× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Not good for coastal tiger widows
google_news print-icon

ভালো নেই উপকূলের ‘বাঘ বিধবারা’

ভালো-নেই-উপকূলের-বাঘ-বিধবারা
স্বামীকে বাঘে নেয়ায় ধুঁকে ধুঁকে জীবন চলছে ‘বাঘ বিধবা’ সোনামণির। ছবি: নিউজবাংলা
সোনামণি জানান, ১৯৯৯ সালে তার স্বামী রাধাকান্ত সরদার বন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের কবলে পড়েন। পরে আর জীবিত ফিরে আসেননি। স্বামীর লাশ পর্যন্ত খুঁজে পাননি সঙ্গীরা। নিমিষেই সংসার তছনছ হয়ে যায় তার।

‘টাকা-পয়সা নেই, ছেলেরা দেখে না। কী খাব। কষ্টের তো শেষ নেই। নাম তো অনেকবার লিখল, অনেকবার ছবি তুলে নিয়ে গেল। কই কিছুই তো পাইনি।’

কথাগুলো বলছিলেন ‘বাঘ বিধবা’ সোনামণি। দুই স্বামীকে বাঘে নেয়ার কারণে এই নামটি এখন অনেকের কাছেই পরিচিত।

মূলত যাদের স্বামী বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন, স্থানীয়ভাবে তাদের বলা হয় ‘বাঘ বিধবা’।

দক্ষিণাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবনের কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা মুন্সীগঞ্জ গ্রামের জেলেপাড়ায় তার বাড়ি। স্বামীকে বাঘে নেয়ার দায় নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলছে জীবন।

সোনামণি জানান, ১৯৯৯ সালে তার স্বামী রাধাকান্ত সরদার বন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের কবলে পড়েন। পরে আর জীবিত ফিরে আসেননি। স্বামীর লাশ পর্যন্ত খুঁজে পায়নি সঙ্গীরা।

নিমিষেই সংসার তছনছ হয়ে যায় তার। সোনামণি কীভাবে সংসার চালাবে তা ভেবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সে সময় স্বামীহারা একজন নারীকে অবহেলার চোখে দেখা হতো।

তিনি জানান, দেবরের সংসারে থাকতে অনেক ধরনের কথা শুনতে হয়েছে। বাবার সংসারেও জায়গা হয়নি তার। প্রতিবেশীরা অপয়া, স্বামী খেকো, অলক্ষ্মী বলে ধিক্কার দিতেন।

একপর্যায়ে অবিবাহিত দেবর ভূবেন সরদারের সঙ্গে সোনামণির দ্বিতীয় বিয়ে হয়। ভূবেনও সুন্দরবনে মাছ ধরে উপার্জন করতেন। তখন সোনামনির দুঃখ কিছুটা কমে। এ সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে হয় তার।

২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পরপরই ভূবেন বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরার জন্য গেলে বাঘের আক্রমণে মারা যান। প্রথম স্বামীর মতো লাশ ফিরিয়ে আনতে পারেনি সঙ্গীরা।

দ্বিতীয় স্বামীকে হারিয়ে সোনামণির ঠাঁই হয়নি শ্বশুরবাড়িতে। সন্তানদের বাঁচানোর জন্য লোকের বাড়িতে কাজ করে, মাছ ধরে সংসার চালান। ছেলেমেয়েরা বড় হতে থাকে। নিজের আয়ের টাকায় দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলে নিয়ে তার স্বপ্ন ছিল সুখী হওয়ার।

ছেলেরা বড় হলে তাদেরও বিয়ে দেন সোনামণি। পরে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় তারা পৃথক হয়ে যান।

জমি বলতে জেলেপল্লিতে ছোট এক কুঠিঘর। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু ছাড়া কিছু নেই। এই পরিস্থিতিতে সোনামণি বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা চালান।

সোনামণির অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার থেকে কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। আমাদের বলা হয়েছিল ২০০২ সালে যাদের স্বামী মারা গেছে তারা অনুদান পাবেন। আমাদের ফরেস্টার অফিসে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। আবেদন করেছিলাম, কিন্তু কোনো সহযোগিতা করা হয়নি।

