রাজধানীতে যানজট এক নির্মম বাস্তবতা। এতে আটকা পড়ে প্রতিদিন রাস্তায় অপচয় হয় অসংখ্য কর্মঘণ্টা। এতে সাধারণের অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। উন্নতির বদলে দিনের পর দিন পরিস্থিতির অবনতিই হচ্ছে।
এমনটা কেন হচ্ছে, প্রতিকারের উপায়ই বা কী তা জানতে পরিবহন বিশেষজ্ঞ, নগর পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈজ্ঞানিক উপায় উপেক্ষা করে গণপরিবহন কমিয়ে পরিকল্পনাহীনভাবে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থায় রাস্তায় ধারণক্ষমতার বেশি গাড়ি চলছে। ফলে যানজট নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা, সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
সরেজমিন চিত্র
রাজধানীতে ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই শুরু হয় কর্মচাঞ্চল্য। কাজের তাগিদে মানুষ বেরিয়ে আসে আবাসস্থল থেকে। ছুটে চলে শহরের এ প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, কিন্তু সকালের তড়িঘড়ি এই যাত্রায় তাদের নিত্যসঙ্গী ট্রাফিক জ্যাম।
বিজয় সরণি-জাহাঙ্গীর গেট হয়ে মহাখালী-গুলশান-বনানী-উত্তরা যাদের গন্তব্য, তাদের প্রথমেই পড়তে হয় বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ গেটের সামনে যানজটের ফাঁদে। এখানে স্কুলের সামনে মূল সড়কে কয়েক লেনে পার্ক করা থাকে শিক্ষার্থীদের বহন করা ব্যক্তিগত গাড়ি। তাতে দীর্ঘ সময়ের জন্য অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় পুরো সড়কে। গাড়ির চাকা সচল হতে কখনো দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লেগে যায়।
প্রতিদিন এমন চিত্র দেখা যায় রাজধানীর অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনেও। মাঝে করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি। স্কুল-কলেজ খোলার সঙ্গে সঙ্গে ফিরে এসেছে যানজটের পুরোনো চিত্র।
তেজগাঁও সাত রাস্তার মোড়ে জটে নিশ্চল যানবাহন। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা
রাজধানীতে যানজটের বড় কারণ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি। নগরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোর অধিকাংশেই উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। এসব মহাপ্রকল্প ও সংস্কারকাজের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
উত্তরা-মিরপুর-ফার্মগেট-কারওয়ানবাজার থেকে মতিঝিল এলাকায় মেট্রোরেল, উত্তরা-বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ নানা কর্মযজ্ঞে প্রায়ই স্থবির থাকে এসব এলাকার সড়কপথ।
সংকুচিত রাস্তা, মূল সড়কে রিকশার আধিক্য, ফুটপাত দখল, ঘিঞ্জি এলাকার কারণে গুলিস্তান, পল্টন এবং পুরান ঢাকাজুড়ে যানজটে নাকাল ঘরের বাইরে বের হওয়া নগরবাসী।
যানজটের আরেক অনুষঙ্গ হিসেবে যোগ হয়েছে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক সিগন্যাল। অটোমেশন পদ্ধতি বাদ দিয়ে এখনও হাতের ইশারায় শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ।
বিজয় সরণি মোড়ে রোববার সকাল ৮টায় দেখা যায়, চারটি সড়কের মুখে চারজন ট্রাফিক পুলিশ হাত ইশারায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রতি ৫ মিনিট অন্তর একটি সড়কের গাড়িগুলোকে এগিয়ে যেতে ইশারা দেয়া হচ্ছে। আগের সিগন্যালের কারণে ফার্মগেট-মহাখালী-চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকা থেকে আসা গাড়ির খুব একটা জট সৃষ্টি না হলেও বিপত্তি ঘটছে বিজয় সরণি ওভারপাস ধরে নেমে আসা গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে।
মগবাজার-বেইলি রোড এলাকা থেকে আসা গাড়িগুলোকে ওভারপাসে উঠে আসতে কোনো সিগন্যালে দাঁড়াতে হচ্ছে না। সে সুবাদে অসংখ্য গাড়ি টানা ছুটে আসছে আর জমা হচ্ছে ওভারপাসের ওপর। আর ক্রমে পেছনে গাড়ির লাইন চলে যাচ্ছে মগবাজার মোড় পর্যন্ত। আর এভাবেই নানা সিগন্যালের অসামঞ্জস্যতায় তৈরি হচ্ছে ট্রাফিক জ্যাম।
যানজট নিরসনের সম্ভাব্য উপায়
বিজ্ঞানভিত্তিক উপায় উপেক্ষা করে শুধু কাঠামোগত উন্নয়ন দৃশ্যমান করার ভুল চেষ্টা থেকে ঢাকায় যানজটের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, অল্প খরচে সব শ্রেণির যাত্রীদের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা না করে কেবল একটি বিশেষ শ্রেণির যাতায়াতকে গুরুত্ব দিয়ে আসা হচ্ছে। এই একটি কারণ ও উন্নয়ন দৃশ্যমান করতে গিয়ে শহরের সড়ককে সময় নষ্টের ফাঁদ বানানো হয়েছে।
নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন নিরুৎসাহিত করে ব্যক্তিগত গাড়িকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেখানে গণপরিবহন ব্যবস্থাকে প্রাধিকার দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা, সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন ছোট গাড়ি ও মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে রাস্তাগুলোতে বাড়তি চাপ দেয়া হচ্ছে।
‘অনেক টাকা বিনিয়োগ করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে, যা শুধুই ধনী শ্রেণির ৮ শতাংশ মানুষকে সুবিধা দিচ্ছে। এসব ফ্লাইওভারে গণপরিবহন চলতে দেখা যায় খুব কম।’
ইকবাল হাবিব আরও বলেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বাস্তবায়ন ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ—যানজট নিরসনে এই তিনটি বিষয় সমভাবে জরুরি। এক যুগের বেশি সময় ধরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজগুলো চলছে ঢিমেতালে।
‘ঢাকার চারপাশে বাইপাস সড়ক করে একাধিক রাস্তার কাজ আটকে আছে। যত্রতত্র বাস স্টপ, পথচারীদের হাঁটার ব্যবস্থা না করা, ট্রাফিক সিস্টেম অটোমেশন না করা, রাইড শেয়ারের মাধ্যমে মোটরসাইকেলকে গণপরিবহন হিসেবে বানানোর প্রচেষ্টা, এসব কারণে যানজট কমার বদলে উল্টো বাড়ছে।’
আরেক নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনও বলেন, ‘ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন ১০ হাজার নতুন গাড়ি নামছে। এর বিপরীতে রাস্তা তো আর বাড়ছে না। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে বড় সহায়ক হতে পারে। রাস্তায় দাঁড়ালেই যখন বাস পাওয়া যাবে, তখন মানুষ রিকশা বা ব্যক্তিগত গাড়িতে না চড়ে বাসে চড়বে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোয়ালিটিফুল ও ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো হলে মানুষ শুধু ছুটির দিনে গাড়ি নিয়ে নগরের রাস্তায় বের হবে।’
বুয়েটের পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘ঢাকার রাস্তার ধারণক্ষমতা বিবেচনায় না নিয়ে ছোট গাড়িকে উৎসাহিত করে গণপরিবহনকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। রাস্তার একটি নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটি আছে। এর বেশি সে ধারণ করতে পারে না। প্রথমেই ছোট ছোট গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নিরুৎসাহিত করতে হবে।
‘প্রয়োজনে কিছু সময়ের জন্য রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দেয়া যেতে পারে। বিপরীতে বড় গাড়ি বা গণপরিবহনকে উৎসাহিত করতে হবে। রাস্তায় একটি ডাবল ডেকার চললে ২০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশার চাহিদা মিটবে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে করোনা মহামারির কারণে মানুষকে গণপরিবহনে চড়ার জন্য নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সে সময় মানুষ কষ্ট করে হলেও একটা গাড়ি কিনেছে চলাচলের জন্য। মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো দেশে নেই। মোটরসাইকেলের সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে, এখন পথচারীদের বদলে ঢাকার ফুটপাত দখল করে নিয়েছে মোটরসাইকেল।
‘বিগত বছরগুলোর তুলনায় গত দুই বছর ধরে প্রতিদিন দ্বিগুণ হারে নতুন নতুন প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। এটা বন্ধ না হলে যানজট কমার প্রশ্নই আসে না।’
যানজটের জন্য পরিকল্পনাহীন নানা মহাপ্রকল্প ও এসব বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতাকেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘একটা সমস্যা সমাধান করার জন্য যে পরিকল্পনা দরকার, তা কখনও মানা হয় না। ঢাকা শহরে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হিসেবে চালানোর জন্য যেভাবে পেশাদারি কাজ করার কথা ছিল, সেভাবে কোনো সংস্থাই কাজ করছে না। প্রতিটি সংস্থার নজর মেগা প্রকল্পের দিকে।
‘মেগা প্রকল্প হলে উন্নয়ন দেখানো যায়। সে সঙ্গে বড় বিনিয়োগের বিষয় থাকে। তাই অল্প টাকায় সহজ সমাধান রেখে পরিকল্পনাহীনভাবে মেগা প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত সবাই, কিন্তু এভাবে বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করে যানজট নিরসন করা অসম্ভব।’
যানজটে দীর্ঘ সময় ধরে রাজধানীতে একই স্থানে আটকে থাকে গাড়ি। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা
সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতার অভাবে মহাপ্রকল্পগুলোর কয়েক দফা মেয়াদ বৃদ্ধি সাধারণের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়ায় বলে মন্তব্য করেন নগর পরিকল্পনাবিদ মোবাশ্বের হোসেন।
