করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর প্রাক-প্রাথমিক ও মাধ্যমিকপর্যায়ে পুরোদমে ক্লাস শুরুর প্রথম দিনেই তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে আছে রাজধানী ঢাকা।
সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাসে ফেরার আনন্দে মঙ্গলবার ভোর থেকে অভিভাবকদের হাত ধরে সড়কে সরব উপস্থিতি দেখা গেছে স্কুলমুখী খুদে শিক্ষার্থীদের। মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরাও ছিলেন স্কুলমুখো।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অফিস ধরতে কর্মমুখী মানুষের ভিড়ও বেড়েছে সড়কে। আর তাতেই শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ যানজট।
চৈত্র মাস শুরু হওয়ায় সূর্যের তাপও বেড়েছে। ‘দ্য ওয়েদার চ্যানেল’ বলছে, ঢাকায় আজকের তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যার ৩৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। কিন্তু মানুষের শরীরে তা অনুভূত হচ্ছে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অসহনীয় যানজটের সঙ্গে তীব্রভাবে নাকাল হতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিউজবাংলা প্রতিবেদকের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী ঢাকা শহরের বেশির ভাগ সড়কই স্থবির হয়ে আছে। যান চলছে শম্বুকগতিতে।
প্রগতি সরণির মধ্য বাড্ডা এলাকায় দুপুর থেকে যানবাহনের স্বাভাবিকের চেয়ে ধীরগতি দেখা গেলেও গুলশান লিংক রোডে ছিল তীব্র যানজট।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নিবাসী ইয়াফেস আকবর জানান, ‘যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে থেকে মধ্য বাড্ডা পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে ঘণ্টারও বেশি।’
মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ ঘিরে যানজটের আখড়া হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে মিরপুর। সেদিকেও সকাল থেকে অসহনীয় যানজটের খবর পাওয়া গেছে।
মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পৌঁছাতে মৌসুমী ইসলামের সময় লেগেছে দুই ঘণ্টারও বেশি।
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় বের হয়ে দেখি বাসগুলো লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে, চাকা ঘুরছে না। বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিতে হলো। অটোরিকশায় এ রাস্তা ও রাস্তা ঘুরেও দুই ঘণ্টার বেশি লাগল পৌঁছাতে।’
মগবাজার থেকে বাংলামোটরমুখী সড়কে চলছে মেরামতের কাজ। আবার ওই অঞ্চলে রয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে গরমে যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মগবাজারের বাসিন্দারা।
গুলিস্তান থেকে পুরান ঢাকার দিকে যেতেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন ওই রুটের নিয়মিত যাত্রীরা।
ইমেল আহমেদ জানান, ‘পুরান ঢাকায় এ দৃশ্য তো আর নতুন কিছু না। তবে আজকে আরও বেশি সময় লাগছে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এলাকা নিউমার্কেট, ধানমন্ডির চিত্রও একই রকম। খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে গাড়ি।
রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) রেফাতুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে স্কুল খোলার কারণে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। এর বাইরে আর কোনো কারণ নেই। কোনো ভিভিআইপি মুভমেন্ট নেই, কোনো দুর্ঘটনা নেই, কোনো বিক্ষোভ, মিছিল নেই। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’
তবে এই কর্মকর্তা মনে করেন, এ চিত্র ঢাকা শহরের জন্য নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ দুই বছর পর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফেরার কারণে অনেকেই ভুলে গেছেন ঢাকার সেই যানজটের কথা।
তিনি বলেন, ‘ভিকারুননিসার ছুটি হলে যানজট থাকত নাবিস্কো পর্যন্ত। আজকে তো মাত্র ফ্লাইওভার পর্যন্ত। এক কথায় বলতে গেলে, গত দুই বছরে আমরা আসলে ভুলে গেছি তীব্র যানজটের কথা।’
বিএফ শাহীন স্কুলের সামনে গাড়ির জট
মঙ্গলবার থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হলে সকাল থেকেই স্কুলমুখী রাজধানীর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিএফ শাহীন স্কুলে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিতে ব্যক্তিগত গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলটির সামনের মূল সড়কে কয়েক লেনে পার্ক করা হয়েছে অভিভাবকদের ব্যক্তিগত গাড়ি।
এ জন্য জাহাঙ্গীরগেট থেকে মহাখালী রাওয়া কনভেনশন হলের সামনে এবং মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে যানজটে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে এই সড়কে তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা। এর প্রভাবে বিজয় সরণি, চন্দ্রিমা উদ্যান, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর এলাকার মূল সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী ও সাধারণ মানুষরা। এদিকে এই সংকট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা কাজ করে গেলেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৭টা থেকে এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়৷
