× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Musharraf did not go to Faridpur with his comrades in jail
google_news print-icon

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সঙ্গীরা-কারাগারে-দাপুটে-মোশাররফ-যানই-না-ফরিদপুরে
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুর সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী হন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তখন থেকেই জেলাটিতে তৈরি হয় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ পরিবারের দাপট।
২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে অনুসারীরা আটক হওয়ার দুই দিন পর ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাড়ি জমান সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী। এরপর সাড়ে ৯ মাসে তিনি কেবল দুই রাতের জন্য দুইবার ফরিদপুরে গিয়েছিলেন। একবার তার মেয়েকে নিয়ে লকারে থাকা কাগজপত্র নিয়ে যান। আরেকবার ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তার চাচির মৃত্যুতে জানাজায় অংশ নেন।

এ যেন আকাশ থেকে মাটিতে পতন। বছর দুয়েক আগেও ফরিদপুরের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা খন্দকার মোশাররফ হোসেন এখন এলাকাতেই ভিড়ছেন না। তিনি সবশেষ এলাকায় গেছেন এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেল।

এর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন তার ছোট ভাই খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর। ঘনিষ্ঠ সহচর সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল গ্রেপ্তার হয়েছেন তার বাসভবন থেকে। তাদের পক্ষে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপই নেই ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্যের।

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুর সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী হন তিনি। তখন থেকেই জেলাটিতে তৈরি হয় মোশাররফ পরিবারের দাপট।

সরকারের টানা দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে আরও বড় মন্ত্রণালয় হিসেবে বিবেচিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়ের দায়িত্ব পান মোশাররফ। এরপর ফরিদপুরে স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও দরপত্রে তার অনুসারীরাই হয়ে ওঠেন হর্তাকর্তা।

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই ও ফরিদপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর পুলিশ হেফাজতে। ছবি: নিউজবাংলা

তবে সব কিছু পাল্টে যেতে থাকে আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদের শুরু থেকে। মন্ত্রিত্ব থেকে মোশাররফের বাদ পড়া কিছুটা বিস্ময় তৈরি করে। তবে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীর মতো ডাকসাইটে নেতাদেরও প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় না রাখার পর মোশাররফের বিষয়টি নিয়ে আলাদা আলোচনা হয়নি।

এই সরকারের আড়াই বছরের মাথায় ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় পাল্টে যেতে থাকে ফরিদপুরের পরিস্থিতি।

ওই বছরের ৭ জুন ফরিদপুরে খন্দকার মোশাররফের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন বরকত-রুবেলসহ ৯ জন। পরে জানানো হয়, তারা বিদেশে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার করেছেন।

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহচর সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। ছবি কোলাজ:নিউজবাংলা

এই মামলায় যাদের নাম আছে তারা সবাই খন্দকার মোশাররফের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

অনুসারীরা আটক হওয়ার ‍দুই দিন পর ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাড়ি জমান সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী। এরপর পৌনে দুই বছর তিনি কেবল দুই রাতের জন্য দুইবার ফরিদপুরে এসেছিলেন।

একবার তার মেয়েকে নিয়ে লকারে থাকা কাগজপত্র নিয়ে যান। আরেকবার ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চাচির মৃত্যুতে জানাজায় অংশ নেন।

তার অবর্তমানে শহরের বদরপুরের বাসভবন ‘আফসানা মঞ্জিল’ এখন দর্শনার্থী ও তরুণদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। বাড়িটিতে থাকেন কয়েকজন কেয়ারটেকার। সেখানে রয়েছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা। এতে গোটা বিশেক হরিণ, কয়েকটি উটপাখি, ময়ূরসহ আরও কিছু প্রাণীর দেখভাল করেন তারা।

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অবর্তমানে শহরের বদরপুরের বাসভবন ‘আফসানা মঞ্জিল’ এখন দর্শনার্থী ও তরুণদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। বাড়িটিতে থাকেন কয়েকজন কেয়ারটেকার। সেখানে রয়েছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা। ছবি: নিউজবাংলা

ভাইয়ের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ব্যাপারে আমি আপনাদের চেয়েও কম জানি। আর সে অপরাধ করলেও আমি কি বলে দেব যে সে এই অপরাধ করেছে? আপনারা খোঁজ নিয়ে জানেন।’

এলাকায় যাচ্ছেন না কেন- এই প্রশ্ন করার পরই কিছুটা রাগান্বিত হয়ে উঠে ফোন কেটে দেন মোশাররফ।