তিনি বলেন, ‘রাজধানীর উন্নয়নে জড়িত সংস্থাগুলোর নজর কম খরচের সমাধান বাদ দিয়ে মেগা প্রকল্পের দিকে, কিন্তু সেটারও সঠিক বাস্তবায়ন হয় না সঠিক পরিকল্পনা না থাকার কারণে। প্রকল্পগুলো তৈরির জন্য দীর্ঘ সময় নিয়ে গবেষণা করতে হয়, কিন্তু তা না করেই গোঁজামিল দিয়ে প্রকল্প পাস করিয়ে নেয়া হয়। আর গবেষণাটা হয় পরে। এর ফলে কয়েক দফায় প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়াতে হয়।’
মহাপ্রকল্প থেকে নজর সরিয়ে গণপরিবহন বাড়িয়ে একদিকে সরকারের খরচ কমিয়ে আনা এবং যানজটমুক্ত নগরী গড়তে রাজনৈতিক পদক্ষেপ দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, দেশের অনেক ব্যবসায়ী এখন রাজনীতিবিদ হয়েছেন। তারা নানা সময়ে নিজেদের সুবিধার জন্য নানা মহাপ্রকল্প পাস করিয়ে আনছেন। ফলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া এই যানজট থেকে মুক্তির পথ মিলবে না। তেমনই একাধিক প্রতিষ্ঠানের কাছে আলাদা আলাদা উন্নয়ন দায়িত্ব থাকলেও এই কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব হবে না। তাই পুরো পরিবহন ও নগর উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা দুই মেয়রের অধীনে রাখাটা যৌক্তিক হবে।
ঢাকার যানজট নিরসনে এর বাইরে আরও বেশি সড়ক নির্মাণ, রিকশা চলাচল আবাসিক এলাকাভিত্তিক করা, ফুটপাতগুলো ব্যবহার উপযোগী করা, অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা বাস্তবায়নসহ রেল ও নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩১৩টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করার প্রতিবাদ ও ছয় দফা দাবি বাস্তাবায়নের দাবিতে ফুঁসে ওঠেছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করেন তারা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীর ও বাসচালকরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— প্রভাবশালী গোষ্ঠী কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। তারা পলিটেকনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে প্রকৌশল পেশায় প্রবেশের পথ সংকুচিত করছে। এ ছাড়া চাকরি ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল, তাদের পদবি পরিবর্তন ও সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা।
২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল ও বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধন।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল, উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু এবং ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা।
উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বাদ দিয়ে নিম্নপদে নিয়োগের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।
কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবলকে কারিগরি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ ও আইনানুগভাবে নিশ্চিত করা।
এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন।
উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ের নির্মাণাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতায় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করা।
সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শাহবাগ থানার মামলায় আজ সোমবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৬৭টি মামলা করেছে ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২০টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, রোববার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দূষিত বায়ুদূষণ বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫ বছর ৫ মাস কমিয়ে দিচ্ছে। বিষাক্ত বায়ুর এই প্রভাব রাজধানী ঢাকায় বিশেষভাবে তীব্র। বায়ুদূষণ এই শহরের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৯ মাস কমিয়ে দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গত সপ্তাহের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ হলো আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বহিরাগত হুমকি। বাংলাদেশে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষের সবাই এমন এলাকায় বাস করে, যেখানে বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট দূষণের বার্ষিক গড় মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা (৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) এবং দেশের জাতীয় সীমা (৩৫ মাইক্রোগ্রাম) উভয়ই ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার মতো জায়গায় এই মাত্রা ৭৬ মাইক্রোগ্রামের ওপরে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা মেনে চললে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫.৫ বছর বেশি হতে পারে।’
