ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মধ্যে অষ্টম অংশীদারত্ব সংলাপে বসছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় রোববার বেলা ১১টায় শুরু হবে এ সংলাপ।
এবারের সংলাপে বাংলাদেশ গুরুত্ব দিচ্ছে র্যাব এবং এর বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টিকে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, ইন্দো-প্যাসিফিক জোট ও সামরিক যোগাযোগে গুরুত্ব দিচ্ছে।
সংলাপে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছান। সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এবারের সংলাপ হতে পারে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন বাঁক নেওয়ার বিন্দু (টার্নিং পয়েন্ট)। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু চাওয়ার ছিল, কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ব ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের কাছেও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
ওই সূত্রটি জানায়, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ঘটনায় যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে বিশ্ব রাজনীতির পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের অবস্থান সুসংহত করার বিষয়টি আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ভূ-রাজনীতির দিক থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ঢাকার কূটনীতিক সূত্রের দাবি, বাইডেন প্রশাসনে ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড প্রভাবশালী কর্মকর্তা। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তার ঢাকা সফরে দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
‘যৌথ সহযোগিতার অনেক বিষয় আছে’
সংলাপের আগের দিন শনিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এ সংলাপে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশও গণতান্ত্রিক দেশ। ফলে দুই দেশের মধ্যে বড় মিল আছে।
‘সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই যৌথ সহযোগিতার অনেক বিষয় আছে। সেসব নিয়ে আলোচনা হবে। আশা করছি খুব ফলপ্রসূ আলোচনা হবে। আলোচনা হবে র্যাবের ওপর দেয়া তাদের নিষেধাজ্ঞা নিয়েও।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে অংশীদারত্ব সংলাপের রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। এ ধরনের আলোচনাকে রাজনৈতিক সংলাপও বলা হয়। সম্প্রতি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কিছু কর্মকতার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কারণে এ সংলাপের গুরুত্ব এবার অনেক বেড়েছে।
সংলাপে বাংলাদেশ এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিই প্রাধান্য দেবে। এ জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক, বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুকে গুরুত্ব দেবে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এর আগের সংলাপে উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলতে উভয় দেশ সম্মত হয়েছিল। এবারের সংলাপেও বিষয়টি আলোচনায় তুলবে ঢাকা।
ঢাকা-ওয়াশিংটন সামরিক যোগাযোগ বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কিনতে দুটি চুক্তি করার জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিএসওএমআইএ) এবং অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্টের (এসিএসএ) যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হবে।
পাশাপাশি বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য জিএসপি সুবিধা চালুর বিষয়ে আলোচনা তুলবে বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত আছে।
এর আগের দুটি সংলাপে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানবাধিকার পরিস্থিতি, শিশু অধিকার, শ্রম নীতিমালার বাস্তবায়ন, সংখ্যালঘুদের অবস্থা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতার বিষয়টি তোলা হয়। এ বছর আগের ইস্যুগুলোর পাশাপাশি মানবাধিকার পরিস্থিতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।
বাণিজ্য-বিনিয়োগ, সামরিক যোগাযোগের বিষয় আলোচনায় তোলা হবে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান বিষয় হবে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকার অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সম্প্রতি দেশটির কংগ্রেসে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফলে এবারের সংলাপে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা তুলতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংলাপটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত বিশ্বের এক নম্বর অর্থনৈতিক শক্তি। ফলে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়ার সুযোগ বেশি। এ বিবেচনা করলে বাংলাদেশের অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানির ক্ষেত্রে সুবিধা, বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ সংগ্রহ এবং উন্নয়ন ও নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তৃত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত।
‘যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তুলে ধরবে। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে সংলাপে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, ‘দুই বছর পর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্ব সংলাপ হচ্ছে। এটা দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আলোচনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম। তা ছাড়া এবার এ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সে দেশের ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড। তিনি এ মুহূর্তে বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত।
