পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে পাল্টে গেছে পটুয়াখালীর দৃশ্যপট। জাতীয় অর্থনীতির পাশাপাশি কেন্দ্রটি আঞ্চলিক অর্থনীতিতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। যে কারণে এটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে নেয়া হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।
পুরোপুরি অজপাড়া গাঁর এই এলাকাটি এখন আলো ঝলমলে। ছয় বছর আগেও মানুষ এখানে সড়কের কথাই ভাবতে পারেনি, সেখানে এখন উঠছে বিমানবন্দরের দাবি। মাছ ধরাই ছিল যাদের একমাত্র জীবিকা, এখন তারা অনেক কিছু করে।
ঘরে বিদ্যুৎ আসবে- এই স্বপ্ন দেখতে না পারা মানুষ এখন নিজের চোখেই দেখছে, তাদের এলাকায় উৎপাদিত বিদ্যুতের আলোয় ঝলমল করছে গোটা দক্ষিণাঞ্চল।
যাদের জমিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র, তারা বসবাস করত কুঁড়েঘরে। তারা এখন বাস করে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার বাসভবনে। যে এলাকা ছিল শহর থেকে শত কিলোমিটার দূরে, সেই এলাকা এখন উন্নত শহরের রূপ ধারণ করে আছে।
পড়াশোনা করে উন্নত ভবিষ্যৎ গড়া এক সুদূরপরাহত স্বপ্ন ছিল যে শিশু-কিশোরদের, তারা এখন কারিগরি শিক্ষা নিচ্ছে। পড়া শেষেই চাকরি- এমন আশ্বাসও দেয়া হয়েছে। এর সবকিছুই হয়েছে পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে এই কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে জাতীয় গ্রিডে। তবে সোমবার কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শুরু হবে বাণিজ্যিক উৎপাদন।
তবে কেন্দ্রটি আপাতত তার উৎপাদনক্ষমতার অর্ধেক ব্যবহার করবে। যে দুটি সঞ্চালন লাইন তৈরি হওয়ার কথা ছিল, তার মধ্যে একটি হতে না পারায় অন্য একটি ইউনিটকে বসিয়ে রাখতে হবে চলতি বছরের বাকি সময়। এটুকু বাদ দিলে এই কেন্দ্রটিকে দক্ষিণের জীবন ঘুরিয়ে দেয়ার প্রকল্প বললে অত্যুক্তি হবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তাকে বরণ করতে প্রস্তুত করা হয়েছে রংবেরঙের দেড় শতাধিক নৌকা। এগুলো ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিসংলগ্ন রাবনাবাদ নদী মোহনায় সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। প্রতিটি নৌকায় বর্ণিল পোশাকে পাঁচজন করে জেলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
দারুণ লাগছে। জীবনে কল্পনাও করি নাই মোগো এইহানে এত সুন্দর চকচকে এত্ত বড় রাস্তা অইবে। হাজার হাজার বড় গাড়ি এহোন এই রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া হরে
বিদ্যুতের জেটি পরিদর্শনের সময় প্রধানমন্ত্রীকে ভিন্নমাত্রার আনন্দ দিতে এবং উপকূলের জীবনযাত্রা এই নৌকার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বরিশালের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ১০ জন শিক্ষার্থী এক সপ্তাহ ধরে এ নৌকাগুলোকে প্রস্তুত করেছেন।
পাল্টে গেল জীবন, বাড়ছে স্বপ্ন
২০১৬ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের সড়কগুলো ছিল কাদামাটিতে ভরপুর। তখন পাকা রাস্তা ছিল না বললেই চলে। বিদ্যুতের কথা ভাবা তো ছিল কল্পনার মতো। বলতে গেলে এক ভূতুড়ে এলাকা ছিল গোটা ধানখালী।
ছয় বছর পর পুরো ভিন্ন চিত্র। ধানখালী ইউনিয়নটি এখন শহর হয়ে গেছে। সেখানে এখন চার লেনের সড়ক। রাতের আলোয় মনে হয় দেশের ব্যস্ততম কোনো শহরের দৃশ্য।
পাঁচ বছর আগে যে মাটির রাস্তায় বাইসাইকেল আর ভাড়ায় মোটরসাইকেল ছিল প্রধান বাহন। সেখানে এখন চার চাকার যানবাহনে ব্যস্ত থাকে ২৪ ঘণ্টা।
গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনের রাস্তায় নতুন ইজিবাইক নিয়ে বসেছিলেন চালক সাইফুল ইসলাম। তিনি নৌকা নিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন, যেটা ছিল অনেক কষ্টের। সে সময় তার বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না, এখন নিজ ঘরে রাতে ইজিবাইক চার্জ দিয়ে সকালে রাস্তায় নামেন যাত্রী আনা-নেয়ার কাজে।
