করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর প্রাক-প্রাথমিক ও মাধ্যমিকপর্যায়ে পুরোদমে ক্লাস শুরুর প্রথম দিনেই তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে আছে রাজধানী ঢাকা।
সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাসে ফেরার আনন্দে মঙ্গলবার ভোর থেকে অভিভাবকদের হাত ধরে সড়কে সরব উপস্থিতি দেখা গেছে স্কুলমুখী খুদে শিক্ষার্থীদের। মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরাও ছিলেন স্কুলমুখো।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অফিস ধরতে কর্মমুখী মানুষের ভিড়ও বেড়েছে সড়কে। আর তাতেই শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ যানজট।
চৈত্র মাস শুরু হওয়ায় সূর্যের তাপও বেড়েছে। ‘দ্য ওয়েদার চ্যানেল’ বলছে, ঢাকায় আজকের তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যার ৩৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। কিন্তু মানুষের শরীরে তা অনুভূত হচ্ছে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অসহনীয় যানজটের সঙ্গে তীব্রভাবে নাকাল হতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
তীব্র যানজটের ছবিটি ধানমন্ডি-২৭ নম্বর এলাকা থেকে তুলেছেন পিয়াস বিশ্বাস।
ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিউজবাংলা প্রতিবেদকের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী ঢাকা শহরের বেশির ভাগ সড়কই স্থবির হয়ে আছে। যান চলছে শম্বুকগতিতে।
প্রগতি সরণির মধ্য বাড্ডা এলাকায় দুপুর থেকে যানবাহনের স্বাভাবিকের চেয়ে ধীরগতি দেখা গেলেও গুলশান লিংক রোডে ছিল তীব্র যানজট।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিবাসী ইয়াফেস আকবর জানান, ‘যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে থেকে মধ্য বাড্ডা পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে ঘণ্টারও বেশি।’
মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ ঘিরে যানজটের আখড়া হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে মিরপুর। সেদিকেও সকাল থেকে অসহনীয় যানজটের খবর পাওয়া গেছে।
মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পৌঁছাতে মৌসুমী ইসলামের সময় লেগেছে দুই ঘণ্টারও বেশি।
তীব্র যানজটের ছবিটি ফার্মগেট এলাকা থেকে তুলেছেন পিয়াস বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় বের হয়ে দেখি বাসগুলো লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে, চাকা ঘুরছে না। বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিতে হলো। অটোরিকশায় এ রাস্তা ও রাস্তা ঘুরেও দুই ঘণ্টার বেশি লাগল পৌঁছাতে।’
মগবাজার থেকে বাংলামোটরমুখী সড়কে চলছে মেরামতের কাজ। আবার ওই অঞ্চলে রয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে গরমে যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মগবাজারের বাসিন্দারা।
গুলিস্তান থেকে পুরান ঢাকার দিকে যেতেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন ওই রুটের নিয়মিত যাত্রীরা।
ইমেল আহমেদ জানান, ‘পুরান ঢাকায় এ দৃশ্য তো আর নতুন কিছু না। তবে আজকে আরও বেশি সময় লাগছে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এলাকা নিউমার্কেট, ধানমন্ডির চিত্রও একই রকম। খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে গাড়ি।
রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) রেফাতুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে স্কুল খোলার কারণে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। এর বাইরে আর কোনো কারণ নেই। কোনো ভিভিআইপি মুভমেন্ট নেই, কোনো দুর্ঘটনা নেই, কোনো বিক্ষোভ, মিছিল নেই। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’
তীব্র যানজটের ছবিটি মগবাজার এলাকা থেকে তুলেছেন সাইফুল ইসলাম।
তবে এই কর্মকর্তা মনে করেন, এ চিত্র ঢাকা শহরের জন্য নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ দুই বছর পর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফেরার কারণে অনেকেই ভুলে গেছেন ঢাকার সেই যানজটের কথা।
তিনি বলেন, ‘ভিকারুননিসার ছুটি হলে যানজট থাকত নাবিস্কো পর্যন্ত। আজকে তো মাত্র ফ্লাইওভার পর্যন্ত। এক কথায় বলতে গেলে, গত দুই বছরে আমরা আসলে ভুলে গেছি তীব্র যানজটের কথা।’
বিএফ শাহীন স্কুলের সামনে গাড়ির জট
মঙ্গলবার থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হলে সকাল থেকেই স্কুলমুখী রাজধানীর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিএফ শাহীন স্কুলে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিতে ব্যক্তিগত গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলটির সামনের মূল সড়কে কয়েক লেনে পার্ক করা হয়েছে অভিভাবকদের ব্যক্তিগত গাড়ি।
এ জন্য জাহাঙ্গীরগেট থেকে মহাখালী রাওয়া কনভেনশন হলের সামনে এবং মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে যানজটে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে এই সড়কে তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা। এর প্রভাবে বিজয় সরণি, চন্দ্রিমা উদ্যান, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর এলাকার মূল সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী ও সাধারণ মানুষরা। এদিকে এই সংকট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা কাজ করে গেলেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৭টা থেকে এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়৷
গুলশান অফিসে যেতে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে সকাল ৭টার দিকে রওনা হন আরিফুল সাজ্জাদ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাসে করে খুব অল্প সময়ে মোহাম্মদপুর থেকে জাহাঙ্গীরগেট চলে আসি। কিন্তু জাহাঙ্গীরগেট সিগন্যালে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। প্রথমে ভেবেছিলাম কোনো ভিআইপি মুভমেন্ট হবে, তাই এত বড় সিগন্যাল৷ কিন্তু সিগন্যাল পার হয়েই দেখা গেল শাহীন স্কুলের সামনে ভয়াবহ জ্যাম। এখানেই প্রায় ৪০ মিনিট বসে থেকে বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করি। যাবার পথে দেখলাম শত শত প্রাইভেট কার স্কুলের সামনে তিনটি লেনে দাঁড় করানো। পরে বুঝলাম স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের গাড়ি এগুলো। এই গাড়িগুলো পার্ক করে রাখার কারণে কোনো গাড়ি সামনে যেতে পারছে না।’
আব্দুল্লাহ আল হাফিজ নামের আরেকজন অফিসগামী যাত্রী বলেন, বিএএফ শাহীন স্কুলটা ইমিডিয়েটলি অন্য কোথাও শিফট করা উচিত। সড়কের পাশে স্টুডেন্টদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য প্রতিদিন অফিসে যেতে দেরি হয়।’
জাহিদুল ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘পুরো ১ ঘণ্টায় শাহীন স্কুলের গেট পার হলাম। মেইন রোডে এভাবে শত শত গাড়ি পার্ক করা থাকলে কিভাবে হবে?’
