× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Angered by the A League leaders allegations of rape
google_news print-icon

ধর্ষণের অভিযোগ করে আ.লীগ নেতার ‘রোষানলে’

ধর্ষণের-অভিযোগ-করে-আলীগ-নেতার-রোষানলে
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা মজিবর রহমান সাহেদ গত পরশুদিন আমার বাসায় এসে হুমকি দিযে গেছে। আজকেও সে এসেছিল। ভয়ে আমি তার সঙ্গে সাক্ষাত করিনি। এলাকার লোকজনের মাধ্যমে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করছে। এমনকি আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সহায়তা পাইনি।’

ঢাকার সাভারে ধর্ষণের অভিযোগ করে অভিযুক্ত ও তার স্বজন আওয়ামী লীগ নেতার রোষানলে পড়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক তরুণী। এদিকে মামলা না নিয়ে উল্টো ওই নারীকেও দুষছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত বাসায় গিয়ে হুমকি ও পুলিশের বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা না পাওয়ারও অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী ওই তরুণী।

এর আগে সোমবার বিকেলে আশুলিয়া থানায় সাকিব ভূইয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তিনি।

অভিযুক্ত সাকিব আশুলিয়ার গৌরীপুর এলাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

ভুক্তভোগীকে হয়রানির অভিযোগ ওঠা মজিবর রহমান সাহেদ ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি অভিযুক্ত সাকিবের স্বজন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে অভিযুক্তের ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ মেলে এমন একটি ছবিও এসেছে নিউজবাংলার কাছে।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করি। সাকিব ভূইয়ার সঙ্গে একটি ফার্নিচারের দোকানে গিয়ে পরিচয় হয়। পরে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।’

তিনি বলেন, ‘পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত দুইমাস ধরে একাধিকবার ধর্ষণ করেন সাকিব। বিষয়টি নিয়ে ৬ মার্চ সাকিবকে বিয়ের কথা বললে সে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়। এছাড়া আমি যেন এলাকা ছেড়ে চলে যাই সেজন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও চাপ সৃষ্টি করে।’

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা মজিবর রহমান সাহেদ গত পরশুদিন আমার বাসায় এসে হুমকি দিযে গেছে। আজকেও সে এসেছিল। ভয়ে আমি তার সঙ্গে সাক্ষাত করিনি। এলাকার লোকজনের মাধ্যমে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করছে। এমনকি আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সহায়তা পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘এসআই ফরিদুলের কাছে গেলে সে আমাকে উল্টো দোষারোপ করে নানা কথা শুনিয়ে দেয়। বলে, আদালতে মামলা করলে ওয়ারেন্ট আনলে তারপর আসামিকে ধরব।’

ধর্ষণের অভিযোগ করে আ.লীগ নেতার ‘রোষানলে’
ধর্ষণের অভিযুক্ত সাকিব ভূইয়ার সঙ্গে আওয়ামী লীগ মজিবর রহমান সাহেদ। ছবি: সংগৃহীত

এ বিষয়ে ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান সাহেদ বলেন, ‘সাকিব আমার কেউ হয় না। কোনো রিলেটিভও না। শুনেছি সাকিবের বিরুদ্ধে একটা রেপ কমপ্লেন হইছে। সে ছাত্রলীগ করে ও এলাকার ছেলে। আমি ওই মেয়ে চিনিই না। দেখাই হয় নাই আমার সাথে। পুলিশ যেভাবে করে তাতে আমার কোনো আপত্তি নাই।’

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘উনি আজকে আমারে ফোন করছে। আইনত মেয়েটাই অপরাধী বুঝছেন। ওর আগে একটা বিয়া হইছে। হ্যারপর এখানে আইসা ওই ছেলেটার সাথে থাকছে।’

তিনি বলেন, ‘সে ছেলেটা এখানকার স্থানীয়। ও জানে না যে স্থানীয় ছেলে বিয়ে করবে কি না? ওর তো নিজেরও বোঝা উচিত ছিল। যাই হোক দেখি আমি রাতটা কী করা যায়?’

