ছাত্র ইউনিয়নের বহিষ্কৃত নেতা আকিফ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) যে কক্ষে ধর্ষণের ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই কক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ‘সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন’-এর অবৈধ দখলে রয়েছে। টিএসসির ২০৫ নম্বর কক্ষটি ছাত্র ইউনিয়নের সাংস্কৃতিক উইংকে কখনই বরাদ্দ দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে টিএসসি কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে অভিযুক্ত আকিফ স্বীকার করেছেন ওই কক্ষে প্রায় এক বছর আগে মদ্যপ অবস্থায় তিনি অভিযোগকারী তরুণীর বাধা উপেক্ষা করে যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যান। তরুণীর সঙ্গে তখন তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছেন আকিফ।
আকিফ আহমেদ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আকিফকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়ন।
আকিফ নিউজবাংলাকে জানান, গত বছরের ৩ এপ্রিল টিএসসির দোতলার ২০৫ নম্বর কক্ষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ধর্ষণে অভিযুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা আকিফ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যার সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে একটি কলেজের শিক্ষার্থী। এই ঘটনার সময় লকডাউন চলছিল। বিভিন্ন কাজের কারণে আমি প্রায়ই রাতে টিএসসিতে থাকতাম।
‘সেদিন রাত ১১টায় সেই রুমে আমি আর সে একা ছিলাম। তবে পাশের রুমে আরও কয়েকজন ছিল। সে সময় আমি ড্রাংক ছিলাম। এ অবস্থায় দুজনের সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক হয়। তবে একটা পর্যায়ে সে আমাকে থামাতে চায়, কিন্তু আমি থামতে পারিনি। পরে সে আমাকে সরিয়ে দেয়।’
আকিফের দাবি, একপর্যায়ে তিনি (আকিফ) সংজ্ঞা হারান। মেয়েটি কক্ষ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় চেতনা হারানোর বিষয়টি পাশের কক্ষের লোকজনকে জানিয়ে যান। এরপর সকালে আকিফ জেগে মোবাইল ফোনে মেয়েটির মেসেজ দেখে রাতের ‘অস্বাভাবিকতা’ জানতে পারেন।
আকিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এরপর আমি তার কাছে (তরুণী) ক্ষমা চাই। এভাবেই গত বছর বিষয়টি ঠিক হয়ে যায়। এই ঘটনার পরও আমাদের দেখা হয়েছে। আমরা আবার রিলেশন কন্টিনিউ করেছিলাম। সেই রিলেশন চার-পাঁচ মাস চলেছে। সর্বশেষ কিছু মাস আগে বিভিন্ন কারণে আমাদের ব্রেকআপ হয়।’
বিষয়টি নিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলতে পারেনি নিউজবাংলা। তবে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতাদের কাছে আকিফের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢাবি শাখার সভাপতি শিমুল কুম্ভকার।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে ‘যথেষ্ট’ শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন বলে মনে করছেন আকিফ। তিনি বলেন, ‘সংগঠন থেকে বহিষ্কার হয়েছি, ঘটনা স্বীকার করেছি, এটার চেয়ে বড় আর কী হতে পারে। আমি স্বীকার না করলে তো এটি এতদূর গড়াত না।’
টিএসসির যে কক্ষে এই ঘটনা, সেই কক্ষ নিয়েও বিপাকে পড়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। গত বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, কক্ষটিতে কোনো টেবিল নেই। একটি চেয়ার, একটি আয়না আর মেঝেতে একটি বিছানা পাতা। এক পাশে রয়েছে কিছু মশাল। আর দেয়ালে কয়েকটি পোস্টার সাঁটানো।
বরাদ্দ ছাড়াই কক্ষটি ‘সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন’-এর নামে দখলে রাখা এবং ধর্ষণের মতো ঘটনার অভিযোগের বিষয়ে ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের উপদেষ্টা এবং ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শিকদার মনোয়ার মোর্শেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। বর্তমানে ছুটি নিয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঢাকার বাইরে আছি। ফিরে গিয়ে খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে বলতে পারব।’
ঘটনাটি গত বছরের জানালে তিনি নিউজবাংলার প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি এ বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নিয়েছি। আগের ঘটনা নিয়ে আমি কমেন্ট করতে পারব না। আপনি পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’
টিএসসির উপপরিচালক নজীর আহমদ সিমাব বলেন, ‘এই রুমে ছাত্র ইউনিয়নের সাংস্কৃতিক উইং সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন বসত। তবে তাদের অফিশিয়াল কোনো ইয়ে (অনুমতি) ছিল না। এই রুমটায় আগে মূলত টিএসসির সাউন্ড সিস্টেম রাখা হতো। আমরা জয়েন করার আগে থেকে তারা এই রুমটাতে বসে।’
তিনি বলেন, ‘আমিও শুনেছি কী একটা নাকি দুর্ঘটনা হয়েছে সেখানে। আসলে তেমন জানি না।’
কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাদের আমরা বৈধভাবে রুম বরাদ্দ দিই, তারা কোনো অনিয়ম করলে আমরা ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার রাখি। কিন্তু তারা তো সে রকম কোনো সংগঠন না।’
টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর নিউজবাংলাকে বলেন, এ রকম ঘটনা আমার কানে আসেনি। কেউ যদি এ বিষয়ে অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের নামে কাউকে টিএসসির কোনো রুম বরাদ্দ দেয়া হয়নি।’
