হবিগঞ্জের মাধবপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও দুই সিপাহিকে পিটিয়ে হ্যান্ডকাফসহ আটক আসামিকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ হ্যান্ডকাফ উদ্ধার করলেও কাউকে আটক করতে পারেনি।
মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগান এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত তিনজন হলেন হবিগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিদর্শক রতন চন্দ্র গোস্বামী এবং দুই সিপাহি তাপস চন্দ্র বৈদ্য ও সাদ্দাম হোসেন।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তেলিয়াপাড়া চা বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০০ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক কারবারি তোফানকে আটক করা হয়। তাকে নিয়ে ফেরার সময় মাদক কারবারিরা হামলা চালিয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও সিপাহিদের পিটিয়ে তোফানকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পুলিশ আহত তিনজনকে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে তেলিয়াপাড়া চা বাগান থেকে হ্যান্ডকাফটি উদ্ধার করা হয়।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ ঘটনায় চার মাদক কারবারির নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক এমদাদুল্লাহ মাধবপুর থানায় মামলা করেছেন। তবে এখনই আসামিদের নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।’
নারায়ণগঞ্জের সদরে পূর্বশত্রুতার জেরে সাবেক এক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে বর্তমান ইউপি সদস্য ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার পর তার মৃত্যু হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান নিউজবাংলাকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত বয়স ৪৭ বছরের দৌলত হোসেনের বাড়ি চরসৈয়দপুর এলাকায়। গোগনগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রোববার রাতে অটোরিকশায় করে নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে নিজ এলাকা চরসৈয়দপুরে ফিরছিলেন দৌলত। সাড়ে ১০টার দিকে সৈয়দপুর এলাকায় এলে গোগনগর বর্তমান ইউপি সদস্য রুবেল তার লোকজন নিয়ে দৌলতের রিকশা গতিরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে দৌলতের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে রাস্তায় ফেলে যান তারা।
গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন আশেপাশের লোকজন। সেখান চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২ টার পর মারা যান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য রুবেলের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
ওসি আনিচুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে দৌলতকে হত্যা করা হয়েছে। তার ছেলে কাশেমের সঙ্গে রুবেলের বিরোধ ছিল। রোববার রাতে নিজ এলাকায় যাওয়ার পথে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
দৌলতের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভোরে তিনজনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার উদ্বোধনের পর রোববার ভোরে যানবাহন চলাচল শুরু হয় পদ্মা সেতুতে।
উদ্বোধনী দিনে সেতুর দুই প্রান্ত দিয়ে পারাপার হয়েছে ৫১ হাজার ৩১৬টি গাড়ি। এসব গাড়ি থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকার।
রোববার মাওয়া টোল প্লাজা দিয়ে মোটরসাইকেলসহ ২৬ হাজার ৫৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়। এ প্রান্তে সংগ্রহ করা হয় এক কোটি ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা।
জাজিরা প্রান্তে ২৪ হাজার ৭২৭ যানবাহন পার হয়েছে। এ প্রান্তে সংগ্রহ করা হয় ১ কোটি ৪৪ হাজার ৪ টাকা।
পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে।
বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব টোল প্লাজায়
দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে; চলছে না বাইক। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।