এসআই ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যাব রাতে। যদি একান্তেই কিছু না আসে তাহলে আইনি ব্যবস্থা তো আছেই। আমি জাগায় গিয়া যদি সত্যতা পাই তাহলে ওসিরে ফোন দিব। ওসি স্যার যদি বলে তাহলে আমি আসামি নিয়া আসব, মামলা নিব।’

ভুক্তভোগীকে আদালতে কেন যেতে বলেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘থানায় মামলা হবে না একথা বলি নাই। কোর্টে গেলে ভালো হয়। আশুলিয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতনের যদি মামলা নিই, তাহলে থানায় মামলায় ভরে যাবে।’

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম বলেন, 'বিষয়টা আমার জানা নাই। ভিকটিমকে দ্রুত থানায় পাঠায় দেন, মামলা নিব।’

আরও পড়ুন:
ফতুল্লায় ‘ধর্ষণ’: ৩ আসামি কারাগারে
মহিলা মাদ্রাসার তিন শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় যুবক গ্রেপ্তার
সন্তানের সামনে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ১
মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় বাবা কারাগারে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Five students of free university seven days after the abduction hill student council

অপহরণের সাতদিন পর মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী: পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ

অপহরণের সাতদিন পর মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী: পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ

অপহরণের সাতদিন পর মুক্তি পেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী। তবে বুধবার (২৩ এপ্রিল) তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে একদিন পর বৃহস্পতিবার।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে। অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী বর্তমানে তাদের গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বার্তা সংস্থা ইউএনবি বলেন, ‘পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিবৃতি দিয়েছে যে তারা তাদের সংগঠনের শিক্ষার্থীদের ফিরে পেয়েছে। আমরা ওই ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারে সাথে যোগাযোগ করেছি। তারাও নিজেদের পরিবার সদস্যদের ফিরে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাহলে এখন মোটামুটি ধরে ধরে নেওয়া যায় যে ওই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পরিবারের হেফাজতে আছেন।’

বিজু উৎসব উদ্‌যাপন শেষে ফেরার পথে ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে পাঁচ শিক্ষার্থী ও তাদের বহন করা অটোরিকশার চালককে অজ্ঞাতনামা স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রিশন চাকমা, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপহরণকারীরা চালককে ওই সময় ছেড়ে দিয়েছিল।

পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় শুরু থেকে ইউপিডিএফকে দায়ী করে আসছে জেএসএস–সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপিডিএফের অন্যতম জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The appearance of the sea bodies will change
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে

পাল্টে যাবে সমুদ্রবাণিজ্যের চেহারা

পাল্টে যাবে সমুদ্রবাণিজ্যের চেহারা

শুরু হচ্ছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের যাত্রা। এ সমুদ্র বন্দর নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এরপর শুরু হবে দুটি জেটির সমন্বয়ে একটি টার্মিনালের নির্মাণকাজ, যা ২০২৯ সালের দিকে শেষ হবে। এতে দেশের সমুদ্রবাণিজ্যের চেহারা পাল্টে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক সংশ্লিষ্টদের অন্যতম একজন। তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার ঢাকার হোটেল লো মেরিডিয়ানের বলরুমে জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকার সঙ্গে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণকাজের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

এখন জাপানি প্রতিষ্ঠানটি মাতারবাড়িতে দুটি জেটি নির্মাণের কাজ শুরু করবে। জেটি দুটির একটির দৈর্ঘ্য ৪৬০ মিটার। এটিতে শুধু কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা হবে। অপরটি মাল্টিপারপাস জেটি, যেটির দৈর্ঘ্য ৩০০ মিটার। নির্মিত জেটিতে ১৪ মিটার ড্রাফটের বিশালাকারের কন্টেইনার কিংবা কার্গো জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে বড় আকৃতির তিনটি, মাঝারি আকৃতির হলে চারটি মাদার ভ্যাসেল বার্থিং দেওয়া যাবে।

