× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Musharraf did not go to Faridpur with his comrades in jail
google_news print-icon

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সঙ্গীরা-কারাগারে-দাপুটে-মোশাররফ-যানই-না-ফরিদপুরে
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুর সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী হন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তখন থেকেই জেলাটিতে তৈরি হয় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ পরিবারের দাপট।
২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে অনুসারীরা আটক হওয়ার দুই দিন পর ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাড়ি জমান সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী। এরপর সাড়ে ৯ মাসে তিনি কেবল দুই রাতের জন্য দুইবার ফরিদপুরে গিয়েছিলেন। একবার তার মেয়েকে নিয়ে লকারে থাকা কাগজপত্র নিয়ে যান। আরেকবার ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তার চাচির মৃত্যুতে জানাজায় অংশ নেন।

এ যেন আকাশ থেকে মাটিতে পতন। বছর দুয়েক আগেও ফরিদপুরের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা খন্দকার মোশাররফ হোসেন এখন এলাকাতেই ভিড়ছেন না। তিনি সবশেষ এলাকায় গেছেন এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেল।

এর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন তার ছোট ভাই খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর। ঘনিষ্ঠ সহচর সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল গ্রেপ্তার হয়েছেন তার বাসভবন থেকে। তাদের পক্ষে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপই নেই ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্যের।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুর সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী হন তিনি। তখন থেকেই জেলাটিতে তৈরি হয় মোশাররফ পরিবারের দাপট।

সরকারের টানা দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে আরও বড় মন্ত্রণালয় হিসেবে বিবেচিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়ের দায়িত্ব পান মোশাররফ। এরপর ফরিদপুরে স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও দরপত্রে তার অনুসারীরাই হয়ে ওঠেন হর্তাকর্তা।

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই ও ফরিদপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর পুলিশ হেফাজতে। ছবি: নিউজবাংলা

তবে সব কিছু পাল্টে যেতে থাকে আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদের শুরু থেকে। মন্ত্রিত্ব থেকে মোশাররফের বাদ পড়া কিছুটা বিস্ময় তৈরি করে। তবে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীর মতো ডাকসাইটে নেতাদেরও প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় না রাখার পর মোশাররফের বিষয়টি নিয়ে আলাদা আলোচনা হয়নি।

এই সরকারের আড়াই বছরের মাথায় ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় পাল্টে যেতে থাকে ফরিদপুরের পরিস্থিতি।

ওই বছরের ৭ জুন ফরিদপুরে খন্দকার মোশাররফের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন বরকত-রুবেলসহ ৯ জন। পরে জানানো হয়, তারা বিদেশে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার করেছেন।

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহচর সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। ছবি কোলাজ:নিউজবাংলা

এই মামলায় যাদের নাম আছে তারা সবাই খন্দকার মোশাররফের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

অনুসারীরা আটক হওয়ার ‍দুই দিন পর ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাড়ি জমান সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী। এরপর পৌনে দুই বছর তিনি কেবল দুই রাতের জন্য দুইবার ফরিদপুরে এসেছিলেন।

একবার তার মেয়েকে নিয়ে লকারে থাকা কাগজপত্র নিয়ে যান। আরেকবার ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চাচির মৃত্যুতে জানাজায় অংশ নেন।

তার অবর্তমানে শহরের বদরপুরের বাসভবন ‘আফসানা মঞ্জিল’ এখন দর্শনার্থী ও তরুণদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। বাড়িটিতে থাকেন কয়েকজন কেয়ারটেকার। সেখানে রয়েছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা। এতে গোটা বিশেক হরিণ, কয়েকটি উটপাখি, ময়ূরসহ আরও কিছু প্রাণীর দেখভাল করেন তারা।

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অবর্তমানে শহরের বদরপুরের বাসভবন ‘আফসানা মঞ্জিল’ এখন দর্শনার্থী ও তরুণদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। বাড়িটিতে থাকেন কয়েকজন কেয়ারটেকার। সেখানে রয়েছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা। ছবি: নিউজবাংলা

