বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। সব শ্রেণির মানুষই নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী নানা জাতের খেজুর কেনেন। তাই এই সময় বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীরা প্রচুর পরিমাণ খেজুর আমদানি করেন।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে রেকর্ড পরিমাণ খেজুর আমদানি হয়েছে। বেশি পরিমাণে আমদানি করায় কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কমও পড়েছে।
চট্টগ্রামের আছাদগঞ্জ ও কদমতলীর ফলমন্ডী বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে খেজুরের ব্যাপক সরবরাহ। খুচরা বাজারে দাম কিছুটা বাড়তি হলেও পাইকারি দাম তুলনামূলক কম।
আছাদগঞ্জের খেজুরপট্টির মেসার্স তামান্না এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সালাউদ্দিন রাসেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বছর চাহিদার তিনগুণ খেজুর আমদানি হয়েছে। বাজারে এখন বিক্রেতা বেশি, ক্রেতা কম। তবে এ সপ্তাহে বেচাবিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি। এবার খেজুরের দাম মানভেদে গতবারের চেয়ে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা কম।’
মেসার্স আল-হারামাঈন ট্রেডিংয়ের জাকের সওদাগর বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আতঙ্কে আমদানিকারকরা আগেই চাহিদার অতিরিক্ত খেজুর আমদানি করে রেখেছে। তাই বাজারে খেজুরের ব্যাপক সরবরাহ।’
আমদানিকারকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত দেশে বছরজুড়ে খেজুরের চাহিদা থাকে ৪০ হাজার টন। এর মধ্যে শুধু রমজান মাসে চাহিদা থাকে ২৫ হাজার টন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে খেজুর আমদানি হয়েছিল ৪৪ হাজার ৬৮৮ টন। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে খেজুর আমদানি হয়েছে ৪৬ হাজার ৩০ টন। এরপর ফেব্রুয়ারি-মার্চে আমদানি হয়েছে ২৮ হাজার ৫০ টন। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি খেজুর এখন দেশে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কৃষিজাত পণ্য আমদানির জন্য বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হয়।
এই কেন্দ্রের উপপরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি খেজুর আমদানি হয়েছে। ২৭ মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খেজুর আমদানি হয়েছে ৭৪ হাজার ৮০ টন। এসব খেজুর সৌদি আরব, ইরাক, তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, জর্ডান ও পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে। এগুলোর মান গতবারের তুলনায় কিছুটা কম হলেও একেবারে খারাপও নয়।’
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর অন্তত ৪০টি দেশে খেজুর উৎপাদন হয়। তার মধ্যে মিশরের খেজুর গুণে-মানে সবচেয়ে ভালো। এর পর আছে সৌদি আরব, ইরান, আলজেরিয়া ও ইরাক।
চট্টগ্রামের বাজারে খেজুরের দরদাম
চট্টগ্রামের আছাদগঞ্জ, রেয়াজুদ্দিন বাজার ও ফলমন্ডিতে দেশ ও মানভেদে প্রতি কেজি খেজুর ৭০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাহেদী খেজুরের ১০ কেজির কার্টন ৯৩০ থেকে ৯৫০ টাকায়, ১০ কেজি কার্টনের ডাবাস খেজুর ১ হাজার ৯০০ টাকায়, নাগাল ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা, সায়ের ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সৌদি আরবের খেজুর মাশরুকের পাঁচ কেজি ওজনের কার্টন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়, মাবরুম ১ হাজার ৩০০ টাকায়, বি গ্রেডের আজোয়া ১ হাজার ৪০০ টাকায় ও আল সাফায়ি ১ হাজার ১৫০ টাকায়।
পাঁচ কেজি ওজনের ইরানের মরিয়ম খেজুরের কার্টন ১ হাজার ২৫০ টাকায়, ভালো মানের মরিয়ম খেজুর আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় এবং আলজেরিয়ার ফরিদা খেজুর ৯৫০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মিশরের মেডজুল খেজুর। প্রতি কেজি এই খেজুরের পাইকারি দাম ১ হাজার টাকা। খুচরা পর্যায়ে এর দাম ১ হাজার ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। অন্যান্য খেজুর সমুদ্রপথে আনা হলেও মেডজুল আসে কার্গো বিমানে। জর্ডানের মেডজুলের দাম ১ হাজার ১০০ টাকা। অনেক বিক্রেতাই মেডজুলকে ভিআইপি খেজুর বলেন।
সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে ইরাকের বস্তা খেজুর। এই খেজুরের প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
কদমতলীর ফলমন্ডির খেজুরের পাইকারি বিক্রেতা ভাই ভাই ফ্রুটসের মালিক ইকবাল হোসেন বলেন, নিম্নবিত্ত ও গ্রামগঞ্জের মানুষ ইরাকি খেজুর বেশি কেনে। তাই বাজারে এর চাহিদা বেশি। আমরা পাইকারি বাজারে এক বস্তা ইরাকি খেজুর ৫০ টাকায় বিক্রি করি।