ফরিদপুরের আলোচিত সাংবাদিক প্রবীর শিকদার অবশ্য মনে করেন, বাবরের উত্থান ও তার সব কিছুর পেছনে খন্দকার মোশাররফের দায় রয়েছে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খন্দকার বাবর একটা ফ্যাক্টর৷ কিন্তু খন্দকার মোশাররফ সাহেবের আশীর্বাদ ছাড়া তো ফরিদপুরে লুটপাট দুর্নীতি করা সম্ভব হয়নি৷’

তিনি মনে করেন, মোশাররফ সাম্রাজ্য ভেঙে পড়া এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র। বলেন, ‘খন্দকার মোশাররফ সাহেব অনেক বাড়াবাড়ি করেছেন৷ তার চূড়ান্ত পরিণতি শুরু হয়েছে৷’

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘খন্দকার বাবর ছিলেন ভিন্ন দলে, সুযোগ-সুবিধা লুটতেই তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এতদিন ভাইয়ের ক্ষমতার দাপটে তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।’

তিনি বলেন, ‘নেত্রীর (শেখ হাসিনা) আত্মীয় হওয়ার পরও এখন তারা রেহাই পাচ্ছেন না৷ এর আগে অনেকের ধারণা ছিল, খন্দকার বাবর গ্রেপ্তার হবেন না৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছেন৷ হাতে হাতকড়াও দেয়া হয়েছে৷ ওয়েট অ্যান্ড সি, এরপর কী হয়৷’

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস এইচ এম ফুয়াদকে আটক করে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা

দাপটের শুরু যেভাবে

২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে সারা দেশে ভূমিধস বিজয়ের কালে ১৯৭৩ সালের পর প্রথমবারের মতো ফরিদপুর সদর আসন দখল করে আওয়ামী লীগ। সংসদ সদস্য হন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর উত্থান হয় ছোট ভাই খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবরের। বিএনপি শাসনামলে তিনি ছিলেন দলটির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসূফের সহযোগী। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগনে।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বাবর তার ভাই মোশাররফের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন না। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা কামাল ইবনে ইউসূফের প্রধান এজেন্ট ছিলেন। সে সময় ২০ দলীয় জোট আসনটিতে মনোনয়ন দেয় জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে।

বড় ভাই মন্ত্রী হওয়ার পর বাবর পক্ষ পাল্টান। অভিযোগ আছে, বাবরের হাত ধরেই শুরু হয় টেন্ডারবাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্য, চাঁদাবাজি। স্থানীয় আওয়ামী লীগেও আসতে থাকে পরিবর্তন। ত্যাগী নেতারা কোণঠাসা হতে থাকেন, অন্য দল ও মতের অনুসারীরা ক্ষমতাসীন দলে আসতে থাকেন, যারা পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘হাইব্রিড নেতা’ হিসেবে।

একে একে বাদ পড়েন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষ, বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হক ভোলা মাস্টার, সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ মুখার্জিসহ অনেকে।

ফরিদপুর আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ বাবরের হাতে চলে যায়। মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ফরিদপুর সদরের সমস্ত ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করেন।

একে একে মেডিক্যাল কলেজ, পাসপোর্ট অফিস, সড়ক বিভাগ, এলজিইডি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন তিনি। আলোচিত দুই ভাই রুবেল ও বরকতের উত্থান হতে শুরু করে।

২০১৪ সালে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বাবর। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেতে চেষ্টা করেন তিনি।

২০১৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে ‘বাবরকে সাধারণ সম্পাদক চাই’ লেখা হাজারো ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে যায় ফরিদপুর শহর। কিন্তু সফল হননি।

সবকিছু ঠিকঠাকমতো চলছিল। তবে ২০১৭ সালে বড় ভাই খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে বাবরের সম্পর্কের অবনতি হয়। একাধিক ঘনিষ্ঠজন নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বাবরের কাছে টাকা চান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে রাজি হননি।

এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের শুরু। একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের চেয়ার হারান বাবর। এরপর ফরিদপুরে এলেও টিকতে পারেননি তিনি। সেই থেকে তিনি ঢাকাতেই থাকতেন।

২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি বাবর রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় আত্মগোপন করেছিলেন। গত ৭ মার্চ রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।

পতনের শুরু

২০২০ সালের ১৬ মে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। তখন থেকেই মূলত মোশাররফ সাম্রাজ্যে ফাটল ধরা দেয়।

১৮ মে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন সুবল সাহা। এরই ধারাবাহিকতায় এই বছরের ৭ জুন ফরিদপুরে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ক্ষমতার বলয়ে যারা ছিলেন, তাদের প্রায় সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