ভাইয়ের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ব্যাপারে আমি আপনাদের চেয়েও কম জানি। আর সে অপরাধ করলেও আমি কি বলে দেব যে সে এই অপরাধ করেছে? আপনারা খোঁজ নিয়ে জানেন।’

এলাকায় যাচ্ছেন না কেন- এই প্রশ্ন করার পরই কিছুটা রাগান্বিত হয়ে উঠে ফোন কেটে দেন মোশাররফ।

ফরিদপুরের আলোচিত সাংবাদিক প্রবীর শিকদার অবশ্য মনে করেন, বাবরের উত্থান ও তার সব কিছুর পেছনে খন্দকার মোশাররফের দায় রয়েছে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খন্দকার বাবর একটা ফ্যাক্টর৷ কিন্তু খন্দকার মোশাররফ সাহেবের আশীর্বাদ ছাড়া তো ফরিদপুরে লুটপাট দুর্নীতি করা সম্ভব হয়নি৷’

তিনি মনে করেন, মোশাররফ সাম্রাজ্য ভেঙে পড়া এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র। বলেন, ‘খন্দকার মোশাররফ সাহেব অনেক বাড়াবাড়ি করেছেন৷ তার চূড়ান্ত পরিণতি শুরু হয়েছে৷’

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘খন্দকার বাবর ছিলেন ভিন্ন দলে, সুযোগ-সুবিধা লুটতেই তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এতদিন ভাইয়ের ক্ষমতার দাপটে তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।’

তিনি বলেন, ‘নেত্রীর (শেখ হাসিনা) আত্মীয় হওয়ার পরও এখন তারা রেহাই পাচ্ছেন না৷ এর আগে অনেকের ধারণা ছিল, খন্দকার বাবর গ্রেপ্তার হবেন না৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছেন৷ হাতে হাতকড়াও দেয়া হয়েছে৷ ওয়েট অ্যান্ড সি, এরপর কী হয়৷’

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস এইচ এম ফুয়াদকে আটক করে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা

দাপটের শুরু যেভাবে

২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে সারা দেশে ভূমিধস বিজয়ের কালে ১৯৭৩ সালের পর প্রথমবারের মতো ফরিদপুর সদর আসন দখল করে আওয়ামী লীগ। সংসদ সদস্য হন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর উত্থান হয় ছোট ভাই খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবরের। বিএনপি শাসনামলে তিনি ছিলেন দলটির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসূফের সহযোগী। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগনে।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বাবর তার ভাই মোশাররফের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন না। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা কামাল ইবনে ইউসূফের প্রধান এজেন্ট ছিলেন। সে সময় ২০ দলীয় জোট আসনটিতে মনোনয়ন দেয় জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে।

বড় ভাই মন্ত্রী হওয়ার পর বাবর পক্ষ পাল্টান। অভিযোগ আছে, বাবরের হাত ধরেই শুরু হয় টেন্ডারবাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্য, চাঁদাবাজি। স্থানীয় আওয়ামী লীগেও আসতে থাকে পরিবর্তন। ত্যাগী নেতারা কোণঠাসা হতে থাকেন, অন্য দল ও মতের অনুসারীরা ক্ষমতাসীন দলে আসতে থাকেন, যারা পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘হাইব্রিড নেতা’ হিসেবে।

একে একে বাদ পড়েন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষ, বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হক ভোলা মাস্টার, সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ মুখার্জিসহ অনেকে।

ফরিদপুর আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ বাবরের হাতে চলে যায়। মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ফরিদপুর সদরের সমস্ত ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করেন।

একে একে মেডিক্যাল কলেজ, পাসপোর্ট অফিস, সড়ক বিভাগ, এলজিইডি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন তিনি। আলোচিত দুই ভাই রুবেল ও বরকতের উত্থান হতে শুরু করে।

২০১৪ সালে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বাবর। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেতে চেষ্টা করেন তিনি।

