দেশে ই-কমার্স খাতে পণ্য কেনাবেচা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা প্রতারণা।
ভোক্তা বা গ্রাহকের সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণা রোধে পুরো ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যতা আনতে চায় সরকার। সে জন্য চলতি বছরকে ই-কমার্স খাত সংশোধন ও পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য ধরে পরিকল্পনা সাজানোর কথা জানানো হয়েছে।
এ লক্ষ্যে সংশোধন পর্যায়ে থাকা ভোক্তা আইনে অনলাইনে লেনদেনের বিষয়টি সুস্পষ্ট করা হবে। এ ছাড়া ই-কমার্স খাতের সুষ্ঠু পরিচালনায় হালনাগাদ একটি পরিপূর্ণ নীতিমালা শিগগির প্রকাশ করা হবে। জারি করা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরসও (এসওপি) করা হবে হালনাগাদ।
ইতোমধ্যে ডিজিটাল বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ডিবিআইডি) কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে সব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এবং এফ-কমার্স সাইটগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হচ্ছে।
এ খাতের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আওতায় চালু করা হবে সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সার্ভার।
ই-কমার্স খাতে কী পরিমাণ ট্রানজেকশন হয়, কারা কোথায় কী পরিমাণ পণ্য কেনাবেচা করে, তা পর্যবেক্ষণের জন্য সেন্ট্রাল লিকুইডিটি ট্র্যাকিং প্রোগ্রামও (সিএলটিপি) চালু করা হবে।
যেগুলো ট্র্যাকিং করা সম্ভব নয়, তাদের বিষয়ে দেখভালের জন্য আরও একটি ইন্টার অপারেটর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে। এসব লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচির কার্যকর পদক্ষেপে সরকার এ বিষয়ক একটি স্বতন্ত্র আইন ও কর্তৃপক্ষ গঠনেও জোরালোভাবে কাজ করছে। এসব পদক্ষেপ ই-কমার্স খাতকে বিতর্কমুক্তভাবে এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে চলতি বছর বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস পালনে সরকার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় ন্যায্যতা’। নানা কর্মসূচিতে আগামীকাল পালন হতে যাচ্ছে এই দিবস।
বিদ্যমান ই-কমার্স বা অনলাইন মাধ্যমে কেনাকাটাতে পণ্য যাচাইয়ের সুযোগ কম। ফলে এখানে নিম্নমান, অন্য পণ্য গছিয়ে দেয়া, বাড়তি দাম রাখা, অন্যায্য ভ্যাট আদায়, ওজনে কম- এমন নানামুখী প্রতারণার শিকার হচ্ছে ক্রেতারা। আবার অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করেও মাসের পর মাস পণ্য বা টাকা কোনোটাই ফেরত না পাওয়ার অভিযোগও এখন সর্বোচ্চ।
এদিকে শুধু অনলাইন কেনাকাটাতেই নয়, সশরীরে কেনাকাটাতেও বিভ্রান্ত হচ্ছে ভোক্তা। যেখানে আসল-নকল কিংবা দামের মারপ্যাঁচে প্রতিনিয়ত ক্রেতাকে ঠকানো হচ্ছে। অর্থাৎ সবখানেই ভোক্তা বঞ্চনার হার বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধে দেশে ২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন করা হয়। এ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ভোক্তা স্বার্থ তদারকিতে একই বছর গঠন করা হয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। একই সঙ্গে আইনটি বাস্তবায়নের জন্য এ পর্যন্ত ৫টি বিধিমালা ও প্রবিধান তৈরি হয়েছে।
দেশব্যাপী ভোক্তা অধিকার আইন বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট সর্বোচ্চ ফোরাম হিসেবে কাজ করছে ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।’
এ ছাড়া সব জেলায় জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে রয়েছে ১১ সদস্যের জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটি। উপজেলা চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে আছে ১৮ সদস্যের উপজেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটি। সব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের ইউনিয়ন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটিও কাজ করছে। এর বাইরে বেসরকারি উদ্যোগে আগে থেকেই কাজ করে আসছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব)।
এত সব উদ্যোগও দেশে ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণা ও ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা দমাতে পারেনি। অনলাইন কিংবা সশরীরে- কোনো মাধ্যমেই পণ্য বিক্রিতে মানা হয় না নির্ধারিত দাম। দেখানো হয় না মূল্য তালিকা। উল্টো প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে খাদ্যপণ্য, ব্যবহৃত পণ্য ও ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ধার্য মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে।