এই গ্রেপ্তারের আগে সুবল ছাড়াও সোচ্চার হন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা। তারা অভিযোগ করতে থাকেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলেই তারা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এসব নেতা ও কর্মীদের অভিযোগ, খন্দকার মোশাররফের নির্দেশে তার অনুসারী বাবর-ফুয়াদরা তাদের বিরুদ্ধে নানা মামলা দিয়েছেন। পাশাপাশি নানা নির্যাতন করেছেন।

‘ডানহাত’ বরকত-রুবেল-ফুয়াদও বন্দি

খন্দকার মোশাররফের জমানায় ফরিদপুরে তুমুল আলোচিত হয়ে ওঠেন শহরের ব্রাক্ষ্মণকান্দা গ্রামের দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।

এই দুজন একসময় বিএনপি নেতা খন্দকার চাঁদের ফুটফরমাশ খাটতেন। খন্দকার মোশাররফ বদরপুরে বাড়ি করলে সেখানে ভিড়তে শুরু করেন। বাবরের ক্ষমতার ভিত শক্ত হলে দুই ভাই হাত মেলান তার সঙ্গে।

খন্দকার মোশাররফ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হওয়ার পর বরকত-রুবেলের উত্থানের শুরু। বরকত হন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আর রুবেল হন স্থানীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, খন্দকার মোশাররফের মন্ত্রিত্বের সুবাদে স্থানীয় সরকার বিভাগের সারা দেশের দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করতেন বরকত। চালু করেছিলেন ১৫ শতাংশ কমিশন ব্যবস্থা।

খন্দকার মোশাররফ প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী থাকাকালীন এপিএস সত্যজিত মুখার্জির সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হলে তাকে নানা মামলা দিয়ে পাঠানো হয় কারাগারে। তখন এপিএস হন এ এইচ এম ফুয়াদ।

মোশাররফের ফরিদপুর নিয়ন্ত্রণের অন্যতম নাম এই ফুয়াদ। ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হন তিনি।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালে তার একটি বাহিনী গড়ে ওঠে যারা ‘হাতুড়ি ও হেলমেট বাহিনী’র তকমা পায়। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই এই বাহিনী দিয়েই নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আছে।

২ হাজার কোটি টাকার পাচারের মামলায় ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর রাতে ফুয়াদকেও ঢাকার বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

‘২ হাজার কোটি টাকা পাচার’ ইস্যু

২০২০ সালের ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।

মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন দুই ভাই।

মামলায় বলা হয়, মাদক কারবার, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তারা। এসি, নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তারা।

এজাহারে আরও বলা হয়, প্রথম জীবনে এই দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফরমায়েশ খাটতেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না। পরে তারা আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

২০২১ সালের ৩ মার্চ ঢাকা মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।

এতে ১০ জনকে আসামি করা হয়। সাবেক মন্ত্রীর ভাই বাবর ছাড়াও মোশাররফ ঘনিষ্ঠ বরকত, রুবেল, ফুয়াদ ছাড়াও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী মিনার, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভি, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম কামরুল হাসান ডেবিট, তারিকুল ইসলাম নাছিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাইন, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহানকে আসামি করা হয় এতে।

এ মামলায় মিনার, ডেবিট, নাছিম ছাড়া সবাই কারাগারে।

২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বরকত ও রুবেলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও ১৮৮ ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

অনুসারীরা কোণঠাসা, বিরোধীরা চাঙা

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর ফরিদপুর আওয়ামী লীগে যারা প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন, মোশাররফের সঙ্গে সঙ্গে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তারা।

ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রণ এখন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন ও সহসভাপতি হামিম গ্রুপের কর্ণধার এ কে আজাদ, সহসভাপতি শামীম হক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুল হক ভোলা মাস্টার, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস ও তাদের অনুসারীদের হাতে, যারা দুই বছর আগে দলের মধ্যেই অত্যাচার নির্যাতনের শিকার বলে অভিযোগ করে আসছিলেন।

শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোমিতুল হাসান বিভুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাবর ও ফুয়াদ লুটেরারা টাকার পাহাড় বানিয়েছেন। আর এ জন্য ফরিদপুরের দলের প্রকৃত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা হয়েছেন লুটেরাদের নির্যাতনের শিকার। অন্যায়ের পতন একদিন হয়ই।’

পৌর মেয়র অমিতাভ বোস বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে ফরিদপুর শহরে যে অত্যাচার-অবিচার হয়েছে তার গডফাদার এই বাবর (খন্দকার মোশাররফের ভাই)। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অভিযানে ফরিদপুরে অন্যায় অত্যাচায়ের খলনায়কেরা এখন কারাগারে, এটাই স্বস্তির খবর।’