২০১৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে ‘বাবরকে সাধারণ সম্পাদক চাই’ লেখা হাজারো ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে যায় ফরিদপুর শহর। কিন্তু সফল হননি।

সবকিছু ঠিকঠাকমতো চলছিল। তবে ২০১৭ সালে বড় ভাই খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে বাবরের সম্পর্কের অবনতি হয়। একাধিক ঘনিষ্ঠজন নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বাবরের কাছে টাকা চান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে রাজি হননি।

এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের শুরু। একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের চেয়ার হারান বাবর। এরপর ফরিদপুরে এলেও টিকতে পারেননি তিনি। সেই থেকে তিনি ঢাকাতেই থাকতেন।

২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি বাবর রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় আত্মগোপন করেছিলেন। গত ৭ মার্চ রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।

পতনের শুরু

২০২০ সালের ১৬ মে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। তখন থেকেই মূলত মোশাররফ সাম্রাজ্যে ফাটল ধরা দেয়।

১৮ মে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন সুবল সাহা। এরই ধারাবাহিকতায় এই বছরের ৭ জুন ফরিদপুরে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ক্ষমতার বলয়ে যারা ছিলেন, তাদের প্রায় সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

এই গ্রেপ্তারের আগে সুবল ছাড়াও সোচ্চার হন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা। তারা অভিযোগ করতে থাকেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলেই তারা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এসব নেতা ও কর্মীদের অভিযোগ, খন্দকার মোশাররফের নির্দেশে তার অনুসারী বাবর-ফুয়াদরা তাদের বিরুদ্ধে নানা মামলা দিয়েছেন। পাশাপাশি নানা নির্যাতন করেছেন।

‘ডানহাত’ বরকত-রুবেল-ফুয়াদও বন্দি

খন্দকার মোশাররফের জমানায় ফরিদপুরে তুমুল আলোচিত হয়ে ওঠেন শহরের ব্রাক্ষ্মণকান্দা গ্রামের দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।

এই দুজন একসময় বিএনপি নেতা খন্দকার চাঁদের ফুটফরমাশ খাটতেন। খন্দকার মোশাররফ বদরপুরে বাড়ি করলে সেখানে ভিড়তে শুরু করেন। বাবরের ক্ষমতার ভিত শক্ত হলে দুই ভাই হাত মেলান তার সঙ্গে।

খন্দকার মোশাররফ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হওয়ার পর বরকত-রুবেলের উত্থানের শুরু। বরকত হন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আর রুবেল হন স্থানীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, খন্দকার মোশাররফের মন্ত্রিত্বের সুবাদে স্থানীয় সরকার বিভাগের সারা দেশের দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করতেন বরকত। চালু করেছিলেন ১৫ শতাংশ কমিশন ব্যবস্থা।

খন্দকার মোশাররফ প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী থাকাকালীন এপিএস সত্যজিত মুখার্জির সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হলে তাকে নানা মামলা দিয়ে পাঠানো হয় কারাগারে। তখন এপিএস হন এ এইচ এম ফুয়াদ।

মোশাররফের ফরিদপুর নিয়ন্ত্রণের অন্যতম নাম এই ফুয়াদ। ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হন তিনি।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালে তার একটি বাহিনী গড়ে ওঠে যারা ‘হাতুড়ি ও হেলমেট বাহিনী’র তকমা পায়। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই এই বাহিনী দিয়েই নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আছে।

২ হাজার কোটি টাকার পাচারের মামলায় ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর রাতে ফুয়াদকেও ঢাকার বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

‘২ হাজার কোটি টাকা পাচার’ ইস্যু

২০২০ সালের ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।

মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন দুই ভাই।

মামলায় বলা হয়, মাদক কারবার, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তারা। এসি, নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তারা।

এজাহারে আরও বলা হয়, প্রথম জীবনে এই দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফরমায়েশ খাটতেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না। পরে তারা আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

