বাংলাদেশ-কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক উদযাপন করেছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি)। এ উপলক্ষে বুধবার কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। সম্মানীয় অতিথি এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকলস।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের (সিইউবি) প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
‘কানাডা-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ: আ জার্নি অফ ফিফটি ইয়ারস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অতিথিরা আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতা আগামীতে আরও শক্তিশালী হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সালমান এফ রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশকে প্রথম দিকে স্বীকৃতি দেয়া দেশগুলোর মধ্যে কানাডা অন্যতম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পরিচালনা করছিলেন, কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বাবা তখন সেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার গভীর বন্ধুত্ব ছিল।
‘সেই ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের ধারাবাহিকতায় চলমান বন্ধুত্ব অটুট থাকবে, সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় কানাডার ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য আমি দেশটিকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ-কানাডার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, পারস্পরিক সহযোগিতা দিনে দিনে আরও শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভেবে রেখেছিলেন বলেও জানান সালমান এফ রহমান।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন, তিনি যে কাজটি করতে যান, দেখতে পান সেটিই ভেবে রেখেছেন জাতির পিতা। জাতির পিতার সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি তা বাস্তবায়ন করছেন।’
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ২১ বছর দেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো পরিসংখ্যান তুলে ধরতে চাই না। নতুন প্রজন্মকে বলব, আপনাদের সামনে তথ্য আছে। আপনারা সেই ২১ বছরের সঙ্গে গত ১৩ বছরকে তুলনা করুন। তাহলে দেখবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কতটা অভাবনীয় উন্নতি করেছে।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কোনো বিকল্প নেই। আর সরকারের ধারাবাহিকতা ছিল বলেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। ক্ষমতায় যিনি থাকবেন, তাকেও মানুষের কল্যাণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হয়। আর সে কারণেই আজকে আমাদের এই অর্জন।’
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের মতো বাংলাদেশকেও চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। সালমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সরকারের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। পররাষ্ট্রনীতিতে বঙ্গবন্ধুর এই দর্শন নিয়ে দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েশন যথেষ্ট না, বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি যথেষ্ট না। শিক্ষার্থীদের চাকরির বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নিজের দক্ষতা তৈরি করতে হবে। দক্ষতাকে বহুমুখী করতে হবে। একাধিক ভাষা শিখতে হবে। তাহলে বিশ্ববাজারে লড়াই করে সফল হওয়া যাবে।’
দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে দক্ষতা বাড়ানোর ওপর জোর দেয়ার আহ্বান রেখে তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কারিগরি বা হাতেকলমে প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকে না। সেদিকে নজর না দিলে বিশ্ব বাজারের চাহিদা পূরণ সম্ভব নয় ‘
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উৎকর্ষ বাড়াতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পেশাদার ও সফল ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানাতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান রাখেন তিনি।
উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র কানাডা এ বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করবে, বিশেষ করে দক্ষতা বাড়ানো সম্পর্কিত শিক্ষার ক্ষেত্রে। কারণ, আমরা তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে শিক্ষা নিতে পারি। আমি জেনেছি, কানাডায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নেয়ার আগে শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা নিতে হয়, যা তাদের দক্ষ করে তোলে।’
সিইউবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকলস।
গত ৫০ বছরের বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করেন তিনি।
লিলি নিকলস বলেন, ‘১৯৮০ সালে বিশ্বে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশ। বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ ছিলেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। আর এখন সেটা ৯ শতাংশ।
‘যদি বাংলাদেশের কথা বলি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ। আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে তা হয়েছে ৯ শতাংশ। এটি একটি অসাধারণ অর্জন।’
উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশের উন্নীত হওয়ার বিষয়টি সামনে এনে লিলি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থেকে উচ্চ মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছে। ৮০ বিলিয়ন ডলারের দেশটির অর্থনীতি এখন ৩২৪ বিলিয়ন ডলার। এটাকেও অনন্য অর্জন বলতে হবে।’
তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়ের তরুণদের ‘সোনালি প্রজন্ম’ আখ্যা দিয়ে ঢাকায় কানাডার দূত বলেন, ‘যত সমস্যা থাকুক না কেন, আমি বিশ্বাস করি, ইতিহাসে আপনারা সবচেয়ে ওয়েল ইক্যুইপড জেনারেশন। যারা শান্তিপূর্ণভাবে আজকের এবং আগামী দিনের সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন।’