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সরকার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বায়ুর মান দ্রুত খারাপ হচ্ছে।
ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। আমার সন্দেহ আছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী আছে কিনা।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বায়ু দূষণ এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি শনাক্ত করার জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি খালি চোখেই দেখা যায়।’
বাংলাদেশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ধোঁয়াশা’ একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা। প্রায় প্রতিদিন সকালেই তাদের ঢেকে রাখে এই ‘ধোঁয়াশা’। কিন্তু আরও বিপজ্জনক হলো, দূষণ যেগুলো চোখ দেখতে পায় না: কণা পদার্থ, PM2.5 — ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম প্রশস্ত বায়ুবাহিত ক্ষুদ্র কণা- এগুলো ফুসফুস এবং রক্তপ্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে মারত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশে PM2.5-এর মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ই কেবল এই মাত্রা কমেছিল। কিন্তু সেই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি।
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত বছরের AQLI রিপোর্টে, আমাদের গড় আয়ু ৪.৮ বছর কমেছে, এবং এই বছর তা ৫.৫ বছর হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটি দেখায় যে, রাষ্ট্র তার জনগণের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেনি, যার অর্থ বাংলাদেশ সরকারও এই প্রতিবেদনের ফলাফলের সঙ্গে একমত। রাষ্ট্র এখানে দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে তালিকাভুক্ত করেন, বিশেষত ইটের জন্য কয়লা বা কাঠ পোড়ানো।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহনগুলোর অনেকগুলো যথাযথ ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই চলে। এটি বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। খোলা জায়গায় পোড়ানোসহ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবও একটি বড় কারণ।’
সর্বশেষ বায়ুদূষণ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার বছরের শেষ নাগাদ তার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তবুও পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান ব্যবস্থাপনার পরিচালক ড. জিয়াউল হক স্বীকার করেছেন, ‘বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস’ বাংলাদেশের পরিবেশে বিদ্যমান।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে আমরা এখনো কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না।’
ড. জিয়াউল হক বলেন, ‘যেসব বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, আমরা তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনব। তাদের কারখানার চুল্লিতে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং আমাদের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্গমনের ফলাফল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কোনো বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করব। ‘বাংলাদেশ পরিষ্কার বায়ু’ প্রকল্পের আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে।’
যদিও দূষণের সমস্ত উৎস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবুও কিছু উৎস এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মোকাবিলা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত দূষণ ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার ৩৫ শতাংশ বায়ু দূষণ দেশের বাইরে থেকে আসে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার বায়ু দূষণের ২৯ শতাংশই বর্জ্য এবং জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কারণে হয়। আমরা এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান করতে পারিনি। আমাদের প্রচেষ্টা সেখানেই আছে।’
সূত্র: আরব নিউজ
রাজধানীর শাহবাগে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)- সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ পানি ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরে বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ের মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
মন্তব্য