‘তার ঢাকা সফরও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ কারণে এবারের সংলাপ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে একটা টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি এ অঞ্চলে চীনের ক্রমাগত প্রভাব বিস্তার নিয়ে চিন্তিত হয়েই থাকে, তাহলে শুধু চাপ কিংবা নানামুখী ব্যবস্থা নয়; বরং সার্কের মতো আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক জোটগুলোকে সক্রিয় করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ দেয়া উচিত। এ ধরনের জোট শক্তিশালী হলে সেটা এ অঞ্চলের দেশগুলোর ওপর একক কোনো দেশের প্রভাব বিস্তারকে রোধ করবে।
‘একই সঙ্গে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং ব্লু-ইকোনমিতে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আরও বেশি বিনিয়োগ ও সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত। এ বিষয়গুলো যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে আলোচনায় তুলে ধরা উচিত বাংলাদেশের।’
সর্বশেষ ২০১৯ সালে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব সংলাপ হয়েছিল। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের তৎকালীন আন্ডার সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) ডেভিড হ্যাল।
এবার বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১৯৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তা, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী মাসুদ রোম এবং টোকিওতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পররাষ্ট্রসচিব হওয়ার আগে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া দিল্লিতে তিনি মিশন উপপ্রধান হিসেবেও কাজ করেছেন।
অন্যদিকে নুল্যান্ড একজন ক্যারিয়ার ডিপ্লোম্যাট। ২০০৫ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত তিনি ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ইউরোপে প্রচলিত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত চুক্তি আলোচনায় প্রধান নেগোশিয়েটর হিসেবে ২০১০-১১তে দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে সাবেক আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। হিলারি ক্লিনটন যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ছিলেন।
ঢাকার আজকের বৈঠক শেষে সামনের দুই মাসে অন্তত চারটি বৈঠক হবে দুই দেশের মধ্যে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পার্টনারশিপ ডায়ালগের পরে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংলাপ আছে, বাণিজ্যিক ও ব্যাবসায়িক ডায়ালগ আছে এবং অন্যান্য সব বৈঠকের আগে যেহেতু এটি হচ্ছে, সেই অর্থে এটির আলাদা একটি গুরুত্ব আছে।
‘কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এপ্রিল মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটন সফর করবেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকের পর আরও উচ্চপর্যায়ের সফর হওয়া উচিত। আমরা চাইব উনারা আসুক এবং আমরাও যাই।’
তিনি বলেন, ‘জিসোমিয়া ও আকসার নিয়ে অনেক বছর আলোচনা করছে দুই দেশ। জিসোমিয়া ও আকসার বিভিন্ন প্রভিশনগুলো আমরা যাচাই করে দেখছি। অনেক স্টেকহোল্ডার আছে এবং ক্রয়সংক্রান্ত বিষয়গুলোর জন্য আমাদের নিজস্ব কিছু নিয়ম-কানুন আছে।
‘আমাদের নিয়মের সঙ্গে চুক্তির ধারাগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, সেটি আমরা যাচাই করছি। নিরাপত্তা সংলাপে এটি আরও বড় আকারে আলোচনা হবে।’
ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আলোচনা হবে। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। আমরা দেখছি যে অর্থনৈতিক বিষয়টি সেখানে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়নি। আমরা সেটিকে গুরুত্ব দিতে চাই।
‘কানেকটিভিটির বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ যে কাজ করছে, সেটি নিয়েও আমরা আলোচনা করতে চাই। তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক উদ্যোগে আঞ্চলিক কানেকটিভিটি নিহিত করা যায় কি না, সেটির বিষয়ে আমাদের আগ্রহ থাকবে।’
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সরকারি সফর করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শুক্রবার তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার উপজেলার গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আগামী এক মাসের ভেতর আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আমরা আলু রপ্তানীতে প্রণোদনা দিচ্ছি এবং রপ্তানিতে সহযোগিতা করছি। চাহিদা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
গোপীনাথপুর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বগুড়ার দুঁপচাচিয়া উপজেলার মর্তুজাপুর গ্রামে গিয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জুম্মার নামাজ আদায়ের পর তার শ্বশুর মরহুম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের কবর জিয়ারত করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টাককে ও হেলিকপ্টার দেখতে উৎসুক লোকজনের ভিড়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসছেন এমন খবর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়।
সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী, বাণিজ্য উপদেষ্টার হেলিকপ্টার শুক্রবার সকাল ১১ টায় গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সকাল থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। সকাল ১০টার আগেই গণমাধ্যম কর্মীরাও গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আসেন। তখন থেকেই উৎসুক জনতা গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দুটি ফটকে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করছিলেন। তবে দেড় ঘন্টা বিলম্বে দুপুর পৌঁনে একটার দিকে উপদেষ্টাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে।