গুলশান অফিসে যেতে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে সকাল ৭টার দিকে রওনা হন আরিফুল সাজ্জাদ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাসে করে খুব অল্প সময়ে মোহাম্মদপুর থেকে জাহাঙ্গীরগেট চলে আসি। কিন্তু জাহাঙ্গীরগেট সিগন্যালে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। প্রথমে ভেবেছিলাম কোনো ভিআইপি মুভমেন্ট হবে, তাই এত বড় সিগন্যাল৷ কিন্তু সিগন্যাল পার হয়েই দেখা গেল শাহীন স্কুলের সামনে ভয়াবহ জ্যাম। এখানেই প্রায় ৪০ মিনিট বসে থেকে বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করি। যাবার পথে দেখলাম শত শত প্রাইভেট কার স্কুলের সামনে তিনটি লেনে দাঁড় করানো। পরে বুঝলাম স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের গাড়ি এগুলো। এই গাড়িগুলো পার্ক করে রাখার কারণে কোনো গাড়ি সামনে যেতে পারছে না।’
আব্দুল্লাহ আল হাফিজ নামের আরেকজন অফিসগামী যাত্রী বলেন, বিএএফ শাহীন স্কুলটা ইমিডিয়েটলি অন্য কোথাও শিফট করা উচিত। সড়কের পাশে স্টুডেন্টদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য প্রতিদিন অফিসে যেতে দেরি হয়।’
জাহিদুল ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘পুরো ১ ঘণ্টায় শাহীন স্কুলের গেট পার হলাম। মেইন রোডে এভাবে শত শত গাড়ি পার্ক করা থাকলে কিভাবে হবে?’
শাহীন স্কুলের সামনে এমন অচলাবস্থার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কে। সকাল থেকেই থেমে আছে বিজয় সরণির মতো ব্যস্ততম সড়ক। এর প্রভাবে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজারসহ সব সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার শাহেদ আল মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাহীন স্কুলের সামনে কয়েক লেনে শত শত প্রাইভেট কার পার্ক করা ছিল সকাল থেকেই। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ও তাদের অভিভাবকরা এসেছেন। আমরা সকাল থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছি। গাড়িচালক ও অভিভাবকদের বুঝিয়ে আমার গাড়িগুলো সরিয়ে দিচ্ছি। এখানে সমস্যা হলো, আমরা চাইলেও কঠোর হতে পারছি না। কারণ এখানে অধিকাংশই সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গাড়ি আছে। তাই তাদের বুঝিয়ে রিকয়েস্ট করে গাড়িগুলো সরিয়ে নিতে আমরা অনুরোধ করছি। এ জন্য সময় লাগছে।’
তবে এই অবস্থা যেন সৃষ্টি না হয় সে জন্য আগে থেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল বলেও জানান ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘শাহীন স্কুলের সামনের এই সমস্যা কিন্তু নতুন কিছু নয়। আজকে স্কুল খুলবে সেটা মাথায় রেখে আমরা চার দিন আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করেছিলাম। আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম, তারা যেন তাদের লোক দিয়ে মনিটর করান, যেন কোনো গাড়ি রাস্তায় পার্ক না করে। পার্কিংয়ের প্রয়োজন হলে তারা যেন স্কুলের ভেতরে এর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তারা এটি করেননি। এখন সকাল থেকে আমরা ট্রাফিক পুলিশরা যতটা পারছি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।’
এদিকে রাজধানীর যেসব এলাকায় স্কুল-কলেজ রয়েছে প্রায় সব জায়গাতেই একই চিত্র দেখা গেছে। রমনা-মতিঝিল-খিলগাঁও-বনশ্রী-আজিমপুরসহ অন্যান্য প্রধান সড়কেও বাড়তি যানজট দেখা গেছে মঙ্গলবার সকাল থেকেই।
আরও পড়ুন:আসন্ন জুলাইয়ের আগেই পান্থকুঞ্জকে নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সকালে নগরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের অভ্যন্তরে পান্থপথ বক্স কালভার্টের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র এ কথা জানান।
মেয়র তাপস বলেন, পান্থকুঞ্জ উদ্যান এই এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যান। এটা উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালে মেগা প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কারণে ঢাকা লিমিটেড এক্সপ্রেসওয়ে এদিক দিয়ে নওয়ার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ফলে এই পার্কের উন্নয়ন কাজটা বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আলোচনা করেছি, দেন-দরবার করেছি। এর ফলশ্রুতিতে তারা সুনির্দিষ্ট জায়গায় কাজ করবে। বাকি জায়গা আমাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। সেই জায়গায় আমরাই কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে এটার অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে।
মেয়র আরও বলেন, আমরা ঢাকাবাসীকে একটি নান্দনিক উদ্যান উপহার দিতে চাই। যদিও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের কারণে উদ্যানের বড় একটা অংশ তাদের কাছে চলে যাবে। তারপরও যতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি তা ঢাকাবাসীর জন্য অচিরেই উন্মুক্ত করে দিতে পারব। পার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। জুলাইয়ের আগে পান্থকুঞ্জকে একটি নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে।