কানাডা এবং বাংলাদেশের গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীর ঐক্যবদ্ধ পথ চলাতেও আমরা পাশে থাকব।’
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
তিনি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পার করেছে কানাডা-বাংলাদেশ। আমরা এটিকে আরও এগিয়ে নিতে চাই। গত এক দশকে বাংলাদেশের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্যিক সম্পর্কেরও অনেক অগ্রগতি হয়েছে। যা আর্থিক হিসাবে কানাডিয়ান ডলারে ২ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কানাডা সব সময় বাংলাদেশকে সক্ষমতা বাড়ানো, টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে আসছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই বন্ধুত্ব আগামী দিনে আরও দৃঢ় হবে।’
চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের জন্য কানাডার হাইকমিশন প্রথম দিন থেকে দিকনির্দেশনা এবং সহায়তার উৎস হিসেবে কাজ করেছে। তাদের সহায়তায় আমরা একটি বিশ্বমানের পাঠ্যক্রম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।’
ঢাকায় খুব শিগগিরই একটি কানাডিয়ান স্কুল এবং কানাডিয়ান কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটি তৈরির ক্ষেত্রে কানাডিয়ান হাইকমিশন তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও জানান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ফল ও নেতৃত্বের গুণাবলির জন্য তিন শিক্ষার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হয়। তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
বাণিজ্য অনুষদের শাকিলা মজুমদার, প্রকৌশল অনুষদের মো. জহিরুল ইসলাম, কলা অনুষদের নওশীন মাইশা এই স্বীকৃতি পেয়েছেন।
আমন্ত্রিত অতিথিদের হাতে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের পক্ষে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
বাংলাদেশ-কানডার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উদযাপনে অনুষ্ঠানের শুরুতে কেক কাটেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আবদুল মোনেম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম, পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কমকর্তা তারেক রিয়াজ খান, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হকসহ সব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:
দূষিত বায়ুদূষণ বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫ বছর ৫ মাস কমিয়ে দিচ্ছে। বিষাক্ত বায়ুর এই প্রভাব রাজধানী ঢাকায় বিশেষভাবে তীব্র। বায়ুদূষণ এই শহরের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৯ মাস কমিয়ে দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গত সপ্তাহের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ হলো আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বহিরাগত হুমকি। বাংলাদেশে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষের সবাই এমন এলাকায় বাস করে, যেখানে বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট দূষণের বার্ষিক গড় মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা (৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) এবং দেশের জাতীয় সীমা (৩৫ মাইক্রোগ্রাম) উভয়ই ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার মতো জায়গায় এই মাত্রা ৭৬ মাইক্রোগ্রামের ওপরে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা মেনে চললে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫.৫ বছর বেশি হতে পারে।’
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সরকার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বায়ুর মান দ্রুত খারাপ হচ্ছে।
ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। আমার সন্দেহ আছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী আছে কিনা।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বায়ু দূষণ এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি শনাক্ত করার জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি খালি চোখেই দেখা যায়।’
বাংলাদেশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ধোঁয়াশা’ একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা। প্রায় প্রতিদিন সকালেই তাদের ঢেকে রাখে এই ‘ধোঁয়াশা’। কিন্তু আরও বিপজ্জনক হলো, দূষণ যেগুলো চোখ দেখতে পায় না: কণা পদার্থ, PM2.5 — ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম প্রশস্ত বায়ুবাহিত ক্ষুদ্র কণা- এগুলো ফুসফুস এবং রক্তপ্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে মারত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশে PM2.5-এর মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ই কেবল এই মাত্রা কমেছিল। কিন্তু সেই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি।
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত বছরের AQLI রিপোর্টে, আমাদের গড় আয়ু ৪.৮ বছর কমেছে, এবং এই বছর তা ৫.৫ বছর হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটি দেখায় যে, রাষ্ট্র তার জনগণের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেনি, যার অর্থ বাংলাদেশ সরকারও এই প্রতিবেদনের ফলাফলের সঙ্গে একমত। রাষ্ট্র এখানে দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে তালিকাভুক্ত করেন, বিশেষত ইটের জন্য কয়লা বা কাঠ পোড়ানো।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহনগুলোর অনেকগুলো যথাযথ ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই চলে। এটি বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। খোলা জায়গায় পোড়ানোসহ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবও একটি বড় কারণ।’