শাহীন স্কুলের সামনে এমন অচলাবস্থার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কে। সকাল থেকেই থেমে আছে বিজয় সরণির মতো ব্যস্ততম সড়ক। এর প্রভাবে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজারসহ সব সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার শাহেদ আল মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাহীন স্কুলের সামনে কয়েক লেনে শত শত প্রাইভেট কার পার্ক করা ছিল সকাল থেকেই। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ও তাদের অভিভাবকরা এসেছেন। আমরা সকাল থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছি। গাড়িচালক ও অভিভাবকদের বুঝিয়ে আমার গাড়িগুলো সরিয়ে দিচ্ছি। এখানে সমস্যা হলো, আমরা চাইলেও কঠোর হতে পারছি না। কারণ এখানে অধিকাংশই সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গাড়ি আছে। তাই তাদের বুঝিয়ে রিকয়েস্ট করে গাড়িগুলো সরিয়ে নিতে আমরা অনুরোধ করছি। এ জন্য সময় লাগছে।’
তবে এই অবস্থা যেন সৃষ্টি না হয় সে জন্য আগে থেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল বলেও জানান ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘শাহীন স্কুলের সামনের এই সমস্যা কিন্তু নতুন কিছু নয়। আজকে স্কুল খুলবে সেটা মাথায় রেখে আমরা চার দিন আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করেছিলাম। আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম, তারা যেন তাদের লোক দিয়ে মনিটর করান, যেন কোনো গাড়ি রাস্তায় পার্ক না করে। পার্কিংয়ের প্রয়োজন হলে তারা যেন স্কুলের ভেতরে এর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তারা এটি করেননি। এখন সকাল থেকে আমরা ট্রাফিক পুলিশরা যতটা পারছি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।’
এদিকে রাজধানীর যেসব এলাকায় স্কুল-কলেজ রয়েছে প্রায় সব জায়গাতেই একই চিত্র দেখা গেছে। রমনা-মতিঝিল-খিলগাঁও-বনশ্রী-আজিমপুরসহ অন্যান্য প্রধান সড়কেও বাড়তি যানজট দেখা গেছে মঙ্গলবার সকাল থেকেই।
আরও পড়ুন:আজ সোমবার, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস। আজ সকালে ঢাকার আকাশে উঁকি দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমে রোদ উঠতেই ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, এই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘ভালো’, দূষণ-মান ছিল ৫০। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৭৪তম স্থানে নেমে গিয়েছিল ঢাকা। তবে আজ আবার তালিকার ২৬তম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
এদিকে, গতকালের তুলনায় পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গেছে। ৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার ১২ তম স্থানে রয়েছে লাহোর। তবে ভারতের দিল্লির বায়ুদূষণ আজও অব্যাহত রয়েছে। ১২৩ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
একই সময়ে ১৬৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ এবং ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
আইসিডিডিআরবি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে থাকা বস্তির শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, এসব শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরের এই মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রামের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, সিসা পোড়ানো, গলানো বা রিসাইক্লিংয়ের (পুনঃচক্র) মতো কাজগুলো যেখানে হয়, সেসব এলাকার শিশুদের মধ্যে সিসায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
উদাহরণ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণায় চিহ্নিত সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা ছিল পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩% বেশি। সিসার অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ঘরের ভেতর ধূমপান, দূষিত ধূলিকণা, সিসাযুক্ত প্রসাধনসামগ্রী ও রান্নার পাত্র।
এই আলোচনা সভা থেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি বানানো বা রিসাইক্লিং করার কারখানা বা স্থান, অথবা যেসব কারখানা বা স্থাপনায় সিসা গলানো বা পোড়ানো হয়, এমন সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিলে বা দূষণ কমানোর ব্যবস্থা নিলে সেসব এলাকার শিশুদের সিসা দূষণ থেকে বাঁচানো সম্ভব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ট্রেইনি ডা. সানজিদা তাপসি আদিবা। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সারাহ স্যালওয়ে।
মন্তব্য