ইতোমধ্যে সাড়ে ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ চ্যানেলটিতে ভেড়ানো হয়েছে। জাহাজটিতে ৬৫ হাজার ২৫০ টন কয়লা ছিল। এ বন্দরে অনায়াসে এক লাখ টন পণ্যবোঝাই জাহাজ বার্থিং দেওয়া সম্ভব হবে বলেও মন্তব্য করেন সচিব ওমর ফারুক। তিনি বলেন, জোয়ার-ভাটার বাধা না থাকায় এই চ্যানেলটিতে রাতে দিনে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ ভিড়ানোর সুবিধা রয়েছে। গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে বাংলাদেশের যে সীমাবদ্ধতা ছিল মাতারবাড়ি তা পুরোপুরি কাটিয়ে দিতে যাচ্ছে। এক লাখ টন ধারণক্ষমতার কার্গো জাহাজ কিংবা ৮-১০ হাজার টিইইউএস কন্টেনার বহনকারী জাহাজ ভিড়ানো শুরু করা হলে পণ্য পরিবহন খরচ বহুলাংশে কমে যাবে।

ইতোমধ্যে একটি সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে ২০২৯ সালের মধ্যে বছরে ১১ লাখ এবং ২০৪১ সালে ২৬ লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা যাবে। বন্দর সূত্র জানায়, মাতারবাড়িতে ১২শ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে জাপানের আর্থিক সহায়তায়। জাইকা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করছে।

১২শ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন ১০ হাজার টন কয়লা পোড়ানো হয়। দুই মাসের প্রয়োজনীয় অন্তত ৬ লাখ টন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে মজুদ রাখতে হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রয়োজনীয় জ্বালানির জোগান দিতে বিদেশ থেকে প্রতি মাসে অন্তত তিন লাখ টন কয়লা আমদানি করতে হয়। এক একটি জাহাজে ৬০ হাজার টন কয়লা পরিবহন করলেও মাসে অন্তত ৫টি মাদার ভ্যাসেল এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যই হ্যান্ডলিং করতে হচ্ছে।

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং কয়লা আমদানির পথঘাট তৈরি করতে ১৪.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ২৫০ মিটার প্রস্থের ১৬ মিটার গভীর একটি চ্যানেল তৈরি করা হয়। এই চ্যানেল তৈরির পর জাইকার একটি প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম বন্দরে এসে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর করা যায় মন্তব্য করে পুরো বিষয়টি উপস্থাপন করে। তারা জানান যে, কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যেই চ্যানেলটি তৈরি করা হয়েছে সেটিকে যদি পাশে ১০০ মিটার বাড়িয়ে ৩৫০ মিটার এবং গভীরতা ২ মিটার বাড়িয়ে ১৮ মিটার করা হয় তাহলে এটি গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষের তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তারা গভীর সমুদ্রবন্দরের বিষয়টি নিয়ে অগ্রসর হলে নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন নামে আলাদা একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

শুরুতে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প নামের প্রকল্পটি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু হয়। সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য চ্যানেলের প্রশস্ততা ১০০ মিটার বর্ধিত করে ৩৫০ মিটারে উন্নীত করা হয়। গভীরতাও ১৮ মিটার (এমএসএল) করা হয়েছে। নির্মিত চ্যানেল ও হারবার নিরাপদ ও সুরক্ষিত করার জন্য সিপিজিসিবিএল কর্তৃক ১,৭৫৩ মিটার উত্তর ব্রেকওয়াটার, ৭১৩ মিটার দক্ষিণ ব্রেকওয়াটার এবং উত্তর দিকে ১৮০২.৮৫ মিটার রিভেটমেন্ট নির্মাণ করা হয়।

২০১৮ সাল থেকে এসব কার্যক্রম শুরু হয়। জাপানের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্পের খরচ জোগান দিতে থাকে। প্রকল্পটির জন্য জাইকা ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার টাকা ঋণ সুবিধা প্রদান করে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ ৯৪ হাজার এবং সরকারের ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা মিলে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা হয়। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু প্রকল্প গ্রহণের পরে কিছু ক্ষেত্রে খরচ বাড়তে থাকে। বিশেষ করে নির্মাণ সামগ্রির মূল্যবৃদ্ধি এবং আনুষঙ্গিক খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় পুনর্নির্ধারণ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ব্যয় সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয় ১৭ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা। সময় রাখা হয় ২০২৬ সাল পর্যন্ত। কিন্তু পরবর্তীতে নানা প্রতিকুলতায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়তে থাকে। প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যে চ্যানেল ও জেটি নির্মাণ করা হয়েছিল তা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করেছে সিপিজিসিবিএল। একই সঙ্গে ওই চ্যানেল ও জেটি নির্মাণে যে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে তার দায়ও বন্দর কর্তৃপক্ষের ওপর দেওয়া হয়।

