× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
BRTA is an accomplice of the bus hire scam
google_news print-icon

বাস ভাড়ায় জোচ্চুরির সহযোগী বিআরটিএ

বাস-ভাড়ায়-জোচ্চুরির-সহযোগী-বিআরটিএ
কিশোরগঞ্জের গাইটাল বাসস্ট্যান্ড থেকে বেশ কয়েকটি রুটে ঢাকার পথে ছাড়ে বাস। প্রতি রুটের দূরত্বই বিআরটিএ বেশি দেখিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: নিউজবাংলা
গাজীপুরের কাপাসিয়া হয়ে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটের দূরত্ব বিআরটিএ ২২ কিলোমিটার বাড়তি দেখিয়ে যাত্রীদের ঠকানোর সুযোগ করে দিয়েছে । যে রুটে ভাড়া হওয়ার কথা ছিল ২০০ টাকা, সেখানে আদায় করা হচ্ছে ২৭০ টাকা। তাও মালিকদের দাবি, তারা যাত্রীদের স্বার্থের কথা ভেবে ২০ টাকা করে কম আদায় করেন।

আবুল খায়ের খানের বাসা কিশোরগঞ্জের নগুয়ায়। সম্প্রতি ঢাকার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি গেছেন। গাজীপুরের কাপাসিয়া হয়ে বাইকের মাইল মিটারে দূরত্ব এসেছে ৯৮ কিলোমিটার। ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার দূরত্ব আসে ৭ কিলোমিটার। এই হিসাবে এই রুটের দূরত্ব হয় ১০৫ কিলোমিটার।

গুগল ম্যাপে এই পথের দূরত্ব দেখাচ্ছে ১০৮ কিলোমিটার।

প্রাইভেট কারে নিয়মিত ভাড়ায় যাত্রী আনা-নেয়া করেন হারিছ উদ্দিন। এই পথের দূরত্ব কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গাইটাল থেকে গাজীপুর হয়ে মহাখালীর দূরত্ব ১১০ কিলোমিটারের মতো। আর একরামপুর থেকে নরসিংদীর পাঁচদোনা হয়ে দূরত্ব হয় ১২৫ কিলোমিটারের মতো।’

কিন্তু সড়ক পরিবহন সংস্থা বিআরটিএ কাপাসিয়া হয়ে পথের দূরত্ব দেখিয়েছে ১৩০ কিলোমিটার আর এ কারণে ভ্রমণ না করেও বাড়তি ২০ বা ২২ কিলোমিটারের ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে বাসযাত্রীদের।

বিআরটিএ কীভাবে দূরত্ব মাপল, সেটি সংস্থাটির কিশোরগঞ্জের কর্মকর্তা কিছুই বলতে পারছেন না।

বাস ভাড়ায় নৈরাজ্য কেবল রাজধানীতে নয়, দূরপাল্লাতেও যে কম নয়, সেটির প্রমাণ হিসেবেই এই রুটটাকে ধরে নেয়া যায়।

ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে বেশ কয়েকটি পথে চলে বাস। এর মধ্যে একটি চলে গাজীপুরের কাপাসিয়া হয়ে। বিআরটিএ কেবল এই ২০ বা ২২ কিলোমিটারের বাড়তি ভাড়া আদায়ের সুযোগ করে দিচ্ছে তা নয়, তাদের নজরদারির অভাবে নির্ধারিত হারের চেয়েও বেশি হারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

বিআরটিএ ঠিক করে দিয়েছে দূরপাল্লায় প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া হবে ১ টাকা ৮০ পয়সা। এই হিসাবে এই পথের ভাড়া হওয়ার কথা ছিল ২০০ টাকা (একটি সেতুর টোলসহ)।

বিআরটিএ আরও বলে দিয়েছে, যদি বাসগুলো যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক যাত্রার ব্যবস্থা করে আসন কমায়, তাহলে আনুপাতিক হারে ভাড়া বাড়াতে পারবে। এই নীতিমালার সুযোগ নিয়ে আসন না কমিয়েও বাড়তি হারে ভাড়া আদায় করছে বাস কোম্পানিগুলো।