থেমে নেই ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রিও। নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ দেয়া হচ্ছে মানব খাদ্যে। অবৈধ প্রক্রিয়ায় মানহীন পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ চলছে সমানতালে। ক্রেতা-ভোক্তাকে আকৃষ্ট করা হচ্ছে মিথ্যা প্রলোভনের বিজ্ঞাপনে। ওজনে কারচুপি হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য।
কেন এই প্রতিপাদ্য
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২১ সালটি ছিল ই-কমার্স খাতে নানামুখী প্রতারণার ঘটনাবহুল বছর। গত বছরের জুন মাসে গ্রাহকরা ১৮টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে সেপ্টেম্বরে এসে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১টি।
লাফিয়ে বেড়েছে অভিযোগের সংখ্যাও। সেপ্টেম্বর শেষে এ অভিযোগের সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। অথচ তিন মাস আগে জুন মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৩ হাজারের মতো।
শুধু ই-কমার্স ওয়েবসাইট নয়, ফেসবুকভিত্তিক কমার্স সাইটগুলোর বিরুদ্ধেও উঠেছে অসংখ্য অভিযোগ। এসব অভিযোগের ৯০ শতাংশই আবার ঢাকাকেন্দ্রিক।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ডিজিটাল কমার্স সেল প্রধান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্রেতা-ভোক্তার সঙ্গে অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার পর তা ঠেকাতে সরকার বসে নেই।
অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দায়ীদের আইনের আওতায় আনতে একের পর এক অভিযান চালানো হয়েছে। অনেককে আটক করে জেলে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ পালিয়ে গেছে। তবে তাদের প্রতিষ্ঠান, সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব জব্ধ করা হয়েছে। যাদের টাকা বিভিন্ন গেটওয়েতে আটকা ছিল তা যাচাই-বাছাই করে ফেরত দেয়া হয়েছে।
অনলাইন গ্রাহকের সুরক্ষা ঝুঁকি
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ পুরোপুরি ভোক্তাবান্ধব নয়। আবার এ আইনে অনলাইন গ্রাহকের সুরক্ষার বিষয়টিও অস্পষ্ট। যে কারণে ডিজিটাল মাধ্যমের ক্রেতা-ভোক্তা কিংবা গ্রাহকের একটা সুরক্ষা ঝুঁকি ছিল।
টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (টিক্যাব) আহ্বায়ক মো. মুর্শিদুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯-এ দেশের প্রচলিত পণ্যের গ্রাহকদের কথা উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু এ আইনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের গ্রাহকদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা নেই।
‘দেশে ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাড়ছে ই-কমার্স সেবা ও অনলাইনকেন্দ্রিক লেনদেনের প্রবণতা। এটা ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু এই ই-কমার্স, অনলাইন রাইড শেয়ারিং, অনলাইন ফুড ডেলিভারি সিস্টেম, ই-টিকেটিং, বিভিন্ন সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট ও অ্যাপের ক্রেতা, অনলাইনে বিভিন্ন সেবার গ্রাহক, মোবাইল ব্যাংকিং খাতের গ্রাহক এবং টেলিকম সেক্টরের ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় ভোক্তা আইনে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় ভোক্তা অধিকার রক্ষার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।’
ভোক্তা অধিকারে আরও যত বাধা
ভোক্তা অধিকার রক্ষায় রয়েছে পদে পদে বাধা। এর জন্য কেবল ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতাই দায়ী নয়। সরকারের ভুলনীতি, নজরদারির অভাব, ভোক্তাবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা, রাজনৈতিক প্রতিজ্ঞা, রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগের এ বিষয়ে আন্তরিকতার অভাব এবং মুক্তবাজার অর্থনীতির দৌরাত্ম্যও দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘যেকোনো সেবার উৎপাদন ভোক্তার কাছে যাচ্ছে চার গুণ দামে। অকারণে নানাভাবে এসবের মূল্য বাড়ানো হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার যে বরাদ্দ দিচ্ছে তা ভোক্তাদের জন্য খরচ হচ্ছে কি না, সেটা ভোক্তাদেরই নিশ্চিত করতে হবে।’
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় সরকার আইনের মধ্যে থেকেই বেশকিছু রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান গঠন করে দিয়েছে। কিন্তু সেগুলো তাদের দায়িত্ব পালন করছে না, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) তার একটি।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার রক্ষায় দরকার ভোক্তাবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠা। একই সঙ্গে দরকার অর্থনীতি ও রাজনীতির সংযোগ। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগ অধিকতর আন্তরিক হওয়ার বিকল্প নেই। তা না হলে ভোক্তাদের বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হতে হবে।’
