× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Naogaons slaughterhouse in neglect
google_news print-icon

অবহেলা-অযত্নে নওগাঁর ৬৭ বধ্যভূমি

অবহেলা-অযত্নে-নওগাঁর-৬৭-বধ্যভূমি
নওগাঁয় প্রায় ৬৭টি বধ্যভূমি চিহ্নিত করেছে একুশে পরিষদ নামে একটি সামাজিক সংগঠন। ছবি: নিউজবাংলা
নওগাঁর সবচেয়ে বড় গণহত্যার ঘটনাটি ঘটে মান্দা উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালের ২৮ আগস্ট সকালে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসর রাজাকার আলবদরদের সঙ্গে নিয়ে পাকুরিয়া গ্রাম ঘেরাও করে। তারা ওই গ্রামের বাসিন্দাদের পাকুরিয়া স্কুল মাঠে এনে জড়ো করে বেপরোয়া গুলি চালায়। এতে ১২৮ জন শহীদ হন।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সারা দেশের মতো নওগাঁতেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বর্বরতম হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, নারী নির্যাতন ও গণহত্যার মতো বিভীষিকার সাক্ষী রেখে গেছে।

ওই সময়ে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের বর্বরতার চিহ্ন নওগাঁর বিভিন্ন বধ্যভূমিতে রয়েছে। এসব স্থানে গণহত্যা চালিয়ে লাশগুলো গাদাগাদি করে পুঁতে রাখা হত।

দীর্ঘদিন এসব বধ্যভূমি আবিষ্কার করে যথাযথ সংরক্ষণ করে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি এসব বধ্যভূমির তালিকা তৈরি এবং কিছু কিছু বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও অধিকাংশই আজও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

স্মৃতিফলক ও সীমানাপ্রাচীর না থাকায় সারা বছরই এসব বধ্যভূমি ও গণকবর ঝোপঝাড়ে ভরে থাকে। অনেক সময় বধ্যভূমিতে গরু-ছাগল চরান স্থানীয়রা।

কিছু বধ্যভূমিতে ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ও স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদের পক্ষ থেকে স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। আবার যেগুলোতে স্মৃতিফলক রয়েছে সেগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ নেই।

একুশে পরিষদ, নওগাঁ নামের একটি সামাজিক সংগঠন জেলার ১১টি উপজেলায় অনুসন্ধান চালিয়ে এ ধরনের ৬৭টি বধ্যভূমির তথ্য সংগ্রহ করেছে।

এগুলোর মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ১৫টি, মহাদেবপুর উপজেলায় পাঁচটি, বদলগাছি উপজেলায় ছয়টি, মান্দা উপজেলায় চারটি, পত্মীতলা উপজেলায় সাতটি, আত্রাই উপজেলায় ১৩টি, রাণীনগর উপজেলায় তিনটি, ধামইরহাট উপজেলায় তিনটি, নিয়ামতপুর উপজেলায় দুটি, সাপাহার উপজেলায় আটটি এবং পোরশা উপজেলায় একটি বধ্যভূমি রয়েছে।

নওগাঁর সবচেয়ে বড় গণহত্যার ঘটনাটি ঘটে মান্দা উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালের ২৮ আগস্ট সকালে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের সঙ্গে নিয়ে পাকুরিয়া গ্রাম ঘেরাও করে। তারা ওই গ্রামের বাসিন্দাদের পাকুরিয়া স্কুল মাঠে এনে জড়ো করে বেপরোয়া গুলি চালায়। এতে ১২৮ জন শহীদ হন।

পাকুরিয়ার গণহত্যায় নিহত ৭৩ জনের নাম পাওয়া গেছে। পাকিস্তানি বাহিনী সেখান থেকে চলে গেলে গ্রামবাসী লাশগুলোকে একই কবরে পুঁতে রাখেন। এটি পাকুরিয়া বধ্যভূমি নামে পরিচিতি লাভ করে।

এই উপজেলায় অপর তিনটি বধ্যভূমির মধ্যে ১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বর ভাঁরশো ইউনিয়নের কবুলপুর গ্রামে গুপ্তির পুকুর পাড়ে পাকিস্তানি বাহিনী চারজনকে গুলি করে হত্যা করে। তারা মরদেহগুলো একই কবরে পুঁতে রাখে। এটি কবুলপুর গণহত্যা নামে পরিচিত।

জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা সংঘটিত হয় রাণীনগর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামে। ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল সকাল ৮টায় এই গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে ৫২ জন মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল আতাইকুলা গ্রামের সবুজ চত্বর। পরে একটি গর্তে লাশগুলো পুঁতে রাখা হয়। এটি আতাইকুলা গণহত্যা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

রাণীনগর উপজেলায় বড়বড়িয়া গ্রামে ১৯৭১ সালের ১৯ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাতজনকে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এটি বড়বড়িয়া গণহত্যা নামে পরিচিত।

এই উপজেলার অপর গণহত্যার ঘটনাটি ঘটেছিল হরিপুর রাণীভবানী জঙ্গলে। পাকিস্তানি বাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় শিশুসহ ১০ জনেরও বেশি মানুষকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।

১৯৭১ সালের ২৫এপ্রিল নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের একটি পুকুরে দোগাছি, কিদিরপুর, পিরোজপুর ও শিমুলিয়া ইত্যাদি গ্রাম থেকে ধরে এনে মোট ৫৫ ব্যক্তিকে গুলি করে এবং রাইফেলের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে রাখে।

মহাদেবপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামে ২৬ এপ্রিল সকাল ১০টায় নয় জনকে এবং একই দিনে উপজেলার মহিষবাতান গ্রামে আক্রমণ চালিয়ে মোট ৩০ জনকে হত্যা করে। এদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় পাওয়া গেলেও ১২ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের একই স্থানে মাটিচাপা দেয়া হয়।

বদলগাছী উপজেলায় ৮ নভেম্বর পাক হানাদারদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে কমপক্ষে দুইজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

৭ অক্টোবর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর এলাকায় দুইজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিসহ মোট সাতজনকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

বদলগাছি উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় নয়জন মুক্তিযোদ্ধা গন্তব্যে যাওয়ার সময় পাকিস্তানি বাহিনী তাদের আটক করে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। এসময় এদের মধ্যে ছয়জন শহীদ হন। নিহতদের সেখানে গণকবর দেয়া হয়।

অবহেলা-অযত্নে নওগাঁর ৬৭ বধ্যভূমি
নওগাঁর একটি বধ্যভূমিতে শহীদদের নামফলক। ছবি: নিউজবাংলা

পত্মীতলা উপজেলার নির্মইল ইউনিয়নের হালিমনগরে ৩০ নভেম্বর সকাল ১০টায় রাজাকারদের সহায়তায় ১৮ জন মানুষকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে তাদের সেখানে মাটিচাপা দেয়া হয়।

এছাড়া এই উপজেলার মধইল গ্রামে দুই জনকে, আমন্তপুর গ্রামে পাঁচজনকে, গগণপুরে চারজনকে এবং দুর্গাপুর জঙ্গলপাড়ায় কমপক্ষে সাতজনকে হত্যা করা হয়।

আত্রাই উপজেলায় তারাটিয়া গ্রামে গণহত্যায় ১০ জনকে, মহাদিঘী গণহত্যায় সাতজনকে, জালুপোঁওয়াতা কচুয়ার গণহত্যায় ১২ জনকে, পাইকড়া গণহত্যায় সাতজনকে গুলি করে ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

সিংসাড়া গ্রামে ২৫ মে রাতে হামলা চালিয়ে প্রায় ২৮ জনকে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়। মিরাপুর গ্রামে ১১ জুলাই সকাল ১০টায় পাকিস্তানি সেনারা আক্রমণ করে ২৫ ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। তাদের সেখানে একটি গণকবরে মাটিচাপা দেয়া হয়।

অবহেলা-অযত্নে নওগাঁর ৬৭ বধ্যভূমি
অবহেলায় পড়ে আছে নওগাঁর একটি বধ্যভূমি। ছবি: নিউজবাংলা

ধামইরহাট উপজেলার দুটি বধ্যভূমি রয়েছে। এসবের মধ্যে ১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট কুলফতপুর গ্রামে মাঠে কৃষি কাজ করার সময় ১৮ জনকে এবং পরে কুলফতপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ১৪ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়।

