× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
What should be the price of oil after withdrawal of VAT?
google_news print-icon

ভ্যাট প্রত্যাহারের পর তেলের দাম কত হওয়া উচিত

ভ্যাট-প্রত্যাহারের-পর-তেলের-দাম-কত-হওয়া-উচিত
ভোজ্যতেলের দাম কমাতে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ৩০ শতাংশ ভ্যাট কমিয়ে দিয়েছে। অথচ চার দিন পেরিয়ে গেলেও তেলের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। শুল্ক বিভাগ হিসাব কষে দেখেছে, ভ্যাট প্রত্যাহারের পর ২২ টাকা পর্যন্ত খরচ কমে গেছে প্রতি লিটারে। ভোজ্যতেলের দাম কত হওয়া উচিত, এ নিয়ে রোববার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে সরকার।

কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে মাত্র ৫ শতাংশ বহাল রেখে ভোজ্যতেলের আমদানি, পরিশোধন ও ভোক্তাপর্যায়ে বিক্রিতে থাকা সব ধরনের ভ্যাট তুলে নিয়েছে সরকার। এতদিন ভোজ্যতেলের ওপর তিন স্তরে ৩৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য ছিল।

এ বিপুল ছাড়ের কারণে তেলের দাম প্রতি লিটারে ২২ টাকা কমে যাওয়ার কথা বলে মনে করছে শুল্ক বিভাগ, কেননা উৎপাদন পর্যায়ে ওই পরিমাণেই খরচ কমছে।

এ পরিস্থিতিতে ভ্যাট তুলে নেয়ার পর বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কত হওয়া উচিত, সেটি নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। আগামীকাল রোববার বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে ভোজ্যতেলের এই মূল্যনির্ধারণী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ভোজ্যতেলের (সয়াবিন ও পাম অয়েল) আমদানি, উৎপাদন ও ভোক্তা- তিন পর্যায়ে কর সুবিধা দেয়। এর মধ্যে আমদানিতে ১৫ শতাংশ থেকে নামিয়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে উৎপাদন স্তরে ১৫ শতাংশ এবং খুচরা বা ভোক্তা স্তরে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ সুবিধা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।

এনবিআর হিসাব করে দেখেছে, ভ্যাটে ছাড় দেয়ার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত তেলের দাম ১ হাজার ৪৮০ ডলার ধরে শুল্কায়ন করলে আনুষঙ্গিক হিসাব বাদ দিয়ে দেশীয় বাজারে প্রতি লিটারে তেলের দাম ২২ টাকা কমার কথা।

এর আগে গত বছরের এপ্রিলে ৩ শতাংশ আগাম কর তুলে নেয়া হয়েছিল। ফলে সার্বিকভাবে এ পণ্যটির ওপর মোট ৩৩ শতাংশ কর প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এখন ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি স্তরে শুধু ৫ শতাংশ ভ্যাট ছাড়া আর কোনো শুল্ক-কর নেই।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি ভোজ্যতেলের ওপর যে হারে ভ্যাট ছাড় দেয়া হয়েছে, তাতে সরকারের মোট রাজস্ব ক্ষতি হবে ২৫০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এ খাত থেকে ভ্যাট আদায় হয় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

এনবিআর হিসাব করে দেখেছে, ভ্যাটে ছাড় দেয়ার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত তেলের দাম ১ হাজার ৪৮০ ডলার ধরে শুল্কায়ন করলে আনুষঙ্গিক হিসাব বাদ দিয়ে দেশীয় বাজারে প্রতি লিটারে তেলের দাম ২২ টাকা কমার কথা।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ বাজারে এখন যে তেল বিক্রি হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তা কেনা হয় ১ হাজার ৪৮০ ডলারে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের কাঁচামালের দাম আরও বেড়ে গেছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম ১ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

রাজস্ব বোর্ডের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ভ্যাট ছাড়ের আগে মিল মালিকরা ডিলারের কাছে চালানে কত বিল করেছে, আর ছাড়ের পরে কত বিল করেছে তা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। এটা করলে কে বেশি ফায়দা লুটছে তা পরিষ্কার বোঝা যাবে।

প্রশ্ন উঠেছে, ভোক্তাদের সাশ্রয়ী দামে তেল খাওয়াতে সরকার যে বিশাল অঙ্কের কর সুবিধা দিল, শেষ পর্যন্ত তার সুফল ভোক্তারা কি পাবে?