সঙ্গীরা কারাগারে, দাপুটে মোশাররফ যানই না ফরিদপুরে

সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই মোহতেসাম হোসেন বাবর গ্রেপ্তার হওয়ায় ফরিদপুরে গত ৮ মার্চ বিকেলে আনন্দ মিছিল করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, ‘আমি সাধারণ সম্পাদক হলেও কোনো দিন কোনো দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারিনি। রাজনৈতিকভাবে আমাকে একঘরে করে রেখেছিল তারা।

‘বাবর ২০১৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। তখন থেকেই আমি একঘরে ছিলাম।’

আরও পড়ুন:
মোশাররফের ভাই বাবর কারাগারে, ফরিদপুরে মিষ্টি বিতরণ
সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের ভাই গ্রেপ্তার
হেলেন অফ ফরিদপুর!
‘খালেদার চিকিৎসা নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে সরকার’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Demand for small and medium beef in Chittagong Hut

চট্টগ্রামের হাটে ছোট আর মাঝারি গরুর চাহিদা

চট্টগ্রামের হাটে ছোট আর মাঝারি গরুর চাহিদা

কোরবানির ঈদের আগ মুহূর্তে চট্টগ্রাম নগরীতে জমে উঠেছে পশুর হাট। এবার চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর।

টানা ছয়দিন বৃষ্টির পর বুধবার সকাল থেকে তা কিছুটা কমায় হাটমুখো হয়েছেন ক্রেতারা। তবে এর মাঝেও থেমে থেমে চলা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ভোগাচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের।

কাদা আর গরুর হাটের আবর্জনা মাড়িয়ে হাটগুলোতে চলছে দরদাম। জমে উঠেছে বেচাকেনাও। ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা এবার সবচেয়ে বেশি।

বুধবার বিকালে নগরীর বিবিরহাট গরুর বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, এই হাটে বেশিরভাগ গরু এসেছে উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও গরু নিয়ে হাটে এসেছেন ব্যাপারিরা।

জামালপুর থেকে তিনদিন আগে এই হাটে আসা বিক্রেতা সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২২টা গরু নিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত চাইরটা বেচছি। লোকজন দাম বলে কম।

“দুই লাখ ২০ হাজার টাকা একটা গরুর দাম চাইলাম। কাস্টমাররা ১ লাখ ৪০ হাজার পর্যন্ত বলছে। এই দামে গরু বেচা সম্ভব না। আরেকটু বাড়তি পেলে বিক্রি করতাম।”

তবে পাল্টা অভিযোগ ক্রেতাদের; বলছেন- বিক্রেতারা দাম ছাড়ছে না; ঈদের আগের দুই দিনের বাজার পরিস্থিতি দেখার অপেক্ষায় বিক্রেতারা।

এই হাট থেকে দেড় লাখ টাকায় একটি গরু কিনে ফেরার পথে নগরীর কাপাসগোলা এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বুধবার বলেন, “গরুর দাম গতবারের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে খুব বেশি না।

“বাজারে অনেক গরু আছে। আজকে একটা কিনলাম। কালকে বাজার দেখে আরেকটা কিনব।”

বুধবার নগরীর আতুরার ডিপো থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিবিরহাটে গরু কিনতে আসা আকবর হোসেন বলেন, “একটার সময় হাটে আসছি। ৩ ঘণ্টা ঘুরে বেশ কয়েকটা গরু দেখলাম। বাজারে গরু আছে পর্যাপ্ত। কিন্তু ব্যাপারিরা দাম ছাড়ছে না।

“তারা মনে করছে কাল-পরশু দুইদিন সময় হাতে আছে। আমরাও অপেক্ষা করব। কালকে দেখেশুনে কিনব।”

বুধবার দুপুরে গিয়ে নগরীর সবচেয়ে বড় কোরবানি পশুর হাট সাগরিকা গরুর বাজারেও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বড় আকারের গরু নিয়ে এসেছে ব্যাপারিরা।

সাগরিকা গরুর বাজারে কুষ্টিয়া থেকে ৪৫টি গরু নিয়ে আসা সিরাজুল আলম বলেন, “চারদিন হলো আসছি। আমাদের বেশিরভাগই বড় গরু। বৃষ্টি বেশি থাকায় এতদিন হাটে লোকজন আসেনি।