অনলাইনেও খেজুর বিক্রি বেড়েছে বলে জানান ফলমন্ডির পাইকারি ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া।
তিনি বলেন, ‘প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি অনলাইনেও খেজুর বিক্রেতা বেড়ে গেছে। মৌসুমী বিক্রেতারা অনেকেই একসঙ্গে মিলে বিভিন্ন দেশ থেকে খেজুর আমদানি করেছে। চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি থাকায় রোজায় দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর টেকনাফের নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি মিলেছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধের কারণ দেখিয়ে ২০১৮ সালে নাফ নদীতে স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তখন থেকে প্রান্তিক জেলেরা আর্থিক সংকটের মুখে পড়েন।
এত বছর ধরে অনেক দেন-দরবারেও জেলেরা আর নামতে পারেননি নাফ নদীতে। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, ‘সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার অভ্যন্তরে নাফ নদীতে শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
‘জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবির পাঁচটি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন বা পরিচয়পত্র দেখাবেন এবং মাছ ধরা শেষে ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশি করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। কোনো জেলে চেক পোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবেন না। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করা যাবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে প্রদান করা হবে, যাতে কোনোক্রমেই নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারে।
‘এই অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। আগামী তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, জেলেদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
টেকনাফ মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ ধরার জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমতি মিলেছে। এতে জেলেরা খুশি।
‘রাতে মাছ ধরার অনুমতি না পেলে জেলেদের পোষাবে না। কারণ রাতে বেশি মাছ পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়ে হত্যার পর বাবা একই উপায়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চুনারুঘাটের আতিকপুর গ্রামে শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
ওই তিনজন হলেন চুনারুঘাট উপজেলার আতিকপুর গ্রামের আবদুর রউফ (৩২) এবং তার দুই সন্তান আয়েশা আক্তার (৩) ও খাদিজা আক্তার (৫)।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, আবদুর রউফ বিদেশে যাওয়ার জন্য স্থানীয় এক দালালের কাছে টাকা দিলেও বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এ নিয়ে সম্প্রতি তার স্ত্রী হাফসার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এর জেরে দুই দিন আগে হাফসা দুই শিশু সন্তানকে রেখে এক বছরের অপর শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।
পুলিশ আরও জানায়, পারিবারিক বিষয় নিয়ে ক্ষোভ ও অভিমানে আবদুর রউফ শুক্রবার ভোররাতে প্রথমে তার দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়ে নিজে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রথমে দুই সন্তান ও পরে আবদুর রউফকে মৃত বলে জানান।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূর আলম জানান, পারিবারিক কলহের জেরে আবদুর রউফ সন্তানদের বিষ পান করানোর পর নিজেও বিষ পানে আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন:ভোলার তজুমদ্দিনে স্থানীয়দের সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন।
সোনাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভূঁইয়া বাড়িতে বৃহস্পতিবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
পিটুনিতে প্রাণ হারানো দুজন হলেন তজুমদ্দিনের বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. নয়ন (৩০) ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার খাসমহল এলাকার আমির হোসেন (২৮)। তারা নিয়মিত গরু চুরি করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় পিটুনিতে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ভূঁইয়া বাড়িতে একদল ব্যক্তির গরু চুরি করতে ঢোকেন। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা চিৎকার করলে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে চোরদের ধাওয়া করেন। এর একপর্যায়ে জনতার হাতে দুই যুবক ধরা পড়ে, যাদের সংঘবদ্ধভাবে পেটানো হয়।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন দুজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভোরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গণপিটুনির শিকার দুই যুবককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।’