যদি ১৩০ কিলোমিটারও দূরত্ব হয়, তাহলেও ভাড়া হয় ২৩৪ টাকা। সঙ্গে ৯০ টাকা টোল থাকায় যাত্রীপিছু আরও আড়াই টাকা আসায় ভাড়া হওয়ার কথা বড়জোর ২৩৭ টাকা। কিন্তু ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ২৭০ টাকা।

বাস ভাড়ায় জোচ্চুরির সহযোগী বিআরটিএ

বাড়তি আদায় করেও পরিবহনমালিকদের দাবি, তারা যাত্রীদের কথা ভেবে ২০ টাকা করে কম আদায় করছেন। এই বিস্ময়কর দাবির পেছনে অবশ্য কারণ কী, সেটার ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারছে না।

বিষয়টি নিয়ে বিআরটিএর সহকারী পরিচালক বখতিয়ার উদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘৫১ সিটের ভাড়া ৪০ জনের ওপর ধরলে জনপ্রতি কিছুটা বাড়ে।’

কিন্তু এই রুটে তো ৫২ আসনের বড় বাসগুলো চলে না। ৪০ থেকে ৪২টি আসনেই যাত্রীদের কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাহলে আসন কমিয়ে ভাড়া বাড়ানোর যুক্তি তো খাটে না।

বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি, আগামী সমন্বয় মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এটাই একমাত্র রুট নয়

যাত্রীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক খানের তথ্য বলছে, কেবল এই রুট নয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটেও বেশি দূরত্ব দেখিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটার সুযোগ করে দিচ্ছে বিআরটিএ।

বাস ভাড়ায় জোচ্চুরির সহযোগী বিআরটিএ

নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরাও দেখতে পাচ্ছি এ রকম অসংখ্য রাস্তায় কিলোমিটার চুরি করা হয়েছে। এ রকম অভিযোগ আমরাও অনেক পেয়েছি। এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর অভিযোগও করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি চট্টগ্রাম। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-কুমিল্লা এই সড়কগুলোতে আমি যাতায়াত করি। প্রতিটি পথে ঢাকার দূরত্ব বেশি লিখতে দেখেছি।

‘সায়দাবাদ থেকে চট্টগ্রাম ২৬৪ কিলোমিটার হিসাব করে ভাড়া নির্ধারণ করেছিল। আমরা হিসাব করে পেয়েছিলাম ২১০ কিলোমিটার। আমরা অভিযোগ করার পরে তারা ২০ কিলোমিটার কমিয়ে দিয়েছিল।’

গুগল ম্যাপে সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব দেখাচ্ছে ২৩৬ কিলোমিটার।

বাসমালিকের দাবি, ভাড়া কম নিচ্ছেন

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বায়ক লেলিন রায়হান শুভ্র শাহিন বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তারা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম আদায় করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিআরটিএ থেকে যে চার্ট পেয়েছি, সে অনুযায়ী প্রতিটি পরিবহনে যাত্রীপ্রতি ১৫-২০ টাকা কম নিচ্ছি।’

বাস ভাড়ায় জোচ্চুরির সহযোগী বিআরটিএ

তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক পরিবহনশ্রমিক বলেন, ‘ডিজেলই বলেন আর গ্যাসই বলেন, দাম বাড়লে মালিকরা খুশি হয়।’

তিনি বলেন, ‘এ জেলার সকল মালিক ঐক্যবদ্ধ। তারা জানে সবাই মিলে যেই রকম বাসই চলতে দেয়, যাত্রীরাও এর বিকল্প না পেয়ে এগুলো দিয়েই চলাচল করবে। আপনি চাইলে ভালো মানের বাস এনে জেলায় চালাতে পারবেন না।