এনবিআরের সাবেক সদস্য আলী আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হলেও দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে শুল্ক-করে ছাড় দেয়া হয়। দুর্বল তদারকির কারণে অনেক ক্ষেত্রে এর লক্ষ্য পূরণ হয় না। মাঝখান থেকে মধ্যস্বত্বভোগীরা এর সুফল ভোগ করে।’

প্রশ্ন উঠেছে, ভোক্তাদের সাশ্রয়ী দামে তেল খাওয়াতে সরকার যে বিশাল অঙ্কের কর সুবিধা দিল, শেষ পর্যন্ত তার সুফল ভোক্তারা কি পাবে?

কোম্পানিগুলো অপরিশোধিত ভোজ্যতেল কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করার পর কারখানায় পরিশোধন করে তা বাজারজাত করে। বোতলজাত ও খোলা দুভাবে বাজারজাত করা হয়। তবে বেশির ভাগই বোতলজাত হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বাজার স্থিতিশীল করতে গত বছরের এপ্রিলে ভোজ্যতেল আমদানিতে অগ্রিম কর প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও বাজারে দাম কমেনি। মিল মালিকরা দাবি করেছিলেন, এ পদক্ষেপে তাদের কোনো লাভ হয়নি। কারণ ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণের সঙ্গে অগ্রিম করের সম্পর্ক নেই। এটা আগে কেটে নেয়া হতো। এখন বছর শেষে আয়কর রিটার্নে সমন্বয় করা হবে। ফলে তাদের খরচ কমবে না।

ভোজ্যতেলের দাম ঠিক করে দিতে রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক বসছে।

অথচ রাজস্ব বোর্ড তখন বলেছিল, এতে মিল মালিকদের খরচ কমবে এবং সাশ্রয়ী দামে তেল কিনে খেতে পারবে জনগণ।

তখন তেলের দাম কমেনি, মাঝখান থেকে সরকারের ৭০ কোটি টাকা গচ্চা গেছে। এবারও সে রকম যাতে না হয়, সে জন্য সরকার বাড়তি উদ্যোগ নিচ্ছে।

ভোজ্যতেলের দাম ঠিক করে দিতে রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক বসছে। বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সিটি গ্রুপ, মেঘনা, টিকে গ্রুপ, বসুন্ধরা ও এস আলম গ্রুপের মালিক-সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বেলা ৩টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

ইতোমধ্যে শবে বরাত পালিত হয়ে গেছে। আর দিন পনেরো পরই শুরু হচ্ছে রোজা। তখন বাজারে সব ধরনের তেলের চাহিদা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হবে। তখন কী দামে বিক্রি হবে বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন এবং পাম তেল, তা এখনই ঠিক করে দিতে চায় সরকার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভোজ্যতেল নিয়ে সরকার খুবই সতর্ক। পণ্যমূল্য নির্ধারণে সরকার হস্তক্ষেপ না করলেও অত্যাবশ্যকীয় হিসেবে আগের ধারাবাহিকতায় এবারও ভোজ্যতেলের দাম বেঁধে দেয়ার পরিকল্পনা সরকারের।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ভ্যাট হ্রাসের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ট্যারিফ কমিশনকে এ বিষয়ে দাম ঠিক করে দেয়ার দায়িত্ব দিয়েছি। তারা পণ্যটির স্থানীয় মজুত, খালাস পর্যায়ে মজুত এবং ইতোমধ্যে খোলা এলসির পরিমাণ ও বর্তমান বৈশ্বিক বাজারের দাম পর্যালোচনা করে একটি দাম নির্ধারণের সুপারিশ করবেন।

‘সেই সুপারিশকৃত দাম নিয়ে সব পক্ষ আলোচনা করে বৈঠকে সব ধরনের ভোজ্যতেলের একটি চূড়ান্ত দাম নির্ধারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সেটি হয়, তাহলে বৈঠক শেষেই তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হতে পারে। আবার মতানৈক্য থাকলে এ বিষয়ে আরও একটি বৈঠকের প্রয়োজন হতে পারে।’

তেলের বাজার অস্থিরতার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করেন মৌলভীবাজার ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা। পাইকারি বাজারে দাম বাড়েনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির জন্য আমরা দায়ী হতে পারি না। বাজার তদারকিতে দুর্বলতা রয়েছে।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উৎপাদন ও ভোক্তাপর্যায়ে ভ্যাট তুলে নেয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাসও করি, দেরিতে হলেও বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