ওসি জানান, ময়নাতদন্তের জন্য দুজনের মরদেহ ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশা বেছে নেওয়ার। সে ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে ট্রেনচালক হিসেবে কাজ করছেন ফরিদা আক্তার।
লালমনিরহাট রেল বিভাগে একমাত্র নারী ট্রেনচালক (এলএম) ফরিদা। নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালনে অনড় ৪ সন্তানের এ জননী।
মাত্র ১০ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে নিয়মিত ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা। তার এ সাহসিকতা ও আত্মবিশ্বাসে মুগ্ধ রেল বিভাগ।
স্বামী টুটুল ও চার সন্তান নিয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করেন ফরিদা আক্তার। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। টুটুল লালমনিরহাটে বেসরকারি চাকরি করেন।
ফরিদা আক্তার বলেন, ‘কাজটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমি বেছে নিয়েছি। ছোট থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশায় যাব। ২০১৪ সালে ট্রেনচালক হিসেবে রেল বিভাগে যুক্ত হই।’
তিনি বলেন, ‘পরিবার যদি সাপোর্ট না করে, তাহলে আপনি এ পেশায় আসতে পারবেন না। পাশাপাশি একজন পুরুষ ট্রেনচালকেরও সাপোর্ট প্রয়োজন আছে।
‘একজন নারী ট্রেনচালক হিসেবে সমাজে কে কী বলল, সেটা নিয়ে আমি ভাবি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। সবচেয়ে ছোট ১০ মাসের মেয়েকে রেখে আমি ট্রেন চালাতে আসি। কাজে বের হলেও তারা কোনোদিন বিরক্ত হয় না।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন ফরিদা আক্তার। চার সন্তানের মা হয়েও তিনি বেছে নেন ট্রেন চালানোর মতো চ্যালেঞ্জিং পেশা।
শুরুর দিকে একটু ভয় পেলেও এখন ট্রেনের স্টেশন থেকে স্টেশনে ছুটে চলার কাজটিকে ভালোবেসে ফেলেছেন ফরিদা। ২০১৪ সালে চাকরিতে যোগ দিয়ে ১০ বছরের বেশি সময় অতিক্রম করে ফেলেছেন এ নারী।
নারী হওয়ায় দায়িত্ব পালনে তাকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, কিন্তু সেসব নিয়ে কখনও দমে যাননি ফরিদা।
তিনি জানান, ট্রেনের যান্ত্রিক ত্রুটি হলে নিজেই তা সমাধানের চেষ্টা করেন।
লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় লোকো ইনচার্জ কাজী সুমন বলেন, ‘নারীরা এখন আর ঘরের মধ্যে বন্দি নেই। তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
‘নারী চালকদের কাজে কোনো গাফিলতি নেই। ফরিদার মতো নারীরা দেখিয়ে দিচ্ছেন, কোনো পেশাই নারীদের জন্য অসম্ভব নয়।’
আরও পড়ুন:মেহেরপুরে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা এবং পরিবেশ দূষণের ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালত চারটি ইটভাটাকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের শুকুরকান্দি গ্রামে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত চারটি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানটি পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা (ভূমি) সহকারী কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেন ।
অভিযানে দেখা যায়, ভাটাগুলোতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছিল না এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এর ফলে পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ছিল।
ইটভাটাগুলোর মধ্যে থ্রি স্টারকে ১ লাখ টাকা, জনতা ব্রিকসকে ১ লাখ, রুপসা ব্রিকসকে ১ লাখ এবং সমতা ব্রিকসকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহযোগিতায় ইটভাটাগুলোর চুলা পানি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাঁচা ইটগুলো পানি দিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত জানিয়েছে, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারের আলাদিনস পার্কে গত ৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন সিপিআই এক্স স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে বার্ষিক পিকনিক ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ বছরের অনুষ্ঠানটি ‘আমরা সবাই একসাথে-এখন ও চিরকাল’ প্রতিপাদ্য নিয়ে উদযাপন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি সিপিআই এক্স স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক নাজিমুজ্জামান হাবলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন প্যারাডাইজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল আমিন ভূঁইয়া, কুমিল্লা পলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফা, শান্তি নিবাস প্রোপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কুমিল্লা পলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি মো. আবুল কাশেম, সিপিআই ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান কবির প্রিন্স, ইঞ্জিনিয়ার সাদেকুল আমিন, পিকনিক কমিটির সচিব এমরান হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জাবেদ হোসেন। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান কনক, মো. মাসুদ রানা, ফেরদৌস, নেছার পাটোয়ারি, মিশকাত, মো. সাইদুল ইসলাম মিঠু, মো. শিহাব, কামরুল, প্রান্ত, তুষার ও সাইমুনসহ কুমিল্লা পলিটেকনিকের বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে দুপুরে যোগ দেন ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও কুমিল্লা পলিটেকনিকের ১৯৮৩-১৯৮৪ সেশনের ছাত্র প্রকৌশলী কাজী সাখাওয়াত হোসেন। তাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
বিভিন্ন ইভেন্ট ও পুরস্কার বিতরণ
পিকনিকে বিভিন্ন ইভেন্টের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবাইকে পুরস্কৃত করা হয়। এ ছাড়াও সাবেক শিক্ষার্থীর সন্তানদের মধ্যে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন, তাদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আয়োজক কমিটির সব পৃষ্ঠপোষকদের ক্রেস্ট ও উপহার প্রদান করা হয়।
র্যাফেল ড্রর পুরস্কার বিতরণ
বার্ষিক মিলনমেলার অংশ হিসেবে আয়োজিত র্যাফেল ড্রর পুরস্কারগুলো ছিল আকর্ষণীয়। প্রথম পুরস্কার হিসেবে ওয়াশিং মেশিন, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে ৪৩ ইঞ্চি 4K Smart টিভি, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন, চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ইলেকট্রিক ওভেন এবং আরও ২০টি আকর্ষণীয় পুরস্কার ছিল। র্যাফেল ড্র লটারি টিকিটের মূল্য ছিল ১০০ টাকা।
নতুন কার্যকরী কমিটি ঘোষণা
উৎসবের শেষে নির্বাচন উপকমিটি প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ সালের ৪১ সদস্যের কার্যকরী কমিটি ও সাত সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়।
নতুন কার্যকরী কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন রেজাউল করিম রেজা। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গোলাম মোস্তফা (ভিপি) , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে শাহজাহান কবির প্রিন্স এবং অর্থ সম্পাদক হিসেবে মাসুদ রানা নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁওয়ে বিশেষ অভিযানে সোহেল রানা (৩৩) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
সদর থানা পুলিশ পৌর শহরের গোবিন্দনগরের বিসিক এলাকা থেকে সোমবার ভোররাতে তাকে আটক করে।
পুলিশের দাবি, ওই যুবকের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃত সোহেল রানা ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহমানপুর ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎ বাজারে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে কর্মরত।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বিশেষ টিম বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কক্ষের বিছানার নিচ থেকে বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমান বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, তার বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে তার স্বয়ং কক্ষের বিছানার নিচে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে এটি বিদেশি পিস্তল মনে হয়েছে।
‘একজনকে আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে যুবকের আটক হওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ঠাকুরগাঁও পুলিশের অভিযানের বিষয় তুলে ধরে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ জাহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, আটক যুবকের নামে অস্ত্র আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তার কাছ থেকে পাওয়া বন্দুকে কোনো গুলি ছিল না।
প্রাথমিকভাবে আসামি কোনো স্বীকারোক্তি দিয়েছেন কি না কিংবা তার নামে আগে কোনো মামলা আছে কি না জানতে চাইলে এসপি আরও বলেন, ‘তদন্ত শেষে পুরো বিষয়টি আবারও জানানো হবে। তবে আগের কোনো মামলা তার বিরুদ্ধে নেই।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য