সরকারি হিসাবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর ওই মাসে মজুরি বেড়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
এর অর্থ হচ্ছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, সেই পণ্য বা সেবা পেতে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ১০৬ দশমিক ১৭ টাকা খরচ করতে হয়েছে। আর যে দিনমজুর বা শ্রমিক গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার মজুরির বিনিময়ে ১০০ টাকা পেয়েছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে তারা পেয়েছেন ১০৬ টাকা ৩ পয়সা।
এই হিসাব বলছে, দেশের দিনমজুর-শ্রমিকরা যে মজুরি পাচ্ছেন তা দিয়ে খাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারছেন না। বাড়তি মজুরি খেয়ে ফেলছে মূল্যস্ফীতি।
করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পুরো অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা করার এই প্রক্রিয়ায় মজুরিও বাড়ে। কিন্তু সেই বাড়তি মজুরির টাকা খেয়ে ফেলছে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। এখন মূল্যস্ফীতির হার জাতীয় পর্যায়ে মজুরি বৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণত মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির কিছুটা বেশি থাকে।
অর্থনীতির সেই চিরায়ত প্রবণতায় উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মজুরিও বাড়ে। মজুরি বেশি বৃদ্ধি পেলে মূল্যস্ফীতির আঁচ টের পান না তারা। কিন্তু মজুরি বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হলে মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এখন বাংলাদেশে তাই হয়েছে। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যও তাই বলছে।
অর্থাৎ এখন দেশের দিনমজুর-শ্রমিকরা যা উপার্জন করছেন বা যা মজুরি পাচ্ছেন, তা দিয়ে তাদের সংসার চলছে না। হয় ধার-দেনা করে চলতে হচ্ছে, না হয় অতি প্রয়োজনীয় পণ্য কম কিনছেন বা কম খাচ্ছেন, সঞ্চয় করা বা জীবনযাত্রার বাড়তি চাহিদা মেটানো তো দূরে থাক।
করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের জুন মাসে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম ছিল। ওই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, আর মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯০। গত এক দশকের মধ্যে সেটিই ছিল ব্যতিক্রম ঘটনা। আবার সেই ব্যতিক্রম আবার ঘটেছে গত ফেব্রুয়ারিতে।
বিবিএস সোমবার মূল্যস্ফীতি ও মজুরি সূচকের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় ফেব্রুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর মজুরি বৃদ্ধির হার ৬ দশমিক শূন্য ৩।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারি এই তথ্য চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, দেশের মানুষ কষ্টে আছেন। দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন তারা।
সাধারণত মূল্যস্ফীতি ও মজুরি হার বৃদ্ধির মধ্যে পার্থক্য ১ শতাংশের মতো হয়। কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এখন তা ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু মজুরি সেই হারে বাড়ছে না। নভেম্বর, ডিসেম্বরে ও জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ও মজুরি সূচক প্রায় সমান্তরালে চলেছে। ফেব্রুয়ারিতে এসে মজুরি বৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে মূল্যস্ফীতি।
গত নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর মজুরি বৃদ্ধির হার ৬ দশমিক শূন্য ২। ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আর মজুরি বৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। জানুয়ারিতে মজুরি হার ছিল ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির (১২ মাসের গড় হিসাবে) হার ছিল ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। মজুরি বৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। তার আগের অর্থবছরে (২০১৯-২০) মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ; মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।
বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আমদানি পর্যায়ে সয়াবিন তেলের শুল্ক কমানো হয়েছে। এক কোটি পরিবারকে সুলভ মূল্যে পণ্য দিচ্ছে সরকার। টিসিবির ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি এ সব পদক্ষেপের ফলে পণ্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।’
অর্থনীতির গবেষক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরোর মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন আছে। বিবিএসের সঙ্গে সঙ্গে বাজারের পণ্যমূল্যের বাস্তব প্রতিফলন পাওয়া যায় না।
‘তারপরও বিবিএসের তথ্য মেনে নিয়েই যদি আমরা বিশ্লেষণ করি, তাহলেও কিন্তু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দিনমজুর-শ্রমিকরা যা উপার্জন করছেন, তা দিয়ে তাদের সংসার চলছে না। মজুরি বৃদ্ধির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি হওয়া সাধারণত অর্থনীতিতে দেখা যায় না। এখন সেটা হচ্ছে। এতেই প্রমাণ হয়, দেশের মানুষ কষ্টে আছেন। দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন।’
তিনি বলেন, ‘৫০ টাকার কমে কোনো চাল পাওয়া যায় না বাজারে। ভোজ্যতেল, চিনি, ডালসহ সব জিনিসের দামই চড়া। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে পণ্যমূল্যে। বেড়েছে মানুষের পরিবহন খরচ। সামনে রজমান মাস; পণ্যমূল্য কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে কে জানে।’
এই বিষয়ে অর্থনীতির আরেক গবেষক সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই সময়ে মজুরি হার বৃদ্ধির কোনো কারণ আমি খুঁজে পাই না। সাধারণত যখন শ্রমিকের চাহিদা বাড়ে, সরবরাহ কম থাকে, তখন মজুরি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এই মহামারির সময়ে শ্রমিকের চাহিদা বেশ কমেছে। অনানুষ্ঠানিক খাতে বেকারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাহলে মজুরি বাড়ল কোন ভিত্তিতে?’