সাইফুল বলেন, ‘দারুণ লাগছে। জীবনে কল্পনাও করি নাই মোগো এইহানে এত সুন্দর চকচকে এত্ত বড় রাস্তা অইবে। হাজার হাজার বড় গাড়ি এহোন এই রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া হরে।’
সোমবারের বাজারের দোকানদার ছোবাহান মিয়া বলেন, ‘মোর দোহানে এহন ফ্রিজও আছে। ভালোই বেচাকেনা অয়। আগে মুইও নদীতে জাল হালাইতাম। মাঝেমধ্যে মাছ পাইতাম আবার কহোনো পাইতাম না। সংসার চালাইতে মোর অনেক কষ্ট অইত। কিন্তু এই কেন্দ্রের লাইগ্যা এই এলাকার অনেক উন্নতি হইছে।
‘রাইত ১১-১২ডা পর্যন্ত লোকজন থাহে মোর দোহানে আর আগে এই বাজারে মোরা থাকতাম রাইত ৮টা পর্যন্ত। তহন দোহান ছিল হাতে গোনা দু-চাইরডা। আর এহন দেহেন দোহানের পর খালি দোহান আর দোহান।’
ঢাকার বড় বড় পার্টি এসে কানি কানি জমি কিনছে। এখন সেই সব জমি বালু দিয়ে ভরাটের কাজ চলছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই এসব এলাকায় বড় বড় দালানকোঠায় ভরে যাবে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রেদওয়ান ইকবাল বলেন, ‘১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণেই মূলত এ পরিবর্তন। শুধু সড়কই নয়, এখানে গড়ে উঠছে বড় বড় ইন্ডাস্ট্রি। বেড়ে গেছে এখানকার জমির মূল্যও।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন প্রথমে ২০১৬ সালে এখানে এসেছি, অনেক নৌকায় পাড়ি দিয়ে আসতে হয়েছে। ছোট ছোট খাল ছিল আর ছিল মাইলের পর মাইল বিল। পাকা রাস্তা ছিল না। আর আজ সেখানে ফোর লেনের কাজ সমাপ্তির পথে। এর পরই আবার শুরু হবে সিক্স লেনের কাজ।’
কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা হানিফ চৌকিদারের সঙ্গে। তিনি জানান, এখানকার জমির দাম কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। তবে মূল সড়কের পাশে কোনো খালি জমি নেই। সব বিক্রি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার বড় বড় পার্টি এসে কানি কানি জমি কিনছে। এখন সেই সব জমি বালু দিয়ে ভরাটের কাজ চলছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই এসব এলাকায় বড় বড় দালানকোঠায় ভরে যাবে।’
তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মওলা বলেন, ‘ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে এখানকার অধিবাসীদের। কর্মসংস্থানের সুযোগসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলবাসী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সুযোগ পাবে এখান থেকে।’
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান বলেন, ‘তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর আর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটাকে সামনে রেখে কলাপাড়ায় একটি বিমানবন্দর করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ভোলা ও বরিশালে গ্যাস সরবরাহ আছে। পটুয়াখালী জেলায় সরকারের এতগুলো মহাপ্রকল্প চলমান থাকা সত্ত্বেও এখানে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে না। এ বিষয়টি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব।'
১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি সোমবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উন্নত আবাসন, কর্মসংস্থানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পশ্চিম পাশেই করা ‘স্বপ্নের ঠিকানা’র অবস্থান। কেন্দ্র করতে গিয়ে গৃহহারাদের পুনর্বাসন করতে গড়া হয়েছে আধুনিক এ প্রকল্পটি।