এবার নতুন করে জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে পুরো প্রকল্পটি সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. সাখাওয়াত হোসেন মাতারবাড়ি বন্দর পরিদর্শনের পর পুরো কার্যক্রমে গতিশীলতা আসে বলে উল্লেখ করে সূত্র জানিয়েছে যে, জাইকা প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন করবে। প্রথম ধাপে ৬ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি জেটি, টার্মিনাল এবং ব্যাকইয়ার্ড ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা হবে।

এই ব্যয়ের পুরো অর্থের যোগান দেবে জাপানি সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। জেটি এবং টার্মিনাল নির্মাণ করবে জাপানি প্রতিষ্ঠান পেন্টা ওশান এবং থোয়া করপোরেশন। প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে এই চুক্তি স¤পাদিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে আগামী ৪ বছরের মধ্যে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ একটি কন্টেনার জেটি এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ করবে। দুটি জেটির জন্য সমন্বিতভাবে নির্মাণ করা হবে একটি টার্মিনাল।

বন্দরের তথ্যমতে, মহেশখালীর ১ হাজার ৩০ একর জায়গায় বন্দরের অবকাঠামো এবং ব্যাকইয়ার্ড নানা ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা হবে। আগামী ২০২৯ সালে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পুরোদমে কাজ শুরু করবে। এর মাধ্যমে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে নতুন গতিশীলতা তৈরি হবে। পাল্টে যাবে সমুদ্রবাণিজ্যের চেহারা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Indian goods seized in the task force campaign in Sunamganj

সুনামগঞ্জে টাস্কফোর্সের অভিযানে ভারতীয় পণ্য জব্দ

সুনামগঞ্জে টাস্কফোর্সের অভিযানে ভারতীয় পণ্য জব্দ মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে সুরমা নদীর সাহেব বাড়িঘাট এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান হৃদয়-এর নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের অভিযানকালে এসব সামগ্রী জব্দ করা হয়। ছবি : বাসস

জেলা সদরে আজ সুরমা নদীতে টাস্কফোর্সের অভিযানকালে বিভিন্ন ভারতীয় কসমেটিক্স সামগ্রী ও বিস্কুট জব্দ করেছে টাস্কফোর্স।

আজ মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে সুরমা নদীর সাহেব বাড়িঘাট এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান হৃদয়-এর নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের অভিযানকালে এসব সামগ্রী জব্দ করা হয়।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সুরমা নদীর সাহেববাড়ি ঘাট এলাকায় টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে মালিকবিহীন একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাসহ ভারতীয় বেটনোবিট সি, হোয়াইট টোন, পন্ডস ব্রাইট ক্রিম ও অন্যান্য কসমেটিক্স আইটেমসহ মোট ছয়হাজার ১৩০ পিস কসমেটিক্স সামগ্রী এবং চারহাজার ১৭০ প্যাকেট ভারতীয় বিস্কুট জব্দ করা হয়। জব্দকৃত সামগ্রির আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ ১২ হাজার ৯২০ টাকা।

অভিযানে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি’র সহকারী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম-সহ বিজিবি জওয়ানরা অংশ নেন।

সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জব্দকৃত ভারতীয় পণ্য সুনামগঞ্জ কাস্টমস কার্যালয়ে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
He goes as happy as he is
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা

যেমন খুশি তেমন চলেন তিনি!