তিনি বলেন, ‘মহামারির ধকল কিন্তু এখনও পুরোপুরি সামলে ওঠেনি বাংলাদেশ। এর মধ্যে কোনো শ্রমিক-দিনমজুরেরই মজুরি বাড়ার কথা নয়। এ বিষয়গুলো বিবিএসের বিচেনায় নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’
সেলিম রায়হান বলেন, ‘তারপরও বিবিএসের বর্তমান মূল্যস্ফীতি ও মজুরি সূচকের তথ্য নিয়েই যদি আমরা বিশ্লেষণ করি, তাহলেও কিন্তু আমরা উদ্বেগজনক একটি তথ্য দেখতে পাচ্ছি। আর সেটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি প্রকৃত মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ আয় বাড়লেও মানুষের তা দিয়ে চলছে না। হয় ধার-দেনা করে চলছেন; না হয় কম খাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতি তা খেয়ে ফেলেছে।’
মূল্যস্ফীতি নিয়ে সানেমের বিকল্প হিসাব
এদিকে সানেম মূল্যস্ফীতির এক বিকল্প হিসাব দিয়েছে। সংস্থাটি দাবি করেছে, দেশে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হার বিবিএসের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।
গত ৩ মার্চ ‘মূল্যস্ফীতি: সরকারি পরিসংখ্যান বনাম প্রান্তিক মানুষের বাস্তবতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সানেম। এতে বলা হয়েছে, শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার এখন ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর গ্রামে এই হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘পণ্যমূল্য নিয়ে সরকারি সংস্থা বিবিএস যে তথ্য দিচ্ছে, তা বাস্তবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ক্ষেত্রে যদি সঠিক তথ্য তুলে আনা না হয়, তবে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া টেকসই হবে না।’
নানা তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিবিএস পুরোনো ভিত্তি বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব করছে, যা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না।’
সেলিম রায়হান বলেন, ‘নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ খুবই কষ্টে আছে। ভাত না খেয়ে অন্য কিছু খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে অনেক মানুষ।’
বিবিএস প্রতি মাসে কৃষিশ্রমিক, পরিবহনকর্মী, বিড়িশ্রমিক, জেলে, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিকসহ ৪৪ ধরনের পেশাজীবীর মজুরির তথ্য সংগ্রহ করে মজুরির হার সংক্রান্ত সূচক তৈরি করে। এসব পেশাজীবীর মজুরি খুব কম এবং দক্ষতাও কম। শুধু দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি পান বা নগদ টাকার পরিবর্তে অন্য সহায়তা পান, তার ভিত্তিতে কোন মাসে মজুরি হার কত বাড়ল, তা প্রকাশ করে বিবিএস।
পরিসংখ্যান ব্যুরো যে ৪৪ ধরনের পেশাজীবীর মজুরির তথ্য নেয়, তার মধ্যে ২২টি শিল্প খাতের এবং ১১টি করে কৃষি ও সেবা খাতের পেশা। বেতনভোগী কিংবা উচ্চ আয়ের পেশাজীবীদের বিবিএসের মজুরি সূচকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের কর্মসংস্থানের বড় অংশই হচ্ছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। মোট শ্রমশক্তির ৮৫ দশমিক ১ শতাংশই এ খাতে নিয়োজিত। আর ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে।
অন্যদিকে কৃষিক্ষেত্রে নিয়োজিত মোট শ্রমশক্তির ৯৫ দশমিক ৪ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। শিল্প খাতের ৮৯ দশমিক ৯ শতাংশ, সেবা খাতের ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত।
আরও পড়ুন:শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।
জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।
তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’
মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।
আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।
ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?
আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।
আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।
বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান
এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।
বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।
আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’
‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’
তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’
‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
মন্তব্য