ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পর দৃষ্টি এখন কাঁচামাল উৎপাদনে। এ জন্য আলাদা শিল্প পার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ চরছে।
দেশের চহিদার ৯৮ শতাংশ উৎপাদন করলেও কাঁচামাল আমদানি করার কারণে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এই শিল্প পার্ক হলে এবং কাঁচামাল দেশেই পাওয়া গেলে ওষুধের দাম কমে আসবে বলে আশা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।
নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই সম্ভাবনার পাশাপাশি ওষুধ খাত নিয়ে তার কিছু পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে।
ওষুধ শিল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু বলুন।
আ ব ম ফারুক: এক সময় দেশের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ ওষুধ আমদানি হতো। বাকি ২০ শতাংশ উৎপাদন হতো অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে। বাজার দখলে ছিল কয়েকটি বহুজাতিক কম্পানির হাতে।
স্বাধীনতার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালায়ের অধীনে ছোট একটা ড্রাগ সেকশন ছিল। বঙ্গবন্ধু এটাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনে ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তৈরি করেন।
তিনি বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিল্পঋণ সংস্থাকে নির্দেশ দেন কেউ যদি ওষুধ কম্পানি করতে চায়, তাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টাকা দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘আমরা পেটেন্ট মানি না।’
১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদ স্থানীয় শিল্পবান্ধব ওষুধ নীতি (ড্রাগ পলিসি) করেছিলেন। এতে বলা হলো: দেশীয় কোম্পানি ওষুধ বানাতে পারবে, সেটা বিদেশিদের বানাতে দেয়া যাবে না। যেগুলো দেশে তৈরি হয়, সেগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা যাবে না। এমন সাহসি সিদ্ধান্তের ফলে দেশীয় কোম্পানিগুলো দাঁড়িয়ে গেল।
ওষুধ শিল্পের ক্রমান্বয়ে বিকাশের ফলে এখন আমাদের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই তৈরি হচ্ছে। দুনিয়ার আর কোনো দেশে স্থানীয় কোম্পানি বার্ষিক চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধের জোগান দিতে পারে বলে আমার জানা নেই। শুধু উচ্চ প্রযুক্তিতে তৈরি কিছু ওষুধ বাইরের দেশ থেকে আসে।
ওষুধ শিল্প বিকাশে সরকারের নীতি সহায়তা কি যথেষ্ট বলে আপনি মনে করেন?
আ ব ম ফারুক: বিদ্যমান নীতিমালা খারাপ না। এই শিল্পের প্রধান সমস্যা কাঁচামাল। ওষুধ শিল্পকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে কাঁচামাল আমদানি বন্ধ করতে হবে এবং দেশেই তৈরি করতে হবে। সরকার সমস্যাটা বুঝতে পেরেছে। ফলে এপিআই পার্ক করছে। কিন্তু অনেক বছর আগে উদ্যোগ নিলেও এর কাজ শেষ হয়নি এখনও।
এপিআই (ওষুধ শিল্প) পার্কের সুবিধা কী?
আ ব ম ফারুক: এখানে ওষুধের কাঁচামাল তৈরি হবে। এপিআই পার্ককে কেন্দ্র করে পশ্চাদ সংযোগ শিল্পগুলো গড়ে উঠবে। ফলে অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।
এপিআই পার্ক উৎপাদনে গেলে বাইর থেকে কাঁচামাল আনতে হবে না। দেশের ভেতরেই তৈরি হবে। ফলে কোম্পানিগুলো আরও কম খরচে ওষুধ তৈরি করতে পারবে। ভোক্তা কম দামে ওষুধ পাবে। এ ছাড়া আমাদের রপ্তানিও বাড়বে। সব দিকে আমরা লাভবান হবো এপিআই পার্ক হলে।
করোনাকালে দেশের ওষুধ ব্যবসা রমরমা হওয়ার কারণ কী?