২০২১ সালের ৩ মার্চ ঢাকা মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।

এতে ১০ জনকে আসামি করা হয়। সাবেক মন্ত্রীর ভাই বাবর ছাড়াও মোশাররফ ঘনিষ্ঠ বরকত, রুবেল, ফুয়াদ ছাড়াও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী মিনার, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভি, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম কামরুল হাসান ডেবিট, তারিকুল ইসলাম নাছিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাইন, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহানকে আসামি করা হয় এতে।

এ মামলায় মিনার, ডেবিট, নাছিম ছাড়া সবাই কারাগারে।

২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বরকত ও রুবেলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও ১৮৮ ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

অনুসারীরা কোণঠাসা, বিরোধীরা চাঙা

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর ফরিদপুর আওয়ামী লীগে যারা প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন, মোশাররফের সঙ্গে সঙ্গে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তারা।

ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রণ এখন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন ও সহসভাপতি হামিম গ্রুপের কর্ণধার এ কে আজাদ, সহসভাপতি শামীম হক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুল হক ভোলা মাস্টার, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস ও তাদের অনুসারীদের হাতে, যারা দুই বছর আগে দলের মধ্যেই অত্যাচার নির্যাতনের শিকার বলে অভিযোগ করে আসছিলেন।

শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোমিতুল হাসান বিভুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাবর ও ফুয়াদ লুটেরারা টাকার পাহাড় বানিয়েছেন। আর এ জন্য ফরিদপুরের দলের প্রকৃত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা হয়েছেন লুটেরাদের নির্যাতনের শিকার। অন্যায়ের পতন একদিন হয়ই।’

পৌর মেয়র অমিতাভ বোস বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে ফরিদপুর শহরে যে অত্যাচার-অবিচার হয়েছে তার গডফাদার এই বাবর (খন্দকার মোশাররফের ভাই)। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অভিযানে ফরিদপুরে অন্যায় অত্যাচায়ের খলনায়কেরা এখন কারাগারে, এটাই স্বস্তির খবর।’

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই মোহতেসাম হোসেন বাবর গ্রেপ্তার হওয়ায় ফরিদপুরে গত ৮ মার্চ বিকেলে আনন্দ মিছিল করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, ‘আমি সাধারণ সম্পাদক হলেও কোনো দিন কোনো দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারিনি। রাজনৈতিকভাবে আমাকে একঘরে করে রেখেছিল তারা।

‘বাবর ২০১৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। তখন থেকেই আমি একঘরে ছিলাম।’

আরও পড়ুন:
মোশাররফের ভাই বাবর কারাগারে, ফরিদপুরে মিষ্টি বিতরণ
সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের ভাই গ্রেপ্তার
হেলেন অফ ফরিদপুর!
‘খালেদার চিকিৎসা নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে সরকার’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ, আসামীর যাবজ্জীবন

সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ, আসামীর যাবজ্জীবন

নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র‌্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।

মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।

মন্তব্য

হিল্লা বিয়ে না করার জেরে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' দম্পতি

হিল্লা বিয়ে না করার জেরে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' দম্পতি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।

এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।

গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।

বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।

আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।

গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।

আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In July 2021 the growth rate of revenue collection is about 20 percent 

জুলাই-২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২৫ শতাংশ 

জুলাই-২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২৫ শতাংশ 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।

জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।

আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।

রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The main accused arrested in the murder of UP member

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।

শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র‍্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন

র‍্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।

মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।

এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।

পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মন্তব্য

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট

কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।

কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।

ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”

স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
July in Kaliganj People from all walks of life took oath with millions of voices

কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ: লাখো কণ্ঠের সঙ্গে শপথ নিলেন সর্বস্তরের মানুষ

কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ: লাখো কণ্ঠের সঙ্গে শপথ নিলেন সর্বস্তরের মানুষ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।

বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Snake panic in Feni after flood

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।

মন্তব্য

p
উপরে