ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে একটি স্কুলের শিক্ষার্থীকে এক শিক্ষকের বাল্যবিয়ের অভিযোগের মধ্যে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর স্কুলে ঘটেছে তুলকালাম।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে এসে স্কুলের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে প্রথমে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করিয়েছেন। পরে লাঠিসোঁটা দিয়ে স্কুল ভাঙচুর করা হয়েছে।
সোমবার বেলা ১টার দিকে উপজেলার ধারিয়ারচর হাজি উমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
দুপুরে বিদ্যালয়ে ক্লাস চালাকালীন উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা, উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিনসহ শতাধিক বহিরাগত নিয়ে বিদ্যালয়ে ঢোকেন।
তারা শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে শিক্ষার্থীদের বাইরের মাঠে নিয়ে যায়। তখন সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন অভিযোগ তুলে তাদের দিয়ে মানববন্ধন করানো হয়।
মানববন্ধন শেষে বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের হাসনা হেনা অ্যাকাডেমিক ভবনের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে লাটিসোঁটা, কাঠ, বাঁশ, ইট ও পাইপ ছিল।
খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম একই বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করেছেন বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারে।
এই খবর জানতে পেরে গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ে একটি সভা হয়। এতে ঘটনাটি তদন্তে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আশরাফ উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।
সোমবার সকালে শিক্ষার্থীর পরিবারের দুই সদস্য শিক্ষক শফিকুলের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগমের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক শফিকুল প্রায় দেড় মাস আগে প্রাইভেট পড়ানোর সময়ে কক্ষে একা পেয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এখনও ঘটনার বিস্তারিত কিছুই জানি না। সোমবার উপজেলায় পৌঁছার পর পরই জানতে পারি, ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদ স্থানীয় লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। আমি তাকে অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। এর মধ্যেই তিনি শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে করে বের করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধন করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে শিক্ষকরা আমাকে জানিয়েছেন।’
মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছে। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভাঙচুর করেছে বলে শুনেছি।’
একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আর কিছু মুহূর্তের অপেক্ষা; উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু। শনিবারের উদ্বোধনী জনসভায় যোগ দিতে শুক্রবার রাতে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ রওনা হন তিনটি লঞ্চে করে।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে এসে পৌঁছায় লঞ্চগুলো। এরপর প্রতিটি লঞ্চ থেকে ফোটানো হয় আতশবাজি। এ সময় বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করা অন্যান্য লঞ্চ থেকেও আতশবাজি প্রদর্শন করা হয়; আলোকিত হয়ে ওঠে কীর্তনখোলা।
টানা ২০ মিনিট আতশবাজি ফোটানো হয়। এরপর এক এক করে সমাবেশস্থলের উদ্দেশে রওনা হয় লঞ্চগুলো।
প্রথমে সুরভী-৭ লঞ্চ বরিশালের কীর্তণনখোলা নদী অতিক্রম করে। চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা করা হয় লঞ্চটিতে। প্রতিটি লঞ্চেই এমন আলোকসজ্জার সঙ্গে নাচ-গানে মেতে ওঠেন মানুষ।
কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বরিশাল বিভাগ থেকে ৬০টি লঞ্চ পদ্মা সেতু উদ্বোধনী সমাবেশস্থলে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক লঞ্চ রওনা হয়েছে নেতা-কর্মীদের নিয়ে। আমরা ইতিহাসের সাক্ষী হতে উচ্ছ্বসিত হয়ে সমাবেশস্থলে যাচ্ছি।’