ভালো নেই উপকূলের ‘বাঘ বিধবারা’
উপজেলার সোরা গ্রামের স্বরবানু খাতুনের স্বামী বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন ২২ বছর আগে। ছবি: নিউজবাংলা

‘এখন আমার থাকার জায়গা নেই। সরকার থেকে যদি আমার একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে খুবই ভালো হতো।’

শ্যামনগরের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এমন অনেক ‘বাঘ বিধবা’ নারীর সঙ্গে দেখা মেলে। কেউ মাছ ধরতে গিয়ে, কেউ মধু আহরণ করতে, কেউ আবার কাঠ কাটতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। উপকূলের নারীদের গল্পগুলো প্রায় একই রকম।

উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা গ্রামের স্বরবানু খাতুনের স্বামী বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন ২২ বছর আগে। তিনি বলেন, ‘আমার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। স্বামী যখন জীবিত ছিল তখন আমাদের জায়গা ছিল, জমি ছিল, সেখানে সবজি হতো, ধান হতো। ঝড়ে লবণ পানির কারণে আমাদের সবকিছু নষ্ট হয়ে যায়। তারপরে ছেলে-মেয়েদের খাদ্য, বাসস্থান সবকিছু সংকুলান হতো না জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায়। আমার স্বামী বন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়ে সুন্দরবনের মধু ভাঙতে যায়। সেখানে বাঘের আক্রমণে মারা যায়।’

তিনি বলেন, ‘এরপর শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। সে সময় শাশুড়ি বলত, ‘অপায়া, অলক্ষ্মী, ডাইনি, তোর কারণে আজ আমার ছেলেটাকে জঙ্গলে বাঘে খেয়েছে। আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যা।’ এসব কথা বলে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ছেলেমেয়ের হাত ধরে বাপের বাড়ি চলে আসি।’

স্বরবানু খাতুন বলেন, ‘আসার পরে বাপের বাড়িতেও আমাদের জায়গা হয় না। ভাবি বলে স্বামীকে বাঘে খাওয়াইছে, আমাদেরও খাওয়াবে- এই বলে আমাদের বের করে দেয়।

‘বাঘ বিধবাদের কেউ মূল্যায়ন করে না। চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছে গেলে বলে তোদের কতজনকে বাঘে খাবে, আর কতজনকে আমরা দেখব। তোদের মতো তোরা কাজকর্ম করে খা।’

তিনি বলেন, ‘এত দিন আমরা আশায় ছিলাম সরকার আমাদের বাঘ বিধবাদের জন্য কিছু করবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, আমরা বাঘ বিধবারা সব জায়গা থেকে অবহেলিত। আমাদের জন্য সরকারিভাবে যেন একটা উদ্যোগ নেয়া হয়।’

একই গ্রামের মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘১৮ বছর আগে আমার স্বামী সরকারি পাস নিয়ে জঙ্গলে গিয়েছিল। সেখানে বাঘের আক্রমণে নিহত হন। সরকারিভাবে পাস নিয়ে সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত হলে সরকারিভাবে অনুদান পায়, কিন্তু আমি একটি টাকাও পায়নি। মাঝেমধ্যে কিছু এনজিও ঈদের সময় চাল, ডাল দিয়ে একটু সহযোগিতা করে, তবে সেটা সীমিত। আগে নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাতাম। এখন বয়সের কারণে আর পারছি না।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশের পর কোনো বনজীবী বাঘের আক্রমণে হতাহত হলে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক অনুদানের নিয়ম রয়েছে।

যার নামে বোর্ডের লাইসেন্স করা থাকে তারা এটা পায়, যার নামে লাইসেন্স নেই সে বাঘের আক্রমণে নিহত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকারি অনুদান পায় না।