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড এ কে এম গোলাম রব্বানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটা সংগঠনের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমি এ ধরনের একটি ঘটনার খবর জানতে পেরেছি। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের সুযোগ, সেটা আইনগত বিষয়।
‘এই ধরনের ঘটনা সত্যি হয়ে থাকলে সেটি খুবই বড় অপরাধ। আর রুমের বিষয়ে আমি টিএসসি-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব।’
টিএসসির আলোচিত কক্ষটি সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদ।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির সভাপতি আখতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, টিএসসির একটি কক্ষে এ রকম ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্যও অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ ঘটনা প্রমাণ করে, প্রশাসনের বরাদ্দ কক্ষে নারী শিক্ষার্থীরাই নিরাপদ নয়। এ অবস্থায় অবিলম্বে সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের দখল করা কক্ষটি বাতিল করে টিএসসিকে সব মত ও পথের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
টিএসসির কক্ষ দখলে রাখার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুকেও স্ট্যাটাস দিচ্ছেন অনেকে।
আবদুল্লাহ হীল বাকি নামে মনোবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘টিএসসির রুম দখল করে এভাবে একজন মেয়েকে এখানে ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন করবে, এসব কীভাবে মেনে নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা? টিএসসিতে ছাত্র ইউনিয়ন কীভাবে রুম দখল করে? ছাত্রলীগ, ছাত্রদল কিংবা অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন তো কখনও টিএসসিতে রুম দখল করেছে বলে শুনিনি।’
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান শুভ লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির একটি রুমে এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিছুদিন আগে। রুমটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে ছাত্র ইউনিয়নের একটি সংগঠন সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন। ধর্ষণের এতদিন পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
আরও পড়ুন:২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায়। পুলিশের বাধার মুখে সেখান থেকে সরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সেখানে সরে গিয়ে ওই স্থান থেকেই তারা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি এখন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। যারা এখনো প্রেস ক্লাবে আছেন, তাদের অনুরোধ করছি মিছিলসহ শহীদ মিনারে চলে আসতে। আমরা এখান থেকেই আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করব এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লাগাতার আন্দোলনকে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি না হবে, আমরা শহীদ মিনার ছাড়ব না, ঢাকার রাজপথও ছাড়ব না। আলোচনার মাধ্যমে, সহযোগিতার মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন নিয়েই বিজয়ী বেশে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব।
অন্যদিকে প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে শিক্ষক নেতাদের সরাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক করেন। ছবি: ফেসবুক
বাংলাদেশে আগামী বছর একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠকে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। যুক্তরাজ্য বিশেষ করে জাতীয় নাগরিক শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে, বিশেষ করে দেশের দুর্বল গোষ্ঠীগুলির জন্য এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। তাই আমাদের এজেন্ডা ছিল নির্বাচন কমিশনের সাথে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করা। যেমনটি আমি বলেছি, জাতীয় নাগরিক শিক্ষা এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্যও আমরা কাজ করছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করেছি।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যে যুক্তরাজ্য আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করছে।’
রাজধানীর উত্তরার কবি জসীমউদ্দীন রোডে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরবাইক চালক নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আরমান মির্জা (২১) নামের ওই তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা আহত আরমানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান।