‘তারা (বাস মালিক সমিতি) যেকোনো সিস্টেমে আপনার পরিবহন বন্ধ করে দেবে। কারণ, একটা ভালো পরিবহন চললে তাদের লক্কড়-ঝক্কড় বাসগুলো অচল হয়ে পড়বে।’

কিশোরগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত ভাড়া কোথাও চলে না। এই ক্ষেত্রে আমাদের যাত্রীদের যে অধিকার, তা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। ’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাড়া তো বেশিই নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চালকেরা তাদের ইচ্ছামতো স্টপেজ দিয়ে যাত্রী তোলে। অভিযোগ থাকার পরেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

বাস ভাড়ায় জোচ্চুরির সহযোগী বিআরটিএ
কিশোরগঞ্জের বত্রিশ বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকার সায়েদাবাদ রুটে ছেড়ে যায় বাস। ছবি: নিউজবাংলা

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে বাড়তি ভাড়া আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি বাড়তি ভাড়া আদায় করে আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

জবাব নেই বিআরটিএ কর্মকর্তার

প্রকৃত দূরত্বের চেয়ে বেশি দূরত্ব দেখিয়ে বাসমালিকদের বেশি টাকা আদায়ের সুযোগ করে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ কিশোরগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক বখতিয়ার উদ্দিন কিছুই বলতে পারেননি।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আন্তজেলা পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করে হেড অফিস। হেড অফিস থেকে ভাড়া নির্ধারণ করে ওয়েবসাইটে দিয়ে দিয়েছে। ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমার কিছুই করার নাই।’

পরে আরও প্রশ্নের মুখে বখতিয়ার বলেন, ‘দূরত্বের ব্যাপারে সঠিক তথ্য পাবেন সড়ক ও জনপথ বিভাগে।

সেখানে গিয়ে কথা হয় সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক রোড রয়েছে। কোন পথে দূরত্ব কত সেটা বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।’

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে ভাড়া নির্ধারণ কমিটি আছে, তার ১৩ সদস্যের মধ্যে ১২ জনই বাসমালিক, শ্রমিক। একজন আছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি। তারা বাস ভাড়া নিয়ে কোনো কাজ করেন না।

এই কর্মকর্তাও জানান, দূরত্বের হিসাব তারা জেলা থেকে নেন না। ভাড়া নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে হেড অফিস থেকে হিসাব নিয়ে তারা চূড়ান্ত তালিকা করেন।

‘মালিক-প্রশাসন আঁতাত’

যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সব সময় অভিযোগ করে আসছি, দূরত্ব নির্ধারণ সব সময় আঁতাতের মধ্য দিয়ে হয়। কর্মকর্তারা বাসমালিকদের সুযোগ করে দিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেন।’

তিনি বলেন, ‘যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে ভাড়া নির্ধারণ কমিটি আছে, তার ১৩ সদস্যের মধ্যে ১২ জনই বাসমালিক, শ্রমিক। একজন আছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি। তারা বাস ভাড়া নিয়ে কোনো কাজ করেন না।

‘আমরা যারা নিবন্ধিত যাত্রী সংগঠন আছি, আমরা এই জায়গাটাতে বারগেইনিংয়ের সুযোগ চাইলেও দেয়া হয় না।’

যন্ত্রণা দেয় বাসের আসন

মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন মহাখালী টার্মিনাল থেকে টিকিট নিয়ে অনন্যা পরিবহনে এসে নামেন গাইটাল বাসস্ট্যান্ডে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাই জানডা শেষ। দাঁড়ান একটু টানাটুনা দিয়া লই। লক্কড়-ঝক্কড় বাসে বইয়া থাইক্যে শরীরের বারোটা বাইজ্যে গেছে গা।’