গোপীনাথপুর এলাকার আবু রায়হান তার দুই বছরের নাতিকে কাঁধে নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ও হেলিকপ্টার দেখতে আসেন। তিনি বলেন, আমার নাতি হেলিকপ্টার দেখার বয়না ধরেছে। নাতিকে কাঁধে নিয়ে হেলিকপ্টার দেখতে এসেছি। বাণিজ্য উপদেষ্টা গোপীনাথপুরে এসেছেন। গোপীনাথপুরের বাসিন্দা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আগে কখনও সরকারের কোনা মন্ত্রী গোপীনাথপুরের এসেছিল কি না তা জানি না।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য খাতে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো। তাই মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
শুক্রবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণার উন্নয়ন, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার এবং অবৈধ জাল যেমন চায়না জাল ও ট্রল ডোর ব্যবহার করে মাছ শিকার অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে মাছের ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের কথা কেউ ভাবছে না।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, শীতকালে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বর্ষা মৌসুমে সেই বিষ পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। কীভাবে কৃষিতে বালাইনাশকের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা যায় সে লক্ষ্যে কৃষি খাতে বালাইনাশক ব্যবহার সীমিত করতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইলিশের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টি সময়মতো না হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিঠা পানির মাছচাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে মিঠা পানির মাছের চাষ বাড়াতে হবে। তাই মাছের বৈচিত্র রক্ষা এবং হাওড়, নদীসহ প্রজনন ক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণে জোর দিতে হবে।
হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওড়ে অপরিকল্পিত সড়ক বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে কীভাবে হাওড় রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।
সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ স্পিকার হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব। তিন দিনব্যাপী ওই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে চিকিৎসকদের ‘মানবিক চিকিৎসক’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, চিকিৎসকদের সবসময় রোগীদের প্রতি মানবিক ব্যবহার এবং তাদের সেবার মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। মা ও শিশু হাসপাতালের কনফারেন্স কক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নূরজাহান বেগম বলেন, ঢাকায় সবক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ হাসপাতাল থাকলেও চট্টগ্রামে জনসাধারণের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের মাধ্যমে সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হলেও এখানকার জনসাধারণের তুলনায় তা খুব কম। তার ওপর সরকারি হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতির সংকট এবং বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হতো না। বর্তমান সরকার দায়িত্বে নেওয়ার পর এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে যে ১লাখ দক্ষ জনবল নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন জাপান সরকারকে, তারই ধারাবাহিকতায় জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে। আমাদের বাইরে নানা ক্ষেত্রে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত জনবল পাঠানোর সুযোগ থাকলেও নানা অব্যবস্থাপনা, দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের অভাবে আমরা তা পারছি না।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে সরকারিভাবে আমাদের ১০হাজার চিকিৎসক এবং ১২হাজার নার্সের সংকট রয়েছে। সে সংকট কাটানোর লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে ৩হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে, সামনে আরও ২হাজার নিয়োগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নার্সের সংকট নিরসনে সাড়ে ৩ হাজার নার্স নিয়োগ করা হবে।
উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ক্যান্সার এবং হার্টের রিং এর দাম কমিয়েছে। সামনে তিনশ’ ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। ডেঙ্গুর কিটের দাম সরকারিভাবে ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সারাদেশে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে বিষধর সাপের কামড়ের রোগীদের জন্য এনটিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসা খাতের সংকট দূর করার জন্য আরও ৩৫০কোটি টাকার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং ওষুধ আমদানি করা হবে।
মা ও শিশু হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বী, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গভর্নিং বডির সদস্য ড. মনজুরুল ইসলাম, মা ও শিশু হাসপাতালের সহসভাপতি আবদুল মান্নান রানা, ডা. কামরুন্নাহার দস্তগীর, যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ হাসান, মো. সগীর, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. রেজাউল করিম প্রমুখ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য খাতে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো। মৎস্যসম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। তাই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