এদিকে রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। টোল প্লাজা এলাকায় টহলও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:এবার পাবনায় জন্ম নেয়া তিন নবজাতকের নাম দেয়া হয়েছে পদ্মা, সেতু ও উদ্বোধন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুমী খাতুন নামে এক নারী সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শনিবার দুপুরে তিন ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। প্রাথমিকভাবে তাদের ডাক নাম রাখা হয়েছে পদ্মা, সেতু ও উদ্বোধন।
একই সময় শনিবার দুপুরে মাওয়া প্রান্তে নামফলক উম্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সুমী খাতুন পাবনার বেড়া পৌর এলাকার আমাইকোলা মহল্লার বাসিন্দা। তার স্বামী মিজানুর রহমান পেশায় রাজমিস্ত্রি।
নবজাতকদের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে পাবনার পিডিসি হাসপাতালে চিকিৎসককে দেখানোর পর তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানান পেটের ভেতরে বাচ্চার অবস্থা একটু বেকায়দায় রয়েছে। রাজশাহী নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। এরপর সেখান থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তিন পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিন সন্তানের ডাক নাম হিসেবে পদ্মা, সেতু ও উদ্বোধন রাখা হয়েছে। পরে তাদের ভালো নাম রাখা হবে।’
এমন নাম রাখার কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের, স্বপ্নের। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে মূলত এই নাম রাখা হয়েছে। কোনও পুরস্কার পাওয়ার লোভে আমার সন্তানদের নাম পদ্মা, সেতু, উদ্বোধন রাখিনি।’
মিজানুর জানান, ২০১০ সালে সুমী খাতুনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এর আগে তাদের সংসার জীবনে তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের নাম মীম, জীম ও সীম।
মিজানুর বলেন, ‘আগের তিনটি সন্তানই মেয়ে হওয়ায় আল্লাহর কাছে ছেলে সন্তান চেয়েছিলাম। আল্লাহ আমাদের মন ভরে দিয়েছে। আমরা একসঙ্গে তিন ছেলে সন্তান পেয়ে খুব খুশি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
আরও পড়ুন:দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে; চলছে না বাইক। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।
শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হয় রোববার সকাল ৬টা থেকে।
সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় আগের রাত থেকেই হাজার হাজার যানবাহন জড়ো হতে থাকে মাওয়া প্রান্তে। এসব গাড়ির বড় অংশ ছিল মোটরসাইকেল।
মোটরসাইকেলের চাপে সেতুর টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় বাইকচালকরা বিশৃৃঙ্খলা শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সামাল দিতে হিমশিম খান।
টোল দিয়ে সেতুতে উঠে বাইকাররা যেন পাগলা ঘোড়া হয়ে যান। রোববার রাতে দুর্ঘটনাও ঘটে, যাতে প্রাণ যায় দুই বাইক আরোহীর।
এমন পরিস্থিতিতে সকালে উন্মুক্ত করে দেয়ার পর রাতে সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আসে সরকারের তরফ থেকে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে রোববারের তুলনায় সোমবার সকালে যানবাহন কম দেখা গেছে। বাসের সংখ্যাও ছিল বেশ কম।
এদিকে রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। টোল প্লাজা এলাকায় টহলও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’
সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক হাসিবুল হামিদুল হক বলেন, ‘রোববার যে ব্যারিয়ারটি ভেঙে গিয়েছিল, সেটা ঠিক হয়ে গেছে। গতকালের চাইতে আজকে গাড়ির চাপ কম।
‘মোটরসাইকেল যেহেতু বন্ধ রয়েছে, তার জন্য চাপ অনেকটা কমে গেছে। আসলে আমাদের একটা আবেগের ব্যাপার, যার জন্য গতকাল এই চাপ দিচ্ছিল। আর দুর্ঘটনা ব্যাপারটা আমরা আপনাদের থেকে শুনেছি।’
আরও পড়ুন:মাগুরা সদরের আঠারখাদা ইউনিয়নের আলীধানী গ্রামের নবগঙ্গা মধ্যপাড়ার পান্নু মোল্লা মিয়ার বাড়ির সামনের রাস্তা কাঁচা। কিন্তু তাতে তার যতটা না ভোগান্তি ছিল, সেটা আরও বেড়ে গেছে রাস্তার উন্নয়নকাজের পর।