কী সমস্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিটের ওপরে ফ্যান আছে ঠিহই, সারা রাস্তাত একবার আর চলতে দেখলাম না। চালানির কথা কইছিলাম, হেলপারে কয় মামা গতকালকেও ঠিক আছিন। আজকে সকালে নষ্ট হইছে। যাত্রীডি নামাইয়া গিয়া আগে ফ্যান ঠিক করমু।’

আবদুল্লাহপুরের পর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরোটা রাস্তায় কী পরিমাণ ধুলাবালি এসে শরীরে পড়েছে তার কোনো হিসাব নেই। আপনি ইচ্ছে করলেই জানালা বন্ধ করবেন সেই সুযোগও নাই। কারণ এইসব পরিবহনের বেশির ভাগেরই জানালা নষ্ট।

তোফাজ্জলের পেছনেই ছিলেন নান্দাইল মুসুল্লী এলাকার বাসিন্দা রিমন আহাম্মেদ। তিনি নিজে থেকেই বলেন, ‘ভাই এগুলো জিজ্ঞেস করে কোনো লাভ নাই। এই পরিবহনে যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন কেবল তারাই জানেন কী পরিমাণ ভোগান্তি যে পোহাতে হয়!’

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহপুরের পর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরোটা রাস্তায় কী পরিমাণ ধুলাবালি এসে শরীরে পড়েছে তার কোনো হিসাব নেই। আপনি ইচ্ছে করলেই জানালা বন্ধ করবেন সেই সুযোগও নাই। কারণ এইসব পরিবহনের বেশির ভাগেরই জানালা নষ্ট।’

মাথায় হাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই দেখেন মাথার চুল জট বেঁধে গেছে। কাপড়চোপড়ের কথা নাইবা বললাম।’

তাদের সঙ্গে কথা শেষ করতেই এগিয়ে আসেন আরেক যাত্রী। তিনি ক্ষুব্ধ। কারণ হিসেবে বলেন, ‘এমন সাংবাদিক কত আইল আর গেল। টেলিভিশন আর পত্রিকায় রিপোর্টও করল, কিন্তু পরিবহন সেবার মান তো আর উন্নত হইলো না।

‘এরা (পরিবহনমালিক) এই জিনিসটা খুব ভালো করেই জানে, মিডিয়াতে নিউজ হইলে দুই-এক দিন একটু-আধটু আলোচনা/সমালোচনা হবে, তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে।’

ছারপোকাও কামড়ায়। যাদের অ্যালার্জি আছে তারা এই বাসে পাঁচ ঘণ্টা জার্নি করলে বাসায় গিয়ে আরও পাঁচ ঘণ্টা চুলকাবে এইটুকু আমি নিশ্চিত।

ইটনা উপজেলার ছিলনী গ্রামের বাসিন্দা হাসিব রহমান বলেন, ‘এই বাসের সিটগুলো এত কাছাকাছি যে হাঁটু নাড়াচাড়াও করা যায় না। আবার দূরত্বের পরিমাণে ভাড়াও নেয় বেশি।

‘তা ছাড়া ছারপোকাও কামড়ায়। যাদের অ্যালার্জি আছে তারা এই বাসে পাঁচ ঘণ্টা জার্নি করলে বাসায় গিয়ে আরও পাঁচ ঘণ্টা চুলকাবে এইটুকু আমি নিশ্চিত।’

বাসে অতিরিক্ত আসন, যাত্রীদের চলাচলে ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে গতানুগতিক জবাব আসে তার কাছে। বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন বাসগুলো বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সব রুটেই বাড়তি ভাড়া

ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে বাস চলে নানা দিক দিয়ে। একরামপুর, বত্রিশ ও গাইটাল বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে বাসগুলো। একটি রুট গাজীপুরের কাপাসিয়া দিয়ে জয়দেবপুর চৌরাস্তা হয়ে; একটি নরসিংদীর পাঁচদোনা হয়ে, একটি ভৈরব-নরসিংদী হয়ে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত।

