দুই সপ্তাহ আগে সংবাদকর্মী বাদল খান ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, তিনি ২৩ দিন হর্ন না বাজিয়ে ঢাকায় মোটরসাইকেল চালিয়েছেন। এতে কোনো সমস্যা হয়নি জানিয়ে তার মনে উপলব্ধি এসেছে, ঢাকায় হর্ন না বাজিয়েও বাইক চালানো যায়।
রাজধানীতে প্রধান সড়কে, অলিগলিতে, হর্ন নিষিদ্ধ এলাকায়, হাসপাতাল-স্কুলের সামনে চলতে থাকা যানবাহন, এমনকি সিগন্যালে গাড়ি আটকে থাকা অবস্থায় যখন উচ্চৈঃস্বরে হর্ন বাজতে থাকে, সে সময় বাদলের এই উপলব্ধি কি একেবারেই অবাস্তব?
এই সংবাদকর্মীর স্ট্যাটাসের নিচেই বেশ কয়েকজন কমেন্ট করেন। এদের একজন জানান, তিনি তিন বছর ধরেই হর্ন না বাজিয়ে চলছেন, একজন জানান, তিনি ছয় বছর ধরে হর্ন দেন না বললেই চলে।
রাজধানীতে শব্দদূষণ কতটা প্রকট আকার ধারণ করেছে, সেটি ফুটে উঠেছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে, যেখানে বলা হয়েছে ঢাকায় শব্দদূষণ এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি।
নানা কারণে শব্দদূষণ হয়ে থাকে, তার একটি হলো গাড়ির হর্ন। এই হর্নের নির্ধারিত যে মাত্রা সরকার বেঁধে দিয়েছে, তার চেয়ে উচ্চ শব্দের হর্ন আমদানি হচ্ছে হরদম। হাইড্রোলিক হর্ন নিষিদ্ধের বিষয়টি যে একেবারেই কাগজে-কলমে, সেটি মহাসড়কে এমনকি ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে গেলেই বোঝা যায়। দূরপাল্লার বাসগুলো ঢাকার বাইরে তো বটেই, এই সড়কটিতেও হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করে।
বাদলের স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্ট করে ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের সিনিয়র রিপোর্টার আহম্মদ ফয়েজ তিন বছর ধরে হর্ন না বাজিয়ে রাজধানীতে বাইক চালান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মানুষ অকারণে কেন হর্ন বাজায় তা আমি বুঝি না। অনেকেই দেখি খালি রাস্তায় দুইবার বাজায়। পরে আমি চিন্তা করলাম হর্ন না বাজিয়ে চলা যায় কি না। দিনে একবার দুইবার হঠাৎ বাজাতে হয় যদি সরু গলিতে ঢুকতে হয়। এ ধরনের কারণ ছাড়া ঢাকা শহরের রাস্তায় হর্ন বাজানোর কোনো যুক্তি আসলে নাই।’
এই অভ্যাস কীভাবে করা যায়, সে পরামর্শও দিয়েছেন এই সাংবাদিক। বলেন, ‘যারা এই চর্চা করতে চাচ্ছে তাদের প্রথমে ঠিক করতে হবে, তিনি হর্নে হাত দেবেন না। ব্যক্তিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে দূষণ থেকে শহরকে বাঁচাবেন। তাহলেই হবে। গলাটিপে এটা বন্ধ করা যাবে না। মানুষকে সচেতন করতে হবে।’
প্রতিটি গাড়িতেই হর্ন ছাড়াও সামনের গাড়িতে সংকেত দেয়ার ব্যবস্থা থাকে। হেডলাইটের পাশে ছোট বাতি থাকে, সেটি জ্বলে থাকে না। নির্দিষ্ট বাটনে চাপ দিলে সামনের গাড়ির লুকিং গ্লাস হয়ে চালকের চোখে সেই সংকেত ধরা দেয়। এতে তিনি পেছনের গাড়ির গতিবিধি দেখতে পারেন।
তবে বাংলাদেশে বিশেষ করে বাইকে প্রায়ই দেখা যায়, লুকিং গ্লাস খুলে ফেলা হয়েছে। ফলে পেছনের গাড়ির গতিবিধি তার দেখার সুযোগ নেই। আর গাড়ির কারের চালকরাও আলোর সংকেতে অভ্যস্ত নয়। যে কারণে হর্নই চলে দিনরাত।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা অপূর্ণ রুবেল হর্ন ছাড়া বাইক চালান ৬ বছর ধরে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ২০১৬ সালের দিকে লেখক আনিসুল হকের কাছ থেকে শুনলাম তার গাড়িতে হর্ন বাজে না। তখন আমিও ট্রাই করলাম হর্ন না বাজানোর। কয়েক দিন চেষ্টা করেই সফল হয়ে গেলাম।’
রাজধানীর একটি হাসপাতালের সামনে শব্দদূষণের মাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ফাইল ছবি
ক্ষতি ব্যাপক, কিন্তু নেই সচেতনতা
গাড়ির হর্নের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা গড়ার চেষ্টা হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে একটি প্রচার চালাচ্ছেন মমিনুর রহমান রয়েল নামে একজন, যিনি কাজ করেন একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। তার ব্যতিক্রমী পোস্টার সহজেই নজর কাড়ে নগরবাসীর। সেখানে লেখা থাকে, ‘হর্ন হুদাই বাজায় ভুদাই।’
