সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাট। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তোড়ে কপোতাক্ষ নদের ভাঙন প্রবল হলে ঘাটটি আরও পূর্বে সরাতে হয়। আর পূর্বদিকের দুটি গ্রাম বন্যতলা ও শ্রীপুর দেড় বছরেরও বেশি সময় নোনা পানিতে ডুবে ছিল।
গ্রাম দুটিতে জোয়ার-ভাটার পানি উঠত-নামত। এখন পানি নেই, শূন্য ভিটে। এখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে আছে ন্যাড়া সব গাছপালা। প্রকৃতির প্রতিকূলতায় এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন এখানকার প্রায় অর্ধেক মানুষ। বসবাসের আশায় কেউ কেউ আবারও ঘর ঠিক করছেন। কেউ কেউ খবর নিচ্ছেন, আদৌ এখানে আর বসবাস করা যাবে কি না!
কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাটের অদূরে নতুন তৈরি উঁচু ও চওড়া বাঁধের ওপরে উঠতেই এক ব্যক্তি প্রায় চিৎকার করে বলেন, ‘ওই ছবি তুলে কী হবে? এদিকে আসেন, বাঁধের ফাটল দেখেন। তার ছবি তোলেন।’
ওই ব্যক্তির নাম আবুল হাসান। মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়ে এমন বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার নিয়ে অনিশ্চয়তাটা ক্ষোভের আকারে উগরে দেন তিনি। বলেন, ‘দেখুন তো লঞ্চঘাট আর পন্টুনের বেশ আগেই বাঁধ দেয়ার কাজ শেষ করে দেয়া হয়েছে। ওপাশে আর বাঁধ হবে না। পন্টুনের কাছেই বাঁধে ফাটল। এখান থেকে দক্ষিণমুখো এই বাঁধ দেয়ার কোনো উদ্যোগ নেই। জোয়ার এলে বাঁধ উপচে আবারও এই দুই গ্রাম ডুববে। এ অবস্থায় যারা চলে গেছেন, তারা ফেরার সাহস পাচ্ছেন না। আমাদেরও হয়তো একদিন চলে যেতে হবে।’
কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাটটি কপোতাক্ষ নদের পূর্ব পাড়ে। নদের এই অংশ ভাঙনপ্রবণ। বহু আগে থেকেই ভাঙছে। তবে বিপদ বেড়েছে সাম্প্রতিক সময়ের ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে। বিশেষত ২০০৯ সালের আইলা, ২০২০ সালের আম্ফান, ২০২১ সালের ইয়াশ এবং পূর্ণিমার গোণে (পূর্নিমার আগে-পরের সময়) অতি জোয়ারে সৃষ্ট প্লাবনে বাঁধ ভাঙে। কোথাও বাঁধ উপচে পানি চলে আসে ভেতরে।
আম্ফান-পরবর্তী দেড় বছরেরও বেশি সময় এলাকাটি ডুবে ছিল। শ্রীপুর ও বন্যতলা গ্রাম দুটির বাসিন্দারা বাধ্য হন এলাকা ছেড়ে যেতে। অবশ্য শ্রীপুর গ্রামটি নামমাত্র এপারে টিকে আছে। গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ওপারে (পূর্বপাড়ে কয়রা উপজেলার দশহালিয়া) ভূমি জেগে উঠেছে। এখন কিছু মানুষ গ্রামে ফিরেছেন। তবে অনেকেই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তায় আর ফেরেননি।
এলাকাবাসী জানান, যারা বাইরে চাকরি করেন তারা পরিবার নিয়ে কর্মস্থলে চলে গেছেন। এর বাইরে যাদের শুধু ভিটেমাটি বা সামান্য জমি ছিল, তারাও আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিতজনের সূত্র ধরে নড়াইল, বরিশাল, নেত্রকোণা, রাঙামাটি প্রভৃতি জায়গায় চলে গেছেন।
পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ভিটেমাটি জেগে উঠেছে। এ অবস্থায় অনেক পরিবার ফিরে এসে ঘরবাড়ি ঠিকঠাক করছে। তবে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের অধিকাংশই কর্মস্থল বিশেষত বরিশাল অঞ্চলে ফিরে গেছেন। মাসে দু-এক দিনের জন্য বাড়ি আসেন তারা।
বন্যতলা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম একজন শ্রমিক সরদার। তিনি ইটভাটায় শ্রমিক সরবরাহ করেন। ভাটায় কাজ করতে ইচ্ছুকদের তিনি তার পরিচিত ভাটায় নিয়ে যান। সাধারণভাবে ছয় মাসের জন্য তাদের চুক্তিবদ্ধ করা হয়। শ্রমিক সরবরাহের জন্য তিনি দশ শতাংশ হারে টাকা পান। তিনি বাড়িতে এসেছেন, কারণ খোলপেটুয়ার পশ্চিম পাড়ে বন্যতলা গ্রামে বাঁধের কাজ হবে। এ কারণে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিতে বলা হয়েছে।
সিরাজুল ইসলামের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাঁধ দিচ্ছে। এ জন্য তাদের ঘর সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো ক্ষতিপূরণ দেবে না। তিনি বলেন, ‘বাঁধের বাইরে আমাদের জমি পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই একদিন তাও নদীগর্ভে চলে যাবে। ওই জমিরও কোনো ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না।’
ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রকৃতির বিরূপতায় মরি, আবার মানুষের চাতুরিতেও মরি। আম্ফানে বাঁধ ভেঙে গেলে আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করি। ওই বাঁধটি আরও শক্ত করে ভালোভাবে মেরামত করলে টিকে যেত। কিন্তু তা না করে এখন নতুন করে অনেক টাকার বাজেটে বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে। এতে আমরা আগে যে কাজ করলাম তার যেমন টাকা পেলাম না, তেমনি এখনকার বাঁধ তৈরিকালে আমাদের বাড়ি-জমিরও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছি না।’
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এলাকার অনেক মানুষ চলে গেছে। আমাদেরও একদিন চলে যেতে হবে।’
বন্যতলা, শ্রীপুর, কুড়িকাহনিয়া গ্রামের অবস্থান প্রাকৃতিকভাবেই বিচিত্র। বন্যতলার পশ্চিমপাশে খোলপেটুয়া নদী। এটি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের একেবারে সীমান্তবর্তী গ্রাম। এর সামান্য পুবে কপোতাক্ষ নদ। কুড়িকাহনিয়া ওই কপোতাক্ষ নদের পশ্চিম পাড়ে। এই জনপদটি আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের শেষ বসতি।
দুই নদীর স্বাভাবিক চাপ, চিংড়ি চাষের কারণে যথেচ্ছ নদী-বাঁধ কেটে পানি তোলার ত্রিশ বছরেরও বেশি দিনের অভ্যাস, সাম্প্রতিককালের ঘূর্ণিঝড় ও অতি জোয়ারে দুই গ্রামের বিশাল অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে।
খোলপেটুয়া নদী বন্যতলার পশ্চিমে অনেকটা প্রশস্ত হয়ে গেছে। আর পুবে খুলনার কয়রা উপজেলার দশহালিয়ায় কপোতাক্ষে বিশাল চর জেগে উঠেছে। বলতে গেলে শ্রীপুর গ্রামের প্রায় পুরোটাই পুব পাড়ে জেগে উঠেছে। কিন্তু সেই জমিতে দখল প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি গ্রামের বাসিন্দারা।
শ্রীপুর গ্রামের মোবারক গাজী নতুন বাঁধের পাশে একটি ছোট্ট মুদি দোকান চালান। জানালেন, তার বাড়িটি তিনবার সরিয়েছেন। এই দোকানটিও দুবার সরিয়েছেন। আবারও যদি ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে নদীভাঙন তীব্র হয়, এই দোকানও যদি চলে যায়, তবে অন্য অনেকের মতো তাকেও দেশান্তরী হতে হবে।
কত মানুষ এলাকা ছেড়ে গেছে তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারেন না। তবে কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাটের পাশেই বসবাসকারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এই ৩ নম্বর ওয়ার্ডে (প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের একটি) ৩৬০০ ভোটার ছিল। কয়েক দিন আগে নির্বাচনের সময় দেখা গেল এক হাজার ভোটারও নেই। তাতে বোঝা যায় অন্যরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।’
পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদুল ইসলামের কাছে এলাকাবাসীর বাস্তুচ্যুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি কিছুদিন আগে নির্বাচিত হয়েছি। এখনও শপথ নিইনি। তবে এলাকার মানুষ হিসেবে জানি, আম্ফানের পর থেকে বন্যতলা ডুবে ছিল দেড় বছরেরও বেশি সময়। বন্যতলা গ্রামে ১৩০টি পরিবার বসবাস করত। পরিবারগুলোর অধিকাংশ বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। তবে কতসংখ্যক মানুষ চলে গেছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। আর যারা আছে তাদেরকেও প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে।’
পাউবো সাতক্ষীরার (পওর-২) নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, ‘ওই এলাকার বেড়িবাঁধ পাউবোর ৭/২ নম্বর পোল্ডারের আওতায়। সেখানে বেড়িবাঁধটি এখন মোটামুটি ভালো আছে। কয়েক দিন আগে একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিলে মেরামতের নির্দেশ দিয়েছিলাম। এখনও কাজ চলছে। আরও কয়েকটি স্থানে বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেসব স্থানে মেরামত করা হবে।’
আরও পড়ুন:
নওগাঁর ধামইরহাটে রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল নামে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও তিনি আসলে তা নন, প্রতারণার স্বার্থে ভুয়া পরিচয় ধারণ করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার রুপনারায়নপুর গ্রাম থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২৫ বছর বয়সী রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ম্যানুয়েল তপন জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তিনি (পিয়াল) তার কাছ থেকে ২৯ হাজার ৫৩৮ টাকা গ্রহণ করেন এবং আরও টাকা দাবি করলে স্থানীয় জনতা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেয়া হয়। পরে থানা পুলিশ গিয়ে প্রতারক পিয়ালকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