সর্বাধিক গুরুত্ব সরকারের
ভোক্তার অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
নিউজবাংলাকে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ভোক্তা সুরক্ষার বিষয়ে আন্তরিক বলেই দেশে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করে বাজার অভিযান জোরদার করেছে। একচেটিয়া বাণিজ্য বন্ধ এবং ব্যবসায় প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে প্রতিযোগিতা কমিশন। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতেও তৎপর সরকার। এ লক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য আইন প্রণয়ন এবং কর্তৃপক্ষ গঠনের মাধ্যমেও এ বিষয়ক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
‘এটা ঠিক এখনও ভোক্তারা পুরোপুরি সচেতন হয়নি। আমি মনে করি সর্বত্র ভোক্তারা সচেতন হলেই দেশে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত হবে।’
সরকার ভোক্তাদের সচেতন করতেও কাজ করছে বলে দাবি করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভোক্তা-স্বার্থ যাতে ক্ষুণ্ন না হয়, সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অনেক ভোক্তাই তার অধিকার সম্পর্কে এখন সচেতন। তারা প্রতিবাদ করছেন, অভিযোগও দিচ্ছেন। বাজার ব্যবস্থায় বহুমুখিতার কারণে প্রতারণার ধরন বদলে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এখন যুগোপযোগী করতে সংশোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
‘ই-কমার্স খাতের সুষ্ঠু পরিচালনায় একটি পরিপূর্ণ হালনাগাদ নীতিমালা চূড়ান্তকরণের অপেক্ষায় রয়েছে। একটি এসওপি জারি হয়েছে। এর পাশাপাশি সরকার এ বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র আইন ও কর্তৃপক্ষ গঠনে কাজ করছে।’
আরও পড়ুন:এপনিক ফাউন্ডেশনের আইএসআইএফ এশিয়া প্রোগ্রামের মর্যাদাপূর্ণ অনুদান অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে টিম ফিনিক্স গ্রুপ। এই অনুদানের সহায়তায় সংস্থাটি বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতকে রূপান্তরিত করার এক অগ্রণী উদ্যোগ ‘সিকিউরনেট বিডি’ (SecureNet BD) চালু করতে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠবে সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স (CCoE) এবং কমিউনিটি-নির্ভর সিকিউরিটি অপারেশনস সেন্টার (SOC) / কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (CSIRT), যা হবে দেশের ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বাংলাদেশে দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার হামলা এবং অনলাইন নিরাপত্তা হুমকির সংখ্যা ও জটিলতা অভূতপূর্ব হারে বাড়ছে। বিশেষত বড় শহরের বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং কমিউনিটিগুলোতে নিরাপত্তা অবকাঠামো বা প্রশিক্ষণের সুযোগ সীমিত। এই প্রেক্ষাপটে সিকিউরনেট বিডি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহযোগিতামূলক এবং কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশব্যাপী ১,০০০ এরও বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যার মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ কমপক্ষে ৩০% নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া তৈরি হবে আধুনিক সাইবার রেঞ্জ (Cyber Range), যা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, স্থানীয় গবেষণা এবং বাস্তব সাইবার প্রতিরক্ষা অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে চালু হবে ফেলোশিপ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম, যা ভবিষ্যতের সাইবার নিরাপত্তা নেতৃত্ব গড়ে তুলবে। পাশাপাশি কমিউনিটি এসওসি/সিএসআইআরটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, অলাভজনক সংস্থা এবং স্থানীয় সংগঠনগুলোকে সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
টিম ফিনিক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ অব রিসার্চ এ. এস. এম. শামীম রেজা বলেন, “এই প্রকল্প শুধু প্রযুক্তি নিয়ে নয়, বরং মানুষের ক্ষমতায়নের গল্প। বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ ও কমিউনিটি-চালিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সিকিউরনেট বিডি সাইবার নিরাপত্তাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে খাপ সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে। আমাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যৎমুখী কর্মশক্তি তৈরি করা এবং বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সাইবার উদ্ভাবনের কেন্দ্রে রূপান্তর করা।”