নিউমার্কেট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, গত বছর কয়েকটি জায়গায় জলাবদ্ধতা হয়েছে বিশেষ করে নিউমার্কেটের সামনে ও শান্তিনগরে। যেসব কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমরা সেগুলো পরিষ্কার করেছি। আশা করি এবার আর জলাবদ্ধ থাকবে না। নিউমার্কেট এলাকার জন্য নতুন প্রকল্প নিয়েছি।
তিনি বলেন, এর মূল কারণ হচ্ছে পিলখানা ভেতর দিয়ে আগে যে পানি প্রবাহ প্রবাহের নর্দমা ছিল সেগুলো ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য গত বছর সেখানে বড় ধরনের জলবদ্ধতা হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং সম্মতি পেয়েছি। আমরা পিলখানার ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহের বড় নর্দমা করছি। এটা করতে পারলে ওই এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। এভাবে প্রত্যেকটা এলাকায় বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ঢাকায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি জায়গা ছাড়া তেমন কোন জায়গায় এখন দীর্ঘ সময় জলবদ্ধতা থাকে না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের আগে সূচি অনুযায়ী বক্স কালভার্ট, খাল ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার করে থাকি। কারণ যাতে করে বর্ষার সময় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়া ঢাকা শহরে আমরা ব্যাপকভাবে নর্দমা অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান রেখেছি।
পরে মেয়র সায়েদাবাদ টার্মিনাল সংলগ্ন সায়েদাবাদ সুপার মার্কেট, গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র পাঠাগার ও ওয়ারীর তাজউদ্দীন স্মৃতি পাঠাগার পরিদর্শন করেন।
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রেনটি।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী ট্রেন আটকে যায়। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং এবং মগবাজারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ফেরদৌস আহমেদ জানান, দ্রুতই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে লাইনচ্যুত বগি ছাড়াই ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকালে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। খবর ইউএনবির
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরবর্তীতে স্থানটির নাম পরিবর্তন করে মুজিবনগর রাখা হয়। প্রথম সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তাজউদ্দীন আহমদকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিসভার সদস্য করা হয়। মূল মন্ত্রিসভার সফল নেতৃত্ব সেই বছরের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যায়।
বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে আইকিউ এয়ারের তালিকায় গতকাল চতুর্থ অবস্থানে থাকা ঢাকার বায়ুর মানের উন্নতি হয়েছে, তবে ‘অস্বাস্থ্যকরই’ রয়ে গেছে বাংলাদেশের রাজধানীর বাতাস।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ১৫৪ স্কোর নিয়ে বাতাসের নিম্ন মানে ১২০টি শহরের মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে ছিল ঢাকা।
একই সময়ে যথাক্রমে ১৭১ ও ১৬৮ স্কোর নিয়ে তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৪ গুণ বেশি।
এ সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আইকিউএয়ার চারটি পরামর্শ দিয়েছে। এক, বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করা; দুই, বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ রাখা যেন দূষিত বায়ু ঘরে প্রবেশ না করতে পারে; তিন, বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং চার, এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৪। এর মানে হলো ওই সময়টাতে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে।
মানে সামান্য হেরফের হলেও অস্বাস্থ্যকর বাতাসের চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকা।
একই সময় ১২০টি দেশের এ তালিকায় ৮ স্কোর নিয়ে সর্বশেষ অবস্থানে থাকা কানাডার মন্ট্রিলের বাতাস ছিল ‘ভালো’।
আরও পড়ুন:গত কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। দিনে অস্বস্তি নিয়ে কাজকর্ম করার পর রাতে স্বস্তির ঘুমও কেড়ে নিয়েছে উত্তাপ। এমন পরিস্থিতি থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই অপেক্ষা করছিলেন বৃষ্টি। তাদের সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে রাজধানীতে নেমে এলো বৃষ্টি।
ঈদের ছুটির পর দ্বিতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীতে নামে বৃষ্টি, যা নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন অনেকে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বৃষ্টি হওয়াতে খুব ভালো লাগল। যে গরম শুরু হয়েছিল!