এখানে ১ হাজার ২০০ বর্গফুটের ১৩০টি ঘর ছাড়াও বসবাসকারীদের সুবিধার্থে রয়েছে স্কুল, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, দুটি পুকুর ও প্রতি চারটি পরিবারের জন্য একটি করে ডিপ টিউবওয়েল।
ঘর নিয়ে আক্ষেপ নেই। তবে ‘এ’ ‘ব্লকের ১৭ নম্বর ঘরের মালিক রানী বেগম বলে, ‘জমির তিন গুণ দাম দেওয়ার কতা থাকলেও মোগো হ্যারা দেয় নাই। মোগো পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়ার কতা, হেডাও হরে নাই। মাঝেমধ্যে কামকাইজ করত, প্ল্যান্টে এহনও হেডাও বন্ধ। মূল গেট বন্ধ কইরা অন্য এলাকার লোকদের দিয়া কাম হরায়। এই ঘরডা দিয়ে মোরা হরমু কী? সংসার চলে না। কামকাইজ করতে পারে না পুরুষরা। আপনাগো লগে কতা কইতেও ভাল্লাগে না।’
একই অভিযোগ করলেন ‘বি’ ব্লকের ৩০ নম্বর ঘরের মালিক সেলিম হাওলাদার, ১৬ নম্বর ঘরের মালিক আলামিন, ৬২ নম্বর ঘরের মালিক নাইম ও ফজিলাতুন্নেছা।
কারিগরি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন দেশের ভাষা শেখানো হচ্ছে, যাতে বিভিন্ন দেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হয়। তা ছাড়া এখানে শুধু এখানকার অধিবাসীরাই নয়, গোটা জেলার যে কেউ ভর্তি হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।
সেমিপাকা ঘর, পাকা টয়লেট আর খোলা মাঠ ও বড় বড় পুকুর পেয়ে এরা সবাই যতটা খুশি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হতাশা বিরাজ করছে এদের মধ্যে। পরিবারের অন্তত একজন সদস্যেরও যদি কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়, সেই দাবি তাদের।
তবে এখানকার বাংলাদেশ-চায়না কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয়ে অনেক শিক্ষার্থী বেজায় খুশি। এখানে সপ্তাহে পাঁচ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তিনটি গ্রেডে ক্লাস নেয়া হয়। ৯ জন শিক্ষক, দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা দেয়া হয়ে থাকে।
এখানে কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যালসহ তিনটি গ্রেডে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ শেষে চাকরির সুযোগ হবে বলে আশাবাদী দশম শ্রেণির ছাত্র সজিব হোসেন।
একই শ্রেণির ছাত্র মজিবুর রহমান রনি বলেন, ‘যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্যই মূলত এখানে গড়ে তোলা হয়েছে এই কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে নিতে পারবে।’
আরেক ছাত্র ইব্রাহিম প্যাদা জানিয়েছে, তাদের জন্য বিনা মূল্যে টিফিন এবং পোশাক দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রেদওয়ান ইকবাল বলেন, ‘কারিগরি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন দেশের ভাষা শেখানো হচ্ছে, যাতে বিভিন্ন দেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হয়। তা ছাড়া এখানে শুধু এখানকার অধিবাসীরাই নয়, গোটা জেলার যে কেউ ভর্তি হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।‘
পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মওলা বলেন, ‘এই কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে শিক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের জন্য চাকরির দরজা খোলা থাকবে। অতএব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা চাকরি পায়নি এ কথাটা সঠিক নয়। তারা সবাই চাকরি পাবে পর্যায়ক্রমে।
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান জমির মূল্য আর চাকরি না পাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে জানান, ‘এটি মিথ্যা কথা। কারণ তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তাদের প্রাপ্যটুকু বুঝিয়ে দিয়েছে। এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস হয় না।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য