সর্বশেষ বায়ুদূষণ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার বছরের শেষ নাগাদ তার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তবুও পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান ব্যবস্থাপনার পরিচালক ড. জিয়াউল হক স্বীকার করেছেন, ‘বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস’ বাংলাদেশের পরিবেশে বিদ্যমান।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে আমরা এখনো কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না।’
ড. জিয়াউল হক বলেন, ‘যেসব বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, আমরা তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনব। তাদের কারখানার চুল্লিতে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং আমাদের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্গমনের ফলাফল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কোনো বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করব। ‘বাংলাদেশ পরিষ্কার বায়ু’ প্রকল্পের আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে।’
যদিও দূষণের সমস্ত উৎস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবুও কিছু উৎস এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মোকাবিলা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত দূষণ ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার ৩৫ শতাংশ বায়ু দূষণ দেশের বাইরে থেকে আসে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার বায়ু দূষণের ২৯ শতাংশই বর্জ্য এবং জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কারণে হয়। আমরা এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান করতে পারিনি। আমাদের প্রচেষ্টা সেখানেই আছে।’
সূত্র: আরব নিউজ
রাজধানীর শাহবাগে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)- সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ পানি ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরে বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ের মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩৪৪টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানীর মুগদায় মায়ের সঙ্গে অভিমানে ইঁদুর মারার বিষ পান করে সামিয়া আক্তার (১৫) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সামিয়া মুগদা মাল্টিমিডিয়া স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও উত্তর মান্ডার এলাকার আজিজুল হকের মেয়ে।
সামিয়ার ভাই সাহিম জানান, সামিয়া একটু রাগী স্বভাবের ছিল। রাতে মায়ের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিমানে বাসায় রাখা ইঁদুর মারার বিষ পান করে। পরে দ্রুত ঢামেকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি মুগদা থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
বেশ কয়েক দিন পর বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষস্থানে রদবদল হয়েছে। আজ রবিবার সকালে চিরচেনা লাহোর, দিল্লির কোনো শহরই শীর্ষ দশের ধারেকাছে নেই। তবে এই তালিকায় আজ চলে এসেছে ব্রাজিলের সাও পাউলোর নাম।
রবিবার (২৪ আগস্ট) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ১২৩ একিউআই স্কোর নিয়ে অষ্টম শীর্ষ দূষিত বাতাসের শহর হয়ে ওঠে সাও পাউলো। আইকিউ এয়ারের সূচক অনুযায়ী যার মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’।
তবে এই সময়ে ১৬৪ একিউআই স্কোর নিয়ে সবচেয়ে দূষিত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছিল ইন্দোনেশিয়ার বাতাম শহরের বাসিন্দারা। ১৬৩ ও ১৫২ স্কোর নিয়ে তার পরেই ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এবং কঙ্গোর কিনশাসার অবস্থান।
আর দিল্লির বাতাসের একিউআই সূচক ছিল ৯৫। লাহোরের বাতাসে দূষণের মান তখন আরও কম, ৮৪। অর্থাৎ প্রতিবেশী দুই দেশের শহরদুটির বাতাসের মান ছিল ‘মাঝারি’।
ঠিক সেই সময়ে তালিকার উপরের দিকে খুঁজেও ঢাকার নাম পাওয়া যায়নি। যাবে কীভাবে? ঢাকার অবস্থান তখন তলানির দিকে, বিশ্বের স্বাস্থ্যকর বায়ুর শহরগুলো মধ্যে। ৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে সেই সময় স্বাস্থ্যকর বাতাস গ্রহণ করছে ঢাকাবাসী। তালিকার ৬৮তম স্থানে ছিল ঢাকার নাম।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
জামালপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তারা এখন মুক্তিযুদ্ধকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস পাচ্ছে। শেখ হাসিনার জন্যই এটা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ না হলে, জিয়াউর রহমান যুদ্ধের ঘোষণা না করলে এই ভূখন্ড হতো না। কিন্তু বাপের সম্পত্তি বানিয়ে হাসিনা এটাকে পঁচিয়ে দিয়েছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে একটা শ্রেণী বলার চেষ্টা করে এটা দ্বিতীয় স্বাধীনতা। সন্তান একবারই জন্মগ্রহণ করে। যে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের মানচিত্র দিয়েছে সেটাই স্বাধীনতা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা হতে পারে না। জামালপুর জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, একটা নতুন আবিষ্কার হয়েছে পিআর পদ্ধতি। আমাদের বাংলাদেশের মানুষ যারা ভোট দেয় তারা তাদের প্রার্থীকে দেখতে চায়। যার ভোট সে দিবে, একজনকে ভোট দিবে, যাকে ভোট দিবে তাকে চিনতে হবে। পিআর মানুষ খায়ও না পড়েও না বিশ্বাসও করে না।
শনিবার (২৩ আগষ্ট) শহরের বেলটিয়া এলাকায় স্থানীয় একটি মাঠে জামালপুর জেলা বিএনপি এই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীমের সভাপতিত্বে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শরিফুল আলম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, অ্যাডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এবারের সম্মেলনে ৭টি উপজেলা ও ৮টি পৌর শাখা বিএনপির ১ হাজার ৫১৫ জন কাউন্সিলরসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। ৯ বছর পর আয়োজিত জেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
মন্তব্য