বরিশাল নদীবন্দরে রাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সমাগম দেখা গেছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পাস কার্ড ছাড়া বরিশাল নদীবন্দরে প্রবেশ করতে পারেনি কেউ। এই নদীবন্দর থেকে ৮টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে পদ্মা সেতু উদ্বোধনী সমাবেশস্থলের উদ্দেশে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বরিশাল বিভাগ থেকে এক লাখ মানুষ যাচ্ছে পদ্মা সেতু উদ্বোধনী সমাবেশস্থলে। জনসমাবেশে যোগ দিতে আনন্দিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ লঞ্চে করে রওনা হয়েছেন। আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।’
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে নরসিংদী। শনিবার আত্মমর্যাদা ও প্রত্যয়ের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে শুক্রবার গভীর রাতেই জেলার মোসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে জ্বলে ওঠে আলো।
এদিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ জেলায় দ্বিগুণ করতে জেলা প্রশাসন আয়োজন করছে ‘প্রত্যয়ের জয়গান’ নামের একটি কনসার্ট।
মোসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে আজ বিকেল ৩টায় দেশের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড দল ‘মাইলস’-এর শিল্পীদের মধ্যে গান পরিবেশন করবেন শাফিন আহমেদ। কনসার্টটি দর্শকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলে জানা গেছে নরসিংদী জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে।
নরসিংদী বিভিন্ন উপজেলাসহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে রয়েছে দিনব্যাপী কর্মসূচি। এর মধ্যে শনিবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রারও আয়োজন করা হয়েছে।
এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান বড় পর্দায় উপভোগ করবেন নরসিংদীবাসী।
বর্ণিল এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খানসহ স্থানীয় সম্মানিত ব্যক্তিরা ও জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন:আর ঘণ্টাদুয়েক পর পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন ঘিরে বর্ণিল সাজে সেজেছে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট। পদ্মা সেতুর আদলে প্রস্তুত করা হয়েছে জনসভা মঞ্চ। সেখানে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।
সমাবেশ সফল করতে শনিবার ভোর থেকেই জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মিছিল নিয়ে ব্যানার, প্ল্যাকার্ডসহ সভায় যোগ দিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
ভোর ৫টার দিকে প্রায় হাজারখানেক মানুষের জটলা দেখা যায় সেখানে। সবার মুখে মুখে স্লোগান, পুরো এলাকাজুড়ে উৎসব উৎসব রব। সকাল ৬টার পর খুলে দেয়া হয় জনসভার জমায়েতের স্থান। দীর্ঘ লাইনে সবাইকে চেক করে ঢুকতে দিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের।
পদ্মা সেতুর কাঁঠালবাড়ী সংযোগ সড়ক থেকে হেঁটে আসতে হচ্ছে তাদের। কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে লঞ্চযোগে সাধারণ মানুষ আসছেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। সকল ৭টার মধ্যেই জনসভাস্থলের প্রায় অর্ধেক এলাকা পূর্ণ হয়ে যায়।
ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী বাংলাবাজার ঘাট নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। সতর্ক অবস্থানে পুলিশ, র্যাবসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। পুরো ৮ কিলোমিটার এলাকার পুরোটাই আনা হয়েছে সিসিটিভির আওতায়। এ ছাড়া বসানো হয়েছে ২৬টি বড় পর্দার মনিটর।
বরিশাল থেকে আসা রমিজউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১টায় লঞ্চে উঠছি। সারা রাত নাচ-গান করে সকালে ঘাটে নামছি। এটা ঈদের আনন্দের চেয়ে কোনো অংশেই কম না, বরং আমাদের মুক্তির দিন আজ। অনেক কষ্ট আর ভোগান্তি থেকে বাঁচার দিন। যে কারণে আমাদের ফুর্তি কোনো অংশেই কম নয়। বরিশাল থেকে প্রায় এক লাখ মানুষ সভায় আসব।’
মাদারীপুর পৌর শহর থেকে এসেছেন নান্নু মুন্সি। তিনি বলেন, ‘সকালে আলো ফোটার আগেই চলে আসছি। প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার হেঁটে আসতে হয়েছে। এখন মাঠে আসছি, এতেই খুশি আমরা।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল মঞ্চের সামনে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ অন্তত ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমরা করেছি। পুলিশের অন্তত ১৫ হাজার কর্মী সভায় নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। এ ছাড়ার র্যাবের ২ হাজারসহ সব মিলিয়ে অন্তত ৪০ হাজার প্রশাসনের কর্মী মাঠে রয়েছে।’
