রোববার দুপুর। রাজধানীর আগারগাঁও থেকে যাত্রী নিয়ে মিরপুর-১০ নম্বরের দিকে যাচ্ছিল ‘খাজাবাবা’ পরিবহনের বাস। উঁচু-নিচু রাস্তায় পেছনে বসে অনবরত ঝাঁকি খাচ্ছিলেন যাত্রীরা।
যাত্রীদের একজন মিরপুর-১১-এর বাসিন্দা ওসমান গনি। রাস্তার অবস্থা দেখে কৌতুক করে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় শখ ছিল রোলার কোস্টারে চড়মু। গত তিন বছরে সে শখ পূরণ হইছে। বাসের ভাড়া দিয়াই রোলার কোস্টারের স্বাদ পাওয়া যায়। বাড়তি টাকা লাগে না।’
পাশে বসা মিরপুর-১০-এর যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কবে যে আল্লায় এই জ্যাম থেকে উদ্ধার করবে। ভালো, আজ তেমন জ্যাম নেই।’
আনোয়ারের কথা শেষ হতে না হতেই দাঁড়িয়ে পড়ে বাস। বাসের হেলপার আসলাম হাঁক দিয়ে বলেন, ‘শেওড়াপাড়া-কাজীপাড়া কেউ থাকলে নাইমা যান। খামাখা বইসা সময় নষ্ট কইরেন না। সকালের ট্রিপে জ্যাম পার অইতে দুই ঘণ্টা লাগছে, এখন কতক্ষণ লাগে কওন যায় না।’
হেলপার আসলাম জানান, মেট্রোরেলের কাজের জন্য রাস্তা একপাশ বন্ধ। এতে বাকি পথ যেতে অনেক সময় লাগবে। ইঞ্চি-ইঞ্চি করে কচ্ছপগতিতে বাসটি কাজীপাড়া বাস স্টপেজ অতিক্রম করতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে।
শেওড়াপাড়া থেকে কাজীপাড়া হয়ে মিরপুর-১০ পর্যন্ত রাস্তার এক লেনে চলে বাস ও অন্যান্য যানবাহন। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এতে অর্ধেক রাস্তাই বন্ধ হয়ে যায়। এখানে সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী। অনেক জায়গায় রাস্তা এমন সরু যে, বাস চলাচল বেশ কষ্টসাধ্য।
কিছু জায়গায় ফুটপাত পর্যন্ত কেটে রাখা হয়েছে, ফলে বাস চলাচলের রাস্তায় হেঁটে চলাচল করেছে সাধারণ মানুষ।
যানজটের ভোগান্তি মূলত মেট্রোরেলের শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া স্টেশনের মাঝামাঝি জায়গায় বেশি। শেওড়াপাড়ায় সুপার শপ ‘স্বপ্নে’র সামনের রাস্তায় ইট, পাথর, সুরকি, বালি রেখে রাস্তা আটকে রাখা হয়েছে।
একটু সামনে গেলে স্টেশনের নিচে ক্রেন নিয়ে মালামাল উঠানামা করছে। এক পাশে কোনো রকমে দুটি বাস পার হওয়ার রাস্তা রয়েছে। সামনে গেল রাস্তা আরও সরু হয়ে পড়ে। প্রায় আধাকিলোমিটার রাস্তা খুঁড়ে বসানো হচ্ছে সুয়্যারেজ লাইন। এরপর আবার কাজীপাড়া স্টেশনের কাজের জন্যও রাস্তা অর্ধেক আটকে আছে।
স্যুয়ারেজ লাইনের এক কর্মী বলেন, ‘মেট্রোর কাজ শেষ ওইলে এমনিতেই রাস্তা ঠিক করতে অইত। তাই এ সুযোগ স্যুয়ারেল লাইন বসানোর কাম শুরু হইছে। লাইন আগের চাইতে বড় অইব। যাতে আগামী কয়েক বছরে আর হাত দেওয়া না লাগে।’
বাসযাত্রী আনোয়ার বলেন, ‘মেয়ে মনিপুরী স্কুলে পড়ে। প্রতিদিন নিয়ে যেতে হয়। সকাল থেকেই শুরু হয় ভোগান্তির যাত্রা। অনেক দিন রিকশা থেকে নেমে হেঁটে যেতে হয়েছে।
‘স্কুল-কলেজ শুরুর পর থেকে যানজটের ভোগান্তিও বেড়েছে। তবে রোববার মিরপুর এলাকার শপিং মলসহ অনেক দোকনাপাট বন্ধ থাকে। তাই এদিন ভোগান্তিও কিছুটা কম হয়।’
ব্যবসায়ও মন্দা
মেট্রোরেলের কাজ চলার পর থেকে ধূলাবালি ও ভোগান্তির এলাকা হয়ে উঠেছে মিরপুর। ফল ভোগ করছেন ব্যবসায়ীরাও। দোকানের সামনেই নির্মাণযজ্ঞ চলায় ক্রেতারা ঠিকমতো দোকানে প্রবেশ করতে পারে না। এমনি অনেকের দোকান নির্মাণসামগ্রীর আড়ালে পড়ে দেখাও যায় না।
শেওড়াপাড়ার মুসলিস সুইটসের বিক্রেতা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘গত ৪ বছর ধরে কী যে কষ্টে আছি, বুঝাতে পারমু না ভাই। কাস্টমার নাই বললেই চলে। দিনে ৫-৬ বার দোকান ঝাড়ামোছায় সময় চলে যায়। জিনিসপত্র মুছেও রাখা যায় না। একটু দেরি হলেই মনে হয় কত যুগ ধরে কেউ পরিষ্কার করেনি।’
এখানকার বাসিন্দারা বলছেন, সামনে বর্ষার মৌসুম। এখনই যদি সড়কগুলো সংস্কার করা না হয় তাহলে বর্ষায় আরও বেশি গর্ত হয়ে যাবে। এতে এ সড়ক হয়ে উঠবে আরও ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয় বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, ‘এখন তো না হয় জ্যামে পড়লে মানুষ গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা হেঁটে পার হতে পারে। বর্ষায় সে অবস্থাও থাকে না। উঁচু-নিচু রাস্তায় পানি জমে থাকে। হাঁটার অবস্থাও থাকে না।
