১২ মার্চ, বেলা ১টা। ঘটনাস্থল কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন যাত্রী।
তাদের এতক্ষণ অপেক্ষা করার কথা ছিল না। কারণ, দাঁড়িয়ে থাকার সময় বিআরটিসির দুটি বাস সেখানে যায়। কিন্তু কাউন্টার থেকে দুটিকেই পাঠিয়ে দেয়া হয় পাশের ডিপোতে।
যাত্রীরা একপর্যায়ে কাউন্টারে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। পরে কাউন্টার থেকে গাড়ির খোঁজে বের হন টিকিট বিক্রেতা। তিনি গিয়ে দেখেন ট্রান্সসিলভা পরিবহনের একটি বাসের চালক ও সহকারী খাচ্ছেন। পরে তাদের ডেকে এনে বাস ছাড়ে।
ঢাকার বাস চলাচল পাল্টে দিয়ে যাত্রীবান্ধব ও আরামদায়ক করার ঘোষণা দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চলা ঢাকা নগর পরিবহনে তিন মাস যেতে না যেতেই এই চিত্র দেখা দিয়েছে।
কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে চিটাগাং রুটের কাঁচপুর পর্যন্ত এই রুট চালু হয়েছে গত ২৬ ডিসেম্বর। শুরুর দিন জানানো হয়েছিল, ৫০টি বাস আপাতত দেয়া হচ্ছে, পরে বাস বাড়বে। কিন্তু বাস বাড়েনি, উল্টো এই রুটে চলা বিভিন্ন বেসরকারি পরিবহনের বাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে ভোগান্তি বেড়েছে আরও বেশি।
এর মধ্যে আরও তিনটি রুটে নগর পরিবহন চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের পেছনে থাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের দৃষ্টিতে পরীক্ষামূলকভাবে চলা এই নগর পরিবহন পুরোপুরি সফল।
কিন্তু যাত্রীরা কী ভাবছেন? ঘাটারচরে সেদিন বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বিরক্ত যাত্রী সোহেল মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৩০ থেকে ৪০ মিনিট পরপর বাস ছাড়ে। এখন এক ঘণ্টা হয়ে গেল বাস পাই না। এভাবে সেবার নামে হয়রানি করার কী দরকার?’
যাত্রীরা জানালেন, সন্ধ্যার পর এই রুটে সেভাবে বাস পাওয়া যায় না। রাত ৮টার আগে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
বন্যা রায় নামে এক যাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাউন্টারে এসে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়। এদিকে শাহবাগ কাউন্টারে বসার জন্য যাত্রীছাউনি নাই। তারা সেবার নামে হয়রানি শুরু করেছে। বাস কম হওয়ায় গাদাগাদি করে চলতে হয়।’
গত ২৬ ডিসেম্বর ৫০টি বাস নিয়ে একটি রুটে পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হয়। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির ৩০টি আর বেসরকারি বাস কোম্পানি ট্রান্সসিলভার ছিল ২০টি।
নগরীতে ওয়েবিলের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ আদায়ের মধ্যে এই বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় হওয়ায় মানুষের খরচ কমে।
শুরুতেই এই সেবা যাত্রীদের স্বস্তির কারণ হয়েছিল। তবে মাস গড়াতে থাকলে সেবার মানে দেখা দেয় ঘাটতি। কমে গেছে বাস, বাহনে উঠতেই এখন কষ্ট হচ্ছে যাত্রীদের।
যাত্রা শুরুর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছিলেন, ৬০ কর্মদিবসে আরও ৫০টি বাস দেয়া হবে।
কিন্তু ঘটনা ঘটেছে ঘোষণার উল্টো। বাসের সংখ্যা বাড়ার বদলে গেছে কমে। আর এ কারণে দীর্ঘ সময় কাউন্টারে অপেক্ষা করে যাত্রীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন।
বিআরটিসির বাস এখন দিনে ৩০টার জায়গায় চলে গড়ে ১৪ থেকে ১৮টা। আর ট্রান্সসিলভাও ২০টি বাস না চালিয়ে ১৩ থেকে ১৮টা চালায়।
৫০ দিনে কত বাস চলেছে
ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন যথাক্রমে বাস চলেছে ৩৮, ৩৭, ৪৩, ৩৬, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৩, ৪৩, ৪৬, ৪২, ২৯, ৪৪, ৩৯, ৩৯, ৩৬, ৩৬, ২৪, ২৪, ২৪, ২৪, ৩৩, ২৭, ২৭, ২৪, ২৭, ৩৫, ৩৫। ফেব্রুয়ারি মাসে মোট বাস চলেছে এক হাজার ২৫টি। গড়ে দিনে বাস চলেছে ৩৬.৬০টি।
চলতি মাসে ১ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন বাস চলার সংখ্যা পর্যায়ক্রমে ৩৫, ৩৬, ৩৫, ২৭, ৩৪, ৩৫, ৩৪, ৩৬, ৩৮, ৩৬, ২৯, ৩৩, ৩৫, ৩৩, ৩৩, ৩১, ৩১, ২৭, ১৬, ৩২। মার্চের ১ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত মোট বাস চলেছে ৬৪৬টি। গড়ে দিনে বাস চলেছে ৩২.৩টি।
চলতি মাসের ২২ তারিখে বাস রুট রেশনালাইজেশনের ২২তম সভার দিন ৪৭টি ও আগের দিন বাস চলেছে ৪৫টি।
বাস থেকেও চলে না