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুর আদলে এবার পুকুরের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নির্মিত সেতুটির দেখা মেলে পটুয়াখালী শহরের সার্কিট হাউসের সামনের পুকুরে।
শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জনমানুষের দৃষ্টি আকর্ষণে সেতুটি নির্মিত হয়েছে বলে জানা গেছে। সেতুটি দেখতে ভিড় করতে দেখা যায় স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। সেতুতে উঠে অনেকে তুলছেন সেলফি, আবার গোটা সেতুকেও ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকে।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে জানা যায়, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার সকালে পুকুরের এই সেতুতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ এই আয়োজনে অনেক মানুষ অংশ নেবেন বলে প্রত্যাশা করছেন সেতু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সেতু নির্মাণের দায়িত্বে থাকা গোবিন্দ ঘোষাল জানান, ২৪ জন মানুষের ছয় দিন সময় লেগেছে সেতুটি নির্মাণ করতে। শুক্রবার কাজ শেষ করে জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর সেখানে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ১৯টি স্প্যানের ওপরে নির্মাণ করা সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০ ফুট। পানি থেকে ছয় ফুট উপরে সেতুতে নির্মাণ করা হয়েছে নমুনা রেললাইন। উপরে দুই পাসে ২০টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়েছে। সেতুটি আলোকিত ও দৃষ্টিনন্দন করতে বিভিন্ন রঙের লাইটিং করা হয়েছে।
এটি নির্মাণে ৪৮৫টি বাঁশ, ৫০০ ঘনফুট কাঠ এবং ১৫০টি প্লাইউড ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান সেতুর নির্মাতা গোবিন্দ।
সেতু দেখতে আসা শহরের মিঠাপুকুর পাড় এলাকার মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সময় ও সক্ষমতার অভাবে সরাসরি পদ্মার পাড়ে গিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে পারিনি। কিন্তু কাঠের এ সেতু, এর নিচের পিলার ও রেললাইনের অংশ দেখে মনে হয়, এ যেন হুবুহু পদ্মা সেতু।’
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে জেলাবাসীর কাছে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যতিক্রম এই আয়োজন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় অংশ নিতে খুলনা থেকে দলে দলে নেতা-কর্মী ছুটছেন পদ্মার পারে।
খুলনার শিববাড়ী মোড়ে শুক্রবার রাত ১২টা থেকে জড়ো হতে থাকে শত শত পরিবহন। এতে করে রওনা দেন খুলনার বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ৫০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী।
‘আমরা ৫০০-এর বেশি বাস ভাড়া করেছি। প্রত্যেক উপজেলায় গাড়ি পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার ভোর ৫টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে গাড়ি ছেড়েছে। তা ছাড়া অনেক নেতা-কর্মী নিজস্ব গাড়িতেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাবেন।’
নগর যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুর রহমান পলাশ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশ সফল করতে আমরা কয়েক হাজার নেতা-কর্মী রাতেই রওনা দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আছেন।
‘সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স, পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, স্যালাইন, পানি, ওষুধসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস নেয়া হয়েছে।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি বড় পর্দায় খুলনা জেলা স্টেডিয়াম, দৌলতপুর ও শিববাড়ি এলাকায় দেখানো হবে।
‘বিকেল ৪টায় জেলা স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পটের গান আয়োজন করা হয়েছে। গান পরিবেশন করবে ব্যান্ড দল চিরকুট ও বাউল। সেই সঙ্গে আতশবাজি ও লেজার শো করা হবে।’