যেমন খুশি তেমন চলেন তিনি! ডা. কানিজ ফারহানা
*** ২ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা চুরি, ৪ মাসেও হয়নি মামলা, চালক অভাবে ১ বছর অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত রোগী। *** সরকারি গাড়ী কর্মকর্তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, মাসে অফিস করেন মাত্র ১২ দিন। ***হাসপাতাল কোয়াটারে থাকার কথা থাকলেও, নওগাঁ সদর থেকে করেন অফিস। ***আউটডোরে ৩ টাকার টিকেট, রোগীর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫ টাকা।

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ২ লক্ষ ৬ হাজার ৫ শত ৪৭ জন মানুষের বসবাস। এটি জেলার সবচেয়ে ছোট একটি উপজেলা। জেলা সদর থেকে এই উপজেলার দুরুত্ব ১৭ কিলোমিটার। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার কথা চিন্তা করে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ করে সরকার। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানার অবহেলা আর উদাসীনতায় প্রায় ২ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

গত রোববার সকাল ৯ টা। নওগাাঁর বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের উপচে পড়া ভীড়। হাতে ও পায়ে ব্যথা নিয়ে কয়েকজন রোগী চিৎকার করলেও পাচ্ছে না সেবা। কষ্টে কাটছে তাদের সময়। এসব বিষয় দেখভালের জন্য অফিসে তখনো আসেননি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানা। তার অনুপস্থিতিতে চিকিৎসা সেবা ও দাপ্তরিক কাজে সৃষ্টি হচ্ছে নানা জটিলতা। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক। আর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলছেন দাপ্তরিক কাজে বাহিরে থাকতে হয় মাঝে মধ্যে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানা ১৪ মার্চ ২০২২ সালে এ হাসপাতালের দায়িত্ব নেন। এরপর বিভিন্ন অজুহাতে তিনি অনুপস্থিত থাকেন। গত বছরের নভেম্বর মাসে কর্মস্থলে ১০ দিন অনুপস্থিত আর ডিসেম্বর মাসে ১৮ দিন অনুপস্থিত, ৬দিন লেট এবং বাকী দিন গুলোতে সে সকাল দশটার পর আসেন এবং দুপুর দেড়টায় অফিস ত্যাগ করেন। তার দেরীতে আসা যেন নিত্য দিনের রুটিনে পরিনত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ বর্তমানে তিনি আরো দেরীতে আসেন। বেশ কয়েকদিন সরেজমিনে গিয়েও তার সত্যতা পাওয়া যায়। শুধু কর্মস্থলে অনপস্থিত নয়, সে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর সরকারি গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে আসছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি কোয়াটারে থাকার নিয়ম থাকলেও সে যোগদানের পর থেকেই নওগাঁ সদর থেকে অফিস করেন। আর এভাবেই তিনি সেবাগ্রহীতাদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিনের পর দিন, এমন কি মাসের পর মাস ইচ্ছেমতো চাকুরি করে চলেছেন। যেন দেখার কেউ নেই।

স্থানীয়রা বলছেন, গত এক বছর থেকে চালক অভাবে এ্যম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত এই উপজেলার অসহায় রোগীরা। ফলে চালক অভাবে নষ্ঠ হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সটি। এবং গত বছরের ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে হাসপাতালে চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে। এবং হাসপাতালের রাজস্ব খাতের ২ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ ৪ মাসেও করেনি কোন মামলা। চলতি মাসের ৭ এপ্রিল আউটডোরে টিকিট কাউন্টারে রোগীর কাছ থেকে টিকিট বাবদ ৩ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৫ টকা। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার জানালেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত নেওয়া হয় নি কোন ব্যবস্থা।

সচেতন মহল বলছে, সরকারি বিধি অনুসারে একজন কর্মকর্তা তিন বছরের অধিক একই জায়গায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু নিজ কাজে এতো উদাসিনতা আর অবহেলার পরও সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে স্বপদে বহাল তবিয়তে আছেন ডাঃ কানিজ ফারহানা। তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

তবে এসব বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘চুরির ঘটনায় থানায় জিডি করেছি, পুলিশ তদন্ত করছে। রোগীর কাছ থেকে টিকিট বাবদ ৩ টাকার জায়গায় ৫ টাকা বেশী নেওয়ার বিষয়ে তাকে সাবধান করেছি।’

মাসে ১২ দিন অফিস করার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাপ্তরিক কাজের জন্য এমনটা মাঝে মাঝে হয়। ব্যক্তিগত কাজে অফিসের গাড়ী ব্যবহারের কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত এক বছর ধরে জ্বালানী বাবদ কোন বিল পাই নি। নিজ খরচে গাড়ী ব্যবহার করছি।’

