কমবে ৩০ ভাগ। প্রকল্পটি বেনাপোল, ভোমরা এবং বুড়িমারী স্থলবন্দরে ডিজিটাল সিস্টেম, অবকাঠামো এবং আরও সুবিন্যস্ত হবে বলেও আশা করছে বিশ্বব্যাংক।
তারা বলছে এই প্রকল্প চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের আধুনিকীকরণে সহায়তা করবে, এই কাস্টমস হাউসের মাধ্যমে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি ঘোষণার ৯০ শতাংশ পরিচালিত হয়ে থাকে।
সবুজ ও জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক নির্মাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্বাচিত সড়ক করিডোর উন্নত করা এবং মূল স্থলবন্দর ও কাস্টম অবকাঠামো উন্নত করাও এই কর্মসূচির লক্ষ্য।
এটি স্থলবেষ্টিত নেপাল ও ভুটানকে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রবেশদ্বার দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত করতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শ্যাফার বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বে মোট আঞ্চলিক বাণিজ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অবদান মাত্র ৫ শতাংশ, যেখানে পূর্ব এশিয়ায় এটি ৫০ শতাংশ। এই বাণিজ্য বাড়ানোর প্রচুর সম্ভাবনা আছে; আর সেটি করতেই এই প্রকল্প।’
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পারে এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধি করে লাখ লাখ মানুষের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে।’
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য ছয় গুণ বেড়েছে।
‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও পরিবহনের উন্নতিতে সাহায্য করবে। অনুমান করা হচ্ছে, বাংলাদেশের আঞ্চলিক বাণিজ্য ৯৩ শতাংশ বাড়তে পারে।’
নেপাল পাবে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার
বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্পের আওতায় নেপালকে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ দেয়া হবে।
প্রকল্পের অধীনে নেপাল ভ্রমণের সময় কমাতে এবং ভারতের পশ্চিম সমুদ্রবন্দরগুলোতে সুবিধা বাড়াতে সড়ক অবকাঠামো উন্নত করতে এই অর্থ ব্যয় হবে।
এই অর্থে পূর্ব-পশ্চিম হাইওয়ে বরাবর ৬৯ কিলোমিটার দ্বি-লেনের বুটওয়াল-গোরুসিংহে-চনাউতা সড়ককে একটি জলবায়ু সহনশীল চার লেনের হাইওয়েতে উন্নীত করা হবে। এতে ভ্রমণের সময় ৩০ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও নেপালের প্রস্তুতি এবং পরে মোটরযান চুক্তি বাস্তবায়ন এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। দ্বিতীয় পর্বে ভুটানকেও এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে সড়কপথে যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে গেছে, সময়ও কমেছে অনেক। এই সেতুর সুবিধা পাবে নেপালও।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য