ঢাকা নগর পরিবহন সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঘাটারচর থেকে গাড়ি ছাড়ে।
গত ১২ মার্চ মোহাম্মদপুর ডিপোর বিআরটিসির বাস চলেছে ৯টা। নারায়ণগঞ্জ ডিপোর বিআরটিসির বাস চলেছে ৯টা।
এর মধ্যে মোহাম্মদপুর ডিপোর ৯টি বাসের মধ্যে তিনটি বাস দুটি করে মোট ছয় ট্রিপ দেয়। বাকি ছয়টি বাস ট্রিপ দেয় একটি করে।
নারায়ণগঞ্জ ডিপোর ৯টা বাসের মধ্যে তিনটা বাস দুই ট্রিপ করে আর ছয়টি বাস একটি করে ট্রিপ দেয়।
একই দিনে ট্রান্সসিলভা পরিবহনের ১৫ বাস চলে। এই বাসগুলোর মধ্যে ৯টা বাস দুটি করে ১৮টি আর ছয়টি বাস একটি করে মোট ২৪টা ট্রিপ দেয়।
অর্থাৎ সেদিন ট্রান্সসিলভা ও বিআরটিসি মিলিয়ে ট্রিপ দেয় ৪৮টি।
১৪ ঘণ্টায় ৪৮ বাস ট্রিপ দিলে হিসাবে ১৮ মিনিট পরপর গাড়ি ছাড়ার কথা। তবে মেয়রের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৫০ বাস যদি দুই ট্রিপ করে দেয়, তাহলে আট মিনিট পরপর বাস পাওয়ার কথা।
সেদিন দুপুরে ঘাটারচর গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১টা ৫ মিনিটে বাস ছেড়ে যাওয়ার পর কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। এক ঘণ্টা ৪ মিনিট পরে বেলা ২টা ৯ মিনিটে ছাড়ে পরের বাস।
এত দেরিতে ছাড়ার কারণ হিসেবে কাউন্টার থেকে বলা হয়, ‘বাস নাই’।
তবে এই সময়ে বিআরটিসির দুটি দ্বিতল বাস কাউন্টারে আসে। দুটিকেই রাস্তায় না নামিয়ে পাশের ডিপোতে চলে যেতে বলা হয়।
নগর পরিবহনের একজন কর্মী বলেন, ‘গাড়ি ছিল, কিন্তু ছাড়ে নাই। যাত্রীদের আস্থা হারাচ্ছে। গাড়ি রানিং থাকলে যাত্রীরা নগর পরিবহনে চলে শান্তি পেতেন।’
‘লিখিত অভিযোগ দেন, ব্যবস্থা নেব’
এই বাস পরিচালনার দায়িত্ব পালন করা ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ-ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক ও বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির সদস্য সচিব নীলিমা আখতার বাস কম চলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ আমাদের কাছেও রিপোর্ট আছে। তাদেরকে চার্জও করা হয়েছে। তারা যে কেন এটা করছে তারাই (ট্রান্সসিলভা, বিআরটিসি) ভালো বলতে পারবে।
‘বিআরটিসি ও ট্রান্সসিলভা আইডেন্টিফাই করে মেয়র বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।’
বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম প্রথমে বাস কমের বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে তা স্বীকার করেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাস আমরা কখনই কমাইনি। যাত্রীর চাহিদার ভিত্তিতে সর্বোচ্চসংখ্যক বাস দেয়ার নির্দেশ আছে আমার।’
বিআরটিসির বাস চলার কথা ৩০টি, কিন্তু চলে ১৪ থেকে ১৮টি- এই তথ্য তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, ‘এটা আগে আমার নলেজে আসে নাই। আমি ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তন এনেছি। আমার অপারেশন বিভাগই পরিবর্তন করেছি। সেখানে (ঢাকা নগর পরিবহন) আমাদের লোকেরা ঠিকমতো ডিল করতে পারে নাই। নগর পরিবহন আমার কাছে এক নম্বর প্রাধান্য। আমি চেষ্টা করি যাতে এই সেবা টিকে থাকে।’
ট্রান্সসিলভাকে নিয়ে কোনো অভিযোগ করতে চান না বিআরটিসির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘তাদের এখানে অনেক ঝামেলা আছে। তারা সব সময় চেষ্টা করে কীভাবে এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়া যায়। তারা শুক্রবারে ট্রিপ বাড়িয়ে দেয়ার কথা বলছে। আমি বলেছি ওকে। কিন্তু তারা ট্রিপ বাড়ায় নাই। তাদেরকে বলেছি আপনাদের যেভাবে সুবিধা হয়, ট্রিপ বাড়িয়ে দেন।’
মেয়র বলছেন, যাত্রীরা সন্তুষ্ট
মঙ্গলবার বাস রুট র্যাশনালাইজেশনের ২২তম সভায় কিছু বিষয় দুই সিটির মেয়রের সামনে তুলে ধরলে দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করি। এটা আমাদের পরীক্ষামূলক রুট। প্রথম যখন আমরা শুরু করলাম, অনেকে অনেক কথা বলেছেন। এই বাস চলবে নাকি? যাত্রীরা উঠছে না, অন্য বাসে চলছে ইত্যাদি। এখন দেখেন যাত্রীরা অন্য বাস থাকার পরেও উঠতে চায় না। যাত্রীরা আমাদের বাসেই উঠতে চায়। তার মানে আমার যাত্রীসেবা সন্তোষজনক।’
লভ্যাংশে খুশি না ট্রান্সসিলভা
২০ বাস চলার কথা থাকলেও কেন ১৩ থেকে ১৮ বাস চালাচ্ছে ট্রান্সসিলভা?
পরিবহন কোম্পানিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, তাদেরকে যে হারে লভ্যাংশ দেয়া হচ্ছে, সেটিতে পোষায় না।