তবে ৬ ফেব্রুয়ারি সরকার নির্ধারিত দাম বর্তমান বৈশ্বিক বাজারের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে জানায় ভোজ্যতেলের আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো।

প্রায় দেড় মাস ধরে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের কাঁচামালের দাম অব্যাহতভাবে বাড়ছে। সেই বাড়তি দামের সঙ্গে সমন্বয় করতে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম ১৮০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) বিশ্বজিৎ সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে লিটারে ১৬৮ টাকায় যে তেল আমরা বিক্রি করছি, সেটির আন্তর্জাতিক বাজার ছিল টনপ্রতি ১ হাজার ৩০০ ডলার। আমরা প্রতি লিটার তেলের দাম ১৮০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিলাম, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে গড় মূল্য ছিল ১ হাজার ৪২০ ডলারের। এখন ওই তেলের দাম ১ হাজার ৯০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তেল আমদানি করে জাহাজ ভাড়া দিয়ে দেশে আনার পর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। এরপর কোম্পানির মুনাফার বিষয় আছে। সব মিলিয়ে কী দাম পড়তে পারে সেটি ট্যারিফ কমিশন নিশ্চয়ই পর্যালোচনা করছে। তা ছাড়া দাম নির্ধারণের প্রশ্ন এলে সেটি সরকার নিজের মতো করে পর্যালোচনার পর খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। তাই বৈঠকে কী হয় দেখি।’

তেলের বাজার অস্থিরতার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করেন মৌলভীবাজার ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা। পাইকারি বাজারে দাম বাড়েনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির জন্য আমরা দায়ী হতে পারি না। বাজার তদারকিতে দুর্বলতা রয়েছে।’

ভ্যাট প্রত্যাহারের পর এর প্রভাব পড়েনি বাজারে এখনও। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের এমআর ট্রেডার্সের মো. সেলিম শনিবার নিউজবাংলাকে বলেন, খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সোয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকায়। আর পাঁচ লিটারের ৭৯০ টাকা।

ভ্যাট কমানোর পর বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেন কমেনি আমরা জানতে চাই।’

মিল মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী তেল দিচ্ছে না তারা। ফলে বাজারে তেলের সংকট চলছে।’

বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের বাজার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২০ লাখ টন। এর মধ্যে রমজান মাসেই চাহিদা প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, স্থানীয় উৎপাদন প্রায় দুই লাখ টন। বাকি প্রায় ১৮ লাখ টন আমদানি করে ভোক্তার চাহিদা পূরণ করতে হয়।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Thakurgaon Model will be followed to free Barisal Child Labor Labor Secretary

বরিশালকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে ঠাকুরগাঁও মডেল অনুসরণ করা হবে: শ্রম সচিব

বরিশালকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে ঠাকুরগাঁও মডেল অনুসরণ করা হবে: শ্রম সচিব

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘ঠাকুরগাঁও মডেল’ অনুসরণ করে বরিশাল জেলাকে সম্পূর্ণরূপে শিশুশ্রম মুক্ত করা হবে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজে নিয়োজিত না রাখার পাশাপাশি তাদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর উপর জোর দেন তিনি।

শুক্রবার বরিশালের শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিশু শ্রম নিরসনে তারুন্যের ভুমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সচিব এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৪৩ ধরনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। কোনো শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকবে না। তারা বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাবে।”

শ্রম সচিব আইএলও'র অর্থায়নে ইএসডিও কর্তৃক বাস্তবায়িত ঠাকুরগাঁও জেলার ‘চাইল্ড লেবার মনিটরিং সিস্টেম (সিএলএমএস)’ মডেলকে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ আখ্যায়িত করেন। তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে এই মডেল অনুসরণ করে বরিশাল জেলাসহ অন্যান্য জেলাতেও শিশুশ্রম নিরসনের কার্যক্রমকে গতিশীল করা হবে।

শ্রম সচিব তরুণ সমাজ ও এনজিওগুলোর প্রতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শিশুশ্রম নিরসনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সমাজকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে পারে। এখানে উপস্থিত সকলে যদি ১ জন শিশুরও দায়িত্ব নেন, তাহলেও বরিশাল জেলা অনেকাংশে শিশুশ্রম মুক্ত হবে।”