“কালকে আর আজকে মিলে মাঝারি সাইজের ৫টা গরু বেচছি। বড় গরুর পার্টি আজকে কেবল আসা শুরু করছে। তারা দর দেখতেছে। কালকে থেকে হয়ত কিনবে।”

সাগরিকা গরু বাজারের হাসিল গ্রহণকারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “হাটে প্রচুর গরু আছে। এতদিন আবহাওয়া খারাপ থাকায় লোকজন খুব একটা আসেনি। আজকে আসতেছে। বেচাকেনাও হচ্ছে। শহরের লোকজন কোরবানের ২-৩ দিন আগেই গরু কেনে।

“আমাদের হাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিমও আছে। এখন পর্যন্ত সব ভালোভাবে চলছে।”

বিবিরহাট গরু বাজারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বুধবার বিকালে একটি দলকে টহল দিতে দেখা গেছে। তারা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করেন। হাটের বাইরেও সেনা সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়।

এ হাটে গরুর চিকিৎসা দিতে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর একটি দল কাজ করছে।

এই দলের সদস্য সুব্রমনিয়ম বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দূর-দূরান্ত থেকে গরুগুলো দীর্ঘ সময় ধরে গাড়িতে করে এখানে আনা হয়। পাশাপাশি গত কয়েকদিন টানা বৃষ্টি পড়েছে।

“একারণে কিছু কিছু গরুর শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এরকম গরু চিহ্নিত হলে জ্বরের ওষুধ ও অ্যান্টি হিস্টামিন ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ২০টি গরু নিয়ে গত ২৯ মে বিবিরহাটে এসেছেন আবদুস সামাদ ও তার সঙ্গীরা। সেখানে গরুগুলোর পাশেই খালি জায়গায় নিজেদের জন্য খাবার রান্নার কাজও চলছিল।

আবদুস সামাদ বলেন, “এতদিন বৃষ্টিতে খুব কষ্ট পাইছি। কালকে থেকে বিক্রি শুরু হইছে। আজ পর্যন্ত ১১টা গরু বিক্রি করছি। বাকি গরু আশা করি, কালকের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে।”

হাটের বাইরে গরু সাজানোর গলার মালা বিক্রি বাড়ায় খুশি বিক্রেতা মো. শফিও খুশি বেচাকেনা জমে ওঠায়। দেড়শ থেকে তিনশ টাকার মধ্যে মালা বিক্রি করছেন তিনি।

গরুর সাজসজ্জা সামগ্রী বিক্রেতা মো. শফি বলেন, “গতকাল প্রায় ১০ হাজার টাকার মাল বেচেছি। আজকেও বিক্রি ভালো। বৃষ্টির কারণে সমস্যা হচ্ছে। বৃষ্টি বাড়লে মানুষ হাটে কম আসে।”

বিবিরহাট বাজার লাগোয়া বাইরের গলিতে বিক্রি হচ্ছে ছাগল। সাড়ে ১৯ হাজার টাকায় একটি ছাগল কেনা হাটহাজারী উপজেলার বাসিন্দা মো. কামাল বলেন, “বাড়ি যাবার পথে ছাগল কিনে নিলাম। গরু কিনব গ্রামে খামারির বাড়ি থেকে।”

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা পশুর সংখ্যা মোট ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৬২টি। জেলায় এবার কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি। সে হিসাবে জেলায় এবার ৩৫ হাজার পশুর ঘাটতি আছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নগরীর হাটগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৪০ হাজারের বেশি গরু এসেছে আজকে পর্যন্ত। আরো আসতে পারে। কাজেই এবার গরুর স্বল্পতা হবে না।

“গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম সামান্য বেড়েছে। এটা সহনীয় পর্যায়ে আছে। হাটগুলোতে বিক্রিও শুরু হয়েছে। হাটে আসা গরু-মহিষে তেমন কোনো রোগের প্রার্দুভাব দেখা যায়নি।”

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০২৪ সালে জেলায় কোরবানি হয়েছিল ৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৮টি পশু।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Nine Six for the advanced varieties of grass farming projects at Daulatpur Livestock Department

দৌলতপুরে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে উন্নত জাতের ঘাস চাষ প্রকল্পের অর্থ প্রদানে নয় ছয়

দৌলতপুরে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে উন্নত জাতের ঘাস চাষ প্রকল্পের অর্থ প্রদানে নয় ছয়

কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতালে উন্নত জাতের ঘাস চাষ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় খামারীকে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর ‘‘শীর্ষক” প্রকল্পেরে আওতায় দৌলতপুর উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন থেকে প্রতি ইউনিয়নে ২জন করে নির্বাচিত ২৮ জন খামারীকে উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের ঘাস চাষ প্রর্দশনী প্লট স্থাপন বাবদ জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সরকারি এ বরাদ্দকৃত অর্থ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খামারীদের প্রদান করেন জনপ্রতি ৪৪০০ টাকা। এতে খামারিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের খামারী ময়না খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কত টাকা বরাদ্দ সেটা ঠিক জানিনা, তবে গত বছর ও এবছর ৪৪০০ টাকা করে মোট ৮৮০০ টাকা আমাকে দিয়েছে।

মরিচা ইউনিয়নের মাজদিয়াড় গ্রামের খামারী জোয়াদুর রহমানসহ একাধিক খামারীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের বরাদ্দ ৫০০০ টাকা থাকলেও বিভিন্ন খাত দেখিয়ে গত বছর ও এবছর ৪৪০০ টাকা করে ৮৮০০ টাকা সকলকে দিয়েছে। কেন কম দিলো সেটা আমরা জানিনা।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কমিউনিটি এক্সট্রেনশন এজেন্ট শাহারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানিনা স্যার যা বলেছে আমি তাই করেছি, আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ মাহমুদুল ইসলাম খামারীদের প্রাপ্য অর্থ কম দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অডিট ও মাঠ পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য টাকা কম দেয়া হয়েছে। এসকল খরচ তো আমি পকেট থেকে দেবনা। তাই খামারীদের ৬০০ টাকা করে কম দেয়া হয়েছে। আপনি অফিসে আসেন কথা বলি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Surma Kushiyara at 5 points of water is above the danger line

সুরমা-কুশিয়ারার ৪ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপরে

নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যার শঙ্কা
সুরমা-কুশিয়ারার ৪ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপরে

ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে আসা উজানি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। এতে করে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে নতুন করে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নদী দুটির চারটি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্ট এবং কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বইছে ১৩ দশমিক ৬২ মিটার উচ্চতায়। যেখানে বিপৎসীমা হচ্ছে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার। অমলশিদে কুশিয়ারা নদীর পানি বইছে ১৭ দশমিক ২৫ মিটার উচ্চতায়, যেখানে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। শেওলায় কুশিয়ারা নদীর পানি ১৩ দশমিক ৫১ মিটার উচ্চতায় বইছে, যেখানে বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৪৬ মিটার ওপরে রয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বইছে ৯ দশমিক ৭৯ মিটার উচ্চতায় যা বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৩৪ মিটার বেশি।

পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত পানি এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নদনদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে উজানের ঢলের প্রভাব বেশি পড়ছে সীমান্তবর্তী পয়েন্টগুলোতে।

এদিকে, জেলার ধলাই নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হলো—সারি, ডাউকি ও সারি-গোয়াইন নদ-নদীর পানি কমতির দিকে আছে।

জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও ভারতের দিক থেকে হঠাৎ করে ঢল নামায় কুশিয়ারা নদীর পানি খুব দ্রুত বাড়ছে। নদীর পাড়ঘেঁষে অনেক ঘরবাড়ি আছে, এখনই পানি না নামলে কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাবিত হওয়ার ভয় আছে। আগে থেকে যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে। নিচু এলাকা ও প্লাবনপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। প্রত্যন্ত ও প্লাবনপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ
The Sundarbans will be surrounded by nets to prevent tigers in the locality

লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা, রুখতে জাল দিয়ে ঘেরা হবে সুন্দরবন

লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা, রুখতে জাল দিয়ে ঘেরা হবে সুন্দরবন

সুন্দরবন বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকায় প্রায়ই বাঘ চলে আসে। সম্প্রতি এই ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। তাই লোকালয়ে বাঘের প্রবেশ রুখতে বাঘ প্রকল্পের বিস্তীর্ণ অংশ ঘেরা রয়েছে জালের বেড়া দিয়ে। তবে বহু অংশে জাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রয়েছে। আবার বেশ কিছু জায়গায় এখনও দেওয়া হয়নি জালের বেড়া। এবার বন্যপ্রাণী বিশেষ করে বাঘের প্রবেশ থেকে বাসিন্দাদের সুরক্ষিত করতে পুরনো নেট পরিবর্তন করে নতুন নেট লাগানো হবে। একইসঙ্গে, এখনও পর্যন্ত যেসব এলাকা অরক্ষিত রয়েছে সেগুলি প্রথমবার জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে।