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে স্টাডি করেছি, যারা এক্সপার্ট তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। অতিরিক্ত হর্নের কারণে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। মানুষের টেম্পারমেন্ট কমে যায়, উচ্চ রক্তচাপ হয়, গর্ভবতী মায়ের সন্তান ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে।’
মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে কি না- এমন প্রশ্নে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মনে হচ্ছে কিছু মানুষের মধ্যে কিছুটা এসেছে। তবে সামগ্রিকভাবে খুব বেশি হয়েছে সেটি বলা যায় না।’
রয়েল যে ক্ষতির কথা বলেছেন, সেটিই ফুটে উঠল জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরীর কথায়। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘শব্দদূষণের কারণে শ্রবণ ইন্দ্রিয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে মৃদু বধির এবং মধ্যম মানের বধিরের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
‘শব্দদূষণের কারণে আমাদের মস্তিষ্ক উত্তেজিত এবং বিরক্তবোধ করে। ফলে হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যায়। রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে উচ্চ রক্তচাপ রোগের সৃষ্টি হয়। মস্তিষ্ক উত্তেজিত থাকার কারণে অনিদ্রা এবং ঘুম হয় না। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
‘মেজাজ খিটখিটে হওয়ার কারণে মনোসংযোগ করার ক্ষমতা কমে যায়। সব মিলিয়ে একটি ব্যক্তির যে সাম্য অবস্থা ভারসাম্য, সেটা বিঘ্নিত হয়। এভাবে চলতে থাকলে তার হার্টের ওপর চাপ পড়বে এবং হৃদরোগের তৈরি হয়। হৃদরোগের সৃষ্টি হলে উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোকের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
‘এভাবে শব্দদূষণ বধির থেকে শুরু করে ডায়াবেটিসসহ বড় বড় রোগের আধার হিসেবে আমাদের শরীরটাকে তৈরি করে ফেলে, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হয়। আবার অসুস্থ হওয়ার কারণে জাতীয় শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সব মিলিয়ে শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্য তো বটেই, অর্থনীতিরও ক্ষতির কারণ হয়েছে।’
আইন আছে, প্রয়োগ নেই
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা করা হয়। এতে বলা হয়, আবাসিক এলাকায় রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল।
হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের আশপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে।
২০০৭ সালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি সড়কে হর্ন নিষিদ্ধ করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। সে সময় অভিযান চালিয়ে প্রতিদিন জরিমানা কত সেটি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
কিন্তু এখন এই ধরনের অভিযান আর হয় না। সব সড়কেই দেদার বাজতে থাকে হর্ন।
তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (আইন শাখা) খোন্দকার ফজলুল হক নিউজবাংলার কাছে দাবি করেন, তাদের অভিযান চালু আছে। তিনি বলেন, ‘আগে কেবল ঢাকা শহরে চলত, এখন প্রতিটি জেলা শহরেই চলে।’
শব্দদূষণের আরও উৎস
গাড়ির হর্ন ছাড়াও শব্দদূষণের কারণের অভাব নেই। ঢাকা শহরে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায় দিনরাত চলে পাইলিংয়ের কাজ। ইট ভাঙার যন্ত্র, সিমেন্ট মিকশ্চারেরও যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে।
এর বাইরে অনুমোদন ছাড়া মাইকের ব্যবহার, গভীর রাতে বাড়ির ছাদে উচ্চ শব্দে পার্টি আর ধর্মীয় আলোচনাও শব্দদূষণ ঘটাচ্ছে।
সব মিলিয়ে শব্দদূষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে অস্বস্তিকর অবস্থায়। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) ২০২২ সালের প্রতিবেদনে শব্দদূষণে বিশ্বের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম।