তিনি আরও জানান, শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন দুস্থ শ্রমিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫৭ জন শ্রমিক ও তার পরিবারকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন হতে ২৫ লক্ষ টাকার অর্থ সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।

বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: রায়হান কাওসার। এছাড়াও বরিশাল জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুধীজন, এনজিও কর্মী ও তরুণরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The governments strict warning will be immediately taken legal action to promote Sheikh Hasinas statement

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে সরকারের কঠোর সতর্কবার্তা, তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে সরকারের কঠোর সতর্কবার্তা, তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের প্রচার শুধু আইনের লঙ্ঘন নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি তৈরি করে।

শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার কিছু গণমাধ্যম আইন অমান্য করে শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য সম্প্রচার করেছে, যেখানে তিনি মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং অনলাইন আউটলেটগুলোতে ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামী শেখ হাসিনার অডিও সম্প্রচার এবং প্রচার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। তা ছাড়া, গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘৃণা ছড়ায় প্রাক্তন স্বৈরশাসকের এমন বক্তব্য সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে।

আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, কিছু গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার আইন ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসকের একটি ভাষণ প্রচার করেছে যেখানে তিনি মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা এধরনের অপরাধমূলক প্রচারকর্মে জড়িত গণমাধ্যমের কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি এবং দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছি যে, শেখ হাসিনার বক্তব্য কেউ ভবিষ্যতে প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের জাতির ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি তৈরির ঝুঁকি নিতে পারি না। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে শেখ হাসিনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শত শত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীর গণহত্যার নির্দেশ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগের পরে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং বর্তমানে তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারাধীন রয়েছে। তদুপরি, বাংলাদেশের আইন অনুসারে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং একই সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ অনুসারে, যে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন যারা তাদের নেতাদের কার্যকলাপ বা বক্তৃতা প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।

একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে সরকার বিবৃতিতে বলছে, ‘প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং গণতান্ত্রিক নীতির উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করার জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের জনগণ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রথমবারের মতো সত্যিকার অর্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা, এমন একটি সময়ে, সংবাদ মাধ্যমগুলোকে শেখ হাসিনার অডিও এবং তার বক্তৃতাগুলো, যা বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি, এগুলো প্রচার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা এবং দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করার আহ্বান জানাই। তার মন্তব্য, বক্তৃতা এবং তার যেকোনো উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার, পুনঃপ্রচার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করে। এটি কেবল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কাজ করে। এ ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অমান্যকারী যেকোনো সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের আইনের অধীনে আইনি জবাবদিহিতার আওতায় পড়বে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
I will not be in any position in the post government government in February
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে ড. ইউনূসের নিবন্ধ

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, পরবর্তী সরকারের কোনো পদে আমি থাকব না

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, পরবর্তী সরকারের কোনো পদে আমি থাকব না

যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারাট নিউজে নিবন্ধ লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এতে প্রফেসর ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচন শেষেই তিনি রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। নির্বাচনে যে সরকার গঠিত হবে সেটির কোনো পদেই থাকবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি।

ড. ইউনূস লিখেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করেছি : জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে। এরপর যে সরকার আসবে সেখানে নির্বাচিত বা নিযুক্ত করা কোনো পদে আমি থাকব না।’

তিনি বলেছেন, ‘আমার সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনাগুলো বলতে পারবে। আমাদের মিশন হলো, সব বৈধ ভোটার যেন তাদের ভোট দিতে পারে, যারা প্রবাসে আছেন তারাও। এটি একটি বড় কাজ। কিন্তু আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

প্রফেসর ইউনূসের নিবন্ধটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

এক বছর আগে, এই মাসেই বাংলাদেশের হাজার হাজার সাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শিক্ষার্থী, যাদের পেছনে ছিল সমাজের সব স্তরের অগণিত মানুষের সমর্থন, আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, যা শেষ পর্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়েছিল, তার মাধ্যমেই তারা একজন স্বৈরাচারকে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।