কী বলছেন জনপ্রতিনিধি

শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন বলেন, ‘সুন্দরবনের উপকূলীয় সাধারণ মানুষ জীবন নির্বাহের জন্য অবৈধভাবে বনের ভেতর প্রবেশ করে। এতে বাঘের আক্রমণে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। বাঘের আক্রমণে নিহতের স্ত্রীকে আমরা একটা নাম দিয়েছি বাঘ বিধবা।

‘আমাদের শ্যামনগর উপজেলায় সাড়ে ৩০০ থেকে পৌনে ৪০০-র মতো বাঘ বিধবা রয়েছে। সরকারি যেসব বরাদ্দ আসে, আমরা তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দিয়ে থাকি।’

তিনি বলেন, ‘আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি অনুদানের ব্যবস্থা করেছি। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বাঘের আক্রমণে নিহতদের পরিবারে ১০ হাজার টাকার বরাদ্দ দেয়।

‘বিভিন্ন এনজিও, সংস্থাগুলো বাঘ বিধবাদের বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি সরকারি সহায়তায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে একটি বরাদ্দ দেয়া হয়। যার নামে বোর্ডের লাইসেন্স করা থাকে, তারা এটা পায়। যার নামে লাইসেন্স নেই সে পায় না। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, যে ব্যক্তি নিহত হয় সেই ব্যক্তিকে যেন ক্ষতিপূরণটা দেয়া হয়।’

শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন আসছে কি না আমি জানি না। তবে এটি অচিরেই চলে আসবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ধরনের অসহায় পরিবারের জন্য আরও সরকারি সহায়তা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

বন কর্মকর্তার ভাষ্য

এদিকে যার নামে বোর্ডের লাইসেন্স করা থাকে তারা সরকারি অনুদান পায়, যার নামে লাইসেন্স নেই সে বাঘের আক্রমণে নিহত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকারি অনুদান পায় না- এমন কিছু জানেন না সুন্দরবনে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক কে এম হাসান। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তারা কাগজপত্র জমা দিলে ৩ লাখ টাকা করে পায়। আগে ছিল ১ লাখ, এখন ৩ লাখ টাকা করে পায়। গত ১৫ তারিখের অনুষ্ঠানে ১ জনকে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমন কোনো কিছু তো নাই। আইনে আছে যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই টাকা পাবে। তার নামে পাস থাকলে বা সে যদি সহযোগী হিসেবেও যায়, একজন মৃত ব্যক্তির সহযোগী হিসেবে গেলেও সে টাকা পাবে। এখন কার নামে বোর্ড আছে, কার নামে লাইসেন্স আছে, এটা তো দেখার বিষয় না। পাশে কার নাম আছে, সেটাই দেখার বিষয়।’

আরও পড়ুন:
সেই গ্রামে আর বাঘ মেলেনি, অনুসন্ধান স্থগিত
বাঘের মুখে পড়েও বন ছাড়েননি ‘টাইগার কামাল’
ঘাসের ক্ষেতে মেছোবাঘের দুই শাবক
চিতার মরদেহ উদ্ধার, গ্রামবাসীকে ঘরে থাকার পরামর্শ
বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে চিতা বাঘের মৃত্যু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Village Court Awareness Workshop held in Noakhali 

নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত 

নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত 

নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Jessore court disappears from the document of the case

যশোর আদালতে মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি গায়েব

যশোর আদালতে মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি গায়েব

যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।

এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’

অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।

যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’

আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Attack on my newspaper representative in Daulatpur

দৌলতপুরে আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধির উপর হামলা

দৌলতপুরে আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধির উপর হামলা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।

গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।

এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।

এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।

এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bangladesh Air Force Chief inaugurated the next development program in Feni

ফেনীতে বন্যা পরবর্তী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান

ফেনীতে বন্যা পরবর্তী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী এলাকায় গত '২৪ এর ভয়াবহ বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক, সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার (২৩ জুন) সকাল ১১ টায় ফেনী ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুরে হাবিব উল্যাহ খাঁন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে এক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি।

বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী এলাকায় বন্যা পরবর্তী উন্নয়নমূলক সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বৃক্ষরোপণ ও পরে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন। উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় ছাগলনাইয়া উপজেলার হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় এর নবনির্মিত শাহীন ভবন উদ্বোধন এবং দুর্গাপুর সিংহনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নুরুল কোরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন।

এ ছাড়া বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী জেলার বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, বন্যা দুর্গতদের জন্য মেডিকেল সেবা পরিচালনা ও চিকিৎসা সেবা সহায়তা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিমান বাহিনী প্রধান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী জেলায় ২০২৪ সালের আকস্মিক বন্যাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সময়ে বিমান বাহিনীর ভুমিকার ভূয়সী প্রসংশা করেন এবং পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সকল প্রতিষ্ঠান আর্থিক, ত্রাণ ও বিভিন্নভাবে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেছেন তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বিমান বাহিনীর উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও বিমান বাহিনী দেশ ও জনগণের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

তিনি আরো বলেন, বন্যার সাথে তৎকালীন বৈরী আবহাওয়া ও বিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পেশাদারিত্বের সাথে বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসে, যা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনায় এবং বিমান বাহিনী প্রধানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ভয়াবহ এ বন্যাদুর্গত কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং বিশেষ করে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলায় হেলিকপ্টার ও ইউএভি এর মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে এরিয়াল রেকোনাইসেন্স মিশন পরিচালনা করে বন্যা দুর্গত মানুষের সহায়তায় প্রয়োজনীয় জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

বিমান বাহিনীর সূত্র জানায়, সামগ্রিকভাবে বিমান বাহিনী বন্যা পরবর্তী এ পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, ধর্মীয় উপাসনালয় ও রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ এবং সংস্কার কার্যক্রম ইতিমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, দূর্গাপুর, ছাগলনাইয়্যা-এ অবস্থিত হাবিব উল্যাহ্ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রমবর্ধমান ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় জনসাধারণের চাহিদা বিবেচনা করতঃ শাহীন ভবন নামে একটি চারতলা ভিত বিশিষ্ট দুইতলা ভবন আসবাবপত্রসহ নির্মাণ করা হয়েছে, যেটি দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে। এ উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করেছে ঢাকাস্থ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার ও বিমান বাহিনী ঘাঁটি একে খন্দকার।

অনুষ্ঠানে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমান ঘাঁটি বাশারের এয়ার অধিনায়ক, বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ, ফেনী জেলা প্রশাসক, সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The ransom claims by abducting students of Barisal University

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি করে দুষ্কৃতিকারীরা।

পরে মুক্তিপণ না পেয়ে মোবাইল ফোন-মানিব্যাগ রেখে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।

সোমবার (২৩ জুন) বরিশাল থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার পথে মাদারিপুরে সকাল ৮টার দিকে বাস থেকে নামলে অপহরণের শিকার হন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. আসাদ, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায়।

আসাদের পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত শিক্ষার্থীর বড় চাচা মারা যাওয়ায় আজ ভোরে ৬টায় বরিশাল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে মাদারিপুর পর্যন্ত যান বাসে। বাস থেকে নেমে মাদারিপুর নেমে ঝিনাইদহে যাওয়ার জন্য গাড়ি খুঁজতেছিলেন এমন সময় মাইক্রোবাসটি তাকে ঝিনাইদহে পৌঁছে দিবে বলে উঠিয়ে নেয়। উঠিয়ে নেয়ার পর অপহরণকারীরা পরিবারের সঙ্গে ০১৫১৮৪৯৫৬০৯ নম্বর থেকে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি পরিবারের মাধ্যমে জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশের সহযোগিতা নেন, প্রশাসনের তৎপরতার খবর পেয়ে অপহরনকারীরা তার সব কিছু রেখে তাকে ছেড়ে দেন।

এ বিষয়ে আসাদের সহপাঠী রাফিদ হাসান জানান, আসাদের চাচা মারা যাওয়ায় ও আজ ভোরের দিকে বরিশাল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন, পথিমধ্যে এই ঘটনার শিকার হন ।