নিহতের খালা নাজনীন আক্তার জানান, ‘খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে এসে আমার ভাগিনা আরমানের মরদেহ দেখতে পাই। সে আব্দুল্লাহপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। গভীর রাতে আরমান মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন রোডে বেপরোয়া গতির একটি বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, আরমানের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার পূর্ব হাতিআলা গ্রামে।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টিতব্য লঘূচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে, রাত হতে রাজধানীতে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টির ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া, ওয়ার্ডভিত্তিক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (Emergency Response Team) কাজ করে চলেছে। গ্রীন রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, সাত মসজিদ রোড, ধানমণ্ডি এলাকার জলাবদ্ধতা ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। তবে, পানি নির্গমনের আউটলেট অংশ এবং খাল-নদীর অংশের পানির লেভেল প্রায় একই হওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশনের ধীরগতি বিদ্যমান থাকায় কিছু এলাকার পানি নামতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এ সব এলাকা থেকে অস্থায়ী পোর্টেবল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, কমলাপুরে স্থাপিত হাই প্রেসার ভার্টিক্যাল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নামানোর কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ (01709900888) মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীতে গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টি আজ সোমবার সকালেও থামেনি। বৃষ্টির সঙ্গে ছিলো বজ্রপাতও। মুষলধারে হওয়া এই বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। ফলে সড়কে আটকে আছে গণপরিবহন। এতে সাতসকালেও ঘর থেকে কাজে বের হওয়া লোকজন পরেছেন ভোগান্তিতে।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১০, মিরপুর শেওড়াপাড়া, নিউমার্কেট, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পানি জমতে দেখা যায়। এসব এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি পরিমাণ জমলেও আসাদগেট, মগবাজার, মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় ছিল কোমরসমান পানি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।
এদিকে রাজধানীতে সকালে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। শ্যামলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তায় আসতে গিয়ে আসাদগেট কোমরসমান পানিতে আটকা পড়েন ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হলেও বৃষ্টির কারণে সময়মত অফিসের জন্য বের হতে পারিনি। কোনোভাবে যাও বের হয়েছিলাম, তা পথের বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুসমান থেকে কোমরসমান পানির জন্য আটকে থাকতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তায় পানি জমে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। অফিসগামী লোকজনদের পরতে হয়েছে দুর্ভোগে।
এছাড়া শেওড়াপাড়া থেকে ফাহিম নামের এক তরুণ বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তায় এত পরিমাণ পানি জমেছে যে, হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই। রিকশায়ও ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রসঙ্গত, গতকয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম ছিল। এ অবস্থায় গত শনিবার ও রোববার রাজধানীর আকাশ খানিকটা ঘোলাটে ছিল। তবে আজ সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
রাজধানীর বনানীতে যাত্রা শুরু করলো ভ্রমণ ও পর্যটনভিত্তিক নতুন প্রতিষ্ঠান ট্রিপোলজি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুই গার্ডেনে অবস্থিত ট্রিপোলজির অফিসে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্লগার শিশির দেব। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও যোগ দেন ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী এবং কোরিওগ্রাফার গৌতম সাহা।
উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল রিবন কাটিং, অফিসিয়াল ফটো সেশন এবং দর্শকদের জন্য বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট সেশন। অনুষ্ঠান ঘিরে ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় এবং তারা বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পে ট্রিপোলজির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ট্রিপোলজির কো-ফাউন্ডার তাজরিন আখতার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া। কোম্পানির সিইও ইমতিয়াজ কাইসুল বলেন, “ট্রিপোলজি শুধুমাত্র একটি ট্রাভেল এজেন্সি নয়; আমরা চাই মানুষ যেন ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে নিশ্চিন্ত সেবা পায়। ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং ও হলিডে প্যাকেজ সবকিছুতেই আমরা সর্বোচ্চ পেশাদার মান নিশ্চিত করতে চাই।”
ট্রিপোলজি বর্তমানে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর ভিসা প্রসেসিংয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছে। পাশাপাশি সব ধরনের দেশি-বিদেশি হলিডে প্যাকেজ, এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং, থার্ড ওয়ার্ল্ড ভিসা প্রসেসিং ও স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, ট্রিপোলজির উদ্যোগ বাংলাদেশের ভ্রমণশিল্পকে আরও গতিশীল করবে।
ঠিকানা: জুই গার্ডেন, হাউস ২/এ, লেভেল-৭, ব্লক এল, রোড ২/১, বনানী-১২১৩, ঢাকা।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩১৩টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য