এরপর যে ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে ছাত্রনেতারা আমাকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ জানায়। এই সরকারের দায়িত্ব ছিল দেশকে স্থিতিশীল করা এবং গণতন্ত্রের নতুন পথ তৈরি করা। শুরুতে আমি রাজি হইনি। কিন্তু যখন তারা জোর করল, তখন আমি তরুণদের জীবন উৎস্বর্গের কথা ভাবলাম, আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারলাম না। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট, সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষেদের সঙ্গে আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করি।

এই গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা থেকে। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম ‘জেনারেশন জেড’ বিপ্লবের সূত্রপাত হয়েছিল। এই বিপ্লব তরুণদের জন্য একটি আদর্শ হয়ে উঠেছে, যা দেখায় কীভাবে তারা মানবজাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো—যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং বৈষম্য—মোকাবিলার জন্য এগিয়ে আসতে পারে।

আমরা ভাগ্যবান যে তারা ‘তাদের পালা আসার জন্য’ অপেক্ষা করেনি। যখন সভ্যতা অনেক দিক থেকে ভুল পথে চালিত হচ্ছে, তখন তারা বুঝতে পেরেছিল যে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।

স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে আমাদের উত্তরণের একটি স্পষ্ট প্রমাণ ছিল যখন দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকী বাংলাদেশকে তাদের ‘২০২৪ সালের সেরা দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা তখন অর্থনীতি পুনর্গঠন, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং চুরি যাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদ উদ্ধারে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে, আমরা তখনো বুঝতে পারিনি বিশ্ব আমাদের এই অগ্রগতিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য করছে। ডেসারেট নিউজ আমাদের এই যাত্রার চমৎকার কাভারেজ দিয়েছে, যা আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করি।

আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার ছিল গণঅভ্যুত্থানে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল এবং যারা গুরুতর আহত হয়েছিল—সেই হাজার হাজার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। এরসঙ্গে আমরা বিগত সরকার ও তার সহযোগীদের লুট করা অর্থ উদ্ধারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে সাবেক স্বৈরাচারী সরকার বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে। এই অর্থ পুনরুদ্ধার করার জন্য যুদ্ধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন অব্যবস্থার মাত্রা দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছিল না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল। অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছিল।

সরকারি কর্মচারীরা, যারা ক্ষমতাসীন দলের প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য না দেখানোর কারণে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তারা ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন।

ধীরে ধীরে আমরা পুনর্গঠন শুরু করেছি। যেসব রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারের প্রতিরোধ করেছিল, তাদের পাশাপাশি নতুন গঠিত দলগুলোও নতুন ধারণা, শক্তি এবং কর্মপ্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। সশস্ত্র বাহিনী, যারা ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা চালাতে দেয়নি, তারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।

আমি এটি স্পষ্ট করে দিয়েছি: আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি এরপরের সরকারের কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকব না।

আমাদের প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করা, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবে। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকসহ সব যোগ্য নাগরিককে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া একটি বিশাল কাজ। কিন্তু আমরা এটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমরা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন এনেছি। যেন আমাদের প্রতিবেশী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক জোরদার করা যায়।

বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির একটি মূল কেন্দ্র হতে পারে এবং হওয়া উচিতও। আমরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞ।

রুবিওরে সঙ্গে সম্প্রতি আমার একটি ফলপ্রসূ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, যা আমাদের উভয় দেশের বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক ছিল।

যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘও আমাদের সহায়তা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। আমরা এই পথে একা নই।

নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের নিয়ে একটি ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছি। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনা। যা এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে না যায়।

বাংলাদেশ যদি শেষ পর্যন্ত এমন একটি দেশে পরিণত হয় যেখানে দেশের সব মানুষ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে। তবে তা হবে লাখ লাখ বাংলাদেশির দৃঢ়তা, কল্পনা এবং সাহসের ফল।

এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে যারা আছেন তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। তারাই আমাদের সর্বোত্তম আশা—এবং সম্ভবত আমাদের শেষ আশা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Authorization of Visa Exemption Agreement with Pakistan

পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুমোদন

পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুমোদন

সরকারি এবং কূটনীতিক পাসপোর্টে পারস্পারিক ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

প্রেস সচিব বলেন, ‘পাকিস্তানের মতো এ রকম চুক্তি আমরা আরও ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এই চুক্তি পাঁচ বছরের জন্য করা হবে । এর ফলে যারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের যারা অফিসিয়াল এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন— তারাও বাংলাদেশে সফর করতে পারবেন কোন ভিসা ছাড়াই। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস।’

উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পাওয়া গেছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Authorization of the draft of the Revenue Policy and Revenue Management Amendment Ordinance

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন

উপদেষ্টা পরিষদের ৩৯তম বৈঠকে আজ ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।

ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীগণের পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করা হয়।

এছাড়া, উপদেষ্টা পরিষদকে সংস্কার কমিশনসমূহের সুপারিশ বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The Ministry of Social Welfare wants to work through the coordination team to speed up the pace the new secretary of the ministry

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যে গতিতে এগোচ্ছে আরও গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যে গতিতে এগোচ্ছে আরও গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ উপস্থিত সকলের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যে গতিতে এগোচ্ছে আরও গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই। আমি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় সেবা দরিদ্র, দুঃস্থ, অসহায়, অসচ্ছল মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সকলের সহযোগিতা চাই। এজন্য আমরা সবাই একসাথে কাজ করবো।
তিনি আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
নতুন সচিব বলেন,
আমি এই মন্ত্রণালয়ের সুনাম কাজের মাধ্যমে, আইন কানুন মেনে মানুষের সেবা দ্রুত নিশ্চিত করতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, সচিবের রুম আপনাদের জন্য সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এবং ফাইল দ্রুত নিষ্পত্তি করে কাজের যথার্থতা নিশ্চিত করবেন। আপনারা নির্ভয়ে কাজ করবেন, আমার সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আমিও আপনাদের থেকে শিখতে চাই এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The Ministry of Youth and Sports is going to organize the National Policy Competition 2021

জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫ আয়োজন করতে যাচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫ আয়োজন করতে যাচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের নয়টি সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হচ্ছে জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫। জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর প্রতিপাদ্য "বাংলাদেশ ২.০: তারুণ্যের নেতৃত্বে আগামীর পথে " নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা ধারণাপত্র জমা দিয়ে শুরু করবে এবং নির্বাচিত দলসমূহ পূর্ণাঙ্গ নীতিপত্র প্রস্তুত ও উপস্থাপনা করবে। বিজয়ীরা পুরস্কৃত হওয়ার পাশাপাশি তাদের নীতি প্রস্তাবগুলো সরকারিভাবে পলিসি প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

নীতি প্রতিযোগিতার বিষয়গুলো হল-

১. রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণ ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ

২. জুলাই পরবর্তীতে সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি: জাতীয় স্বার্থ ও বৈদেশিক সম্পর্কের পুনঃসংজ্ঞায়ন

৩. নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ: শিক্ষা ও দক্ষতার রূপান্তর

৪.দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক সংযোগ: জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশী তরুণদের ভূমিকা

৫. গুজব প্রতিরোধে বাংলাদেশের করণীয় ও বাংলাদেশের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি

৬. জুলাই গণভুত্থান ও সাংবিধানিক পুনর্গঠন: তরুণদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ

৭.বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ: সম্ভাবনার ব্যবহার ও নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা প্রস্তুতি

৮. সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের পথে: ব্যবস্থা পুনর্গঠন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

৯. চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশের উদ্বোধনী সম্ভাবনা ও প্রয়োগের ক্ষেত্র

  1. কৃষি, নদী উন্নয়নের গতিপথ: বঙ্গীয় ব-দ্বীপের পুনরাবিষ্কার।

রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী বিষয়সহ রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে তারুণ্যের অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণ অপরিহার্য। আমাদের কাঙ্ক্ষিত দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নীতিগতভাবে অগ্রসর হওয়া। তরুণদের চিন্তাপ্রক্রিয়া, মননশীলতা এবং গবেষণাধর্মী সক্ষমতাকে সামনে রেখে এক নতুন পরিবর্তনের সূচনা করা সম্ভব আর সেটি হতে হবে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় তারুণ্যের অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে।

এ সময় যুব ও ক্রীড়া সচিব বলেন, এই প্রতিযোগিতা কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয় এটি আগামী প্রজন্মের নেতৃত্বে বিনিয়োগ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তরুণদের বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণই আমাদের রাষ্ট্রকে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেবে এবং বাংলাদেশ ২.০-কে বাস্তবায়নের ভিত্তি গড়ে তুলবে।

মন্তব্য

p
উপরে