‘আমি প্রেশারের রোগী। অতিরিক্ত গরম হলে সমস্যা হয়ে যায়।’
পূর্বাভাসে যা বলেছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছিল, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে নিউজবাংলাকে জানান, তারা ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টির খবর পেয়েছেন। কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা পরবর্তী সময়ে জানানো যাবে।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে নাৎসি জার্মানির একনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দক্ষিণ ইসরায়েলে গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজার শাসক দল হামাসের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় প্রাণঘাতী হামলা শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েল। সামরিকভাবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্রটির হামলায় এরই মধ্যে গাজায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শিশু।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সিসকা আলবানিজ চলতি বছরের মার্চের শেষের দিকে বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় যে অভিযান শুরু করেছে, সেটি গণহত্যার সমতুল্য।
আলবানিজ ইসরায়েলের ওপর অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান।
এমন বাস্তবতায় কাদের বলেন, ‘হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে নেতানিয়াহু।’
তিনি বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মনে হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিটলারের যে দাম্ভিকতা, যুদ্ধংদেহী মনোভাব, সেটা আবারও নতুন করে বিশ্ব রাজনীতিতে দেখতে পাচ্ছি। হিটলার যে হলোকাস্ট ঘটিয়েছিল ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করে, আজকে গাজায় গণহত্যার যে নায়ক একই রূপে আবির্ভূত হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
‘এই নেতানিয়াহু জাতিসংঘকে মানে না, হোয়াইট হাউসকে তোয়াক্কা করে না। আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কথা শুনে না। সে হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর। ১৪ হাজার শিশুকে গাজায় ইতোমধ্যে হত্যা করে ফেলছে।’
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইরানের ইসরায়েল আক্রমণের পর পৃথিবীর ইনফ্লুয়েনশিয়াল রাষ্ট্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু নেতানিয়াহু আবারও ইরান আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মনে হয় বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিধর ব্যক্তি হচ্ছেন নেতানিয়াহু। আপন ইচ্ছায় চলেন, যা খুশি করেন।
‘যাকে ইচ্ছা তাকে মারেন। ভাতে মারেন, পানিতে মারেন, এয়ার স্ট্রাইক করে মারেন। বাউন্ডারি সাইডে সেনাবাহিনী মারেন। তাদের দুর্দমনীয় শক্তির অনুপ্রেরণা দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এটা পৃথিবীর ভয়ংকর চিত্র। তার দাপট মনে হয় হিটলারকেও ছাড়িয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে সংসদ সদস্য (এমপি) ও মন্ত্রীদের আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
কাদের বলেন, ‘আগামী আট মে প্রথম দফার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার না করতে। উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ থাকবে না। অবাধ-সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়। কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোটদানের ব্যবস্থা করেছেন নির্বাচন কমিশন।
‘বিএনপি প্রকাশ্যে উপজেলা নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও আমাদের জানা মতে তাদের অনেকেই অংশগ্রহণ করবেন।’
গাজায় ইসরায়েলি তাণ্ডবের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে নেতানিয়াহু।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মনে হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিটলারের যে দাম্ভিকতা, যুদ্ধংদেহী মনোভাব, সেটা আবারও নতুন করে বিশ্ব রাজনীতিতে দেখতে পাচ্ছি। হিটলার যে হলোকাস্ট ঘটিয়েছিল ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করে, আজকে গাজায় গণহত্যার যে নায়ক একই রূপে আবির্ভূত হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
‘এই নেতানিয়াহু জাতিসংঘকে মানে না, হোয়াইট হাসকে তোয়াক্কা করে না। আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কথা শুনে না। সে হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর। ১৪ হাজার শিশুকে গাজায় ইতোমধ্যে হত্যা করে ফেলছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইরানের ইসরায়েল আক্রমণের পর পৃথিবীর ইনফ্লুয়েনশিয়াল রাষ্ট্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু নেতানিয়াহু আবারও ইরান আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মনে হয় বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিধর ব্যক্তি হচ্ছেন নেতানিয়াহু। আপন ইচ্ছায় চলেন, যা খুশি করেন।
‘যাকে ইচ্ছা তাকে মারেন। ভাতে মারেন, পানিতে মারেন, এয়ার স্ট্রাইক করে মারেন। বাউন্ডারি সাইডে সেনাবাহিনী মারেন। তাদের দুর্দমনীয় শক্তির অনুপ্রেরণা দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এটা পৃথিবীর ভয়ংকর চিত্র। তার দাপট মনে হয় হিটলারকেও ছাড়িয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য