নীলফামারীর ডোমার এবং মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান বর্জন করেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এ সময় তারা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে যান।
শনিবার সকালে ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে ওই ঘটনা ঘটে।
তবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দাবি করেছেন, যার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন গত নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। পরাজিত শক্তিই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
সূত্র জানায়, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের আগে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরন নবী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনে আপত্তি জানান। এ নিয়ে হট্টগোল শুরু হয় সেখানে। একপর্যায়ে বর্জনের ডাক দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তারা।’
ঘটনাস্থলে থাকা জেলা পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান সাজু বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা ইউএনও স্যারের কাছে উপজেলা চেয়ারম্যানকে দিয়ে পতাকা উত্তোলন না করার দাবি জানান। এ সময় প্রতিবাদ জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ। একপর্যায়ে হট্টগোল শুরু হলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা চলে যান।’
নুরন নবী অভিযোগ করে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের বিনিময়ে মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। জাতীয় পতাকায় স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তানের হাত লাগুক আমরা তা চাই না। তাই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছি।’
মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, তোফায়েল আহমেদের বাবা শওকত আলী সরকার একজন রাজাকার। ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় তোফায়েলের বাবা শওকত আলী ১০২৫, দাদা চাটি মামুদ ১০৬১ এবং নানা ছমির উদ্দিন সরকারের নাম ১০২৪ সিরিয়ালে আছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদই শেষ পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরন নবী গত নির্বাচনে আমার কাছে পরাজিত হওয়ার পর থেকে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। আমার বাবা স্বাধীনতাবিরোধী নন।’
স্থানীয় সাংবাদিক আবু ফাত্তাহ কামাল পাখি জানান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান বর্জন করলেও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে সংবর্ধনা প্রদান করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের। এখানে উপস্থিত ছিলেন না উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
এর আগে ২০১৯ সালেও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
এদিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জনও করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল প্রশাসনের। কিন্তু সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি অমুক্তিযোদ্ধাদের নিমন্ত্রণ করায় অনুষ্ঠান বর্জন করে গাংনী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের তথ্যমতে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতাপ্রাপ্তদের মধ্যে ভাতাবঞ্চিতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার ৮৪৬ জন ভাতা বঞ্চিত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে গাংনী উপজেলার ৩৪৫ জনের নাম আছে। তাদের নিমন্ত্রণ করায় আপত্তি তোলেন ভাতা সুবিধাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা।
তবে প্রশাসন বলেছে, প্রশাসনের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের অভ্যন্তরীণ।
বর্জনের বিষয়ে গাংনী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা প্রশাসন এক সংবর্ধনার আয়োজন করে। এ অবস্থায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা দাবি তোলেন, যারা গেজেটভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা নন, তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া হবে না। তারা তাদের গেজেট নিয়ম অনুযায়ী প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন। তার পরও অনুষ্ঠানে গেজেটভুক্ত নন এমন মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত থাকায় গেজেটপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা বর্জনের ডাক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেই অনুষ্ঠানটি বেলা আড়াইটায় শেষ হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহাজ উদ্দীন জানান, ‘প্রশাসনের আয়োজিত অনুষ্ঠান শুধু বর্জনই নয়, তাদের সংবর্ধনা এবং খাবারও গ্রহণ করা হয়নি। তবে যেহেতু প্রশাসনের লোকজন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এসে সংবর্ধনা দিয়েছেন, সেটি নেয়া হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ জানান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) কর্তৃক সর্বশেষ যাচাই-বাছাই করা হয়। সে সময় যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তাদের গেজেট থেকে বাদ দেয়া হয় এবং ভাতা বন্ধ করেও দিয়েছে সরকার। প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিতি থাকলে কোনো মুক্তিযোদ্ধা ওই অনুষ্ঠানে যাবেন না বলেও জানানো হয়েছিল। তার পরও তারা উপস্থিত থাকায় অনুষ্ঠান বর্জন করে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী খানম জানান, অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধারা না আসায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক, পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রশাসনের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে গিয়ে তাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে না আসার বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের অভ্যন্তরীণ। প্রশাসনের সঙ্গে তাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য