আ ব ম ফারুক: এই সময়ে বেক্সিমকো, ইনসেপ্টা, এসকেএফসহ অনেক কোম্পানির কাছ থেকে বিদেশিরা ওষুধ কিনেছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, করোনাকালে বিদেশিরা এ দেশ থেকে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার ওষুধ নিয়েছে। যদি এপিআই পার্ক চালু থাকত, তাহলে আরও বেশি রপ্তানি করা যেত।
বহির্বিশ্বে ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান কেমন?
আ ব ম ফারুক: খুবই ভালো। তার কারণ বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের অবকাঠামো পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় ভালো। এমনকি প্রতিবেশি দেশ ভারত, নেপাল, মিয়ানমারের চেয়ে অনেক এগিয়ে।
নেপালের ওষুধ শিল্পের অবকাঠামো খুবই দুর্বল। সেখানে ওষুধের কোম্পানি সীমিত। নেপালে অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদার মাত্র ১৭ শতাংশ পূরণ করে স্থানীয় কোম্পানিগুলো। অবশিষ্ট ওষুধ আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশ ৯৮ শতাংশ ওষুধ অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি করে। বাকি ২ শতাংশ বাহির থেকে আনা হয়। মিয়ানমারে ওষুধ কোম্পানি আছে মাত্র একটি। সেখানে টেকনিক্যাল লোকের অভাব। ফার্মাসিস্ট নেই। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে পূঁজি আছে। কিন্তু তারা ফ্যাক্টরি করছে না। কারণ পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নেই।
ভারতে ওষুধের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। তবে ধারণা করা হয়, মোট চাহিদার ৮২ শতাংশ উৎপাদন করা হয় স্থানীয় পর্যায়ে। বাকিটা তারা আমদানি করে। ফলে ওষুধ উৎপাদনের শতকরা হারে বাংলাদেশ এগিয়ে ভারতের চেয়ে।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হয়ে যাবার পর দেশের ওষুধশিল্প কোনো চ্যালঞ্জের মুখে পড়বে কি?
আ ব ম ফারুক: কিছুই হবে না। আমারা যেরকম আছি, সে রকমই থাকব। সমস্যা হতে পারে ২০৩২ সালের পর। এ জন্য আগে থেকেই তৈরি হতে হবে। তা না হলে কপালে দুঃখ আছে। বর্তমানে পেটেন্ট ছাড়ের সুবিধার আওতায় ওষুধ তৈরির ফলে সস্তায় ওষুধ সেবন করতে পারছে জনগণ।
স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কপিরাইট আইন বা মেধাস্বত্ব ছাড়ের সুবিধা ভোগ করছে বাংলাদেশ।
এই সুবিধার আওতায় ওষুধ উৎপাদনে বিদেশি পেটেন্ট ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে কোনো রয়ালিটি বা কোনো ধরনের ফি দিতে হয় না। যে কারণে অনেক দেশের তুলনায় সস্তায় ওষুধ তৈরি করতে পারছে বাংলাদেশ।
এই সুবিধা থেমে যেত, যদি ট্রিপস চুক্তি বা মেধাস্বত্ব আইন অনুযায়ী ২০০৫ সাল থেকে আমাদের পেটেন্ট মানতে হতো। এর বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রিয়া ও কোরিয়ায় আন্দোলন হয়েছে। ফলে ২০০০ সালে ‘দোহা ডিক্লারেশন’-এ ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়।
২০১৫ সালের আগেই এটা নিয়ে আমরা হৈ-চৈ শুরু করলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাউথ এশিয়ান কনজিউমার ফোরামের সাত দিনব্যাপী সম্মেলনে ট্রিপসের ব্যাপারে আলোচনা হয়। জাতিসংঘে স্মারকলিপি পাঠানো হয়। তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ খুব ভালো ভূমিকা রাখলেন। আমরা ২০৩২ সাল পর্যন্ত পেটেন্ট ছাড় পেয়েছি। এর মধ্যেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হবে?