বাঘ প্রকল্পের দুটি রেঞ্জে ১০০ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে জালের বেড়া রয়েছে। এই পুরো এলাকা জুড়ে নতুন জাল লাগানোর বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন আধিকারিকরা। জুলাইয়ের শেষ থেকে তাঁরা এই কাজ করতে চাইছেন। সে বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন আধিকারিকরা। এই অবস্থায় কথাটা যার প্রয়োজন? কত খরচ পড়বে? তার হিসেবে চলছে বলে জানা গিয়েছে। সেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বন বিভাগের কাছে প্রস্তাব দেবেন আধিকারিকরা। এবিষয়ে বাঘ প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন জানিয়েছেন, এ নিয়ে এখনও পরিকল্পনা চলছে। জুলাইয়ের শেষ থেকে এই কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে আধিকারিকরা জানাচ্ছেন। প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে সুন্দরবনে। যার ফলে বিভিন্ন অংশে জাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। আর সেই সুযোগে বার বার লোকালয়ে এসে পড়ে বাঘ। তাছাড়া, বহুদিন ধরে নতুন জল লাগানো হয়নি। অনেক জায়গায় জলের বেড়া নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এসব কারণেই নতুন জাল লাগাতে উদ্যোগী হয়েছেন বা প্রকল্পের আধিকারিকরা।

উল্লেখ্য, বিশেষ করে গত বছর সুন্দরবন লাগোয়া গ্রামগুলিতে বাঘের আনাগোনা বেড়েছিল। এইসবের কারণে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। সে কথা মাথায় রেখেই ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় কোনও বনাঞ্চল রাখতে চাইছেন না আধিকারিকরা। তাই বাসিন্দাদের সুরক্ষায় যাতে কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত জালের বেড়ার সুযোগে বাঘ লোকালয়ে প্রবেশ না করতে পারে তারজন্য নতুন জল টাঙানোর জন্য তৎপরতা শুরু করেছেন বাঘ প্রকল্পের আধিকারিকরা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In front of the sacrifice is a cattle hut 

কুরবানি সামনে রেখে পাথরঘাটায় জমে উঠেছে গবাদি পশুর হাট 

কুরবানি সামনে রেখে পাথরঘাটায় জমে উঠেছে গবাদি পশুর হাট 

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা।আসন্ন কুরবানীকে কেন্দ্র করে পাথরঘাটায় জমে উঠেছে গবাদি পশুর হাট।গত কয়েকদিন থেকে থেমে থেমে ঝিরিঝিরি ও মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে পাথরঘাটায়। এমন প্রতিকূলতার মধ্যেও পাথরঘাটার সব থেকে বড় গরুর হাট নাচনাপাড়া মানিকখালী বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোরবানিকে সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে গরু।আজ সোমবার(২জুন) সকাল থেকে শুরু করে দুপুর তিনটা পর্যন্ত ছোট-বড়-মাঝারি আকারের গরু, কয়েক বছর লালন পালনের পর বিক্রির জন্য হাটে তুলেছেন খামারিরা। এদিন সরবরাহ বেশি থাকায় মূল হাটের আশেপাশেও গরু বিক্রির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন ক্রেতারা।

হাটে ক্রেতা আনাগোনা থাকলেও বিক্রি ছিল কিছুটা কম। অধিকাংশই দেখেছেন, যাচাই করছেন দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ছোট আকারের দুই থেকে চার মন ওজনের গরু, বিক্রি হয়েছে ষাট হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে। মাঝারি আকারের তিন থেকে পাঁচ মন ওজনের গরুর দাম, ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে। বিশাল আকারের গরু এই বাজারে তেমন ছিল না।

নাচনাপাড়া ইউনিয়নের জ্ঞানপাড়া গ্রামের রুস্তম আলী জানান, বাজারে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার গরুর চাহিদা বেশি। যারা ছোট গরু বাজারে এনেছেন তারা কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন। বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় বিক্রিও কম। খুব বেশী লাভ হচ্ছে না।

নাচনাপাড়া ইউনিয়নের খামারি ফারুক "প্রতিদিনের সংবাদকে" বলেন, পশু পালনে খরচ বেড়েছ। কিন্তু সে তুলনায় মিলছে না দাম। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, গত বছর ২ হাজার টাকায় যে খড় পাওয়া যেত এবছর তার দাম ৩ হাজার টাকা। ভূষি, খুদ, কুড়ার দামও প্রায় আগের তুলনায় ৫০ ভাগ বেড়েছে। খরচ বাড়লেও গরুর দাম আগের মতোই।

ক্রেতাদের ভাষ্য, বৈরি আবহাওয়ার জন্য ক্রেতা কম। এছাড়াও বিগত বছরগুলোতে যারা বড় বড় গরু কিনতেন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারনে তাদের বেশিরভাগ পলাতক। ফলে বাজারে গরু বেচাকেনা কম। সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ। এ কারণে বড় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা।

