সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায়, নাকি জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সোমবার আয়োজিত বৈঠকে দুটি পক্ষেই মত এসেছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চাইছে লিখিত পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে শুধু ঢাকায় অনুষ্ঠিত হোক। অন্যদিকে, জেলা পর্যায়ে পরীক্ষার পক্ষে অবস্থান নেন মন্ত্রণালয়ের কয়েক কর্মকর্তা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিকের নিয়োগসংক্রান্ত মিটিং হয়েছে। তবে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে শুধু ঢাকায়, নাকি জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে- সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে ঐকমত্য না হওয়ায় একপর্যায়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত আরেক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে শুধু ঢাকায় নেয়ার পক্ষে মত দেয়া হয়। তাদের যুক্তি হলো, ঢাকায় পরীক্ষা হলে প্রশ্ন ফাঁসসহ অন্যান্য অসুদপায় এড়ানো সম্ভব হবে।’
বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
প্রাথমিকের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর আগে প্রতিবারই জেলা পর্যায়ে প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে।
সহকারী শিক্ষক পদের লিখিত পরীক্ষা শুধু ঢাকায় নিতে কেন্দ্র নির্বাচনসহ পরীক্ষাসংক্রান্ত নানা প্রস্তুতি শেষ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে হঠাৎ করেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা আয়োজনের সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিয়োগসংক্রান্ত বৈঠক হয়।
মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র নিউজবাংলাক জানান, গত ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে একাধিক সংসদ সদস্য জেলা পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিতে মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। তারা যুক্তি দেখান, জেলায় পরীক্ষা হলে চাকরিপ্রার্থীরা ঢাকায় আসার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাবেন।
এ বিষয়ে জানতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. জাকির হোসেনকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
নিয়োগ পরীক্ষা জেলায় ফিরলে ‘দুর্নীতির শঙ্কা’
নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় নেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন অনেক চাকরিপ্রার্থী। তাদের আশঙ্কা, জেলায় পরীক্ষা নেয়া হলে দুর্নীতির সুযোগ আবার তৈরি হবে।
কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জেলা পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার খবরে তারা চরমভাবে হতাশ। কারণ জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা নেয়ার অতীত রেকর্ড ভালো নয়। বিগত সময়ে জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রক্সিসহ নানা অনিয়ম ঘটেছে।
প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা ঢাকায় নেয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাসও দিচ্ছেন অনেক চাকরিপ্রত্যাশী।
আরিফুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, ‘অতীতের প্রাথমিকের সব নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। কারণ আবারও জেলায় পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
মাহমুদ কবির নামে আরেকজন লেখেন, ‘কিছু দিন আগের খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষাও জেলা পর্যায়ে নেয়া হয়েছিল। এর ফল কী হয়েছিল তা আমরা সবাই দেখেছি। এবারও খাদ্য অধিদপ্তরের মতো প্রশ্ন ফাঁস হবে। তাই ঢাকায় পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।’
এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলমের সই করা পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচনসংক্রান্ত চিঠিতে আগামী ৮ এপ্রিল থেকে নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর কথা বলা হয়েছিল।
চিঠিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ২০২০-এর লিখিত পরীক্ষা আগামী ৮, ১৫ ও ২২ এপ্রিল এবং ১৩ মে বিকেল ৩টায় গ্রহণ করা হবে।
এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জুলাই মাসের মধ্যে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল।
সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। করোনা মহামারির কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে অবসরজনিত কারণে আরও ১০ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্য পদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্য পদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীদের বয়স বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং করোনার কারণে সাধারণ ছুটি শুরুর তারিখ অর্থাৎ গত বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাদের বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর, তারা আবেদন করতে পারবেন। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর।
প্রাথমিকের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর শুরু হয় এ পদের অনলাইনে আবেদন। এতে আবেদন করেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ চাকরিপ্রার্থী। সে হিসাবে ১টি পদের জন্য প্রতিযোগিতা হবে ২৯ চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে।
আরও পড়ুন:বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নিজাম উদ্দিনকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা-ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিদায়ী চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আর টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন দুই সদস্য হয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান এবং নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা ও সুশাসন বিশেষজ্ঞ তাহেরা ইয়াসমিন।
তাছাড়া টিআইবির অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফারুক আহমেদ। অডিট কমিটির অপর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত কম্পট্রোলার জেনারেল, ডিফেন্স ফাইন্যান্স মোতাহার হোসেইন।