আ ব ম ফারুক: বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে ২০৩২ সালের পরও দেশের ওষুধ শিল্পের সুরক্ষায় পেটেন্ট (মেধাস্বত্ব) ছাড়ের সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে। সে অনুযায়ী সরকারকে কাজ করতে হবে। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক এখান থেকে সরা যাবে না।
আরেকটা কাজ করতে হবে, তা হলো পাবলিক হেলথ বা জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যে সব ওষুধ জরুরি, সেই সব ওষুধের ওপর পেটেন্ট আইন প্রযোজ্য হবে না। এ জন্য সরকারকে একটা অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগ লিস্ট বা ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ওষুধের তালিকা বানাতে হবে। এখন এটা আছে।
এই তালিকা দুই-তিন বছর পর পর হালনাগাদ করতে হবে। নতুন নতুন ওষুধ তৈরি হচ্ছে। ওই ওষুধ থেকে কোন কোন ওষুধ ‘অত্যাবশ্যকীয়’, তা নির্ধারণ করে তালিকায় যুক্ত করতে হবে। এটা করা খুবই জরুরি।
এ তালিকা না থাকলে পরবর্তীতে পেটেন্ট ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যাবে না। বর্তমানে অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় ২৮৬টি ওষুধ আছে।
২০৩৩ সালের পর চ্যালেঞ্জ কোথায়?
আ ব ম ফারুক: ধরা যাক, এমন একটা ওষুধ বানানো প্রয়োজন হয়ে পড়ল, যেটা পেটেন্ট ছাড়ের সুবিধা পেল না। তখন কী হবে? ২০৩২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা পেটেন্টের আওতায় বাইরে থাকব। ফলে এই সময়ে ওষুধ উৎপাদনে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু ২০৩৩ সাল থেকে যখন পেটেন্ট সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে, তখন তো সমস্যা হবে। সে জন্যই বিদ্যমান সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।
সরকারের করণীয় কি?
আ ব ম ফারুক: বাংলাদেশে ওষুধের দাম কম। এটা অব্যাহত রাখতেই হবে। এর জন্য যা যা করা দরকার, সে বিষয়ে প্রস্ততি নিতে হবে এখন থেকেই।
‘অত্যাবশ্যকীয়’ ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। করোনার জন্য কিছু নতুন ওষুধ আছে। তালিকায় এগুলো যোগ করতে হবে। তা না হলে পরবর্তীতে করোনার ওষুধ উৎপাদনে সমস্যা দেখা দিবে।
এপিআই পার্কের যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালে। এত বছর পরও কেন উৎপাদনে যেতে পারল না?
আ ব ম ফারুক: বেসরকারি কোম্পানিগুলো এপিআই-এ অবকাঠামো ঠিকমতো তৈরি করছে না, এটা দুঃখজনক। আমি যা বুঝি, ফিনিশড প্রডাক্ট বানালে যে পরিমাণ লাভ হয়, কাঁচামাল বানালে তা হবে না। আমাদের ৪২টি কোম্পানি, তারা যদি পাঁচটা করেও কাঁচামাল বানায়, তাও তো ২০০ কাঁচামাল হচ্ছে। বিশাল ব্যাপার।
এপিআই হলে ওষুধশিল্পের কাঁচামালের আমদানি নির্ভরতা কমবে। শুধু তা-ই নয়, কাঁচামাল রপ্তানি করা সম্ভব হবে। সময় মতো এপিআই পার্ক না হওয়াটাই ওষুধশিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
ভোক্তা পর্যায়ে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অরাজকতা চলছে। এর জন্য দায়ী কে?