ফ্রন্টিয়ারস ২০২২: 'নয়েজ, ব্লেজেস অ্যান্ড মিসম্যাচেস’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় শব্দের সর্বোচ্চ তীব্রতা ১১৯ ডেসিবল, যা এ প্রতিবেদনে আসা শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
কদিন আগেই সারা বিশ্বে বায়ুদূষণের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ প্রথম এবং শহর হিসেবে ঢাকা ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে।
এই জরিপের প্রসঙ্গ টেনে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যানবাহন শব্দদূষণের প্রধানতম উৎস। যেহেতু আমরা উৎসগুলো জানি; সমাধানের কথা চিন্তা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের কথা বলা আছে। নীরব এলাকা, বধির এলাকার কথা বলা আছে, কিন্তু কিছু মানা হয় না।’
কামরুজ্জামান জানান, দেশে শব্দের যে সর্বোচ্চ মাত্রার কথা বলা আছে, গাড়ির হর্ন আমদানি করা হয় তার চেয়ে বেশি মাত্রায়।
তিনি বলেন, ‘গাড়ির হর্ন আমদানির মানমাত্রা দেয়া আছে ৮০ থেকে ৮৫ ডেসিবল, মোটরসাইকেলে তা ১০০ ডেসিবলের ওপরে চলে যায়। অথচ সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক এলাকায় শব্দ ব্যবহার করতে পারব ৭০ ডেসিবল।’
সচেতনতা ছাড়া উপায় নেই
পরিবেশকর্মী কামরুজ্জামান বলেন, ‘যিনি হর্নটা দিচ্ছেন, তিনি নিজেও ক্ষতির শিকার। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবটাই স্পষ্ট হয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালের সামনের এলাকা নীরব এলাকা। কিন্তু অনেকেই জানে না কোনটা নীরব এলাকা।’
দূষণ সবচেয়ে বেশি হাসপাতাল এলাকায়
রোগীর সঠিক সেবা নিশ্চিতে শব্দদূষণ কম হয় এমন জায়গায় নির্মিত হয়েছিল হাসপাতাল। কিন্তু দেখা গেছে শব্দদূষণের এসব হাসপাতালের সামনের রাস্তাতেও দেখা গেছে।
সম্প্রতি বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং ইকিউএমএস কনসালটিং লিমিটেডের যৌথ এক গবেষণায় ধানমন্ডি এলাকায় হাসপাতালগুলোর সামনে ১৭টি জায়গায়ই শব্দ পাওয়া গেছে আদর্শ মানের বেশি।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজের সামনে মাত্রা পাওয়া গেছে ৬৯ দশমিক ৭ ডেসিবল, সেন্ট্রাল হাসপাতালের সামনে ৮৯ দশমিক ৯ ডেসিবল।
এই ১৭টি স্থানের মধ্যে শব্দের মাত্রা গড়ে ৮১ দশমিক ৭ ডেসিবল। এর মধ্যে ৯টি স্থানেই ৮০ ডেসিবলের বেশি, যা খুবই বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে “জুলাই ২০২৪: বিপ্লব ও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান” শীর্ষক এক সেমিনার আজ ২১ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার বিভাগীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহার সভাপতিত্বে সেমিনারে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, জুলাই শুধু একটি গণ-অভ্যুত্থান নয়, বরং এটি বৃহৎ পরিবর্তনের একটি সম্ভাবনার প্রতীক। এর মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, একারণে কাজে-কর্মে, চলনে-বলনে সর্বত্র তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
আজ সোমবার, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস। আজ সকালে ঢাকার আকাশে উঁকি দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমে রোদ উঠতেই ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, এই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘ভালো’, দূষণ-মান ছিল ৫০। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৭৪তম স্থানে নেমে গিয়েছিল ঢাকা। তবে আজ আবার তালিকার ২৬তম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
এদিকে, গতকালের তুলনায় পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গেছে। ৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার ১২ তম স্থানে রয়েছে লাহোর। তবে ভারতের দিল্লির বায়ুদূষণ আজও অব্যাহত রয়েছে। ১২৩ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
একই সময়ে ১৬৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ এবং ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য