পান্নু মোল্লা বললেন, ‘বাড়ির সামনে রাস্তাডা ভালোই ছিল। বৃষ্টিতে পানি হোক, তাও একটা কায়দা করে চলতাম। মাটির রাস্তা হলিও শক্ত আছে। কাদা হতো না।
‘আর মাটি ফেলিছে দেহেন কিরাম। উঁচু ঢিবি হয়ে গেছে। কাদা যাতে না হয় সে জন্য মাটি ফেলিছে। কিন্তু মাটি সমান করে যায় নাই। ইউনিয়ন পরিষদে বললাম যে এই মাটির ঢিবিতে বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিছে। সমান করেন। তারা বলে, আর কাজ হবে না। টাকা নেই বলে কাজ হবি না। এহন কাদা তো হইছেই, সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হতি লাগে কষ্ট। এরাম কাজ করার মানে কী বুঝলাম না।’
এক মাস ধরে এমন ভোগান্তি পান্নু মোল্লার। মাঠে কাজে যেতে কষ্ট হয়। কেউ দেখার নেই।
ইউনিয়ন পরিষদে কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৪০ দিনের কাজের টাকা অর্ধেক সময়ে এসে ফেরত চলে যাওয়ায় মাগুরা জেলা সদরের কয়েকটি ইউনিয়নে গ্রামীণ উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে।
ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২২ অর্থবছরের প্রকল্পের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেরিতে ছাড় হওয়ায় সময়মতো কাজ শেষ হয়নি। দেশের অধিকাংশ ইউনিয়নে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ এই অর্ধেক কাজকে ভোগান্তি হিসেবে দেখছেন। মাগুরা সদরের আঠারখাদার মধ্যপাড়ায় একই এলাকার কৃষক নসিম জানান, ‘সামনে পাটের সময়। তাহলে এ রকম উল্টাপাল্টা কাজ করার দরকার কী? অর্ধেক মাটি ফেলে আমার বাড়ির সামনে উঁচু ঢিবি বানাই রাখছে। বৃষ্টির পানি গড়ায় বাড়ির ভেতরে যায়। আগে তো এটা হতো না। মাটি কোনো রকম ফেলে তারা চলে গেছে।’
একই ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি ক্লাবসংলগ্ন মাটির রাস্তাটিও এক পাশে উঁচু তো অন্য পাশে নিচু। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হাঁটু পর্যন্ত কাদা।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি ছিল বেলে মাটির। সেটাই ভালো ছিল। কিন্তু এখন মাটি ফেলেছে এক পাশে, সমান করেনি। তাই অর্ধশতাধিক পরিবার এই পথ দিয়ে যেতে পারে না। হাঁটু কাদা পেরিয়ে শিশুরা স্কুলে যায়। তাদের ইউনিফর্ম নষ্ট হয়ে যায়। এমন কাজ তাদের দরকার নেই বলে জানান গ্রামবাসী।
সদরের ১৩টি ইউনিয়নেই এমন কমবেশি খারাপ পরিস্থিতি। আগের বছরগুলোতে নারী কর্মী দিয়ে কাজ করা গেলেও এবার অর্ধেক কাজ হয়েছে দায়সারাভাবে। এই কর্মসূচির নিয়মিত এক নারী শ্রমিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, তাড়াহুড়ো করে কাজ করানো হয়েছে এ বছর। কোথাও দুই দিন, কোথাওবা এক দিন মাটি ভরাট করার কাজ তারা করতে পেরেছেন। তবে ঠিকমতো টাকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। আর বছর শেষে কাজ শুরু হলে আবার কিছু উপার্জন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে মাগুরা সদরের হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, ‘এলাকার রাস্তার পাশে মাটি ভরাট কাজ পুরো সম্পন্ন হয়নি। কোথাও কোথাও থেমে আছে। বলা যায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হলেও পুরো কাজ শেষ হওয়া দরকার। গত অর্থবছরের ২০ দিনের কাজ শেষে হয়েছে। এরপর আর বরাদ্দ আমরা পাইনি। বর্ষা মৌসুমে এই কাজগুলো শেষ হলে ভালো হয়। না হলে রাস্তার দুই পাশে মাটি ভরাট পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে।’
জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৪০ দিনের কাজ আসে বছরে দুইবার। এবার শুনেছি অর্থ বরাদ্দ ২০ দিনের হয়ে আর আসেনি। এ জন্য ২০ দিনের কাজ করা হয়েছে। তবে যেসব জায়গায় কাজ হয়েছে, সেসব স্থানে কাজ সমাপ্ত হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে। আশা করছি জটিলতা অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।’
সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান জানান, তার এলাকায় ২০ দিনের কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকরা টাকা পেয়ে গেছেন। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যতটুকু বরাদ্দ, ততটুকু উন্নয়ন হয়েছে। ৪০ দিনের কাজ ২০ দিনে হলে তো কিছু অপ্রাপ্তি থাকে এলাকাবাসীর। বিশেষ করে বর্ষায় কাঁচা রাস্তা মেরামতের কাজ খুব প্রয়োজনীয়।