টিআইবি’র নতুন চেয়ারপারসন মনসুর আহমেদ চৌধুরী বহুল আলোচিত ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরী’-এর উদ্যোক্তা। মানবাধিকার বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের নিশ্চয়তাসহ তাদের জীবন-মানের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন।
‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম’ গঠনে মনসুর আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবন্ধীবিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে (২০০৯-১২ মেয়াদে) দায়িত্ব পালন করেছেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নিরাফাত আনাম মেমোরিয়াল ইনক্লুশন পদক, সিলেট রত্ন পদক, আজীবন সম্মাননা (সিঙ্গার বাংলাদেশ ও চ্যানেল আই) এবং সিনিয়র অশোকা ফেলোশিপ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন সদস্য ব্যারিস্টার মনজুর হাসান বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টিআইবির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ব্র্যাকের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০০৩ সালে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে ‘অফিসার অফ দ্য মোস্ট এক্সেলেন্ট অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই)’ উপাধিতে ভূষিত হন।
বোর্ডের আরেক নতুন সদস্য তাহেরা ইয়াসমিন নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা এবং সুশাসন বিশেষজ্ঞ। তিনি অক্সফাম, কেয়ার এবং জিআইজেড-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জিআইজেড-এর রুল অব ল’র অপারেশন পরিচালক এবং অ্যাকসেস টু জাস্টিস ফর উইম্যান প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বেসরকারি সংস্থা ও উন্নয়ন খাতে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ট্রাস্টি বোর্ড টিআইবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম। বোর্ডের অন্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক; দ্য ডেইলি স্টার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম, কোষাধ্যক্ষ।
সদস্যবৃন্দ হলেন- সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন, অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম, অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, সোসাইটি অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (শেড)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফিলিপ গাইন, মানবাধিকার ও সমাজকর্মী বনশ্রী পাল এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক ফারুক আহমেদ।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব করা হয়েছে।
রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ড. নাসিমুল গনি বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। চার বছর ওএসডি থাকার পর ২০১৩ সালে তাকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।
৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য নিয়োগ পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগবঞ্চিত এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক তাদেরকে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্যে অপেক্ষমাণ চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান।
‘৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য (লিখিত ও মৌখিক) উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ক্যাডার পদে নিয়োগবঞ্চিত ১৯১৯ জন চিকিৎসককে ন্যায্য নিয়োগ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে।
সংবাদ সম্মেলনে নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকরা বলেন, ২০২১ সালে ৪২তম বিসিএসের ফলাফলে পর্যাপ্ত পদ না থাকায় এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগবঞ্চিত হয়ে আছেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা বৈষম্যের শিকার। স্বাস্থ্য অধিদফতর নীতিগতভাবে দ্রুত দু’হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাই এক্ষেত্রে ৪২তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ চিকিৎসকদের অগ্রাধিকার দেয়া হোক।
তারা বলেন, দেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চরম চিকিৎসক সংকট রয়েছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
সাধারণ বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমানে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস প্রক্রিয়াধীন। ৪২তম বিসিএসের পরে আর কোনো চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। তাই দীর্ঘ প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসক সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব.) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ডা. ফারজানা সাথী, ডা. মো. রেজওয়ান কবীরসহ ৪২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চিকিৎসকরা।
সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করেছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। তা চলবে আগামী ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার প্রার্থীদের আবেদন ফি দুশ’ টাকা।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরুর একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) অনলাইনে আবেদন অনিবার্য কারণে স্থগিত করে পিএসসি।
সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয় পর্যালোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে সরকার। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মচারীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের কর্মে নিয়োজিত জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ‘মহার্ঘ ভাতা’ সংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-সচিব সৈয়দ আলী বিন হাসানের সই করা আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি মহার্ঘ ভাতার প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয় পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দাখিল করবে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য