সিকিউরনেট বিডি–এর এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রগতিশীল উদ্যোগ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ায় কমিউনিটি-চালিত সাইবার নিরাপত্তার নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার দপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী বলেন, নেপালে ১১টি জুট মিল রয়েছে। নেপালের জুট মিলগুলো তাদের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করায় মিলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানির অনুমতি শিথিল করার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচাপাটের চাহিদা রয়েছে। কাঁচাপাট রপ্তানি না করে বাংলাদেশ সেমি-ফিনিশড (আধা-প্রক্রিয়াজাত) পাটপণ্য রপ্তানি করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব সেমি-ফিনিশড পাটপণ্য উৎপাদন করছে। নেপাল এই পণ্যগুলো আমদানি করলে দুই দেশের বাণিজ্য ভলিউম বাড়বে এবং উভয় দেশই লাভবান হবে।
চীনা কোম্পানি অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেড চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে উচ্চ মানসম্পন্ন গার্মেন্ট উৎপাদনকারী একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে ১৯.৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
এ লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেপজা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল আহসান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেপজার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এই প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৩০ লাখ পিস স্কি, স্নো স্পোর্টস, হান্টিং ও মোটর রাইডার গিয়ার, ইনসুলেটেড শীতকালীন কোট, ডাউন জ্যাকেট ও প্যান্ট, রেইন গিয়ার, ওয়ার্কওয়্যার, রানিংওয়্যার, ইয়োগাওয়্যার, এবং ওয়াটার স্পোর্টসওয়্যার তৈরি করবে।
প্রতিষ্ঠানটিতে ২ হাজার ৭৮৮ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ জানান এবং সুষ্ঠু ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডসহ এ পর্যন্ত মোট ৪৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যাদের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ১.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। ক্রমাগত উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কারণে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য (অর্থ) আ ন ম ফয়জুল হক, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজ এবং অক্টোবর ৪১২৮ (বিডি) লিমিটেডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও বিনিয়োগে ধীরগতির প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থাটির মতে, এই প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোর আস্থা বাংলাদেশের বাজারে বাড়ছে এবং তারা ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত লাভজনক বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের মুনাফার একটি বড় অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মুনাফা স্থানান্তর করছে না, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখেই নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে।
বিশ্বব্যাপী নতুন মূলধনের (গ্রিনফিল্ড এফডিআই) প্রবাহ কমলেও বাংলাদেশে এ খাতে রেকর্ড হয়েছে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি বিদেশি মূল কোম্পানিগুলোর স্থানীয় ইউনিটগুলোতে অর্থায়ন বা ইন্টার-কোম্পানি ঋণের হার এক বছরে বেড়েছে ২২৯ শতাংশ।
শুধু ছয় মাস নয়, পুরো অর্থবছরের চিত্রও আশাব্যঞ্জক। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা- বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) ও বিসিকের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোম্পানির মোট ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ডলারেরও বেশি এসেছে সরাসরি বিদেশি কোম্পানির পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ পরিবেশের প্রতি বিদেশিদের আস্থার প্রতিফলন। তাদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরও বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি কমেছে ২০ শতাংশ। আর গত চার মাসে এই পতনের হার প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর পুরোপুরি প্রভাব পড়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। এই শুল্কের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ভারতের অস্বীকৃতির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা।
দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির পর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাজারে পরিণত হয়েছে।
জিটিআরআইয়ের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শ্রমনির্ভর খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, প্রকৌশলজাত পণ্য এবং রাসায়নিক খাত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। এসব খাতে রফতানি আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ছিল ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সেপ্টেম্বর নাগাদ তা নেমে আসে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পায়। পর পর চার মাস ধরে রপ্তানি কমতে থাকায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি কিছুটা ভারসাম্য রক্ষা করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ বিরতির পর গত মাসে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা আবার শুরু হয়। চলমান আলোচনার লক্ষ্য আগামী মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা। একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে।
বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ওয়াশিংটন মনে করছে, এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ক্রেমলিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানো সম্ভব হবে।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনা চলছে। বর্তমান মার্কিন প্রশাসন এই সহযোগিতা গভীর করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
অবশ্য কৃষি ও দুগ্ধ খাতের বাজার প্রবেশাধিকার নিয়ে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে। কিন্তু নয়াদিল্লি খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষকের জীবিকা ও অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষার কারণ দেখিয়ে এই খাতকে রক্ষা করে আসছে।
কিছু দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রই ছিল ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য দাঁড়িয়েছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলারে। ট্রাম্প ও মোদি দুজনই এই অঙ্ক ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক শুল্কযুদ্ধ সেই লক্ষ্যকে এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
সর্বস্তরের জনগণকে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি’র রয়েছে বিভিন্ন মেয়াদি আকর্ষণীয় বিশেষ আমানত প্রকল্প। পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ব্যাংকের যে কোন একটি আমানত প্রকল্প বেছে নেওয়ার জন্য ১৭৪ টি শাখা ও উপশাখায় আপনাকে স্বাগতম।
দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ‘ইন্টিগ্রিটি ও এথিকস প্র্যাকটিস ইন ব্যাংকিং’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালার আয়োজন করে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে লার্নিং অ্যান্ড ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে (LTDC) এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আবু জাফর, এবং অনুষ্ঠানে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডাঃ আরিফুর রহমান। তিনি টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সততা ও নৈতিকতার গুরুত্বের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রতিটি স্তরে নৈতিক মান, স্বচ্ছতা এবং উত্তম শাসননীতি প্রচার ও বাস্তবায়ন করা। প্রধান কার্যালয় এবং বিভিন্ন শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধ বজায় রাখার বাস্তবসম্মত দিকগুলো আলোচিত হয়।
প্রযুক্তিগত অধিবেশনগুলো পরিচালনা করেন দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি স্বতন্ত্র পরিচালক এম. নুরুল আলম, এফসিএস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর যুগ্ম পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান খান, যুগ্ন পরিচালক, এবং বাংলালিংকের কমপ্লায়েন্স ডিরেক্টর মোহাম্মদ আদিল হোসেন, সিসিইপি। তাঁরা ব্যাংকিং খাতে নৈতিক সংস্কৃতি শক্তিশালীকরণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ বিষয়ে মূল্যবান মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
মন্তব্য