আরও পড়ুন:ছয় মাস আগে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে শ্বশুরের দ্বারা ধর্ষিত এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে শ্বশুরকে আটক করেছে মিঠামইন থানা পুলিশ।
শুক্রবার রাত ১১টায় উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের পাতারকান্দি এলাকা থেকে অভিযুক্ত ওই শ্বশুরকে আটক করা হয়।
মিঠামইন থানার ওসি কলিন্দ্র নাথ গোলদার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগীর মা পরিস্কার বানু জানান, দুই বছর আগে উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের পাতারকান্দি গ্রামের একাব্বর মিয়ার ছেলে দিদারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার কন্যা শামসুন্নাহারের। বিয়ের কিছুদিন পর দিদার কাজ করতে চলে যান চট্টগ্রাম। ছুটি নিয়ে তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতেন।
ফাঁকা বাড়িতে একাই থাকতেন শামসুন্নাহার। এই সুযোগে ৬ মাস আগে ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন শ্বশুর একাব্বর। পরে ভুক্তভোগী মোবাইল ফোনে বিষয়টি তার স্বামীকে জানালে তিনি বাড়িতে আসেন।
বাড়ি এসে বাবার সঙ্গে রাগারাগি করে শামসুন্নাহারকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে যান দিদার। আর এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলতে নিষেধ করেন স্ত্রীকে এবং কিছুদিনের মধ্যেই আবারও চট্টগ্রাম চলে যান তিনি।
এরপর শামসুন্নাহারের সঙ্গে ধীরে ধীরে যোগাযোগ কমাতে থাকেন দিদার। এক পর্যায়ে তিনি শামসুন্নাহারকে বলেন, ‘তুমি আমার বাবার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছো। এখন তোমার সঙ্গে কিভাবে যোগাযোগ রাখি। আর কীভাবেই বা আমার বাড়িতে নিই।’
এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি দিদার ফোন করে শামসুন্নাহারকে জানান, স্ত্রীকে আর ঘরে নেবেন না তিনি।
এই অপমান সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে বাবার বাড়িতে গলায় উড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন শামসুন্নাহার।
শামসুন্নাহারের মা বলেন, ‘এখন থানায় আছি। মামলা করার জন্য এসেছি। এখানেও একাব্বরের লোকজন বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’
মিঠামইন থানার ওসি কলিন্দ্র নাথ গোলদার বলেন, ‘নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় একাব্বরকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ থানায় রয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:নাম জাফরুল হাসান। পেশায় ডিপ্লোমা চিকিৎসক। কিন্তু তার চেহারার সঙ্গে অনেক মিল মোহাম্মদ তামিম নামে এক চিকিৎসকের। তাই ডা. তামিমের নাম ব্যবহার করেই হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌর শহরের এম কে ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে আসছিলেন জাফরুল।
বিষয়টি জানতে পেরে শুক্রবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত জাফরুলকে আটক করে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে প্রতারণার কথা স্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা করার জন্য চুনারুঘাট থানায় তাকে হস্তান্তর করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম প্রিয়া।
আদালত সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বাসিন্দা জাফরুল হাসান টাঙ্গাইলের প্রফেসর সোহরাব উদ্দিন আইএমটি অ্যান্ড ম্যাটস থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু চুনারুঘাটে এসে তিনি নিজেকে ডা. তামিম পরিচয় দিতেন এবং বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার অ-৮৮০০২ ব্যবহার করে রোগী দেখে আসছিলেন।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন অফিসে একাধিক অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. উমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম প্রিয়া জানান, জাফরুল কোনোভাবে ডা. তামিমের কাগজপত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করেন। তামিমের বাড়ি নওঁগা জেলায় এবং তিনি বিষয়টি জানতেন না। তবে দুজনের চেহারায় মিল রয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতে কোনো জরিমানা বা কারাদণ্ড না দিয়ে নিয়মিত মামলার জন্য চুনারুঘাট থানায় ভুয়া ডাক্তার জাফরুলকে প্রেরণ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য