‘জমা পানিতে বাস চলাই কষ্টকর। এর চেয়ে ছোট গাড়ি হলে বন্ধ হয়ে যায়। তখন আরও বড় জ্যাম লাগে। আগারগাঁও থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত বন্ধ থাকে। পানি, কাঁদা, গর্ত ও যানজটে বিশ্রী অবস্থা দাঁড়ায়।
ভোগান্তির শেষ কবে
চলতি বছরের মধ্যেই চালু হচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল, যা এমআরটি-৬ নামে পরিচিত। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের এই রুটে প্রথম পর্যায়ে চালু হবে উত্তরা তৃতীয় পর্ব হতে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার। এ অংশের কাজ ৯০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। আর পুরো প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি।
মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বলছে, উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও ৯টি স্টেশন নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পরিষেবা স্থানান্তর, ভায়াডাক্টের উপর প্যারাপেট ওয়াল স্থাপন, সব স্টেশনের সাব- স্ট্রাকচার, কনকোর্স ছাদ, প্লাটফর্ম ছাদ এবং স্টিল রুফ স্ট্রাকচার নির্মাণ শেষ হয়েছে।
৯টি স্টেশনের মধ্যে উত্তরা ছাড়া বাকি ৮টির রুফশিট স্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হবে মেট্রোরেল।
শেওড়াপাড়া স্টেশনের নিচে দায়িত্ব পালন করা ফোরম্যান মো. আলম বলেন, ‘এখানে লিফট বসানোর জন্য অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য আমাদের তাগিদ দেয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের আগেই এ স্টেশনের কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:আজ সোমবার, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস। আজ সকালে ঢাকার আকাশে উঁকি দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমে রোদ উঠতেই ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, এই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘ভালো’, দূষণ-মান ছিল ৫০। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৭৪তম স্থানে নেমে গিয়েছিল ঢাকা। তবে আজ আবার তালিকার ২৬তম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
এদিকে, গতকালের তুলনায় পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গেছে। ৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার ১২ তম স্থানে রয়েছে লাহোর। তবে ভারতের দিল্লির বায়ুদূষণ আজও অব্যাহত রয়েছে। ১২৩ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
একই সময়ে ১৬৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ এবং ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
আইসিডিডিআরবি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে থাকা বস্তির শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, এসব শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরের এই মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রামের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, সিসা পোড়ানো, গলানো বা রিসাইক্লিংয়ের (পুনঃচক্র) মতো কাজগুলো যেখানে হয়, সেসব এলাকার শিশুদের মধ্যে সিসায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
উদাহরণ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণায় চিহ্নিত সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা ছিল পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩% বেশি। সিসার অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ঘরের ভেতর ধূমপান, দূষিত ধূলিকণা, সিসাযুক্ত প্রসাধনসামগ্রী ও রান্নার পাত্র।
এই আলোচনা সভা থেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি বানানো বা রিসাইক্লিং করার কারখানা বা স্থান, অথবা যেসব কারখানা বা স্থাপনায় সিসা গলানো বা পোড়ানো হয়, এমন সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিলে বা দূষণ কমানোর ব্যবস্থা নিলে সেসব এলাকার শিশুদের সিসা দূষণ থেকে বাঁচানো সম্ভব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ট্রেইনি ডা. সানজিদা তাপসি আদিবা। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সারাহ স্যালওয়ে।
মন্তব্য