একরামপুর ও গাইটাল থেকে নরসিংদী হয়ে যেসব গাড়ি চলে, সেগুলোর দূরত্ব ১২০ থেকে ১২৫ কিলোমিটার। আর ভৈরব হয়ে চলা পথ ঢাকার জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত গুগল ম্যাপে ১৩৫ টাকা, বিআরটিএর রুটে ১৪০ কিলোমিটার।

কিন্তু গাইটাল বাসস্ট্যান্ডে ভৈরব হয়ে ঢাকায় চলা যাতায়াত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আনিসুজ্জামান রিপন দাবি করেন, ‘কিশোরগঞ্জ থেকে সায়েদাবাদের দূরত্ব ১৫৩ কিলোমিটার।’

একরামপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত চলা উজান-ভাটি আর গাইটাল থেকে মহাখালী পর্যন্ত চলা অনন্যা ও অনন্যা ক্লাসিক ভাড়া নেয় ২৭০ টাকা। আর গাইটাল বাসস্ট্যান্ড থেকে ভৈরব হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত চলা যাতায়াত পরিবহনের (গেইটলক) ভাড়া নেয়া হয় ৩০০ টাকা। যাতায়াত পরিবহন (লোকাল) ২৫০ টাকা।

করিমগঞ্জ উপজেলার চামড়াবন্দর থেকে নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি পর্যন্ত চলে দুটি পরিবহন। একটি ভাটিবাংলা পরিবহন, অন্যটির নাম হাওরবিলাস। এই বাসগুলোতে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৩০০ টাকা।

শাহপরান পরিবহন নামের একটি বাস যায় মিরপুর-১৪ নম্বরে। এস ইসলাম নামের একটি বাস চলে কামরাঙ্গীরচরে। যোগাযোগ নামের আরেকটি বাস চলে চাঁনখারপুলে। এগুলো ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করে। প্রতিটি বাসেই অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর এর কারণ কৌশলে বাড়তি দূরত্ব দেখানো।

আরও পড়ুন:
টিসিবি-বিআরটিএর লোকবল সংকট বেকারত্ব ও আমলাতন্ত্রের বেড়াজাল
জালিয়াতি করে দেয়া হতো আসল ড্রাইভিং লাইসেন্স
অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় ৩৩৬ বাসকে জরিমানা
চট্টগ্রাম বিআরটিএতে র‍্যাবের অভিযান, আটক ৩০
বিআরটিএ অফিসে ঘুষ নেয়ার ভিডিও

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
During the illegal infiltration the Bangladeshi detained with the smugglers on the Garo Hill border

অবৈধ পথে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে পাচারকারীসহ ৭ বাংলাদেশী আটক

অবৈধ পথে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে পাচারকারীসহ ৭ বাংলাদেশী আটক

অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।

আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।

বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Police Super Ujjal Kumar Roy inaugurated the Loto Showroom in Jhalakathi

ঝালকাঠিতে লোটো শোরুম উদ্বোধন করলেন পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়

ঝালকাঠিতে লোটো শোরুম উদ্বোধন করলেন পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়

ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।

এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।

পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।

কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে

মন্তব্য

সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ, আসামীর যাবজ্জীবন

সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ, আসামীর যাবজ্জীবন

নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র‌্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।

মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।

মন্তব্য

হিল্লা বিয়ে না করার জেরে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' দম্পতি

হিল্লা বিয়ে না করার জেরে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' দম্পতি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।

এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।

গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।

বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।

আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।

গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।

আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In July 2021 the growth rate of revenue collection is about 20 percent 

জুলাই-২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২৫ শতাংশ 

জুলাই-২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২৫ শতাংশ 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।

জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।

আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।

রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The main accused arrested in the murder of UP member

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।

শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র‍্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন

র‍্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।

মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।

এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।

পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মন্তব্য

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।

কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।

ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”

স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

p
উপরে