সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই দিন ধরে ভাইরাল হওয়া ‘দৈনিক ইন্তেকাল’ নামের একটি আইডি কার্ড নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
কার্ডটিতে আবুল মিয়া নামের নিচে বাংলায় ছোট করে লেখা আছে সাংবাদিক। বাঁয়ে একটি স্বাক্ষরসহ কর্তৃপক্ষ লেখা। তারও নিচে বড় অক্ষরে ইংরেজিতে লাল রঙে লেখা প্রেস।
কার্ডটিতে যে ব্যক্তির ছবি রয়েছে তার নাম মো. সাদ্দাম মাল। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সামসুর হক মালের ছেলে তিনি।
না, আসলে তিনি কোনো সাংবাদিক নন আর এই নামে কোনো পত্রিকাও নেই। মূলত ফেসবুক ও ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল ‘কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়া’র কনটেন্ট তৈরি করতে এটি তৈরি করা হয়েছিল।
এই চ্যানেলের প্রধান চরিত্রে অভিনয়কারীই হলেন এই সাদ্দাম। মূলত তার চ্যানেলে প্রচারের জন্য কনটেন্ট তৈরির একটি অংশ ছিল ছবিসহ এই কার্ডটি। ‘দৈনিক ইন্তেকাল’ নামের একটি নাটকের শুটিং চলাকালে কেউ একজন এ কার্ডটির ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। তার পরই এটি ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়া ছবির পোস্টের নিচে অনেকে মজা করে মন্তব্য করলেও অনেকে করেছেন সমালোচনা।
প্রথম আলোর পটুয়ালাখীর কলাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি নেছার উদ্দিন আহমেদ টিপু বলেন, ‘সাংবাদিকতাকে এভাবে তুলে ধরা কতটা যৌক্তিক সে প্রশ্ন এসে গেছে। সাংবাদিকতা পেশায় শুধু যে খারাপ হচ্ছে, তা নয়। সব পেশায়ই ভালো-মন্দ দেখা যায়। দৈনিক ইন্তেকাল নামকরণটাও সংবাদপত্রশিল্পকে কটাক্ষ করার ইঙ্গিত বহন করে।’
যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার বিলাস দাস বলেন, ‘তাদের নাটক বেশি প্রচারের জন্যই পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিকতা পেশাকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। একদল লোক সব সময় মিডিয়ার পেছনে লেগেই থাকে। এটা তারই একটি অংশ হতে পারে।
‘পত্রিকার যে নাম ব্যবহার করা হয়েছে, বাস্তবে এটার বিরুদ্ধে সিনিয়র সাংবাদিকদের ব্যবস্থা নেয়া দরকার। ফেসবুকে সস্তায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার আশায় এই ধরনের কুরুচিপূর্ণ নাম ব্যবহার করা হয়েছে।’
তবে কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়ার লেখক ও পরিচালক শুভ হোসাইন কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা আসলে আমাদের নাটকের একটা সিকোয়েন্স। এটা ভাইরাল করার কোনো প্ল্যান আমাদের ছিল না। যাদের হলুদ সাংবাদিক বলা হয়, মূলত যাদের কোনো অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট নেই। এর পরও বিভিন্নভাবে টাকা-পয়সা বা বিভিন্ন লবিং বা বড়ভাইয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকের একটা কার্ড পায়।
‘সেই কার্ড দিয়ে যেহেতু সে অশিক্ষিত, তাই বিভিন্নভাবে চাঁদাবাজি করে, মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে হুমকি দিয়ে টাকা নেয়ার একটা ধান্ধা। এ রকম একটা চরিত্রে আবুল মিয়া নামের একজনকে দেখানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নাটকে যারা ভালো সাংবাদিক তাদের চরিত্রও দেখানো হয়। শেষমেশ সে তার আচার-আচরণের জন্য পুলিশের কাছে ধরা পড়ে এবং একপর্যায়ে বলে যে সে স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য। পরে প্রেস ক্লাবের সভাপতিও সেখানে উপস্থিত হন এবং জানা যায় যে, আসলে আবুল মিয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য নন। তখন সভাপতি নিজেও পুলিশের কাছে আবুলকে তুলে দিতে বলেন। পরে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।’
কবির বলেন, ‘আবুলের আইডি কার্ডটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর আমাদের ফেসবুক পেজে বক্তব্য তুলে ধরেছি। ইচ্ছা করলে আপনি সেখান থেকেও আমাদের বক্তব্য নিতে পারেন।’
হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে কেন কনটেন্ট করতে গেলেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে শুভ বলেন, ‘আমাদের ইউটিউব চ্যানেল দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমরা সমাজের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরার চেষ্টা করছি। হলুদ সাংবাদিকতাও সমাজের জন্য একটা ঝুঁকি। এটা মূলধারার সাংবাদিকতাকে কলুষিত করছে। প্রকৃত সাংবাদিকতাকে আমরা শ্রদ্ধা করি।’
সাবস্ক্রাইব বাড়ানোর জন্য সাংবাদিকতা পেশাকে অসম্মান করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে শুভ বলেন, ‘ভালো সাংবাদিকের চরিত্র আমাদের নাটকে তুলে ধরছি। দেখলেই বুঝতে পারবেন।’
হলুদ সাংবাদিকতা সম্পর্কে ধারণা নেই জানিয়ে এ ইউটিউবার বলেন, ‘আমি যতদূর জানি বা শুনেছি সাংবাদিক হতে হলে সর্বনিম্ন অষ্টম শ্রেণি পাস দরকার। একদম যদি ক্যামেরাম্যানও হতে হয় তাহলেও তার অন্তত অষ্টম শ্রেশি পাস দরকার।
‘যারা অশিক্ষিত কিছু করতে পারে না, তারা একটা কার্ড নিয়ে সারা দিন ঘুরে বেড়িয়ে নিজেকে জাহির করে অপসাংবাদিকতা করে। মূলত অপসাংবাদিকতাই হলো হলুদ সাংবাদিক।’
শুভ বলেন, ‘দেখেন আইনে কী আছে সেটা আমার দেখা হয়নি। আমি যেটা জেনেছি সেটা বলেছি। আমি মূলত এটার পরিচালক। আমার লেখক আছেন। আপনি চাইলে তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’
দৈনিক ইন্তেকাল নাটকের লেখক এবং প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা আবুল মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সাংবাদিকতা পেশাকে সমাজের আয়না হিসেবে দেখি। যারা সমাজের সংগতি, অসংগতিগুলো মানুষের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন।
‘কিন্তু কিছু লোক আছে যাদের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতাই নেই, তারা সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতা করে বেড়ায়। এটা সমাজের জন্য ঝুঁকি। আমার নাটকে সেই বিষয়টিই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যেখানে আমরা দুটি চরিত্র তুলে ধরেছি। একটা হলো একজন ভালো সাংবাদিকের চরিত্র কেমন হয়, আরেকটি হলো একজন অপসাংবাদিকের চরিত্র কেমন হয়।’
ভাইরাল হওয়া ছবির মধ্যে পুলিশের পোশাক পরা দুজন ব্যক্তিকে স্যান্ডেল পরা অবস্থায় দেখা গেলেও আবুল মিয়া জানান, আসলে নাটকে ওই দৃশ্য দেখা যাবে না।
অনুমতি না নিয়ে পুলিশের পোশাক ব্যবহার করার বিষয়ে আবুল মিয়া বলেন, ‘দেখেন ওগুলো হলো ছায়া পোশাক। তা ছাড়া লাখ লাখ ইউটিউবার এ রকম পোশাক ব্যবহার করছে।’
এ বিষয়ে মহীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, ‘এটা আমার জানা ছিল না। তারা কীভাবে পুলিশের পোশাক ব্যবহার করছে, সেটা খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, গভীর সাগরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইনে তাদের তুলে দেয়া হবে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওই জাহাজ বুধবারই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছায়। ওই জাহাজে করেই ১৭৩ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে আটকা পড়েছিলেন বা সাজা পেয়ে জেলখানায় ছিলেন।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর ওই জাহাজে করে দেশটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পৌঁছায়। পরে তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নে বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়।
সেখানে আনার পর ইমিগ্রেশন ও ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে শুরু হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন।
এরপর সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কর্ণফুলি টাগবোটে তুলে দেয়া হয়। কোস্ট গার্ডের একটি ট্রলার টাগবোটটিকে পাহারা দিয়ে গভীর সাগরে নিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।
তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় আরো ২৮৮ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এবার তাদের ফেরত পাঠানো হলো।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য