অপরদিকে উপজেলার পাগলা দেওয়ান গ্রামে প্রাপ্ত একটি গণকবরে অসংখ্য মানুষের মাথার খুলিসহ হাড় পাওয়া গেছে।

নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা গ্রামে ১৯৭১ সালের ১ মে ১০-১১টায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করে এবং ২৯ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টায় একই উপজেলার কাড়ালিপাড়া সোনারপাড়া গ্রামে ছয় ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়।

সাপাহার উপজেলায় সাপাহারমুক্ত করার সম্মুখযুদ্ধে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। অপরদিকে জেলার পোরশা উপজেলার শিষা গণপতিপুর গ্রামে ২৪ এপ্রিল ৪ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

একুশে পরিষদ নওগাঁর সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এম রাসেল বলেন, ‘আমরা ৬৭টির মতো স্থান চিহ্নিত করেছি। সেই জায়গাগুলো ক্রমশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। সেখানে বাড়ি-ঘর, দালানকোঠা নির্মিত হচ্ছে।’

যেখানে স্মৃতিফলক নাই, সেখানে স্মৃতিফলক নির্মাণ ও শহীদদের স্বীকৃতি প্রদান এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে গণহত্যার দিবসগুলো পালনের দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘অনেক বধ্যভূমির ওপরে মানুষ অবাধে চলাচল করে। সেখানে স্থানীয়রা গরু-ছাগল বিচরণ করায়। এ কারণে বধ্যভূমির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং শহীদদের প্রতি মারাত্মক অসম্মান করা হচ্ছে। বধ্যভূমিগুলোকে সরকারিভাবে দেখভালের দায়িত্ব নেয়া উচিত।’

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নওগাঁ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হারুন-আল-রশিদ বলেন, ‘এই স্তম্ভগুলো যদি তৈরি করা যায়, তাহলে তাদের অস্তিত্বে প্রমাণ হবে যে বাংলাদেশে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ হয়েছিল। তারা না থাকলেও প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারবে যুদ্ধে এই মানুষগুলো এখানে আত্মাহুতি দিয়েছে। জেলার যেখানে বধ্যভূমি আছে সেগুলোতে আমরা প্রাচীর ও স্মৃতিফলক করার জন্য চেষ্টায় আছি।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের গণহত্যার স্মারক হিসেবে গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের দাবি জেলার ইতিহাস সচেতন মানুষের। তবে সরকার যদি দ্রুত সহায়তা করত, তাহলে কাজগুলো আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিপাটি করে সম্পন্ন করা যেত।’

আরও পড়ুন:
ইছামতীর ভাঙনে বধ্যভূমি
ঢাবিতে ‘১৯৭১: অজানা গণহত্যা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি যুক্তরাষ্ট্রের
শত শত ইহুদির খুনিকে পাওয়া গেল যেভাবে
সন্ধান মেলেনি অনেক গণকবরের, চিহ্নিতগুলোও অরক্ষিত

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ, আসামীর যাবজ্জীবন

সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ, আসামীর যাবজ্জীবন

নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র‌্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।

মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।

মন্তব্য

হিল্লা বিয়ে না করার জেরে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' দম্পতি

হিল্লা বিয়ে না করার জেরে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' দম্পতি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।

এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।

গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।

বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।

আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।

গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।

আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In July 2021 the growth rate of revenue collection is about 20 percent 

জুলাই-২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২৫ শতাংশ 

জুলাই-২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২৫ শতাংশ 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।

জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।

আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।

রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The main accused arrested in the murder of UP member

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।

শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র‍্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন

র‍্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।

মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।

এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।

পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মন্তব্য

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।

কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।

ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”

স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
July in Kaliganj People from all walks of life took oath with millions of voices

কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ: লাখো কণ্ঠের সঙ্গে শপথ নিলেন সর্বস্তরের মানুষ

কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ: লাখো কণ্ঠের সঙ্গে শপথ নিলেন সর্বস্তরের মানুষ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।

বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Snake panic in Feni after flood

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।

মন্তব্য

p
উপরে