উপদেষ্টা আজ সকালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণার উন্নয়ন, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ কনফারেন্স আয়োজন করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার, অবৈধ জাল যেমন চায়না জাল ও ট্রল ডোর ব্যবহার করে মাছ শিকার অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এভাবে সাময়িক লাভের জন্য মাছ শিকার করছে, তারা প্রকৃত মৎস্যজীবী নয়। এতে মাছের ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের কথা কেউ ভাবছে না। মৎস্য অধিদপ্তর ও বিএফআরআইকে এ বিষয়ে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, শীতকালে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বর্ষা মৌসুমে সেই বিষ পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। কীভাবে কৃষিতে বালাইনাশকের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা যায়— সে লক্ষ্যে কৃষিখাতে বালাইনাশক ব্যবহার সীমিত করতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইলিশের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এ বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে বৃষ্টি সময়মতো না হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে। তবে ইলিশ যাতে সাধারণ মানুষের পাতে পৌঁছায়, সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্টদের তিনি আরো গুরুত্বপ্রদানের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিঠা পানির মাছ চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছের প্রাপ্যতা বাড়লেও তা নিরাপদ কিনা, সে বিষয়েও নজর দিতে হবে। নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে মিঠা পানির মাছের চাষ বাড়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, মাছের বৈচিত্র্যের দিক থেকে বাংলাদেশ অনন্য। তাই মাছের বৈচিত্র রক্ষা এবং হাওড়, নদীসহ প্রজননক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণে জোর দিতে হবে। নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকার সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওড়ে অপরিকল্পিত সড়ক বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে কীভাবে হাওড় রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
কনফারেন্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার মাধ্যমে মাছ, গবাদিপশু ও ফসলের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করছে, যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ খাতে আরও ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। দেশে উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হলে শুধু দেশের চাহিদা পূরণ নয়, বরং তা বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও পথ খুলে দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রয়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।
কনফারেন্সের কী-নোট স্পিকার হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব।
তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। এতে দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট খাতের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা অংশ নিচ্ছেন।
অধূমপায়ীদের সুরক্ষা এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে তামাক বিরোধী সংগঠন তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট)। সভাটি আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি তামাকজাত দ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক এবং এর বহুমুখী প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাবিনাজের পরিচালক সীমা দাস সীমু তার বক্তব্যে ধোঁয়ামুক্ত ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্য এবং গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন। তাবিনাজ কর্মী শারমিন কবীর বীণা গ্রামীণ তামাক চাষ ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা দেন।
সুপারিশসমূহ:
১. অফিস প্রাঙ্গণে ধূমপানের জন্য কোনো স্মোকিং জোন থাকবে না।
২. ক্যান্টিনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে।
৩. দেশব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তরের সকল অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ তামাকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৪. সকল অফিস প্রাঙ্গণে ‘তামাকমুক্ত এলাকা’ লেখা সম্বলিত সাইনেজ প্রতিস্থাপন করা হবে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াসে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে স্নাতকে (অনার্স) তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের আইসিটি বিষয়ের ‘টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর।
উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাদানে শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সব টেকনিক্যাল কলেজ ও কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের কলেজ শিক্ষার্থীদের মেধার ঘাটতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে তারা সহজেই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক, সময়োপযোগী ও কর্মমুখী তথ্য প্রযুক্তি পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম ও শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।
কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন কলেজের ৮টি বিভাগের ৪০ জন তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাজমা তারা এবং মির্জা মোহাম্মদ দিদারুল আনাম।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য