আ ব ম ফারুক: যে কোনো দেশে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় থাকা ওষুধগুলোর দাম নির্ধারণ করে সরকার। এটাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম। আমাদের দেশের ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতিতেও তা ছিল। কিন্তু ১৯৯৪ সালে ওষুধ কোম্পানির দাবির মুখে বলা হলো, ১৭ শতাংশ ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করবে, বাকিটা কোম্পানি। এটাকে বলা হলো ইন্ডিকেটিভ প্রাইস। এ রকম আজগুবি নিয়ম দুনিয়ার কোথাও নেই।
২০১৬ সালে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের উদ্যোগে কমিটি গঠন করা হবে, যেখানে ওষুধ কম্পানি, ডাক্তার, ওষুধশিল্প সমিতি, ফার্মাসিস্ট, রোগী এবং যারা ওষুধটা বিক্রি করে তাদের একজন করে প্রতিনিধি থাকবে। সরকারের একজন বা দুজন থাকবে। যেদিন যে কম্পানির ওষুধ নিয়ে আলোচনা হবে, সেদিন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির লোক থাকবে না। মিটিংয়ে মূল্য পর্যালোচনা হবে। কাঁচামালের দাম কমা-বাড়ার সঙ্গে ওষুধের দামও কমবে-বাড়বে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের উপায়ও বলে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই নিয়ম আর কার্যকর হলো না।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। সোমবার (২৩ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৯৪ জন। আর চলতি সপ্তাহের এই কয়েকদিনে রোগটিতে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
সোমবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটে। এ সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয় সর্বোচ্চ ১৫৭ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৯৪ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯২ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩০২ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮ হাজার ৫৪৪ জন। এর মধ্যে ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
বরিশাল বিভাগের বরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বৃদ্ধা রাবেয়া (১০০) মারা গেছেন। গতকাল সোমবার ভোরে তিনি বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এ নিয়ে বিভাগে ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরগুনার বাসিন্দাই রয়েছে ৬ জন। এদিকে গত রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১২৯ জন।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার ভোরে মৃত্যু হওয়া শতবর্ষী রাবেয়া বেগম বরগুনা সদরের বাসিন্দা। তাকে গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য বিভাগে তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয়েছে। এছাড়া বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে ৮ জন।
পটুয়াখালী জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৭ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন, ভোলা সদর হাসপাতালে ৫ জন ভর্তি হয়েছে। পিরোজপুরে ১৬ জন ও বরগুনায় ৭৩। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠিতে কেউ আক্রান্ত হয়নি।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশংকাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বেরুতে হবে। তাই মশার বিস্তার রোধ করতে বাড়ির আশে-পাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে ঊর্ধ্বগতির আক্রান্তের হারের মধ্যে দেশে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২২ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৯২ জন।
সোমবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা সিটি করপোরেশন ও বরিশাল বিভাগে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আর আক্রান্তের হারে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে নতুন করে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২৬ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৯২ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৬ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩০৬ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ শতাংশ নারী।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে ৩৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
রবিবার (২২ জুন) সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনায় মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫১৫ জনে এবং মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৯৭৮ জনে।
২৪ ঘণ্টায় ৬২১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, সে অনুযায়ী শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট পরীক্ষায় সংক্রমণের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং শনাক্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবহন ব্যবস্থা উন্নীতকরণের লক্ষ্যে চার দফা দাবি উপস্থাপন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ইবি শিক্ষার্থী তানভীর মাহমুদ মন্ডলের প্রতিনিধিত্বে এই দাবিসমূহ জানানো হয়েছে।
২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতি রয়ে গেছে। একটি উন্নত, মানবিক ও কার্যকর শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবহন ও চিকিৎসা ব্যবস্থা অপরিহার্য। উপস্থাপিত চার দফা দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের স্থায়ী সংস্কারের লক্ষ্যে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় সভার আয়োজন করা, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসাসেবা উন্নতিকরণ এবং কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট সিট সার্বক্ষণিক সংরক্ষণের ব্যবস্থা, পরিবহন পুল থেকে ফিটনেসবিহীন যানবাহন অপসারণ এবং চালক ও সহকারীদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা এবং পরিবহন সংকট নিরসনে জরুরিভিত্তিতে নতুন যানবাহন সংযোজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তানভীর মন্ডল জানান, ‘স্মারকলিপি দিয়েছি। উল্লেখ করা দাবি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা আরও নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাজীবন উপভোগ করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবনাগুলো যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’
শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ উপস্থাপন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ আশ্বস্ত করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা খুবই যৌক্তিক কিছু দাবি উত্থাপন করেছে৷ কয়েকদিন আগেও আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী বাস-ট্রাক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। এর আগেও এমন দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২০ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৫২ জন।
শনিবার (২১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা সিটিতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আর আক্রান্তের হারে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে নতুন করে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৭ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৫২ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬২ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৯০ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭ হাজার ৪২৯ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
সরকারিভাবে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। প্রায় সাত-আট মাস কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় এতে তৃণমুলে বসবাসকারী অবহেলিত মানুষগুলো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। এমনটিই আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, নড়াইল জেলার তিনটি উপজেলা ও একটি প্রশাসনিক থানা এলাকায় ৪০টি ইউনিয়ন পরিবারকেন্দ্র এবং মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সিভিল সার্জন কর্তৃক সাতটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র পরিচালিত হয় । বাকিগুলো পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ অধিদপ্তর থেকে পরিচালিত হয়ে থাকে।
সিভিল সার্জন কর্তৃক পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় তিনটি, লোহাগড়া উপজেলায় তিনটি এবং কালিয়া উপজেলায় একটি। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসাসেবার ওপর গ্রামাঞ্চলের নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষগুলো সুস্থ ও সবলভাবে বেচে থাকার জন্য অনেকটিই নির্ভর করে। এসব কেন্দ্রগুলোতে সরকারি ওষুধ সরবরাহ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ । কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সংকটের কথা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ।
গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার জেলার কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসাসেবা নিতে আসা গ্রামের অনেক মহিলা চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসাপত্র নিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। তাদের মুখখানা ছিল মলিন । আবার অনেক কেন্দ্র ছিল ফাকা। দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার একটি কক্ষে বসে গল্পে মেতে আছেন বন্ধুদের সঙ্গে। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. মো.আলাউদ্দীন কেন্দ্রের একটি কক্ষে চুপচাপ বসে আছেন । জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে আমাদের এখানে ২৫ রকমের ওষুধ বরাদ্দ ছিল। তখন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু-নারী ও পুরুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে জড়ো হতেন। গত সাত-আট মাস হলো কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই । ফলে কেন্দ্রে রোগীদের তেমন ভিড়ও নেই। শুধু পরিবার পরিকল্পনা কিছু সামগ্রী আছে তাই দিয়ে সেবা চলছে। তিনি বলেন, এখানে যেসব রোগী আসে তার বেশিরভাগ হচ্ছে শিশু ও নারী। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগীকে সেবা দিয়েছি। বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি হয় না।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হলে তৃণমুলে সাধারণ মানুষ বিপদে এবং স্বাস্থ্যসেবা ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করেন নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.রবিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। না হলে গ্রামের কৃষক শ্রেণির মানুষের জীবনের ছন্দ পতন ঘটবে। গতকাল বুধবার দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কুমড়ি গ্রাম থেকে ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসেছেন সালমা আক্তার । তার কোলের শিশুর সর্দি-কাশি দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগে এহেনে ডাক্তার দেহালি ওষুধ দেতো। এহোনে দেচ্ছে না । কাগজে লেহে দিলি আমাগে বাজারের দুয়ানতে কিনে নিতি হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ। অত টায়া পয়সা নাই আমাগে। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকাররে কচ্ছি আগের মতো আমাগে মাগনা (বিনা টাকায়) ওষুধ দিতি হবে।’
কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের মুলশ্রী গ্রামের দীপ্তি রানী মণ্ডল বুকে ব্যথা অনুভব করলে নিজের ওষুধ নিতে এসেছেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘এহেনের ডাক্তার সাদা কাগজে কী যেন লেহে দেলো। আর কলো এই কাগজ নিয়ে বাজারের দুয়ানেরতে অসুদ কিনতি হবে । কিরাম কতা হলো কওদিন বাপু । আমাগে যদি দুয়ানেরতে অসুদ কিনতি হবে তালি তুমরা এহানে বসে রইছো ক্যান ? আগেতো এমন কতা শুনিনি।’
জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক আলিফ নূর বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় সাত থেকে আট মাস। যে কারণে সমাজের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তিনি দাবি করেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো বন্ধের মধ্যেও খোলা ছিল । ওষুধ না পেলেও চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল না । যারা গর্ভবতী মা তারা চেকআপের জন্য কেন্দ্রে আসছেন । তাদের প্রয়োজনীয় সেবাও দেওয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত সংকট মোচন হবে ।
মন্তব্য