এ বিষয়ে আসাদের বাবা বলেন, আসাদের বড় চাচা গতকাল রাতে মারা যাওয়ায় আজকে ভোরে বাড়ি আসার পথে মাদারিপুর থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না পেয়ে ওর মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। পরে অন্য একটি বাসে করে আসাদ বাড়ি ফিরছে বলে জানান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সোনিয়া খান সনি বলেন, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে বরিশাল থেকে ঝিনাইদাহ বাড়ি যাওয়ার পথে মাদারিপুরে আটকিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে, এমন ঘটনা জেনে সাথে সাথে মাদারিপুর পুলিশকে কল করি। শিক্ষার্থী এখন নিরাপদে আছে সে বাড়ি ফিরতেছে শিক্ষার্থী এবং পরিবারের সাথে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The death of a young man in Daulatpur

দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু

দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাসেম আলী (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২২ জুন) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ গোড়ের পাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত হাসেম আলী দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোবরগাড়া গ্রামের মৃত আছান শেখের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন একটি ভবনে ইট ভেজাতে গিয়ে বৈদ্যুতিক মোটরে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন হাসেম আলী। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Shabbi Student Rape Proctor is the head of the three member committee

শাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ: প্রক্টরকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি

শাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ: প্রক্টরকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমানকে প্রধান করে শনিবার এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো সাইফুল ইসলাম এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক বেলাল শিকদার।

এসব তথ্য জানিয়ে শাবি প্রক্টর মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। নির্ধারিত সময়ে রিপোর্ট দেবো। এর সাথে আরও কেউ জড়িত কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে। যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এরআগে শুক্রবার বিকেলে ওই ছাত্রী বাদি হয়ে সিলেটের কতোয়ালি থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থ’র নাম উল্লেখ করে অজ্ঞতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

আদনান ও পার্থকে বৃহস্পতিবার রাতেই আটক করে পুলিশ। পরে মামলায় তদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা দু'জনই শাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।


বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার শান্ত তারা আদনান নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমানের অনুসারী ছিলেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসীূচতে তাকে দেখা গেছে। আদনান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড দল ‘নোঙর’-এরও সদস্য ছিলেন।

অপরদিকে, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আরেক শিক্ষার্থী স্বাগত দাস পার্থ গত বছরের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছিলেন বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। তার ফেসবুকে প্রোফইলেও জুলাই আন্দোলনের সমর্থনে ছবি যুক্ত রয়েছে। তবে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ, পার্থ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তবে তিনি তেমন সক্রিয় ছিলেন না।

এদিকে, পার্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যসংগঠন ‘দৃক থিয়েটার’-এর কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ এবং বিশ্ববিদ্যালের শৃঙ্খলা-বডি সূত্রে জানা যায়- গত ২ মে সন্ধ্যারাতে সহপাঠী শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থের সঙ্গে শহরের কনসার্টে যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। কনসার্টে যাওয়ার পূর্বে তারা ওই ছাত্রীকে সুরমা এলাকার একটি মেসে নিয়ে যান। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণ করেন আদনান এবং পার্থ। একইসাথে এই ঘটনার ভিডিও এবং মেয়েটির নগ্ন ছবি ধারণ করেন। পরে ওইসকল ভিডিও ও নগ্ন ছবি দেখিয়ে আদনান এবং পার্থ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করছিলেন এবং ঘটনা জানাজানি করলে ভিডিও ও ছবি অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করলে প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ আদনান এবং পার্থকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। এরপর প্রক্টরের সঙ্গে আলোচনা শেষে তাদেরকে থানায় পুলিশ হেফাজতে নেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, 'বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির বিষয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি আমরা। বর্তমানে অপরাধীরা পুলিশ হেফাজতে আছে এবং মামলার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।'

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, 'প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা নেওয়া হচ্ছে।'

মন্তব্য

p
উপরে