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডাঃ মো আমিনুল ইসলাম এর কাছে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানার অবহেলা ও উদাসীনতা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি এই জায়গায়। কোথায় কোথায় সমস্যা আপনি হোয়াটসঅ্যাপে লিখে দিন। আমি দেখছি। বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন যাচাই করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Missing Coxs Bazar for work

কাজের জন্য কক্সবাজার গিয়ে নিখোঁজ ৬

কাজের জন্য কক্সবাজার গিয়ে নিখোঁজ ৬

কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার গিয়ে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার একই গ্রামের পাঁচ তরুণসহ ছয়জন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারও কোনো সন্ধান পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।

নিখোঁজরা হলেন— জকিগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।

তারা সবাই উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহার মহল গ্রামের বাসিন্দা।

নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে সিলেট থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তারা। পরদিন ১৬ এপ্রিল (বুধবার) সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পৌঁছা পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এরপর থেকে তাদের সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে পুলিশ বলছে, মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ছয়জনের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। পুলিশ এনিয়ে কাজ করছে।

নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সফর উদ্দিন।

নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই আব্দুল বাছিত দুলাল বলেন, ‘কক্সবাজার পৌঁছার পর জানিয়েছিল পৌঁছেছে। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন কক্সবাজারে যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে থানায় জিডি করবেন। জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ নিচ্ছে না।’

নিখোঁজ রশিদ আহমদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, ‘৪ থেকে ৫ বছর ধরে রশিদ চট্টগ্রামে কাজ করে। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। কক্সবাজার এই প্রথম গিয়েছে। ওইখানে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। ওইদিনও ওই ঠিকাদারের কাছে তারা যায়। এরপর থেকেই তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। যদি তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকতো বা কেউ জিম্মি করত, তাহলে তো টাকা পয়সা চাইতো, এরকম কিছুই না। আমাদের ধারণা তাদের ওইখানে যে লোক নিয়েছে, ওই লোকই কিছু করেছে।’

তবে ঠিকাদারের নাম ঠিকানা কোনো কিছু জানাতে পারেননি নিখোঁজ রশিদের ভাই বাছিত।

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, ‘তারা প্রায় সময়ে কাজের জন্য চট্টগ্রাম ৫ থেকে ৬ মাস থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসে। আবার সেখানে গিয়ে কাজ করত। মঙ্গলবারের পর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। গতকাল সারারাত থানায় ছিলাম।

তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারের মোবাইল বন্ধ। তবে ঠিকাদারের নাম রশিদ ও তার সঙ্গে একজনের নাম বাবুল বলে জানিয়েছেন থানার ওসি। যে জায়গা থেকে তারা নিখোঁজ হয়েছেন সেখানে অভিযোগ দেওয়ার জন্য পুলিশ জানিয়েছে। আমাদের এলাকার আরও লোকজন সেখানে রয়েছেন তারাও তাদের মতো করে খোঁজাখুঁজি করছেন।’

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘নিখোঁজ ছয়জনই দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কাজ করেন। এখন হঠাৎ করে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছেন না। আমরা গত ১৮ এপ্রিল বিষয়টি অবগত হয়েছি। এরপর থেকে কাজ করছি। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কারও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The farmers dream was broken in Moulvibazar

মৌলভীবাজারে ভেঙে গেল কৃষকের স্বপ্ন

মৌলভীবাজারে ভেঙে গেল কৃষকের স্বপ্ন

ভাগ্য খারাপ, আমন ফসলের ক্ষতি বোরো ফসলে পুষিয়ে নেব ভেবেছিলাম। কিন্তু এবার তাও হলো না। এমনটাই বলছিলেন হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া।

প্রতি বিঘায় যেখানে ১৮ থেকে ২০ মণ বোরো ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ৮ থেকে ১০ মণ ধান মিলবে। কারণ, বোরো ধানের প্রতিটি ছড়ায় পর্যাপ্ত ধান দেখা গেলেও সেই ধান কাটার পরে দেখা মিলছে চিটা। এমনটা জানান আরেক চাষি আহমদ মিয়া।

মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের চাষি বাচ্চু মিয়া আহমদ মিয়ার মতো অনেক চাষির কণ্ঠে এমনই আক্ষেপ। তাদের মুখে নেই হাসি। ভেঙে গেছে সোনালী স্বপ্ন। প্রকৃতির বিরূপ আচরণই বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল হাওর পারের চাষিদের সোনালী স্বপ্নকে ক্ষতবিক্ষত করেছে।

টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে জেলার বিস্তীর্ণ হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। একদিকে অনাবৃষ্টি অন্যদিকে শিলাবৃষ্টিতে হুমকির মুখে পড়েছে হাওরপারের বোরো ধানের ফলন।

স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমনের ক্ষতি পুষিয়ে বোরো মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল অনেক চাষির। কিন্তু বোরো মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও খরার প্রভাবে ধানে পোকা ধরে ধান চিটা হয়ে যায়।

হাওরপারের চাষিরা বলছেন, আমনের পর বোরো ফসলের যে ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে উঠা দুষ্কর। আমন ফসলের ক্ষতি ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা হলো না তাদের। ফলে টানাপড়েন শুরু হবে সংসারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বড় তিনটি হাওর হাকালুকি, হাইলহাওর ও কাউয়াদীঘি ছাড়াও ছোট ছোট হাওর এবং উপরিভাগে এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬২ হাজার ১০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ২৪০ হেক্টর।

৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন রসুলপুর এলাকার চাষি আব্দুর রকিব। প্রতি বিঘায় প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় যেখানে ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ১০ মণ ধান পাব কিনা সন্দেহ আছে। এখন ধারদেনা করে চালাতে হবে।

পাড়াশিমইল গ্রামের চাষি মিজু আহমদ বলেন, ‘এবার আমাদের এলাকার অনেকেই আমন ধান পায়নি। বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গিয়েছিল। এখন বোরো ফসলই ভরসা ছিল, কিন্তু সেই বোরো ফসলেই পোকা ও চিটা দেখা দেয়। ১০ বিঘা জমি চাষ করি। খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা, এখন খরচ তোলাই দায়।’

বানেশ্রী এলাকার ষাটোর্ধ্ব চাষি পরিমল বিশ্বাস বলেন, ‘টানা খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে হাওরের জমি শুকিয়ে যায়, ফলে ধানে পোকা ও চিটা দেখা দেয়। এরফলে এবার বোরো ধান অর্ধেকের মতো পাব।’

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ অঞ্চলে ২০২৪ সালের বন্যায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখন শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও পানির অভাবে বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলো। হাওরের নদী-খাল খনন ও পানির উৎস থাকলে এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হতো। কৃষকদের কৃষি ভর্তুকি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, বোরো ফসলের ফলন ভালো হয়েছে, তবে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবের কারণে কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Arif arrested the robber of the robber in Chittagong

চট্টগ্রামে পুলিশকে ছুরিকাঘাত করা ডাকাত চক্রের হোতা আরিফ গ্রেফতার

চট্টগ্রামে পুলিশকে ছুরিকাঘাত করা ডাকাত চক্রের হোতা আরিফ গ্রেফতার

চট্টগ্রাম নগরের বারেক বিল্ডিং মোড়ে ডাকাতের আস্তানায় চালানো অভিযানে দুই পুলিশ সদস্য ছুরিকাঘাতে আহতের ঘটনায় ডাকাত চক্রের মূলহোতা আরিফ হোসেন ওরফে মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ৫০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সে একজন পেশাদার অপরাধী এবং অস্ত্রসহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়াত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ডবলমুরিং থানার আওতাধীন বারেক বিল্ডিং মোড়ের একটি ফাঁকা প্লটে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। তখন পুলিশের একটি দল সেখানে উপস্থিত হলে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও ডাকাত দলের সদস্যরা তাদের ঘিরে ধরে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চক্রের মূল হোতা আরিফ হোসেন ছুরি দিয়ে পুলিশকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ওসি কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর থেকেই আরিফ হোসেন আমাদের নজরে ছিল। সে একজন পেশাদার অপরাধী এবং অস্ত্রসহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়াত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে যে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে, তা ব্যবহার করে সে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।

তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান চলবে বলেও জানান ওসি।

মন্তব্য

p
উপরে