তিনি বলেন, ‘বিআরটিসির কাছে আগে জিজ্ঞাসা করেন তারা কেন এত দিন বাস কম চালিয়েছে? তারপর আমার কাছে জিজ্ঞাসা করেন। তারা সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রীর মডেল বাস্তবায়নে তাদের তো বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।’
এগুলো নিয়ে নগর পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করলেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায়। পুলিশের বাধার মুখে সেখান থেকে সরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সেখানে সরে গিয়ে ওই স্থান থেকেই তারা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি এখন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। যারা এখনো প্রেস ক্লাবে আছেন, তাদের অনুরোধ করছি মিছিলসহ শহীদ মিনারে চলে আসতে। আমরা এখান থেকেই আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করব এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লাগাতার আন্দোলনকে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি না হবে, আমরা শহীদ মিনার ছাড়ব না, ঢাকার রাজপথও ছাড়ব না। আলোচনার মাধ্যমে, সহযোগিতার মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন নিয়েই বিজয়ী বেশে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব।
অন্যদিকে প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে শিক্ষক নেতাদের সরাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক করেন। ছবি: ফেসবুক
বাংলাদেশে আগামী বছর একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠকে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। যুক্তরাজ্য বিশেষ করে জাতীয় নাগরিক শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে, বিশেষ করে দেশের দুর্বল গোষ্ঠীগুলির জন্য এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। তাই আমাদের এজেন্ডা ছিল নির্বাচন কমিশনের সাথে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করা। যেমনটি আমি বলেছি, জাতীয় নাগরিক শিক্ষা এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্যও আমরা কাজ করছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করেছি।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যে যুক্তরাজ্য আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করছে।’
রাজধানীর উত্তরার কবি জসীমউদ্দীন রোডে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরবাইক চালক নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আরমান মির্জা (২১) নামের ওই তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা আহত আরমানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান।
নিহতের খালা নাজনীন আক্তার জানান, ‘খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে এসে আমার ভাগিনা আরমানের মরদেহ দেখতে পাই। সে আব্দুল্লাহপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। গভীর রাতে আরমান মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন রোডে বেপরোয়া গতির একটি বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, আরমানের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার পূর্ব হাতিআলা গ্রামে।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টিতব্য লঘূচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে, রাত হতে রাজধানীতে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টির ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া, ওয়ার্ডভিত্তিক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (Emergency Response Team) কাজ করে চলেছে। গ্রীন রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, সাত মসজিদ রোড, ধানমণ্ডি এলাকার জলাবদ্ধতা ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। তবে, পানি নির্গমনের আউটলেট অংশ এবং খাল-নদীর অংশের পানির লেভেল প্রায় একই হওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশনের ধীরগতি বিদ্যমান থাকায় কিছু এলাকার পানি নামতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এ সব এলাকা থেকে অস্থায়ী পোর্টেবল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, কমলাপুরে স্থাপিত হাই প্রেসার ভার্টিক্যাল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নামানোর কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ (01709900888) মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীতে গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টি আজ সোমবার সকালেও থামেনি। বৃষ্টির সঙ্গে ছিলো বজ্রপাতও। মুষলধারে হওয়া এই বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। ফলে সড়কে আটকে আছে গণপরিবহন। এতে সাতসকালেও ঘর থেকে কাজে বের হওয়া লোকজন পরেছেন ভোগান্তিতে।