রাসেল নামের এক ব্যাপারী "প্রতিদিনের সংবাদকে" বলেন, যারা পলাতক তারা অনেক টাকার মালিক ছিল। অনেকগুলো কোরবানি দিত। বড় থেকে শুরু করে পাতি নেতারাও গরু কিনত। সেই অংশটা বাজারে না আসায় চাঙ্গা ভাবটা নেয়।

জ্ঞানপাড়া গ্রামের নসির মীর গরু কিনতে এসে বলেন, আমি একটি গরু আগেই কিনেছি এখন, ঘুরে ঘুরে গরু দেখছি। বাজেট আর পছন্দ মতো হলে আরও একটা কিনব।তিনি আরো বলেন, কোনো হাটেই জমজমাট বেচাকেনা হচ্ছে না। বড় গরুর বিক্রি নেই বললেই চলে। বড় গরুর খামারিদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

ইজারাদার হাবিবুর রহমান "প্রতিদিনের সংবাদ"কে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর হাটে গরু বেচা কেনা খুবই কম। আগে এমন সময় হাটে প্রায় ১০০ গরু বিক্রি হতো আর এ বছর ৫০ টা ও বিক্রি হচ্ছে না। তবে শেষ দিকে গরু বিক্রি বাড়বে বলে প্রত্যাশা এই ইজারাদারের।তিনি ক্রেতা- বিক্রেতাদের উদ্দেশ্য আরো বলেন, হাটে পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন তারা।

বাংলাদেশ
Hafiz Ibrahims financial assistance to the victims under the influence of low pressure in Borhanuddin

বোরহানউদ্দিনে নিম্নচাপের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের হাফিজ ইব্রাহিমের আর্থিক সহায়তা

বোরহানউদ্দিনে নিম্নচাপের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের হাফিজ ইব্রাহিমের আর্থিক সহায়তা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ টবগী ও হাসাননগরের পানিবন্দী পরিবারকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাফরুজা সুলতানার দিক-নির্দেশনায় শুক্রবার ( ৩০ মে ) বিকেল ৪ টায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে হাসাননগরের পুরান হাকিমুদ্দিন বাজার ও টবগী ৪নং ওয়ার্ডে পানিবন্দী এলাকা ও ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন ও যুগ্ন আহ্বায়ক শহীদুল আলম নাসিম কাজী।

এসময় তারা টবগী ও হাসাননগর ইউনিয়নে নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ একশত পরিবারের মাঝে হাফিজ ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন ও যুগ্ন আহ্বায়ক কাজী মো: শহীদুল আলম নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে বোরহানউদ্দিনের মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় নদী তীরবর্তী শতাধিক বাড়িঘর ডুবে যায়। এছাড়া হাকিমুদ্দিন থেকে কাজীরহাটে যে বেড়িবাঁধ রয়েছে সে বেড়িবাঁধের দুটি জায়গায় ছিদ্র হয়ে পড়ায় লোকালয়ে পানি ডুকে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্কেকের সৃষ্টি হয়। পরে আমাদের টবগী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার, টবগী ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হাওলাদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম শেজোয়াল সহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করে দুটি পয়েন্টে মাটি দিয়ে ভরাট করে। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে একশত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে হাফিজ ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আরো সহায়তা করা হবে। তারা বলেন, অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে এই বেড়িবাধটি পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন না করলে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগে বোরহানউদ্দিন উপজেলা হুমকির মুখে পড়বে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমাদের আহ্বান এই বেড়িবাঁধটি অতিদ্রুত পুনঃসংস্কার করা হোক।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আলমগীর মাতাব্বর, হাসাননগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল হাওলাদার, টবগী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির পাটোয়ারী, সমাজ সেবক সোহেল হাওলাদার, টবগী ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হাওলাদার, হাসাননগর যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক হান্নান সর্দার, টবগী যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম শেফজল, পৌর যুবদল যুগ্ন আহ্বায়ক সুমন পঞ্চায়েত, বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক তানজিল হাওলাদার, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন টিপু প্রমূখ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The low pressure has crossed the coast

নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করেছে

নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করেছে ছবি: সংগৃহীত

সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিম্নচাপটি বর্তমানে সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১ থেকে ৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে আজ সন্ধ্যা ৭ টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলাসমূহের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসাথে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।

এছাড়া অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর সমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, পাবনা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দর সমূহকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

মন্তব্য

p
উপরে