তপন বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরে আমার মতো এলাকার অন্য লোকজনের কাছেও বিভিন্ন ফন্দি এঁটে প্রতারণা করে আসছে এই প্রতারক।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামইরহাট থানার ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। ইতোমধ্যে একজনের কাছে থেকে ২৯ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাও নিতেন তিনি।
‘এদিনও প্রতারণা করতে গেলে জনগণ তাকে আটক করে রাখে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মো. সুলতান নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিক এই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১৬ নম্বর ক্লাস্টার থেকে পুলিশ সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা ছিলেন।
ভাসানচর থানার ওসি কাওসার আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারে বসবাস করতেন। ১১৬ নম্বর ক্লাস্টারের খালি জায়গায় তিনি সবজি চাষ করতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে তার ছেলে ওই ক্লাস্টারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাবার গলা কাটা মরতেজ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় অন্য ক্লাস্টারের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি কাওসার আহমেদ জানান, পেছনের দিক থেকে গলা কেটে এই রোহিঙ্গা নাগরিককে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে অপর প্রার্থী মো. লুৎফুল হাবিবকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বৃহস্পাতবার অভিযুক্তকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ৮ মে অনুষ্ঠেয় নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ঘটনায় আপনি লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বর্ণিত বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এছাড়া সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচিত্র বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও পত্রিকান্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এরূপ ঘটনার জন্য কেন আপনার প্রার্থিতা বাতিল অথবা আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে লিখিত জবাবসহ নির্বাচন কমিশনে ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর নাটোর জেলা নির্বাচন অফিসে গেলে দেলোয়ার হোসেনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আহত অবস্থায় তাকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী প্রার্থীর পরিবার এ ঘটনার জন্য আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। দেলোয়ার হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে লুৎফুল হাবীব ছিলেন একক প্রার্থী।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে টিউবওয়েল বসানোর জন্য স্থাপন করা পাইপে পানির পরিবর্তে উঠে আসছে এক ধরনের তরল। অনেকটা ডিজেলের মতো গন্ধযুক্ত এই তরল নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল।
উপজেলার ভোলামোড় এলাকায় এক বাড়িতে ঘটেছে এই ঘটনা। বাড়ির মালিক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘পানীয় জলের জন্য তিন বছর আগে এখানে মোটর বসানো হয়। এটি উপজেলা পরিষদ থেকেই বসানো হয়েছিল। কয়েক মাস থেকে মোটরটি দিয়ে পানি উঠছে না। কারণ জানার জন্য বুধবার সকালে মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়।
‘মিস্ত্রি কাজ করার সময় মোটরের সঙ্গে যুক্ত পাইপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানির পরিবর্তে তেলের মতো এক ধরনের তরল উঠে আসে। তা দেখে মনে হয়েছে ডিজেলের মতো। বিষয়টি আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, যাতে তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী মনিরুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে ঘটনাটি দেখার পর তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে তিনি কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করলে তাতে আগুন ধরে যায়। তার প্রশ্ন- পানি হলে তো ভেজা কাগজে আগুন ধরতো না। তাহলে এই তরল কি খনিজ তেল?
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার জানান, তিনিও বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর করবেন বলে জানান তিনি।
গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
মন্তব্য