মাগুরা সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা আম্বিয়া বেগম শিল্পী জানান, মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় পাওয়া গেছে অর্ধেক কাজের। ফলে বাকি ২০ দিনের কাজের অর্থ না আসায় পরিষদের এই কাজগুলো আর এগোয়নি। তবে এই অর্থবছরে আর টাকা বরাদ্দ হবে না। ২০২৩ অর্থবছরে কাজ শুরু হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নের আলমখারী বাজার এলাকায় পদ্মা সেতু নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেয়ায় দুই যুবককে পিটিয়ে আহত করেছে স্থানীয়রা।
রোববার রাত সাড়ে ৮টায় পিটুনির ঘটনাটি ঘটে। এতে আহত ২৪ বছর বয়সী মাসুম রেজা হাজরাপুর গ্রামের সোলাইমানের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। আহত অন্য ব্যক্তি ২৮ বছর বয়সী আকিদুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা। এক বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে তিনি দেশে এসেছিলেন।
আহত মাসুম বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন আগে বন্ধু সমতুল্য আকিদুলের সঙ্গে শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া এলাকার খালের ওপর বাঁশের তৈরি একটি সাঁকোতে দুই বন্ধু সেলফি তুলি। সেই ছবি সম্প্রতি আমার বন্ধু তার নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশন দেয়া হয়- আমরা পদ্মা সেতুতে উঠেছি।’
মাসুম জানান, ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। ছবির সূত্র ধরে হাজরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন আলমখারী বাজার এলাকায় তার নিজ কার্যালয়ে দুজনকে ডেকে নেন।
পরে চেয়ারম্যান তাদের কাছে ছবির বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তারা জানান, ছবিটি অনেক আগে তোলা। আর ছবির ক্যাপশনের জন্য ভুল শিকার করে ক্ষমা চান তারা। কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন মাসুম ও আকিদুলকে মারধর শুরু করে।
মাসুম আরও জানান, ছবিটি তার বন্ধু নিজের ফেসবুকে এমনভাবে পোস্ট করবে তা তিনি কখনোই ভাবেননি। মারধরের পর পরিবারের লোকজন তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
মাসুমের বাবা সুলাইমান বলেন, ‘আমার ছেলে এলাকায় খুব ভদ্র বলে পরিচিত। বন্ধুদের সঙ্গে কী ছবি তুলে কী লিখেছে তা নিয়ে এলাকায় হাতাহাতি হয়েছে। আমি দূরে থাকায় পরে জানতে পেরেছি। কারা মেরেছে এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।’
অপর আহত যুবক আকিদুলকে হাসপাতালে নিয়ে এলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের একটি নম্বরে বারবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে হাজরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন মুটোফোনে জানান, মারামারির বিষয়টি তার জানা নেই। এমন ঘটনা তার কার্যালয়ে কখনোই ঘটেনি। তবে ফেসবুকে পদ্মা সেতু নিয়ে দুই যুবক কটূক্তি করেছেন বলে তিনি মর্মাহত।
মাগুরা সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, 'সদরের একটি গরুর হাটে মারামারির সংবাদ আমাদের জানা আছে। তবে পদ্মা সেতু নিয়ে এমন ঘটনার কোনো অভিযোগ তাদের কাছে নেই।'
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য পোস্ট করার অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সুন্দরগঞ্জ পৌর বাজার এলাকা থেকে রোববার সন্ধ্যায় ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে কটূক্তির দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
গ্রেপ্তার ২১ বছর বয়সী রুমন সরকার রনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামের আঞ্জু মিয়ার ছেলে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম। তিনি জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর বক্তব্য পোস্ট করেন রুমন।
এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রোববার দুপুরে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় রোববার সন্ধ্যায় পৌর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার সকালে গাইবান্ধার আদালতে রুমনকে পাঠানো হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য