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১০, মিরপুর শেওড়াপাড়া, নিউমার্কেট, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পানি জমতে দেখা যায়। এসব এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি পরিমাণ জমলেও আসাদগেট, মগবাজার, মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় ছিল কোমরসমান পানি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।
এদিকে রাজধানীতে সকালে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। শ্যামলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তায় আসতে গিয়ে আসাদগেট কোমরসমান পানিতে আটকা পড়েন ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হলেও বৃষ্টির কারণে সময়মত অফিসের জন্য বের হতে পারিনি। কোনোভাবে যাও বের হয়েছিলাম, তা পথের বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুসমান থেকে কোমরসমান পানির জন্য আটকে থাকতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তায় পানি জমে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। অফিসগামী লোকজনদের পরতে হয়েছে দুর্ভোগে।
এছাড়া শেওড়াপাড়া থেকে ফাহিম নামের এক তরুণ বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তায় এত পরিমাণ পানি জমেছে যে, হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই। রিকশায়ও ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রসঙ্গত, গতকয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম ছিল। এ অবস্থায় গত শনিবার ও রোববার রাজধানীর আকাশ খানিকটা ঘোলাটে ছিল। তবে আজ সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
রাজধানীর বনানীতে যাত্রা শুরু করলো ভ্রমণ ও পর্যটনভিত্তিক নতুন প্রতিষ্ঠান ট্রিপোলজি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুই গার্ডেনে অবস্থিত ট্রিপোলজির অফিসে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্লগার শিশির দেব। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও যোগ দেন ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী এবং কোরিওগ্রাফার গৌতম সাহা।
উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল রিবন কাটিং, অফিসিয়াল ফটো সেশন এবং দর্শকদের জন্য বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট সেশন। অনুষ্ঠান ঘিরে ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় এবং তারা বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পে ট্রিপোলজির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ট্রিপোলজির কো-ফাউন্ডার তাজরিন আখতার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া। কোম্পানির সিইও ইমতিয়াজ কাইসুল বলেন, “ট্রিপোলজি শুধুমাত্র একটি ট্রাভেল এজেন্সি নয়; আমরা চাই মানুষ যেন ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে নিশ্চিন্ত সেবা পায়। ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং ও হলিডে প্যাকেজ সবকিছুতেই আমরা সর্বোচ্চ পেশাদার মান নিশ্চিত করতে চাই।”
ট্রিপোলজি বর্তমানে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর ভিসা প্রসেসিংয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছে। পাশাপাশি সব ধরনের দেশি-বিদেশি হলিডে প্যাকেজ, এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং, থার্ড ওয়ার্ল্ড ভিসা প্রসেসিং ও স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, ট্রিপোলজির উদ্যোগ বাংলাদেশের ভ্রমণশিল্পকে আরও গতিশীল করবে।
ঠিকানা: জুই গার্ডেন, হাউস ২/এ, লেভেল-৭, ব্লক এল, রোড ২/১, বনানী-১২১৩, ঢাকা।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩১৩টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য